মানুষ জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা

“মানুষ জাতি” কবিতাটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বলেছেন, পৃথিবী নামক এই গ্রহই সব মানুষের জন্মভূমি। কাজেই জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের কৃত্রিম সীমানা দিয়ে মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরি করা অর্থহীন। আমাদের আসল পরিচয় হল আমরা মানুষ। এই পোস্টে মানুষ জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

মানুষ জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
রহিম, শ্যামল ও রোজারিও তিন বন্ধু। ঈদ, পূজা ও বড়দিনে তারা একে অন্যের বাড়ি বেড়াতে যায়। আনন্দে-উৎসবে, সুখে-দুঃখে একে অন্যকে সাহায্য-সহযোগিতা করে। এরূপ আচরণে তাদের বাবা-মা খুব খুশি। রহিমের বাবা বলেন, ‘তোমরা অসাধারণ। তোমাদের মতো সবাই বন্ধুসুলভ হলে এ পৃথিবী আরো সুন্দর বাসস্থান হবে।’

ক. ‘মানুষ জাতি’ কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

খ. ‘দুনিয়া সবারি জনম-বেদি’- একথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

গ. রহিম, শ্যামল ও রোজারিওর বন্ধুত্বে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন বক্তব্যটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের রহিমের বাবার মন্তব্যই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূল সুর।’- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. ‘মানুষ জাতি’ কবিতাটি ‘অভ্র আবীর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

খ. ‘দুনিয়া সবারি জনম-বেদি’ কথাটির অর্থ হলো—এই পৃথিবী সব মানুষেরই জন্মের জায়গা।
আমাদের এই পৃথিবী জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রের ভেদাভেদ ছাড়াই সবার বাসস্থান। যেমন একই মায়ের দুধ খেয়ে সব সন্তান বড় হয়, তেমনি পৃথিবীর সব মানুষ একই পৃথিবীর খাবার ও পানি খেয়ে, একই সূর্য ও চাঁদের আলোতে লালিত-পালিত হচ্ছে।

গ. সারা পৃথিবীতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রের চেয়ে বড় পরিচয় হলো মানুষ হওয়া। রহিম, শ্যামল ও রোজারিওর বন্ধুত্বের মাধ্যমে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার এই বার্তাটি সুন্দরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

মানুষের আসল পরিচয় হলো সে মানুষ। জাতি-ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু এই পৃথিবী সব মানুষেরই বাড়ি, জাতি-ধর্ম-বর্ণ কিছুই দেখে নয়।

উদ্দীপকে রহিম, শ্যামল ও রোজারিও তিন বন্ধু তিনটি ভিন্ন ধর্মের। তারা আনন্দ-উৎসবে একসঙ্গে থাকে, সুখে-দুঃখে একে অন্যকে সাহায্য করে। ‘মানুষ জাতি’ কবিতায় কবি বলেছেন, সারা জগতে শুধু একটি জাতি আছে—তা হলো মানুষ জাতি। বাইরের রং যাই হোক, ভেতরে সবার রক্ত লাল। জাতি-ধর্ম-বর্ণের মানুষে তৈরি করা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মানুষকে শুধু মানুষ হিসেবে দেখা উচিত। ‘মানুষ জাতি’ কবিতার এই চিন্তা রহিম, শ্যামল ও রোজারিওর বন্ধুত্বে পুরোপুরি ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের রহিমের বাবার কথাই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূল বক্তব্য। এই কথাটি একদম সঠিক।

এই পৃথিবীর একই আলো-ছায়ায় সব মানুষ বেড়ে ওঠে। গরম-শীত, ক্ষুধা-তৃষ্ণা সবাই একইভাবে অনুভব করে। কিন্তু কিছু সংকীর্ণ মনের মানুষ নিজেদের স্বার্থের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণের পার্থক্য তৈরি করেছে।

উদ্দীপকে রহিম, শ্যামল ও রোজারিও তিনজনই তিন ধর্মের। তবুও তারা সুখে-দুঃখে, আনন্দ-উৎসবে একে অপরের পাশে থাকে। রহিমের বাবা বলেন, তোমাদের মতো সবাই যদি বন্ধুর মতো থাকত তাহলে এ পৃথিবী আরও সুন্দর জায়গা হতো। ‘মানুষ জাতি’ কবিতায় কবি বলতে চেয়েছেন, সারা পৃথিবীতে মানুষ নামে শুধু একটি জাতিই আছে। কবি এই কবিতায় মানুষের সেই একক পরিচয়কেই তুলে ধরেছেন।

উদ্দীপকের তিন বন্ধু ধর্মের কারণে কাউকে আলাদা করে দেখেনি। তারা সবকিছু একসঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রহিমের বাবার কথাই যেন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার মূল সুর। এই মন্তব্যটি পুরোপুরি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কাজ করছেন নাসার বিজ্ঞানী ড. আহমেদ (মুসলিম), রাশিয়ার ইভানোভা (খ্রিস্টান) এবং জাপানের ড. তানাকা (বৌদ্ধ)। মহাশূন্যে ভাসমান অবস্থায় একদিন তারা পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে বলেন, “ওই নীল গোলকটিই আমাদের সবাইকের বাড়ি। সেখানে সীমানা, পতাকা, ধর্মের ভেদ আছে, কিন্তু এখানে থেকে দেখছি আমরা সবাই এক। আমাদের রক্ত লাল, আমাদের বাঁচার ইচ্ছা এক, আমাদের বিজ্ঞানের ভাষা এক।”
ক. ‘শীতাতপ’ শব্দের অর্থ কী?
খ. “কালো আর ধলো বাহিরে কেবল, ভিতরে সবারই সমান রাঙা”— কবি কেন এ কথা বলেছেন?
গ. উদ্দীপকের মহাকাশচারীদের দৃষ্টিভঙ্গি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন চরণগুলোর সাথে মিলে যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের দৃশ্যপট ‘মানুষ জাতি’ কবিতার দর্শনকে মহাজাগতিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করেছে”— উক্তিটির যথার্থতা যাচাই কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
বন্যার্তদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় হিন্দু যুবসমিতি, মুসলিম যুবক সংঘ এবং বৌদ্ধ তরুণ ফোরাম। তারা একসাথে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে। সংগঠনগুলোর নেতারা বলেন, “মহাবিপদের সময় ধর্ম-বর্ণের পরিচয় থাকে না, পরিচয় থাকে শুধু ‘মানুষ’ হওয়ার। সাহায্যের হাত বাড়ানোর সময় আমরা সবাই এক।”
ক. ‘দোসর’ শব্দের অর্থ লেখ।
খ. “বাহিরের ছোপ আঁচড়ে সে লোপ”— চরণটির মাধ্যমে কবি কী বলতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের ত্রাণকর্মীদের কাজ ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন ভাবের প্রতিফলন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “প্রকৃত সংকটে ‘মানুষ জাতি’ কবিতার বক্তব্যের বাস্তবরূপ দেখা যায়”— উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীর সব মানুষের জিনোমের (জীনগত উপাদান) ৯৯.৯% একই। বাকি ০.১% পার্থক্যের কারণেই আমাদের চামড়ার রং, চোখের আকৃতি, উচ্চতা ইত্যাদির ভিন্নতা। বিজ্ঞানী ড. রেচেল বলেন, “আমরা জিনগতভাবে প্রায় অভিন্ন। যা আমাদের বিভক্ত করে তা হলো সামাজিকভাবে তৈরি করা বিভেদ, যা প্রকৃতির দেয়া নয়।”
ক. ‘জনম-বেদি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
খ. “বংশে বংশে নাহিকো তফাত”— কবি একথা বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের বৈজ্ঞানিক তথ্যটি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন দর্শনকে সমর্থন করে?
ঘ. “বিজ্ঞানের যুক্তি ও কবিতার দর্শন একই সত্যের দুটি ভিন্ন প্রকাশ”— উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য” প্রতিপাদ্যে নাটক মঞ্চস্থ করল। নাটকে দেখানো হয়, কীভাবে বিভিন্ন ধর্ম, জাতি ও সংস্কৃতির পোশাক-পরিচ্ছদ, ভাষা-খাদ্য ভিন্ন হলেও সবাই একই স্কুলে পড়ে, একই শহরে বাস করে এবং একই দেশের স্বপ্ন দেখে। নাটকের শেষ সংলাপ ছিল, “আমাদের ভিন্নতাই আমাদের সৌন্দর্য, কিন্তু আমাদের মানুষত্বই আমাদের আসল পরিচয়।”
ক. ‘যুঝি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. “এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত”— ব্যাখ্যা কর।
গ. নাটকের মূল প্রতিপাদ্য ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন স্তবকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ?
ঘ. “উদ্দীপকের নাটকটি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার দর্শনকে শিক্ষামূলকভাবে উপস্থাপন করেছে”— বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
ঐতিহাসিক এক বক্তৃতায় নেতা বলেছিলেন, “আমি একটি স্বপ্ন দেখি যে, আমার চার শিশু সন্তান একদিন এমন একটি জাতিতে বসবাস করবে, যেখানে তারা তাদের চামড়ার বর্ণের ভিত্তিতে নয়, তাদের চারিত্রিক মাপকাঠিতেই বিচারিত হবে।” এই বক্তব্য পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছিল।
ক. ‘রবি শশী’ বলতে কী বোঝায়?
খ. “কচি কাঁচাগুলি ডাঁটো করে তুলি”— চরণটির ভাবার্থ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের নেতার স্বপ্ন ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে?
ঘ. “উদ্দীপকের বক্তব্য এবং ‘মানুষ জাতি’ কবিতার বার্তা একই মানবিক আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি”— যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ ও সংঘাতের সময় আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সংস্থা নিরপেক্ষভাবে সব পক্ষের আহত ও বেসামরিক নাগরিকদের সাহায্য করে। তাদের নীতিবাক্য হলো, “মানবতা মধ্যস্থতা।” তাদের কর্মীরা বলে, “আমাদের সামনে শুধু মানুষ আছে, শত্রু বা মিত্র নেই। রক্তক্ষরণ যেখানেই হোক, সেখানে আমাদের দায়িত্ব।”
ক. ‘বাসর বাঁধি গো’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
খ. “জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে”— কবিতার এই প্রথম চরণটির তাৎপর্য কী?
গ. উদ্দীপকের রেডক্রসের নীতি ‘মানুষ জাতি’ কবিতার কোন মূলবাণীর সাথে মেলে?
ঘ. “যুদ্ধের বিভীষিকায়ও ‘মানুষ জাতি’ কবিতার আদর্শ টিকে থাকে”— উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে মন্তব্যটির সত্যতা যাচাই কর।

নিচে মানুষ জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

মানুষ জাতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ মানুষ জাতি কবিতার MCQ | বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর

Related Posts

Leave a Comment