“শব্দ থেকে কবিতা” এটি হুমায়ুন আজাদের একটি অত্যন্ত প্রাঞ্জল, সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক গদ্য, যেখানে তিনি কবিতা কী, কীভাবে লেখা হয় এবং কে কবি হতে পারে এসব মৌলিক প্রশ্নের সহজবোধ্য ও মোহনীয় উত্তর দিয়েছেন। এই পোস্টে শব্দ থেকে কবিতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
শব্দ থেকে কবিতা সৃজনশীল প্রশ্ন
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] মাহফুজা চমৎকার কবিতা লেখেন। জীবনে বিভিন্ন অংশের স্মৃতিকে শব্দের ভিতর সাজাতে পছন্দ তাঁর। মাহফুজার ভাইপো নির্ঝর তাঁকে খুব পছন্দ করে। কারণ তিনি তাঁর ভাইপো নির্ঝরকে প্রায়ই নানা রকম কবিতা শোনান। নির্ঝর ফুফুকে পেলেই ছড়া শোনার বায়না ধরে। একদিন নির্ঝর তাকে বলে “ফুফু তুমি এতো সুন্দর কবিতা কীভাবে’ লেখ?” মাহফুজা উত্তর দেন, “তুমি তোমার চারপাশের সুন্দর স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুকে ধারণ করে রাখবে, দেখবে তুমিও একদিন চমৎকার কবিতা লিখতে পারবে।” ক. কবিতা লেখার জন্য প্রথমেই কোনটি প্রয়োজন? খ. ‘কবিতার জন্য দরকার শব্দ- রংবেরঙের শব্দ’- বুঝিয়ে লেখ। গ. কবিতার বিষয়ে নির্ঝরের প্রশ্নের উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে- লেখ। ঘ. মাহফুজার উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের মূলভাবকে ধারণ করে কি? যুক্তিসহ বিচার কর। |
উত্তরঃ
ক. কবিতা লেখার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন শব্দ।
খ. কবিতা লেখার জন্য শব্দ জানার দরকার—এই কথাটি বলে প্রাবন্ধিক বোঝাতে চেয়েছেন যে শব্দ ছাড়া কবিতা হয় না।
কবিরা একটা শব্দের পাশে আরেকটা শব্দ বসান, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা শব্দ মিলিয়ে কবিতা তৈরি করেন। কোনো জিনিস বানাতে গেলে তো অনেক কিছুর দরকার হয়, যেমন ঘুড়ি বানাতে লাগে লাল-নীল কাগজ, সুতো, বাঁশের টুকরো; ঠিক তেমনি কবিতা বানাতেও কিছু জিনিস লাগে। আর সেই জিনিসগুলোর মধ্যে সবার আগে দরকার শব্দ—রংবেরঙের শব্দ।
গ. কবিতার বিষয়ে নির্ঝরের প্রশ্নের উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে তার ফুফুর উত্তরের মাধ্যমে।
সাহিত্যের নানা ধরনের মধ্যে কবিতা একটি। কবিতা লেখার জন্য শব্দ লাগে, স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা লাগে, শব্দের সুর বোঝার ক্ষমতা লাগে। যে এগুলো ঠিকমতো মেলাতে পারে, সেই কবিতা লিখতে পারে।
উদ্দীপকে নির্ঝর তার ফুফু মাহফুজাকে জিজ্ঞেস করেছে, তিনি এত সুন্দর কবিতা কীভাবে লেখেন। নির্ঝরের এই প্রশ্নের উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে এবং উদ্দীপকেও প্রকাশ পেয়েছে। দুই জায়গাতেই শব্দের গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। প্রবন্ধের লেখক বলেছেন, কবিরা একটা শব্দের পাশে আরেকটা শব্দ বসিয়ে, একটা শব্দের সঙ্গে আরেকটা শব্দ মিলিয়ে কবিতা লেখেন। কবিতার জন্য শব্দ দরকার। যার শব্দের প্রতি ভালোবাসা আছে, সে-ই কবিতা লিখতে পারে। তাই কবিতা লিখতে গেলে শব্দকে জানতে হবে, ছন্দ জানতে হবে আর স্বপ্ন দেখতে হবে। সারাদিন শব্দ নিয়ে ভাবতে হবে। অন্যদিকে উদ্দীপকে নির্ঝরের ফুফুও একই রকম কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, চারপাশের স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুকে ধরে রাখতে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের নির্ঝরের প্রশ্নের উত্তর আলোচ্য প্রবন্ধে প্রতিফলিত হয়েছে তার ফুফুর উত্তরের মধ্য দিয়ে।
