বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

মাইকেল মধুসূদন দত্তের গীতি কবিতা ‘বঙ্গভূমির প্রতি’–তে কবির স্বদেশপ্রেম গভীর আবেগে প্রকাশ পেয়েছে। এই কবিতায় কবি বাংলাকে নিজের মা হিসেবে কল্পনা করেছেন এবং নিজেকে তাঁর সন্তান বলে ভাবছেন। এই পোস্টে বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে;
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়;

২. মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে,
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।
এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে জীবন্ত হৃদয়-মাঝে যদি স্থান পাই!

ক. বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্যের নাম কী?

খ. কবি বর প্রার্থনা করেন কেন? ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশের আলোকে ‘ফুটি যেন স্মৃতি-জলে’ চরণটির ব্যাখ্যা করো।

ঘ. “দ্বিতীয় কবিতাংশ ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার মূলসুর একই”- তুমি কি একমত? যুক্তিসহ উত্তর দাও।

উত্তরঃ

ক. বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্যের নাম ‘মেঘনাদবধ কাব্য’।

খ. দেশমাতৃকার স্মৃতিতে জেগে থাকার জন্য কবি বর প্রার্থনা করেন।

নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা মানুষের স্বাভাবিক ও চিরদিনের অনুভূতি। এই ভালোবাসা থেকেই কবি দেশমাতার প্রশংসা করেছেন। কবির খুব বড় ইচ্ছা, তাঁর প্রিয় দেশমাতা যেন তাঁকে নিজের হৃদয়ে জায়গা দেন। পদ্মফুল যেমন পুকুরে ফুটে থাকে, তেমনি কবিও চান দেশমাতার স্মৃতি ও ভালোবাসার মধ্যে চিরদিন বেঁচে থাকতে। এই কারণেই কবি দেশমাতার কাছে আশীর্বাদ বা বর প্রার্থনা করেছেন।

গ. উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে এবং ‘ফুটি যেন স্মৃতি-জলে’ চরণের উভয়ক্ষেত্রে স্মৃতির পাতায় টিকে থাকার আবেদন প্রকাশ পেয়েছে।

প্রদত্ত কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর মাতৃভূমির কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাঁকে মনে রাখা হয়। তিনি চান, তিনি যেন স্মৃতি হয়ে বারবার মাতৃভূমির হৃদয়ে বেঁচে থাকেন। তাই তিনি পার্থিব সম্মান বা বাহ্যিক কিছু চাননি; বরং স্মৃতির মধ্যে টিকে থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

উদ্দীপকের চরণগুলোতেও কবি মৃত্যুর পর মানুষের মনে বেঁচে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এই নশ্বর পৃথিবীতে নিজেকে নশ্বর জেনেও তিনি অবিনশ্বর হয়ে থাকতে চান। মানুষের মনে, তাদের স্মৃতিতে নিজের কাজ ও ভাবনার মাধ্যমে জায়গা করে নিতে চান। ঠিক একইভাবে মাইকেল মধুসূদন দত্তও উক্ত চরণের মাধ্যমে মানুষের স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকার বার্তাই দিতে চেয়েছেন।

ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশ ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা উভয়ক্ষেত্রেই মাতৃভূমি বাংলার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে।

‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি নিজের দেশের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করে দেশকে মায়ের রূপে কল্পনা করেছেন। তিনি চান, তাঁর সব ভুলত্রুটি দেশমাতা ক্ষমা করে দিন এবং তাঁকে যেন মনে রাখেন। এই প্রার্থনার মধ্য দিয়ে কবির দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশে কবিও দেশকে গভীরভাবে ভালোবেসে মৃত্যুর পরও দেশের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকতে চান। মাতৃভূমির ভালোবাসা পেয়ে তিনি চান, দেশের স্মৃতিতে চিরদিন জাগ্রত থাকতে।

‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাতেও কবি মৃত্যুর পর মাতৃভূমির স্মৃতিতে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। নিজের দেশের প্রতি আবেগ ও অনুভূতির প্রকাশই উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশ ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার মূল কথা। দুই কবিতাতেই কবি জন্মভূমিকে ভালোবেসে তার স্মৃতিতে চিরকাল অম্লান থাকতে চান। তাই বিনয়ের সঙ্গে দেশমাতার কাছে স্মৃতিতে সামান্য একটি জায়গা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [রাজশাহী বোর্ড ২০১৮]
মিছা মণি মুক্তা হেম, স্বদেশের প্রিয় প্রেম তার চেয়ে রত্ন নাহি আর।
সুধাকরে কত সুধা, দূর করে তৃষ্ণা ক্ষুধা স্বদেশের শুভ সমাচার।
কতরূপ স্নেহ করি, দেশের কুকুর ধরি বিদেশের, ঠাকুর ফেলিয়া।

ক. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কী ধরনের কবিতা?

খ. জীবন-নদের নীর স্থির নয় কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার যে দিকটি অনুপস্থিত তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার মূল চেতনা একই ধারায় প্রবাহিত। মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [যশোর বোর্ড ২০১৬]
ল্যাপটপ কিনে দেয়নি বলে বাবা-মায়ের ওপর রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল রাসেদ। বন্ধুর বাড়িতে দু’দিন কাটানোর পর সে বুঝতে পারে যে, ঐ পরিবারের সকলে ওকে বোঝা ভাবছে। আরও কিছু হওয়ার আগেই সে নিজ বাড়িতে ফিরে মা-বাবার কাছে। কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। মা বলেন- পর কখনও আপন হয় না রে পাগল, আপন হয় না।

ক. অমৃত-হ্রদে পড়লে কী গলে না?

খ. কবি নিজেকে ‘দাস’ ভেবেছেন কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের রাসেদের মাঝে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা রচয়িতার যে চেতনা প্রকাশ পেয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উল্লিখিত চেতনাই কেবল ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার বিষয়বস্তুকে তুলে ধরে না মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [ময়মনসিংহ বোর্ড ২০১৯]
হৃদয়ের কোণে পুশি আশ
মানুষের মনে যেন জাগি বারো মাস
সারাজীবনে রচিত আমারই সৃষ্টি ধন
যেন মানবের উপকারে আসে বারংবার।

ক. কবি দেশমাতৃকার স্মৃতিতে কোন ফুলের মতো ফুটে থাকার কামনা করেছেন?

খ. “হেন অমরতা আমি, কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!”- কবি এ কথা বলেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকটি কোন দিক দিয়ে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপককে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার পরিপূরক বলা যায় না।”- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [দিনাজপুর বোর্ড ২০১৮]
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।”

ক. জন্মিলে কী করতে হবে?

খ. “সেই ধন্য নরকুলে” বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি ছাড়াও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় আরও নানা দিকের সমাবেশ ঘটেছে”- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
জাহানারা ইমামের বড় ছেলে বুমী। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে আমেরিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বুমী তার মাকে জানায় দেশের এই দুর্দিনে সে চলে গেলে, দেশ স্বাধীন হলে সে কীভাবে দেশে ফিরবে? তখন নিজেকে চির অপরাধী মনে হবে। তাই সে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। জাহানারা ইমামও ছেলেকে দেশের জন্য কোরবানী করে দেন। রুমী দেশের জন্য চির অমর হয়ে আছে।

ক. ‘শ্যামা জন্মদে’-এর অর্থ কী?

খ. ‘রেখো, মা, দাসেরে মনে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কোন দিকটি কবির অনুভূতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার চেতনাগত দিক অভিন্ন।”- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিষ্য
কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য।
ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে যখন যেখানে ভ্রমি
তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারি নে সেই দুই বিঘা জমি।
হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে বছর পনেরো-ষোল-
একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে বড়োই বাসনা হলো।
নমোঃ নমোঃ নমোঃ সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!
গঙ্গার তীর, স্নিগ্ধ সমীর, জীবন জুড়ালে তুমি।

ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কয়টি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন?

খ. কবি জীবনকে নদের সঙ্গে তুলনা করেছেন কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কোন বিষয়টি উদ্দীপকে খুঁজে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “মিল থাকলেও উদ্দীপকটি ‘বলাভূমির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে প্রকাশ করেনি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
দেশকে তাই যতটা পারা যায় কাছে থেকে দেখতে হবে। দেশ মানে। এর মানুষ, জনপদ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র এইসব। দেশ হলো আসলে জননীর মতো। মা যেমন স্নেহ মমতা ভালোবাসা। দিয়ে আমাদের আগলে রাখেন, দেশও তেমনই তার আলো বাতাস সম্পদ দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। মাকে আমরা যেমন। ভালোবাসি, দেশকেও তেমনই ভালোবাসতে হবে। দেশকে। ভালোবাসার মধ্য দিয়েই সার্থক হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।

ক. কবি নিজেকে কী বলে উপস্থাপন করেছেন?

খ. কবি স্বদেশকে মা বলেছেন কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার সাদৃশ্য তুলে ধর।

ঘ. “চেতনাগত দিক থেকে উদ্দীপক এবং ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা একে অপরের পরিপূরক।”- বিশ্লেষণ কর।

নিচে বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সৃজনশীল উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment