নেকলেস গল্পের জ্ঞানমূলক ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর

গী দ্য মোপাসাঁর “দ্য নেকলেস” (The Necklace)-এর একটি অনুবাদ। এটি মাদাম লোইসেলের জীবনের এক করুণ কাহিনি তুলে ধরে। এই গল্পে মাদাম লোইসেল তার জীবনের অসন্তুষ্টি, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, এবং সমাজের বিলাসী জীবনের প্রতি আকাঙ্ক্ষার কারণে এক বড়সড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এই পোস্টে নেকলেস গল্পের জ্ঞানমূলক ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

নেকলেস গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর

১। গী দ্য মোপাসাঁ কবে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই আগস্ট

২। গী দ্য মোপাসাঁ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ফ্রান্সের নর্মান্ডি শহরে।

৩। গী দ্য মোপাসাঁর পুরো নাম কি?
উত্তর: Henri-Renri-Albert-Guy de Maupassant।

৪। গী দ্য মোপাসাঁর পিতার নাম কী?
উত্তর: পিতার নাম গুস্তাভ দ্য মোপাসাঁ

৫। গী দ্য মোপাসাঁর মাতার নাম কী?
উত্তর: মায়ের নাম লরা লি পয়টিভিন।

৬। গী দ্য মোপাসাঁ কোন বছর নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হন?
উত্তর: ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে।

৭। গী দ্য মোপাসাঁর সাহিত্য-জীবন কী দিয়ে শুরু হয়েছিল?
উত্তর: কাব্যচর্চা দিয়ে।

৮। গী দ্য মোপাসাঁ কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই জুলাই।

৯। ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন ভাষায় লেখা?
উত্তর: ফরাসি ভাষায়।

১০। ‘নেকলেস’ গল্পটি প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ফরাসি পত্রিকা ‘La Gaulois’-এ।

১১। ‘নেকলেস’ গল্পটি প্রথম কত সালে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৮৮৪ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি

১২। ‘নেকলেস’ গল্পটি ইংরেজিতে কবে অনূদিত হয়?
উত্তর: ১৮৮৪ সালে।

১৩। ‘নেকলেস’ গল্পগ্রন্থে গল্পটি কবে স্থান পায়?
উত্তর: ১৮৮৪ সালেই।

১৪। পূর্ণেন্দু দস্তিদার কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে

১৫। পূর্ণেন্দু দস্তিদার কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুন।

১৬। পূর্ণেন্দু দস্তিদারের পিতার নাম কী?
উত্তর: পিতার নাম চন্দ্রকুমার দস্তিদার।

১৭। পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাতার নাম কী?
উত্তর: মায়ের নাম কুমুদিনী দস্তিদার।

১৮। পূর্ণেন্দু দস্তিদার কোন বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহে।

১৯। পূর্ণেন্দু দস্তিদার কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই মে

২০। পূর্ণেন্দু দস্তিদার কীভাবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ভারতে যাওয়ার পথে।

২১। মাতিলদা কোন শ্রেণির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর: এক সাধারণ কেরানির পরিবারে।

২২। মাতিলদার স্বামীর পেশা কী ছিল?
উত্তর: শিক্ষা পরিষদের একজন কেরানি।

২৩। মাতিলদা কেন অসুখী ছিলেন?
উত্তর: দরিদ্র জীবনযাপন এবং বিলাসবহুল জীবনের স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার কারণে।

২৪। মাতিলদার কী ধরনের জীবনযাপন করার স্বপ্ন ছিল?
উত্তর: বিলাসবহুল জীবনযাপন, সুন্দর পোশাক ও গহনা পরিধান এবং উচ্চবিত্ত সমাজে পরিচিত হওয়ার।

২৫। মাতিলদার স্বামী তার জন্য কী উপহার নিয়ে এসেছিলেন?
উত্তর: বল-নাচের আমন্ত্রণপত্র।

২৬। মাতিলদা আমন্ত্রণপত্র দেখে খুশি হলেন না কেন?
উত্তর: উপযুক্ত পোশাক ও গহনা না থাকায়।

২৭। মাতিলদা তার স্বামীর কাছে নতুন পোশাকের জন্য কত টাকা চেয়েছিলেন?
উত্তর: চারশো ফ্রাঁ।

২৮। মাতিলদা গহনার জন্য কার কাছে সাহায্য চান?
উত্তর: মাদাম ফোরস্টিয়ারের কাছে।

২৯। মাদাম ফোরস্টিয়ার মাতিলদাকে কী ধার দিয়েছিলেন?
উত্তর: একটি হীরার হার।

৩০। মাতিলদা বল-নাচ থেকে কীভাবে বাড়ি ফিরেছিলেন?
উত্তর: একটি পুরোনো গাড়ি ভাড়া করে।

৩১। তারা হারটি পুনরায় কিনতে কত টাকা খরচ করেছিল?
উত্তর: ৩৬ হাজার ফ্রাঁ।

৩২। দেনা শোধ করতে তাদের কত বছর লেগেছিল?
উত্তর: দশ বছর।

৩৩। দশ বছর পরে মাতিলদা মাদাম ফোরস্টিয়ারের সঙ্গে কোথায় দেখা করেন?
উত্তর: রাস্তায়।

৩৪। মাদাম ফোরস্টিয়ার মাতিলদাকে চিনতে পারেননি কেন?
উত্তর: চেহারা বদলে গিয়েছিল।

৩৫। মাতিলদা মাদাম ফোরস্টিয়ারকে কী সত্য বলেছিলেন?
উত্তর: হারটি হারিয়ে যাওয়ার কারণে তারা নতুন হার কিনেছিলেন।

৩৬। ‘নেকলেস’ গল্পের মূল শিক্ষা কী?
উত্তর: অহেতুক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সামাজিক মর্যাদার জন্য বাস্তবতার সঙ্গে আপস করা উচিত নয়।

৩৭। ‘নেকলেস’ গল্পের সময়কাল কোন শতকের?
উত্তর: উনবিংশ শতকের।

৩৮। ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন দেশের পটভূমিতে লেখা?
উত্তর: ফ্রান্সের।

৩৯। ‘নেকলেস’ গল্পটি কোন ধরণের সাহিত্যিক রচনা?
উত্তর: ছোটগল্প।

৪০। কনভেন্ট কী?
উত্তর: কনভেন্ট হলো খ্রিষ্টান নারী মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত স্কুল এবং মিশনারিদের আবাস।

৫০। ফ্রান্সে পুরুষদের কীভাবে সৌজন্য প্রদর্শন করা হয়?
উত্তর: “মসিয়ে” সম্বোধন করে।

৫১। ফ্রান্সে মহিলাদের কীভাবে সম্বোধন করা হয়?
উত্তর: “মাদাম” সম্বোধন করে।

৫২। ফ্রাঁ কী ছিল?
উত্তর: ফ্রাঁ ফরাসি মুদ্রার নাম ছিল, যা ২০০২ সাল পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।

৫৩। ফ্রাঁর পরিবর্তে বর্তমানে ফ্রান্সে কোন মুদ্রা ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: বর্তমানে ফ্রান্সে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা হয়।

৫৪। বল’ নাচ কী?
উত্তর: বল’ নাচ একটি বিনোদনমূলক সামাজিক নৃত্যানুষ্ঠান, যা ইউরোপ, আমেরিকাসহ পৃথিবীর বহু দেশে প্রচলিত।

৫৫। ক্রুশ কী?
উত্তর: ক্রুশ হলো খ্রিষ্টান ধর্মীয় প্রতীক।

৫৬। স্যাটিন কী ধরনের বস্ত্র?
উত্তর: স্যাটিন হলো মসৃণ ও চকচকে রেশমি বস্ত্র।

৫৭। প্যারী কী?
উত্তর: প্যারী হলো প্যারিসের ফরাসি নাম।

৫৮। প্যালেস রয়েল কী?
উত্তর: প্যালেস রয়েল হলো রাজকীয় প্রাসাদ।

নেকলেস গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

১. ‘নেকলেস’ গল্পে মাদাম লোইসেল চরিত্র কীরূপ?

গল্পের প্রধান চরিত্র হলো মাদাম লোইসেল, একজন সাধারণ গৃহিণী। তার একসময়ে উচ্চসামাজিক অবস্থান ছিল না, কিন্তু সে সবসময় রূপ, সাজগোজ এবং দামি পোশাকের প্রতি আগ্রহী ছিল। তার স্বপ্ন ছিল উচ্চবিত্ত সমাজে স্থান পাওয়া, এবং এজন্য তার মনেই ছিল এক ধরনের হতাশা। মাদাম লোইসেল এবং তার স্বামীর মধ্যে একটি সাধারণ জীবনযাপন ছিল, তবে তার মানসিক অবস্থা প্রভাবিত করেছিল তাদের জীবনকে।


২. মাদাম লোইসেল কেন দুঃখিত ছিল?

মাদাম লোইসেল তার জীবন নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল কারণ সে সমাজের উচ্চস্তরের জীবনযাত্রা উপভোগ করতে চাইত। তার স্বপ্ন ছিল বিলাসবহুল পোশাক, অলংকার এবং দামি জিনিসপত্র পরিধান করা। তবে, তার স্বামীর সঙ্গে সাধারণ জীবনযাপন করায় সে হতাশ ছিল। একদিন, যখন তার স্বামী একটি জমকালো অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য একটি নেকলেস উপহার দেয়, সে আবার নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো উপলব্ধি করে।


৩. মাদাম লোইসেল কেন নেকলেসটি ধার করেছিলেন?

মাদাম লোইসেল একটি বিলাসবহুল অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য একটি অসাধারণ গয়না পরতে চেয়েছিলেন। তার কাছে কোন দামি গহনা ছিল না, তাই তার স্বামী তাকে একটি নেকলেস ধার করে আনার পরামর্শ দেন। মাদাম লোইসেল তখন একটি দামি নেকলেস ধার করে এবং সেটি পরে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। তার এই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে তার জীবনে এক অভাবনীয় বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


৪. নেকলেস হারানোর পর মাদাম লোইসেল কী করেছিলেন?

নেকলেস হারানোর পর মাদাম লোইসেল এবং তার স্বামী প্রচুর চেষ্টা করেন সেই নেকলেসটি খুঁজে বের করার জন্য। তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন এবং শেষে সেটি না পাওয়ায়, তারা নতুন নেকলেস কিনে পুরনো নেকলেসের জায়গায় রেখে দেন। এরপর, তাদের জীবনে এক বিশাল দুঃখজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কারণ তারা নেকলেসটির দাম পরিশোধ করতে গিয়ে বহু বছর ধরে ঋণের মধ্যে ডুবে যায়।


৫. মাদাম লোইসেল ও তার স্বামী নেকলেসের দাম কীভাবে পরিশোধ করেছিলেন?

মাদাম লোইসেল এবং তার স্বামী নেকলেসের দাম পরিশোধ করতে গিয়ে তাদের জীবন বদলে যায়। তারা নেকলেসটি খুঁজে না পাওয়ায়, নতুন নেকলেস কিনে পুরনোটি বদলে দেন। এরপর, তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। তাদের সব সঞ্চয় এবং বেশিরভাগ সম্পত্তি বিক্রি করে তারা ১০ বছর ধরে ঋণ শোধ করতে থাকে। এই সময়টাতে তাদের জীবন খুব কষ্টকর হয়ে ওঠে, যা তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্লান্ত করে তোলে।


৬. মাদাম লোইসেল কি খুব বিলাসী ছিলেন?

হ্যাঁ, মাদাম লোইসেল অত্যন্ত বিলাসী ছিলেন। তার সর্বদা ইচ্ছে ছিল সে যেন উচ্চসমাজের অংশ হয়, এবং সে আরও বেশি রূপ ও সাজগোজের দিকে মনোযোগী ছিল। তার আভিজাত্য এবং দামি জিনিসের প্রতি আকর্ষণ তাকে বাস্তবতা থেকে দূরে রেখেছিল, যা পরবর্তীতে তার জীবনের দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি ঘটায়।


৭. ‘নেকলেস’ গল্পটির মূলভাব কী?

গল্পটির মূল থিম হলো মিথ্যা, আসল ও নকলের পার্থক্য এবং মানুষের অহংকার। এটি আমাদের শিখায় যে, বাইরে থেকে কিছু দামি বা গৌরবময় দেখালেও তার প্রকৃত মূল্য অনেক কম হতে পারে, এবং অহংকার এবং মিথ্যা কখনোই সুখে পৌঁছাতে সহায়ক নয়। গল্পটি আমাদের জীবন এবং তার মূল্য সম্পর্কে এক গভীর উপলব্ধি দেয়।


৮. মাদাম লোইসেলের চরিত্রের কোন দিকটি গল্পে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে?