ঘ. হ্যাঁ, মাহফুজার উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের মূলভাবকে ধারণ করেছে।
কবিতা লেখার জন্য সবার আগে দরকার স্বপ্ন। যে স্বপ্ন দেখতে জানে না, সে কবিতা লিখতে পারে না। স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা পেতে শৈশবে-কৈশোরে কবিতা পড়তে হবে। দু-চোখ ভরে দেখতে হবে চারপাশের সবকিছু, যা কিছু চোখে পড়ে তার সবটা।
উদ্দীপকের মাহফুজা তার ভাইপোর প্রশ্নের উত্তরে যা বলেছেন, তা ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের মূলভাবকে ধারণ করেছে। তিনি বলেছেন, তুমি তোমার চারপাশের সুন্দর স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুকে ধরে রাখবে, দেখবে তুমিও একদিন চমৎকার কবিতা লিখতে পারবে। তার এই চিন্তাটি ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধেও প্রকাশ পেয়েছে। লেখক বলেছেন, কবিতা লিখতে গেলে শব্দকে জানতে হবে, ছন্দ জানতে হবে, আর থাকতে হবে স্বপ্ন।
আলোচ্য প্রবন্ধে কবিতার শিল্পরূপ ও তার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। লেখকের মতে, শব্দের সঙ্গে শব্দ মিলিয়ে কবিতা লেখা হয়। কবিতা লিখতে গেলে শব্দের রূপ, রং, গন্ধ, বর্ণ, সুর ও ছন্দ চিনতে হয়, জানতে হয়। প্রবন্ধের এই মূলভাব উদ্দীপকের মাহফুজার উত্তরে প্রতিফলিত হয়েছে।
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। তানজিমের স্কুলে একটি কবিতা লিখন প্রতিযোগিতা হলো। সে খুব উৎসাহ নিয়ে অংশ নিল। কিন্তু যখন লিখতে বসল, তখন শব্দগুলো তার মনের মতো আসল না, ছন্দ মিলল না। তার শিক্ষক তাকে বললেন, “তোমার চারপাশে তাকাও, শব্দগুলো শোনার চেষ্টা করো। পাতার মর্মর, পাখির ডাক, বৃষ্টির শব্দ—এগুলো সবই তো শব্দ। এদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো, দেখবে শব্দগুলো নিজে থেকেই তোমার কলমে নাচতে আসবে।” ক. ‘নূপুর’ শব্দের অর্থ কী? খ. “তোমাকে শুনতে হবে শব্দের সুর ও স্বর”— লেখক কেন এ কথা বলেছেন? গ. উদ্দীপকে তানজিমের সমস্যা এবং শিক্ষকের উপদেশ ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের কোন ধারণার সাথে সম্পর্কিত? ঘ. “শব্দের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কই কবিতা লেখার প্রথম শর্ত”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। সৃষ্টি একটি কবিতা পড়ে বলল, “এই কবিতাটি পড়ে আমার মনে হলো যেন রঙ-বেরঙের প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে।” তার বন্ধু রিয়াদ বলল, “আমার কানে বাজল বাঁশির সুর।” আর তাসনিম বলল, “আমার নাকের সামনে ভাসল কাঁঠালচাপার ঘ্রাণ।” তারা তিনজন একই কবিতা পড়ে তিন রকম অনুভূতি পেল। ক. ‘চমকপ্রদ’ বলতে কী বোঝায়? খ. “কবিতার জন্য দরকার শব্দ রংবেরঙের শব্দ”— ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকে তিন বন্ধুর অনুভূতি ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে শব্দ সম্পর্কে লেখকের কোন বর্ণনার প্রতিফলন? ঘ. “একটি কবিতা পাঠকের মধ্যে বহুমাত্রিক অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি যাচাই কর। |
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। ইমরান ছোটবেলা থেকেই প্রচুর বই পড়ে। সে গাছপালা, পাখি, মেঘ, রাস্তাঘাট—সব কিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে। এখন কলেজে পড়ে। একদিন হঠাৎ করেই তার মনে হলো, একটি কবিতা লিখতে হবে। লিখতে বসতেই শব্দ, ছন্দ, ছবি সব যেন আপনাআপনি তার কলমে এসে জুটল। সে লিখে ফেলল একটি সুন্দর কবিতা, যা সবাইকে মুগ্ধ করল। ক. হুমায়ুন আজাদের জন্ম কোথায়? খ. “ছোট বয়সে উচিত কবিতা পড়া, পড়া এবং পড়া”— লেখক কেন বারবার পড়ার কথা বলেছেন? গ. উদ্দীপকের ইমরানের অভিজ্ঞতা ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে লেখকের কোন উপদেশের বাস্তব? ঘ. “শৈশবের সঞ্চিত ভান্ডারই যৌবনে সৃজনশীলতার উৎস”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। “নতুন কিছু বলার আকাঙ্ক্ষা থেকে জন্ম নেয় কবিতা। কবি যা দেখেন, যা অনুভব করেন, তা যখন নতুনভাবে বলার প্রয়াস পান, তখনই সৃষ্টি হয় কবিতা। পুরনো কথাকে নতুন আঙ্গিকে বলা, প্রচলিত ধারণাকে ভাঙা এই সাহস থেকেই আসে কবিতার সৌন্দর্য।” ক. ‘কাঁঠালচাপা’ কী? খ. “কবিতায় আমরা অনেক কিছু বলতে পারি… কিন্তু সব সময়ই মনে রাখতে হবে, ওই কথা নতুন হতে হবে”— কেন নতুন হতে হবে? গ. উদ্দীপকের বক্তব্যের সাথে ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের লেখকের কোন মৌলিক ধারণার মিল আছে? ঘ. “কবিতা শুধু সুন্দর শব্দের সমাহার নয়, তা নতুন ভাবনার বিস্ফোরণ”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। শিল্পী রফিক বলেন, “আমি রং-তুলি দিয়ে যা আঁকি, কবিরা শব্দ দিয়ে তাই করেন। আমি রং মেলাই ক্যানভাসে, তারা শব্দ সাজান কাগজে। আমি যেমন রঙের আলো-আঁধারি জানি, কবিরা তেমনি শব্দের উজ্জ্বলতা-নিষ্প্রভতা চেনেন। আমরা উভয়েই চেষ্টা করি অদৃশ্যকে দৃশ্যমান করতে, অনুভূতিকে রূপ দিতে।” ক. কবিতা লিখতে হলে কী কী জানতে হবে? খ. “তোমাকে চিনতে হবে শব্দের রং”— ‘শব্দের রং’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপকে শিল্পী রফিকের বক্তব্য ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের কোন সাদৃশ্যময় ধারণা প্রকাশ করে? ঘ. “চিত্রকলা ও কবিতা উভয়ই সৃষ্টিশীলতার ভিন্ন মাধ্যম, কিন্তু মূলে অভিন্ন প্রেরণা”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
| সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। আয়েশা তার ডায়েরিতে লিখেছে, “আজ বিকেলে বৃষ্টি হচ্ছিল। আমি জানালার পাশে বসে শুনছিলাম বৃষ্টির শব্দ। শব্দটা যেন কাচের মালার মতো। মনে হচ্ছিল, এই শব্দগুলোকে যদি কখনো কবিতায় বসাতে পারতাম! তখনই মনে পড়ল ফুফুর কথা, তিনি বলতেন, শব্দকে ভালোবাসতে শেখো, শব্দই তখন তোমার সঙ্গে কথা বলবে।” ক. ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে লেখক কোন কবিতার উদাহরণ দিয়েছেন? খ. “কবিরা গোলাপের মতো সুন্দর সুন্দর কথা বলেন”— এই উক্তির মাধ্যমে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপকে আয়েশার অনুভূতি ও তার ফুফুর উপদেশ ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের কোন দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করে? ঘ. “শব্দের প্রতি মমত্ববোধ ও শ্রুতিমধুরতা চেনাই কবি হওয়ার প্রথম পাঠ”— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি যাচাই কর। |
নিচে শব্দ থেকে কবিতা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
শব্দ থেকে কবিতা সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ শব্দ থেকে কবিতা MCQ | বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর