অপরিচিতা গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অপরিচিতা’ গল্পটিতে নারী চরিত্র কল্যাণীকে দৈহিক সৌন্দর্যের গণ্ডির বাইরে এনে মানসিক শক্তি এবং আত্মমর্যাদার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। এই পোস্টে অপরিচিতা গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

অপরিচিতা গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর

১। ‘অপরিচিতা’ গল্পের গল্পকথকের নাম কী?
উত্তর: ‘অপরিচিতা’ গল্পের গল্পকথকের নাম অনুপম।

২। ‘অপরিচিতা’ গল্পের গল্পকথকের বয়স কত?
উত্তর: ‘অপরিচিতা’ গল্পের গল্পকথকের বয়স সাতাশ বছর।

৩। কার সুন্দর চেহারা নিয়ে পণ্ডিতমশায় বিদ্রূপ করতেন?
উত্তর: অনুপমের সুন্দর চেহারা নিয়ে পণ্ডিতমশায় বিদ্রূপ করতেন।

৪। পন্ডিতমশায় অনুপমের সুন্দর চেহারা কিসের সঙ্গে তুলনা করতেন?
উত্তর: পন্ডিতমশায় অনুপমের সুন্দর চেহারা শিমুল ফুল ও মাকাল ফলের সঙ্গে তুলনা করতেন।

৫। অনুপমের মা কেমন ঘরের মেয়ে ছিলেন?
উত্তর: অনুপমের মা গরিব ঘরের মেয়ে ছিলেন।

৬। অনুপমের পিতা পেশায় কী ছিলেন?
উত্তর: অনুপমের পিতা পেশায় উকিল ছিলেন।

৭। অনুপমের আসল অভিভাবক কে?
উত্তর: অনুপমের আসল অভিভাবক তার মামা।

৮। বিয়ে সম্বন্ধে কার একটা বিশেষ মত ছিল?
উত্তর: বিয়ে সম্বন্ধে মামার একটা বিশেষ মত ছিল।

৯। অনুপমের বন্ধুর নাম কী?
উত্তর: অনুপমের বন্ধুর নাম হরিশ।

১০। হরিশ কোথায় কাজ করে?
উত্তর: হরিশ কানপুরে কাজ করে।

১১। ছুটিতে হরিশ কোথায় এসেছে?
উত্তর: ছুটিতে হরিশ কলকাতায় এসেছে।

১২। হরিশ অনুপমকে কী ধরনের মেয়ের সন্ধান দিয়েছিল?
উত্তর: হরিশ অনুপমকে খাসা মেয়ের সন্ধান দিয়েছিল।

১৩। অবকাশের মরুভূমির মধ্যে অনুপম কীসের মরীচিকা দেখছিল?
উত্তর: অবকাশের মরুভূমির মধ্যে অনুপম নারীরূপের মরীচিকা দেখছিল।

১৪। মেয়ের বয়স পনেরো শুনে কার মন ভার হলো?
উত্তর: মেয়ের বয়স পনেরো শুনে মামার মন ভার হলো।

১৫। মামা কলকাতার বাইরের পৃথিবীটাকে কোন দ্বীপের অন্তর্গত বলে জানেন?
উত্তর: মামা কলকাতার বাইরের পৃথিবীটাকে আন্দামান দ্বীপের অন্তর্গত বলে জানেন।

১৬। বিশেষ কাজে মামা একবার কোথায় গিয়েছিলেন?
উত্তর: বিশেষ কাজে মামা একবার কোন্নগর গিয়েছিলেন।

১৭। এককালে কাদের বংশে লক্ষ্মীর মঙ্গলঘট ভরা ছিল?
উত্তর: এককালে শম্ভুনাথ সেনদের বংশে লক্ষ্মীর মঙ্গলঘট ভরা ছিল।

১৮। কন্যাকে আশীর্বাদ করার জন্য কাকে পাঠানো হলো?
উত্তর: কন্যাকে আশীর্বাদ করার জন্য বিনুদাদাকে পাঠানো হলো।

১৯। বিনুদাদা অনুপমের সম্পর্কে কী হন?
উত্তর: বিনুদাদা অনুপমের সম্পর্কে পিস্তুতো ভাই হন।

২০। বিনুদাদার বুচি ও দক্ষতার ওপরে অনুপম কতটুকু নির্ভর করতে পারেন?
উত্তর: বিনুদাদার বুচি ও দক্ষতার ওপর গল্পকথক ষোলো আনা নির্ভর করতে পারেন।

২১। গল্পকথকের মতে কার ভাষাটা অত্যন্ত আঁট?
উত্তর: গল্পকথকের মতে বিনুদাদার ভাষাটা অত্যন্ত আঁট।

