বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ফুলের বিবাহ’ গল্প শুধু ফুলদের বিয়ের গল্প নয়, বরং প্রকৃতির রঙিন, প্রাণবন্ত দুনিয়ার এক কল্পনার ছবি। বঙ্কিমচন্দ্র রসিক ভঙ্গিতে আমাদের বুঝিয়েছেন যে, প্রকৃতিও এক প্রাণবন্ত, হাসিখুশি জীবন। এই পোস্টে ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ফুলের বিবাহ’ একটি কল্পনাভিত্তিক মজার গল্প। বসন্ত ঋতু আসার সঙ্গে সঙ্গে ফুলেদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। তারা ঠিক করে, এই উৎসবের সময়ে মালতী ও শিরীষ ফুলের বিয়ে দেওয়া হবে। সবাই খুব উৎসাহ নিয়ে বিয়ের আয়োজন শুরু করে। পলাশ বর সাজানোর দায়িত্ব নেয়, কৃষ্ণচূড়া গায়েহলুদের গান গায়। গন্ধরাজ তার সুবাস ছড়িয়ে দেয়, বকুল, শিউলি, কামিনী ফুলেরা সাজগোজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মৌমাছিরা গান গায়, প্রজাপতিরা সাজগোজে সাহায্য করে। পাখিরা ডেকে ডেকে আমন্ত্রিতদের খবর দেয়। বিয়ের দিন চারপাশ আনন্দে ভরে ওঠে । বাতাসে ফুলের ঘ্রাণ, গান-বাজনা, রঙের উৎসব। বর শিরীষ বন্ধুদের নিয়ে আসে, কনে মালতী লজ্জায় কুঁকড়ে থাকে। চাঁপা ফুল দিয়ে তার গায়ে হলুদ হয়। ফুলেরা নাচে, গায়, খুশিতে উল্লাস করে। শেষ পর্যন্ত খুব আনন্দের সঙ্গে ফুলেদের এই কল্পনার বিয়ে সম্পন্ন হয়। গল্পটি আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য ও প্রাণবন্ত কল্পনার জগতে ভ্রমণ করায়।
ফুলের বিবাহ গল্পের মূলভাব বড় করে
একবার বসন্ত ঋতু এসে গেল। বসন্ত এলেই গাছপালা যেন নতুন করে বাঁচে। পাতাগুলো ঝকঝকে সবুজ, আর চারদিকে নানা রঙের ফুল ফোটে। সেই সময়টা যেন প্রকৃতির এক বিশাল উৎসব।
বসন্ত আসার সঙ্গে সঙ্গে ফুলদের মধ্যেও আনন্দের হাওয়া বইতে লাগল। ওরা ঠিক করল, এই আনন্দের মরশুমে একটা বিয়ে দেওয়া যাক। সবাই মিলে বসে আলোচনা করল, কার বিয়ে দেওয়া যায়? অনেক ভাবনা-চিন্তার পর ঠিক হলো। মালতী ফুল আর শিরীষ ফুল একে অপরকে খুব পছন্দ করে। তাহলে ওদেরই বিয়ে দেওয়া হোক!
এই খবরে ফুলদের রাজ্যে আনন্দের ঝড় বইল। পলাশ বলল, “আমি হলুদ সাজে বর সাজাবো।” কৃষ্ণচূড়া বলল, “আমি তোদের গায়ে হলুদের গান গাইব।” গন্ধরাজ গন্ধ ছড়িয়ে বলল, “আমার সুবাস ছাড়া বিয়ে জমবে না!” বকুল, শিউলি, পারিজাত, কামিনী সবাই যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল।
এদিকে মৌমাছিরাও চুপ করে নেই। ওরা গুনগুন করে গানের সুর তুলল। প্রজাপতিরা রঙিন পাখা মেলে ফুল সাজাচ্ছে, ঝিঁঝিঁ পোকারা তাল বাজিয়ে বাজনা শুরু করল। পাখিরাও গাছে বসে গান ধরল, “ফুলের বিয়ে ফুলের বিয়ে, কত যে মজা!”
বিয়ের দিন সকাল থেকে চারদিক একেবারে মেলা মেলার মতো। বাতাসে ফুলের ঘ্রাণ, পাখিদের কলতান, রোদের ঝলকানি সব মিলে এক অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ। বর শিরীষ এল মালতী ফুলের বাড়ি, সঙ্গে তার বন্ধুরা, আকাশভরা ফুলের গন্ধে সবাই মুগ্ধ। মালতী লজ্জায় কুঁচকে আছে, তার গায়ে হলুদ দেওয়া হয়েছে চাঁপা ফুল দিয়ে।
সবাই মিলে মালতী-শিরীষের বিয়েটা একেবারে রাজকীয়ভাবে দিল। বিয়ের পর সবাই খুশিতে নাচল, গাইল, আর খেল দোল।
Related Posts
- স্মৃতিস্তম্ভ কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৯ম শ্রেণির বাংলা
- আগুনের পরশমণি গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৯ম শ্রেণির বাংলা
- মমতাদি গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণি
- মানুষ মুহম্মদ (স) প্রবন্ধের MCQ | বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর
- Paragraph The Wonders of The Internet (বাংলা অর্থসহ)