মাদাম লোইসেলের চরিত্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী দিক হলো তার অহংকার ও সামাজিক অবস্থানের প্রতি অতি আকর্ষণ। তার এই প্রবণতা তাকে সবসময় সুখী করতে পারেনি, বরং তার জীবনের মূল লক্ষ্য ছিল বাইরের দিক থেকে উজ্জ্বল এবং সুন্দর দেখানো। গল্পটি তার এই অভ্যাসের ফলে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়কেই তুলে ধরেছে।


৯. নেকলেসের ঘটনায় মাদাম লোইসেল কী শিক্ষা পেলেন?

মাদাম লোইসেল এই ঘটনায় এক গুরুতর শিক্ষা পেয়েছিলেন: বাইরের দৃষ্টিতে দামি বা সুন্দর কিছু দেখালেও তার প্রকৃত মূল্য মুলত ভিন্ন হতে পারে। তার অহংকার এবং মিথ্যার জন্য যে মূল্য তাকে চোকাতে হয়েছিল, তা তাকে জীবনের কঠিন বাস্তবতা শিখিয়েছে। এই গল্পটি সমাজের বাইরে থেকে আসা সৌন্দর্য এবং আভিজাত্যের প্রতি আকর্ষণের বিপদ সম্পর্কে একটি সতর্কীকরণ।


১০. মাদাম লোইসেল কীভাবে অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন?

মাদাম লোইসেল অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য অনেক উদ্বিগ্ন ছিলেন। তার কাছে কোন দামি পোশাক বা গয়না ছিল না, যা তাকে তার চাওয়া অনুযায়ী প্রদর্শন করতে সাহায্য করত। তবে, তার স্বামী তাকে একটি সুন্দর পোশাক কিনে দেন, আর নেকলেস ধার করে অনুষ্ঠানটিতে যোগ দেন। সেই নেকলেসটি তাকে এক ধরনের আভিজাত্য অনুভূতি দিয়েছিল, এবং তার মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস জন্মেছিল।


১১. মাদাম লোইসেল কেমন জীবনযাপন করতেন?

গল্পের শুরুতে, মাদাম লোইসেল একটি সাধারণ গৃহিণী হিসেবে জীবন যাপন করতেন। তার স্বামী একটি সরকারি চাকরি করতেন এবং তাদের পরিবার একটি সাধারণ জীবনযাপন করত। মাদাম লোইসেল বেশি বিলাসী জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখতেন, কিন্তু বাস্তবতায় তিনি তার স্বামী ও পরিবারের সাধ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন। তার এই হতাশা এবং স্বপ্ন তাকে আরও বেশি অসন্তুষ্ট করেছিল।


১২. মাদাম লোইসেল কীভাবে তার স্বামীর প্রতি মনোভাব পরিবর্তন করেছিলেন?

প্রথমে মাদাম লোইসেল তার স্বামীকে খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না, কারণ তিনি মনে করতেন যে, তার স্বামী উচ্চসামাজিক শ্রেণীর মানুষের মতো তাকে বিলাসী জীবন উপহার দিতে অক্ষম। তবে, নেকলেস হারানোর পর এবং দীর্ঘ ঋণের বোঝা বয়ে, তিনি আস্তে আস্তে তার স্বামীকে মূল্য দিতে শুরু করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, তার স্বামীর সহযোগিতা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমেই তার জীবন বদলাতে পারে।


১৩. গল্পে নেকলেসটি কী প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?

গল্পে নেকলেসটি আসলে এক ধরনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি মাদাম লোইসেলের উচ্চাকাঙ্ক্ষার, তার আত্মমর্যাদা এবং সমাজে এক নির্দিষ্ট অবস্থানে পৌঁছানোর আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে। নেকলেসটি মাদাম লোইসেলের জন্য এক ধরনের স্বপ্ন ছিল, কিন্তু সেই স্বপ্নের মূল্য শেষ পর্যন্ত তাকে শিখিয়ে দেয় যে, বাইরের আভিজাত্য বা সৌন্দর্য আসলেই সুখের জন্য যথেষ্ট নয়।


১৪. নেকলেস হারানোর পর মাদাম লোইসেল কেন দুশ্চিন্তা করেছিলেন?

নেকলেস হারানোর পর মাদাম লোইসেল প্রচণ্ড দুশ্চিন্তায় ছিলেন কারণ তিনি জানতেন যে, নেকলেসটির দাম ছিল খুবই বেশি। তার কাছে এটাই ছিল একমাত্র উপায় নিজেকে সমাজের উচ্চমানের লোক হিসেবে পরিচিতি লাভের। যদি নেকলেসটি হারানো গতো, তাহলে সে কিভাবে অন্যদের কাছে সম্মান পাবেন বা স্বীকার করবেন এই সত্যটি?


১৫. মাদাম লোইসেল এবং তার স্বামী ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে কীভাবে জীবন কাটাচ্ছিলেন?

নেকলেসের পরিবর্তে নতুন নেকলেস কেনার পর, মাদাম লোইসেল এবং তার স্বামী ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাদের জীবনের আরাম এবং বিলাসিতা সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল, এবং তাদের জীবন কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। মাদাম লোইসেল কখনোই ভাবেননি যে, এই পরিস্থিতি তাদেরকে ১০ বছর ধরে এমন যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে দেবে।


১৬. ‘নেকলেস’ গল্পটি সমাজের কোন দিক তুলে ধরে?

গল্পটি সমাজের উচ্চবিত্তের প্রতি আকর্ষণ এবং বাহ্যিক প্রদর্শন সম্পর্কে আমাদের একটি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। এটি আমাদের শেখায় যে, বাহ্যিক আভিজাত্য এবং পকেটে অর্থের পরিমাণ কখনোই জীবনের আসল সুখের প্রতিনিধিত্ব করে না। সমাজের কাছে মনোনীত হওয়া এবং নিজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা একেবারেই স্বার্থপরতা হতে পারে, যা কখনো ভালো ফল দেয় না।


১৭. মাদাম লোইসেলের বন্ধুর চরিত্র কেমন?

গল্পে মাদাম লোইসেলের বন্ধু, যার কাছ থেকে সে নেকলেস ধার করে, একটি সাধারণ এবং বাস্তবধর্মী চরিত্র। সে খুবই উদার, এবং তার কোন উচ্চাভিলাষী চাওয়া বা দাবি ছিল না। সে মাদাম লোইসেলকে সাহায্য করতে আনন্দিত ছিল, কিন্তু শেষে সে কিছুই জানত না যে, তার নেকলেসটির জন্য মাদাম লোইসেল কত কষ্ট করেছিল।


১৮. মাদাম লোইসেল কিভাবে নেকলেস হারানোর ঘটনা তার বন্ধুর কাছে বলেছে?

গল্পের শেষে, যখন ১০ বছর পার হয়ে যায় এবং মাদাম লোইসেল তার জীবন পুরোপুরি বদলে যায়, তখন তিনি তার বন্ধুর কাছে সত্যিটা প্রকাশ করেন। তবে, তার বন্ধুর প্রতিক্রিয়া ছিল একদম বিপরীত। বন্ধুটি তাকে জানায় যে, নেকলেসটি আসলে খুবই সাধারণ ছিল এবং খুব দামি কিছু নয়। এই সত্য জানা মাদাম লোইসেলকে আরও হতাশ করে তোলে, কারণ তার জীবন কেটেছে এক অযথা দুশ্চিন্তা এবং কষ্টের মধ্যে।


১৯. ‘নেকলেস’ গল্পটি আমাদের কি শিক্ষা দেয়?

গল্পটি আমাদের শেখায় যে, বাহ্যিক সৌন্দর্য বা সমাজে উঁচু অবস্থান থাকা আসলে জীবনের মূল উদ্দেশ্য নয়। সত্যিকারের সুখ বা শান্তি আসে আন্তরিকতা, সত্যতা এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে। মিথ্যা এবং অহংকারের ফলাফল কখনোই সুখকর হয় না, এবং প্রতিটি মানুষের উচিত নিজেকে জানার এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন পরিচালনা করার।

আরও পড়ুনঃ নেকলেস গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

Related Posts

Leave a Comment