২২। বিয়ে উপলক্ষে কন্যাপক্ষকে কোথায় আসতে হলো?
উত্তর: বিয়ে উপলক্ষে কন্যাপক্ষকে কলকাতায় আসতে হলো।

২৩। কার চেহারা চোখে পড়বার মতো?
উত্তর: শম্ভুনাথ বাবুর চেহারা চোখে পড়বার মতো।

২৪। গল্পকথকের মতে বেহাই সম্প্রদায়ের কী থাকাটা দোষের?
উত্তর: গল্পকথকের মতে বেহাই সম্প্রদায়ের তেজ থাকাটা দোষের।

২৫। শম্ভুনাথ বাবুর স্মিতহাস্য বন্ধুটি পেশায় কী ছিলেন?
উত্তর: শম্ভুনাথ বাবুর স্মিতহাস্য বন্ধুটি পেশায় ছিলেন উকিল।

২৬। শম্ভুনাথ বাবুর মেয়ের গহনাগুলো কোন আমলের ছিল?
উত্তর: শম্ভুনাথ বাবুর মেয়ের গহনাগুলো তাঁর পিতামহীদের আমলের ছিল।

২৭। মামা অনুপমকে কোথায় গিয়ে বসতে বললেন?
উত্তর: মামা অনুপমকে সভায় গিয়ে বসতে বললেন।

২৮। বরযাত্রীদের খাওয়া শেষ হলে শম্ভুনাথ বাবু কাকে খেতে বললেন?
উত্তর: বরযাত্রীদের খাওয়া শেষ হলে শম্ভুনাথ বাবু অনুপমকে খেতে বললেন।

২৯। কার বিরুদ্ধে চলা অনুপমের পক্ষে অসম্ভব?
উত্তর: মামার বিরুদ্ধে চলা অনুপমের পক্ষে অসম্ভব।

৩০। কল্যাণীকে কার ফটোগ্রাফ দেখানো হয়েছিল?
উত্তর: কল্যাণীকে অনুপমের ফটোগ্রাফ দেখানো হয়েছিল।

৩১। অনুপমের মতে, তার ছবিটি কিসের মধ্যে লুকানো আছে?
উত্তর: অনুপমের মতে, তার ছবিটি একটি বাক্সের মধ্যে লুকানো আছে।

৩২। কে বিয়ে করবে না বলে পণ করেছে?
উত্তর: কল্যাণী বিয়ে করবে না বলে পণ করেছে।

৩৩। মাকে নিয়ে অনুপম কোথায় চলছিল?
উত্তর: মাকে নিয়ে অনুপম তীর্থে চলছিল।

৩৪। তীর্থে যাওয়ার সময় মায়ের ভার কার উপর ছিল?
উত্তর: তীর্থে যাওয়ার সময় মায়ের ভার অনুপমের উপর ছিল।

৩৫। শম্ভুনাথ সেনের মেয়ের নাম কী?
উত্তর: শম্ভুনাথ সেনের মেয়ের নাম কল্যাণী।

৩৬। কার নিষেধ অমান্য করে অনুপম কানপুরে এসেছে?
উত্তর: মামার নিষেধ অমান্য করে অনুপম কানপুরে এসেছে।

৩৭। বিয়ে ভাঙার পর কল্যাণী কোন ব্রত গ্রহণ করেছে?
উত্তর: বিয়ে ভাঙার পর কল্যাণী মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করেছে।

৩৮। কে লজ্জায় অনুপমের বিয়ের কথা তুলতে পারেন না?
উত্তর: মামা লজ্জায় অনুপমের বিয়ের কথা তুলতে পারেন না।

৩৯। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজি কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৮৬১ সালের ৭ মে।

৪০। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখ।

৪১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজি কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট।

৪২। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা মৃত্যু সাল কত?
উত্তর: ১৩৪৮ সালের ২২ শ্রাবণ।

৪৩। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে।

৪৪। রবীন্দ্রনাথের জীবনাবসান ঘটে কোথায়?
উত্তর: জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে।

৪৫। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম কী?
উত্তর: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৪৬। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাতার নাম কী?
উত্তর: সারদা দেবী।

৪৭। বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ছোটগল্প রচয়িতা কে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৪৮। বাংলা ছোটগল্পের শ্রেষ্ঠ শিল্পী কে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৪৯। কত সালে তিনি প্রথম ছোটগল্প রচনা করেন?
উত্তর: ১২৮৪ সালে।

৫০। কত বছর বয়সে তিনি প্রথম ছোটগল্প রচনা করেন?
উত্তর: ১৬ বছর বয়সে।

৫১। কোন গল্প রচনার মাধ্যমে ছোটগল্পে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে?
উত্তর: ভিখারিনী।

৫২। রবীন্দ্রনাথ কতটি ছোটগল্প রচনা করেন?
উত্তর: ৯৫টি।

৫৩। কত বছর বয়সে ‘গল্পগুচ্ছ’ ছোটগল্পগ্রন্থ সংকলিত হয়?
উত্তর: ৬৪ বছর বয়সে।

৫৪। রবীন্দ্রনাথের সর্বশেষ গল্পের নাম কী?
উত্তর: মুসলমানীর গল্প।

৫৫। রবীন্দ্রনাথের গল্পগ্রন্থগুলোর নাম কী?
উত্তর: সে, গল্পসল্প এবং লিপিকা।

৫৬। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প রচনার স্বর্ণযুগ বলা হয় কোন সময়কে?
উত্তর: কুষ্টিয়ায় শিলাইদহে বসবাসকালে।

৫৭। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসগুলো লিখ?
উত্তর: চোখের বালি, গোরা, চতুরঙ্গ, ঘরে বাইরে, শেষের কবিতা।

৫৮। রবীন্দ্রনাথের নাটক কোনটি?
উত্তর: রাজা, অচলায়তন, ডাকঘর, মুক্তধারা, রক্তকরবী।

৫৯। গজানন শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: গজ আনন যার, গণেশ।

৬০। ভারতের গয়া অঞ্চলের অন্তঃসলিলা নদীর নাম কী?
উত্তর: ফল্গু।

৬১। অন্নপূর্ণা শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: অন্নে পরিপূর্ণা, দেবী দুর্গা।

৬২। ‘গন্ডুষ’ অর্থ কী?
উত্তর: এক মুখ বা এককোষ জল।

৬৩। যে মেয়ে নিজেই স্বামী নির্বাচন করে তাকে কী বলে?
উত্তর: স্বয়ংবরা।

৬৪। গুড়গুড়ি শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: আলবোলা/ফরাস/দীর্ঘ নলযুক্ত হুকাবিশেষ।

৬৫। উমেদারি অর্থ কী?
উত্তর: প্রার্থনা/ চাকরির আশায় অন্যের কাছে ধরনা দেয়া।

৬৬। কোন্নগর কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: কলকাতার নিকটস্থ একটি স্থান।

৬৭। মনু কে?
উত্তর: বিধানকর্তা বা শাস্ত্রপ্রণেতা মুনিবিশেষ।

৬৮। মনু সংহিতা কী ধরনের গ্রন্থ?
উত্তর: মনু প্রণীত মানুষের আচরণবিধি সংক্রান্ত গ্রন্থ।

৬৯। প্রজাপতি কে?
উত্তর: জীবের স্রষ্টা ব্রহ্মা, যিনি বিয়ের দেবতা।

৭০। পঞ্চশর কী?
উত্তর: মদনদেবের ব্যবহার্য পাঁচ ধরনের বাণ।

৭১। কন্সর্ট কী?
উত্তর: নানা রকম বাদ্যযন্ত্রের ঐকতান।

৭২। সওগাদ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উপঢৌকন, ভেট।

৭৩। কষ্টিপাথর কী?
উত্তর: যে পাথরে ঘষে সোনার খাঁটিত্ব যাচাই করা হয়।

৭৪। মকর বা কুমিরের মুখের অনুরূপকে কী বলে?
উত্তর: মকরমুখো।

৭৫। শানাই, ঢোল ও কাঁসি- এই তিন বাদ্যযন্ত্রে সৃষ্ট ঐকতান একত্রে কী বলে?
উত্তর: রসনচৌকি।

৭৬। অভ্র কী?
উত্তর: এক ধরনের খনিজ ধাতু।

৭৭। অভ্রের ঝাড় কাকে বলে?
উত্তর: অভ্রের তৈরি ঝাড়বাতি।

৭৮। মহানির্বাণ কী?
উত্তর: সব রকমের বন্ধন থেকে মুক্তি।

৭৯। পুরাণে বর্ণিত শেষ যুগের নাম কী?
উত্তর: কলিযুগ।

৮০। প্রদোষ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: সন্ধ্যা।

৮১। মৃদঙ্গ কী?
উত্তর: মাটির খোলের দুপাশে চামড়া লাগানো এক ধরনের বাদ্যযন্ত্র।

৮২। গানের যে অংশ দোহাররা বারবার পরিবেশন করে তাকে কী বলে?
উত্তর: ধুয়া।

৮৩। জড়িমা শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: আড়ষ্টতা, জড়ত্ব।

৮৪। কিশলয়যুক্ত কচি ডালকে কী বলে?
উত্তর: মঞ্জুরী।

৮৫। একপত্তন অর্থ কী?
উত্তর: একপ্রস্থ।

৮৬। কানপুর কী?
উত্তর: ভারতের একটি শহর।

৮৭। ‘অপরিচিতা’ কোন পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়?
উত্তর: প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত মাসিক ‘সবুজপত্র’ পত্রিকায়।

৮৮। ‘অপরিচিতা’ প্রথম প্রকাশিত হয় কত সালে?
উত্তর: ১৩২১ বঙ্গাব্দের (১৯১৪) কার্তিক সংখ্যায়।

৮৯। ‘অপরিচিতা’ প্রথম গ্রন্থভুক্ত হয় রবীন্দ্রনাথের কোন গল্প সংকলনে?
উত্তর: ‘গল্পসপ্তক’ এ এবং পরে ‘গল্পগুচ্ছ’ তৃতীয় খণ্ড (১৯২৭)।

৯০। গল্পে যে নারীর কাহিনি বর্ণিত হয়েছে তার নাম কী?
উত্তর: কল্যাণী।

৯১। ‘অপরিচিতা’ কার জবানিতে লেখা গল্প?
উত্তর: উত্তম পুরুষের জবানিতে লেখা গল্প।

৯২। ‘মনস্তাপে ভেঙে পড়া এক ব্যক্তিত্বহীন যুবকের স্বীকারোক্তির গল্পের নাম কী?
উত্তর: অপরিচিতা।

৯৩। গল্পকথকের বয়স কত?
উত্তর: সাতাশ বছর।

৯৪। সুন্দর চেহারার জন্য পণ্ডিতমশায় গল্প কথককে তুলনা করতেন কীসের সাথে?
উত্তর: শিমুল ফুল ও মাকাল ফলের সাথে।

৯৫। কন্যাকে আশীর্বাদ করেছিলেন কে?
উত্তর: বিনুদাদা অনুপমের পিসতুতো ভাই।

৯৬। গল্পকথকের পিতার পেশা কী?
উত্তর: উকিল।

৯৭। গল্পকথকের পিতার অবকাশ হয় কখন?
উত্তর: মৃত্যুতে।

৯৮। গল্পকথক কার হাতে মানুষ?
উত্তর: মায়ের হাতে।

৯৯। অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাইটি কে?
উত্তর: গল্পকথক।

১০০। অনুপমের আসল অভিভাবক কে?
উত্তর: মামা।

১০১। মামা গল্পকথকের চেয়ে কত বড়?
উত্তর: ছয় বছর।

১০২। কীসের মতো মামা তাদের সংসারকে শুষে নিয়েছে?
উত্তর: ফল্গুর বালির মতো।

১০৩। মামার আসক্তি কীসের প্রতি?
উত্তর: টাকার প্রতি।

১০৪। অনুপমের মামা কেমন বেয়াই চায়?
উত্তর: যার টাকা নেই কিন্তু টাকা দিতে কসুর করে না।

১০৫। গল্প কথকের বন্ধুর নাম কী?
উত্তর: হরিশ।

১০৬। হরিশ কাজ করে কোথায়?
উত্তর: কানপুরে।

১০৭। গল্প কথক কি পাশ?
উত্তর: এম এ।

১০৮। বসন্ত বাতাসে বকুলবনের নব পল্লবরাশির মতো কাঁপে গল্প কথকের কী?
উত্তর: শরীর ও মন।

১০৯। হরিশ কেমন মানুষ?
উত্তর: রসিক।

১১০। হরিশ আসর জমাতে কেমন?
উত্তর: অদ্বিতীয়া।

১১১। মেয়ের চেয়ে কার খবরটা গুরুতর?
উত্তর: বাপের।

১১২। কন্যার বাপ কোথায় বাস করেন?
উত্তর: পশ্চিমে।

১১৩। বিয়ের সময় মেয়ের বয়স কত ছিল?
উত্তর: পনেরো।

১১৪। কলকাতার বাহিরে বাকি যে পৃথিবীটা আছে সমস্তটাকেই মামা কার অন্তর্গত জানেন?
উত্তর: আন্দামান দ্বীপের অন্তর্গত।

১১৫। জীবনে একবার মামা কোথায় বিশেষ কাজে গিয়েছিলেন?
উত্তর: কোনুগর।

১১৬। কন্যাকে আশীর্বাদ করার জন্য পাঠানো হয়েছে কাকে?
উত্তর: গল্পকথকের পিসতুতো ভাই বিনু দাদাকে।

১১৭। বিনুদাদার ভাষাটা কেমন?
উত্তর: অত্যন্ত আঁট।

১১৮। চমৎকার শব্দকে বিনুদাদা কী বলেন?
উত্তর: চলনসই।

১১৯। গল্পকথকের ভাগ্যে প্রজাপতির সাথে বিরোধ কার নাই?
উত্তর: পঞ্চশরের।

১২০। কন্যার পিতার নাম কী?
উত্তর: শম্ভুনাথ বাবু।

১২১। কন্যার পিতা বিয়ের কত দিন পূর্বে গল্পকথককে দেখেন?
উত্তর: তিন দিন।

১২২। শম্ভুনাথবাবুর বয়স কত?
উত্তর: চল্লিশের কিছু এপারে বা ওপারে।

১২৩। শম্ভুনাথবাবু কেমন প্রকৃতির লোক ছিলেন?
উত্তর: নিতান্ত নির্জীব।

১২৪। বিয়ের সময় অনুপমের বয়স কত ছিল?
উত্তর: তেইশ।

১২৫। বিয়ে ভাঙার পর পুনরায় কল্যাণীর সাথে যখন অনুপমের দেখা হয় তখন তার বয়স কত?
উত্তর: সাতাশ।

অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

১। অনুপমের বিবাহযাত্রার বর্ণনা দাও।
অপরিচিতা’ গল্পে লেখক ব্যঙ্গরসাত্মক ভাষায় অনুপমের বিবাহযাত্রার বর্ণনা দিয়েছেন।
‘অপরিচিতা’ গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র অনুপমের বিয়ে ঠিক হয়েছে শম্ভুনাথ সেনের কন্যা কল্যাণীর সাথে। কনেপক্ষের কাছে নিজেদের ধনের অহংকার জাহির করতেই যেন অনুপম ব্যান্ড, বাঁশি, শকের কন্সর্ট প্রভৃতি সমেত যেখানে যত রকম উচ্চ শব্দ আছে, সমস্ত একসঙ্গে মিশিয়ে বর্বর কোলাহলের মত্ত হাতি দিয়ে সংগীত সরস্বতীর পদ্মবন দলিত বিদলিত করে বিয়ের জন্য যাত্রা করে। আংটিতে হারেতে জরি-জহরাতে অনুপমের শরীর এমন হয়েছিল যেন কোনো গহনার দোকান নিলামে চড়েছে বলে মনে হলো। তাদের ভবিষ্যৎ জামাইয়ের মূল্য কত, সেটা সারাদেহে কিছুটা স্পষ্ট করে শ্বশুরের সঙ্গে মোকাবেলা করতে চলেছে। অনুপমের বিবাহযাত্রা ছিল এমনই রুচিহীন ও ব্যঙ্গাত্মক।

২। “কিন্তু ভাগ্য আমার ভালো, এই তো আমি জায়গা পাইয়াছি”- এর অনুভূতির কারণ
এই উক্তিটি অনুপমের সেই অনুভূতিকে প্রকাশ করে, যেখানে সে মনে করে, কল্যাণীর প্রতি তার মনের ভেতর একটি ‘জায়গা’ তৈরি হয়েছে। কল্যাণী তার আশায় বুক বেঁধে রয়েছে, এবং অনুপম মনের মধ্যে একটি জায়গা দখল করে আছে তার প্রতি প্রেম ও আকর্ষণের কারণে। গল্পে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরও অনুপম তার আশেপাশে থেকে থাকে, যেন সে কল্যাণীর হৃদয়ের কোনো একটি স্থান বা জায়গা অর্জন করেছে, যে স্থান সে মনেপ্রাণে দখল করে নিয়েছে। তার এই অনুভূতি মূলত দুঃখবোধ ও আক্ষেপের মিশ্রণ, কারণ তার জীবনে কল্যাণীই ছিল একমাত্র প্রকৃত মঙ্গলকামী নারী।

৩। অনুপমের মামার মন কীভাবে নরম হলো?
অনুপমের মামা তার যৌতুকলোভী মনোভাব নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু যখন তিনি কল্যাণীর পিতা শম্ভুনাথ সেনের আত্মমর্যাদাবোধ ও দৃঢ়চেতনা দেখে, তার মন নরম হয়ে যায়। শম্ভুনাথ সেন তার কন্যার গহনা পরীক্ষা করার জন্য অনুপমের মামার দ্বারা আনা সেকরা (তুলনামূলকভাবে বাজে পরীক্ষা) দেখে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন এবং তৎক্ষণাৎ বিয়ে ভেঙে দেন। শম্ভুনাথ সেনের এই দৃঢ়তা এবং আত্মমর্যাদা দেখে অনুপমের মামা তার ভুল বুঝতে পারেন এবং তার মন নরম হয়ে যায়। এই ঘটনাটি অনুপমের মামার আত্মমর্যাদা ও মূল্যবোধের উপলব্ধি লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

