৭ম শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায় (প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগ করি)

আজকের পোস্টে ৭ম শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায়ের সবগুলো ছক করে দেখাবো । আজকে আমরা শিখবো প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে কিভাবে যোগাযোগ করতে হয় । পোস্টের মধ্যে কিছু বুঝতে না পারলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে পারেন ।

৭ম শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায়ের সবগুলো ছক

প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগ করি

যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিবেচ্য

যে কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে অন্যের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত বলে তোমার মনে হয়, সেগুলো নিচে লেখো।


ক) মোবাইলে অগ্নিনির্বাপন কর্মীদের ফোন নাম্বার সেভ করে রাখতে হবে । যাতে বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আমরা তাদের সাথে তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করতে পারি ।

খ) খেলার মাঠে আমাদের বন্ধুদের মাঝে ঝগড়ার সৃষ্টি হলে আমি তাদের সাথে কথা বলে সবার মতামত নিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিতে পারি ।

গ) বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম রাখতে হবে অথবা নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম থাকতে হবে । যাতে বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে সহজে যোগাযোগ করতে পারি ।

মর্যাদা অনুযায়ী সর্বনাম ও ক্রিয়ার প্রয়োগ

সর্বনাম ও ক্রিয়াপদগুলো মর্যাদা অনুযায়ী ঠিক করে নিচের খালি জায়গায় লেখো।


আমার নানা একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাকে নিয়ে আমার বড় মামা জেলা সদরের
হাসপাতালে গেলেন। হাসপাতালের ডাক্তার বলেছিলেন, রোগীকে কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। ওই সময় নানা তিন-চার দিন হাসপাতালে ছিলেন। মা হাসপাতালে থেকে নানার সেবা করতেন

একদিন বিকালে আমি বড়ো মামার সাথে হাসপাতালে গিয়েছিলাম নানাকে দেখতে। এত বড়ো হাসপাতাল আমি আগে দেখিনি। জরুরি বিভাগের সামনে একটু পরপরই রোগী আসছে। আর সেখানকার ডাক্তার-নার্স সেসব রোগী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। বেশি লোকের ভিড় দেখে দারোয়ান বারবার বলছেন, ‘আপনারা এখানে ভিড় করবেন না।’

নানা আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন। তবু তিনি বললেন, ‘তুই আবার আসতে গেলি কেন?’ নানা আমাকে আদর করে তুই করে বলেন। আমি ছোটোবেলায় নানাকে তুমি করে বলতাম। এখন তাকে আপনি করে বলি। আমি নানার কথার উত্তরে বললাম, ‘নানাভাই, আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন।’
খানিক বাদে একজন নার্স এসে নানাকে ওষুধ খাইয়ে গেলন। সে বললেন কাল নানাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেবেন। সন্ধ্যার আগে আগে বড়ো মামা যাওয়ার জন্যে উঠে দাঁড়ালেন। তারপর বললেন, ‘চলো, এবার যাই; কাল সকালে আবার এসো।’ আমি বললাম ‘চলেন, মামা।’

ভাষিক যোগাযোগ ও অভাষিক যোগাযোগ

দৈনন্দিন জীবনে তুমি চর্চা করো এমন কয়েকটি ভাষিক যোগাযোগের উদাহরণ দাও।


আম্মুর সাথে স্কুল এবং বাসার বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলি । আব্বুর সাথে বিদেশে মোবাইলে কথা বলি । অবসর সময়ে গান শুনি ও বই পড়তে ভালোবাসি । স্কুলের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করি । প্রতিদিন সকালে আমি সংবাদপত্র পড়ি । যখন কোন কিছু  বিরক্ত মনে হয় তখন আমি টিভি দেখি । এছাড়াও আমি স্কুলের পড়ার বিষয়ে  আমার সহপাঠীদেরকে মোবাইলে বার্তা পাঠাই ।

দৈনন্দিন জীবনে তুমি চর্চা করো এমন কয়েকটি অভাষিক যোগাযোগের উদাহরণ দাও।


অসুস্থ হলে আম্মুর সাথে ইশারায় কথা বলি । ক্লাসের বন্ধুদের সাথে মাঝে মাঝে শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করি । দাদু কম শুনতে পায় সেজন্য হাত ও চোখের ইশারা ব্যবহার করি । আমার ছোট বোন ছবি ও সংকেত ব্যবহার করে আমার সাথে কথা বলে । এছাড়াও শারীরিক অঙ্গভঙ্গি এবং চোখের ইশারা দেখে আমি বুঝতে পারি ছোট বোন আমার সাথে রাগ করছে কিনা ।

প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগ

পড়ে কী বুঝলাম

শ্রেণিশিক্ষক সোমা জাহান ক্লাসে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলছিলেন?


সোমা জাহান ক্লাসে নোটিশ বোর্ড সম্পর্কে কথা বলছিলেন । নোটিশ বোর্ডে লেখা আছে সামনের সপ্তাহে স্কুলে বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে ।

সোহেল কেন পলাশের কথায় বিরক্ত হয়েছিল?


সোহেল পলাশের কথায় বিরক্ত হওয়ার কারণ ছিল পলাশ প্রসঙ্গের বাইরে থেকে কথা বলতেছিল । সোহেল ক্রিকেট দল গঠনে ব্যস্ত ছিল এবং সবাই এটি প্রাসঙ্গিক মনে করল। কিন্তু পলাশ বারবার সোহেলকে তার মামার কথা জিজ্ঞেস করায় সোহেল অপ্রাসঙ্গিক মনে করে বিরক্ত বোধ করছিল ।

পলাশ যা জানতে চাচ্ছিল, তা আর কোন উপায়ে সে জানতে পারত?


পলাশ যা জানতে চাচ্ছিল তা সোহেলের ক্রিকেট দল গঠনের পর জিজ্ঞেস করলে প্রাসঙ্গিক হত । সোহেল তখন বিরক্ত বোধ করত না এবং পলাশের প্রশ্নের উত্তর দিত । সবার সামনে জিজ্ঞাসা না করেও জানতে পারতো ।

সোহেল কীভাবে পলাশকে প্রসঙ্গের মধ্যে আনার চেষ্টা করতে পারত?


পলাশ সোহেলকে তার মামার কথা জিজ্ঞেস করায় সোহেল উত্তর দিতে চাইলো না । কারণ সে ক্রিকেট দল গঠনে ব্যস্ত । পলাশ প্রসঙ্গের মধ্যে ছিল না । সোহেল যদি তার মামার কথা পলাশকে বুঝিয়ে বলতো তাহলে তাকে প্রসঙ্গের মধ্যে আনতে পারতো ।

পলাশ কীভাবে সোহেলের সাথে কথা বললে তা প্রাসঙ্গিক হতো?


পলাশ সোহেলকে প্রশ্ন করেছিল ক্রিকেট দল গঠনের সময় যা অপ্রাসঙ্গিক । পলাশ যদি আগে প্রশ্ন করতো অথবা ক্রিকেট দল গঠনের পর প্রশ্ন করত তাহলে তা প্রাসঙ্গিক হত । অথবা সোহেল যখন একা থাকত তখন প্রশ্ন করলে সেটাও প্রাসঙ্গিক হত ।

প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোন কোন দিক বিবেচনায় রাখতে হয় বলে তুমি মনে করো?


প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রথমত খেয়াল রাখতে হয়, যার সাথে তুমি যোগাযোগ করবে সে প্রস্তুত কিনা । তুমি প্রশ্ন করলে সে প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত কিনা অথবা এমনভাবে কোন কথা বলা যাবে না যা সে উত্তর দিতে তখন প্রস্তুত নয় । একটি বিষয়ে আলোচনার মধ্যে অন্য আরেকটি বিষয়ের আলোচনা করা যাবে না । এতে করে প্রাসঙ্গিক কথা অপ্রাসঙ্গিক কথার মধ্যে ঢুকে যাবে ।

অথবা

কোনো কিছু নিয়ে কথা বলার সময়ে বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর রাখতে হয়। বিষয়ের মধ্যে থেকে কথা বলাকে প্রাসঙ্গিক কথা বলে। আর বিষয়ের বাইরের কথাকে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে। প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগ করতে পারা একটি দরকারি যোগ্যতা। দুজন বা কয়েকজন মিলে আলাপের সময়ে বক্তা কিংবা শ্রোতাকে প্রসঙ্গের মধ্যে ধরে রাখতে হয়।

প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক কথা খুুঁজি

৭ম শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায়

প্রাসঙ্গিক কথা

অনেকদিন থেকেই ইচ্ছা ছিল পুরাতন কোনো ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরতে যাব। বাবার মুখে অনেকবার
লালবাগ কেল্লার কথা শুনেছি। ঠিক করা হলো সবাই মিলে সেখানে যাব। আমাদের যাওয়ার কথা শুনে
আমার মামাতো বোনও যেতে চাইল। ওর নাম শেফালি।শেফালি লালবাগ কেল্লা দেখতে চায় শুনে বাবা হেসে বললেন, ‘ঠিক আছে।’ আমরা টিকিট কেটে কেল্লার ভিতরে ঢুকলাম। ওখানে যেতে যেতেই বাবা বলেছিলেন, লালবাগের কেল্লা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি মোগল আমলে তৈরি করা একটি দুর্গ। ১৬৭৮ সালে মোগল সুবেদার আজম শাহ দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। আজম শাহ ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র। বাবা আরও বলেছিলেন, দুর্গের কাজ শেষ হওয়ার আগেই আজম শাহকে দিল্লি চলে যেতে হয়। এরপর ১৬৮০ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁ দুর্গ তৈরির কাজ আবার শুরু করেন। কিন্তু ১৬৮৪ সালে শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরীবিবি হঠাৎ মারা যান। শায়েস্তা খাঁ তখন দুর্গের কাজ থামিয়ে দেন।

অপ্রাসঙ্গিক কথা


শেফালিকে নিয়ে অনেক মজার মজার ঘটনা আছে। একবার যেমন, আমার মামা ওকে বলেছিলেন, ‘শেফালি, তুমি কি আমার জন্য এক কাপ চা বানিয়ে আনতে পারবে?’ শেফালি কী বুঝল কে জানে! একটা ডিম ভাজার প্রস্তুতি নিতে লাগল। তা দেখে আমার মামি হাসতে লাগলেন। শেফালি অনেক লজ্জা পেয়েছিল সেদিন।

Related Posts