৪। অনুপমের মামা সেকরাকে বিয়ে বাড়িতে এনেছিল কেন?
অনুপমের মামা সেকরাকে বিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন কারণ তিনি কল্যাণীর গহনা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, কল্যাণীর গহনায় কোনো ধরনের ত্রুটি বা কমতি থাকতে পারে, এবং সে কারণে তিনি সেকরা নিয়ে এসে গহনার মান পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। শম্ভুনাথ সেনের দৃঢ় প্রতিরোধ এবং তার সম্মানবোধের প্রতি আঘাত হানায় মামা নিজের ভুল বুঝতে পারেন, এবং এর পরেই তিনি নরম হন এবং বিয়ে না হওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নেন।

৫। “আমার ভাগ্যে প্রজাপতির সঙ্গে পঞ্চশরের কোনো বিরোধ নাই”- এর তাৎপর্য
এই উক্তিটির মাধ্যমে অনুপম তার নিজের মনোভাব প্রকাশ করতে চায়, যেখানে সে মনে করে যে তার বিবাহ জীবনে কোনো বাধা নেই। তিনি মনে করেন, প্রজাপতির মতো সুরক্ষা ও সৌন্দর্যের প্রতীক—কথাটি তার জীবনে পুরোপুরি প্রযোজ্য। যখন তার বিয়ে কানপুরে ঠিক হয়, তার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও, সে কল্যাণীকে সরাসরি দেখার সুযোগ পায় না। এর মাধ্যমে অনুপম মনে করে, বিবাহ দেবতা তার প্রতি সদয়, কারণ সে কিছুই না জানলেও, তার ভাগ্যে কল্যাণীকে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৬। “ঠাট্টার সম্পর্কটাকে স্থায়ী করিবার ইচ্ছা আমার নাই”- উক্তিটি কোন প্রসঙ্গে করা হয়েছে?
এই উক্তিটি কল্যাণীর পিতা শম্ভুনাথ সেন তার নিজের আত্মসম্মান রক্ষার জন্য অনুপমের মামাকে উদ্দেশ্য করে বলেন। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে, অনুপমের মামা কল্যাণীর গহনা পরীক্ষা করতে সেকরা নিয়ে আসেন, যা শম্ভুনাথ সেনের কাছে অত্যন্ত অশোভন এবং অপমানজনক ছিল। তিনি উপলব্ধি করেন যে, বরপক্ষের এই ধরনের মানসিকতা তাঁর কন্যার জন্য অপমানজনক। এই কারণে শম্ভুনাথ সেন কৌশলে বরপক্ষকে বিদায় জানান, এবং মামার কথার প্রতি তার প্রত্যুত্তর হিসেবে তিনি উক্তিটি করেন—এটি একধরনের আক্রমণ ও প্রতিবাদ।

৭। “অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাইটি” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
এই উক্তিটি অনুপমকে ব্যঙ্গ করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। ‘অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাইটি’ বলতে আসলে অনুপমের অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা এবং পিতৃতন্ত্রের প্রতি তার অবিচল আনুগত্যকে বোঝানো হয়েছে। গজানন বা কার্তিকেয় ছোট ছিলেন, আর মাতৃস্নেহে বড় ছিলেন—এমন তুলনা দিয়ে অনুপমের চরিত্রকে প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে সে কোনো ধরনের উদ্যোগ বা শক্তি প্রদর্শন করতে পারে না এবং তার জীবনে পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অভাব রয়েছে। তিনি যেন একজন শিশুর মতো, যার কোনো স্বাতন্ত্র্য নেই এবং মায়ের কোলেই আশ্রয় খুঁজে।

৮। “ভালো-মানুষ হওয়ার কোনো ঝঞ্ঝাট নেই” ব্যাখ্যা কর।
এই উক্তিটি অনুপমের জীবনধারা ও চরিত্রের সাদাসিধা প্রকৃতি প্রতিফলিত করে। অনুপম এমন একজন মানুষ যিনি ভালো-মানুষ হওয়ার কোনো বিশেষ প্রয়াস করেন না, কারণ তার মধ্যে কোনো খারাপ অভ্যাস বা নেতিবাচক দিক নেই। তার জন্য ভালো-মানুষ হওয়া এমন একটি ব্যাপার, যা সে স্বাভাবিকভাবেই হয়ে থাকে—সে মাদকাসক্ত নয়, তামাক খায় না, এবং বড়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই তার কাছে ভালো-মানুষ হওয়ার কোনো অতিরিক্ত ঝামেলা বা কঠিনতা নেই। এটি আসলে অনুপমের সহজ সরল জীবনধারা ও তার ব্যক্তিত্বের অনুপম বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরে।

৯। কল্যাণীর ‘মাতৃআজ্ঞা’র ধরন আলোচনা কর
কল্যাণীর ‘মাতৃআজ্ঞা’ হলো দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করা। শম্ভুনাথ সেনের সঙ্গে বিয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনুপমের মামার অর্থলোভী মনোভাব দেখে কল্যাণী তার ভবিষ্যৎ জীবন সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর কল্যাণী পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতি তীব্র ঘৃণা অনুভব করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে বিয়ে করবে না। দেশমাতৃকার সেবা, বিশেষত মেয়েদের শিক্ষা ও উন্নতির জন্য নিজেকে নিবেদিত করার ব্রত গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে সে সমাজের অনুচিত পরম্পরা ও সামাজিক অসঙ্গতিগুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন ব্যক্তিত্বের চিহ্ন রাখে।

১০। “ঠাট্টা তো আপনিই করিয়া সারিয়াছেন”- বুঝিয়ে দাও।
শম্ভুনাথ সেন অনুপমের মামাকে আলোচ্য কথাটি বলেন। কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ। তিনি কন্যার বিয়েতে বরপক্ষের চাহিদার অতিরিক্ত গহনা কন্যাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু অনুপমের মামা কন্যার সব গয়না সেকরা দ্বারা পরীক্ষা করান এবং গয়নার একটি তালিকা প্রস্তুত করেন যাতে করে পরবর্তী সময়ে গয়নার কোনো হেরফের না হয়। অনুপমের মামার এ ধরনের আচরণে শম্ভুনাথ সেনের ব্যক্তিত্বে তীব্র আঘাত লাগে। তাই কৌশলে তিনি সবাইকে রাতের খাবার খাইয়ে দেন এবং বরপক্ষকে গাড়ি ডাকার কথা বলেন। এমন আচরণ দেখে অনুপমের মামা শম্ভুনাথ সেনকে বলেন, ‘ঠাট্টা করিতেছেন নাকি?’ অনুপমের মামার প্রশ্নের প্রতিউত্তরে শম্ভুনাথ সেন প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।

১১। “ওহে, মেয়ে যদি বল একটি খাসা মেয়ে আছে।” কে, কী প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করেছিলেন?
এই উক্তিটি অনুপমের বন্ধু হরিশ করেছিলেন। হরিশ কলকাতায় আসেন ছুটিতে, এবং অনুপমের সঙ্গে তার বিয়ের প্রসঙ্গে কথোপকথন হয়। অনুপমের বয়স ২৭, এবং তার জীবন বেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রিত—তার মামা, মা, সবকিছুই তাকে ঘিরে রেখেছে। বিয়ের প্রসঙ্গে হরিশ jokingly বলেন যে, “ওহে, মেয়ে, যদি বল একটি খাসা মেয়ে আছে।” এর মাধ্যমে হরিশ অনুপমের ভবিষ্যৎ বিয়ের ব্যাপারে মন্তব্য করেন এবং কিছুটা মজা করেন।

১২। মামা সেকরাকে বিয়ে বাড়িতে কেন এনেছিল?
মামা সেকরাকে বিয়ে বাড়িতে এনেছিল গহনার খাঁটি বা নকল হওয়া যাচাই করার জন্য। শম্ভুনাথ সেন কন্যার বিয়েতে নগদ পণের সঙ্গে কিছু গহনা দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অনুপমের মামা সন্দেহ করেছিলেন যে, গহনা হয়তো সত্যি নয় বা এর মধ্যে কোনো ত্রুটি থাকতে পারে। তাই তিনি সেকরা নিয়ে আসেন, যিনি গহনা পরীক্ষা করে তার আসলত্ব নিশ্চিত করেছিলেন। এই ঘটনা পুরোপুরি শম্ভুনাথ সেনের আত্মসম্মানকে আঘাত করে, কারণ এটি ছিল বরপক্ষের কৃচ্ছতাবোধ এবং অসহিষ্ণু মনোভাবের প্রকাশ।

১৩। গোড়াতেই এস্পার-ওপার হতো কেন? ব্যাখ্যা কর।
এস্পার-ওপার বা বিবাদ গোড়াতেই হতো যদি শম্ভুনাথ বাবুর উকিল বন্ধুটি বরপক্ষের প্রতি বিশেষ খাতির না করতেন। শম্ভুনাথ বাবুর এক সময় প্রচুর অর্থ থাকলেও বর্তমানে তার আর্থিক অবস্থান ততটা ভালো ছিল না। বরপক্ষ তাদের উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আয়োজনের প্রত্যাশা করেছিল, কিন্তু শম্ভুনাথ সেনের অবস্থান অনুযায়ী আয়োজন ছিল সীমিত এবং মাঝারি মানের। ফলে, উকিল বন্ধুটি যদি বরপক্ষকে যথাযথ সম্মান না জানাতেন, তবে বিয়েটি শুরুতেই তীব্র বিরোধের সম্মুখীন হতো।

১৪। ধনীর কন্যা অনুপমের মামার পছন্দ নয় কেন?
ধনীর কন্যা অনুপমের মামার পছন্দ নয়, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে ধনী পরিবারের মেয়েরা সংসারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং তারা স্বামীর সংসারে ন্যায্য অধিকার চায়। মামা মনে করেন, ধনী মেয়েরা সংসারের চাহিদা এবং অপমান সহ্য করতে পারবেন না, কারণ তারা পারিবারিক মর্যাদা ও সম্মান নিয়ে অনেক বেশি সচেতন থাকে। তিনি এমন একটি মেয়ে চান, যিনি সহজেই সংসারের সমস্ত কষ্ট সহ্য করবেন এবং নিজেকে দমন করবেন। গরিবের মেয়েরা এই কারণেই তার পছন্দ—তারা নিরবভাবে সব কিছু সহ্য করবে।

১৫। মেয়ের বয়স পনেরো শুনে অনুপমের মামার মন ভার হলো কেন?
মেয়ের বয়স পনেরো শুনে অনুপমের মামার মন ভার হয়ে যায়, কারণ সে সময়কার সামাজিক রীতিতে আট থেকে দশ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া সাধারণ ছিল। যদি ১৫ বছর বয়সেও মেয়ের বিয়ে না হত, তখন তার পরিবারে কোনো ধরনের শংকা বা দোষের ইঙ্গিত পাওয়া যেত। মামা মনে করেন যে, কল্যাণীর বয়স যদি ১৫ হয়, তবে তার বংশে কোনো না কোনো সমস্যা থাকতে পারে, যা সম্ভবত তার বিয়েতে বিলম্ব ঘটানোর কারণ। এটি ছিল সেই সময়কার সমাজের একটি নেতিবাচক মনোভাব।

১৬। কোনো কিছুর জন্যই অনুপমকে কোনো ভাবনা ভাবতে হয় না কেন?
অনুপমকে কোনো কিছুর জন্য ভাবনা ভাবতে হয় না, কারণ তার জীবনের সমস্ত দায়িত্ব তার মামা বহন করেন। তার বাবা বেঁচে নেই, এবং মা থাকলেও তার আসল অভিভাবক মামাই। মামা সংসারের সব কিছু পরিচালনা করেন এবং নিজের বিচক্ষণতার মাধ্যমে তিনি অনুপমের জীবন ও ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রেখেছেন। মামার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়ার কারণে, অনুপমের জন্য কোনো কিছু চিন্তা করার বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

১৭। কল্যাণীর পিতার আর্থিক অবস্থা ব্যাখ্যা কর।
কল্যাণীর পিতার আর্থিক অবস্থা অপ্রতুল ছিল। পূর্বপুরুষদের আমলে তার পরিবার প্রাচুর্যপূর্ণ ছিল, তবে বর্তমান অবস্থায় তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। শম্ভুনাথ সেনের পূর্বপুরুষদের সময় বংশের সম্পদ ছিল, কিন্তু এখন তা নিঃশেষ হয়ে গেছে, যদিও কিছু সামান্য বাকি ছিল। তিনি পশ্চিমে গিয়ে বসবাস করছেন, এবং সেখানে তিনি গরিব গৃহস্থের মতো জীবন যাপন করছেন। তার আর্থিক অবস্থা এতটাই দুর্বল ছিল যে, মেয়ে বিয়ের জন্য কিছু খোঁজার বা সামাজিক সম্মান রক্ষার জন্য প্রাচীন ঐতিহ্য ও মর্যাদাকে ত্যাগ করেছেন।

আরও পড়ুনঃ বিলাসী গল্পের মূল বিষয়বস্তু সহজ ভাষায়

অপরিচিতা গল্পের MCQ | বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর

Related Posts

Leave a Comment