আজকের পোস্টে আপনাদের নতুন বইয়ের ফসলের ডাক ৭ম শ্রেণীর বিজ্ঞান অনুশীলন বই ১ম অধ্যায়ের সবগুলো ছকের খালিঘর পূরণ করে দেখালাম ।
ফসলের ডাক ৭ম শ্রেণীর বিজ্ঞান অনুশীলন ১ম অধ্যায়ের সবগুলো ছক
ফসলের ডাক
ছক ১
তোমাদের এলাকায় যেসব ফসল বা উদ্ভিদ ভালোো জন্মায় তাদের নাম
তোমার পাওয়া তথ্য | বন্ধুদের কাছ থেকে নতুন যা জানলে |
আমার এলাকার কৃষকেরা বছরের বেশিরভাগ সময় ধান উৎপাদন করে । ধানের মৌসুম শেষ হলে একই জমিতে ডাল উৎপাদন করে । তাছাড়া ধান উৎপাদনের পাশাপাশি আখ চাষ করে । কেউ কেউ ডালের চাষ না করে সরিষা উৎপাদন করে । কোন কোন জায়গায় গোল আলু ও মিষ্টি আলুর চাষ করা হয় । | বন্ধুদের এলাকায়ও বেশিরভাগ ধানচাষ করে । তবে কিছু জায়গায় তেল উৎপাদনের জন্য সূর্যমুখী চাষ করা হয় । তবে কিছু কিছু জায়গায় পাটের চাষ করা হয় । চর অঞ্চলে তরমুজ চাষ করা হয় । |
Table of Contents
ছক ২
অতিথি শিক্ষকের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে ছক ২ পূরণ করো:
যেসব ফসল/ উদ্ভিদের ফলন ভালো হয় তাদের নাম | মাটি বা পরিবেশের কোন বৈশিষ্ট্যের জন্য ঐ ফসল/উদ্ভিদ বেশি জন্মে? | কীভাবে বিভিন্ন ফসল/উদ্ভিদের ভালো চারা বাছাই করা হয়? | কীভাবে এসব ফসল/উদ্ভিদের পরিচর্যা করতে হয়? | অন্য কোনো মন্তব্য (যদি থাকে) |
১। ধান ২। গম ৩। পাট ৪। আখ ৫। আলু ৬। ডাল ৭। সবজি | মূলত মাটির গুনাগুন এবং আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে এইসব ফসল আমাদের অঞ্চলে ভালো জন্মে । ধান , গম , পাট , আখ, আলু, ডাল , সবজি ইত্যাদি ফসল সমূহ সাধারণত দোআঁশ এবং বেলে-দোআঁশ মাটিতে জন্মে । আমাদের অঞ্চলে দোআঁশ এবং বেলে-দোআঁশ মাটি বেশি পাওয়া যায় । মূলত আবহাওয়ার অনুকূল অবস্থা এবং মাটির মাটির উর্বর হওয়ার কারণে এসব ফসল খুব ভালো জন্মায় । | ফসল উত্তোলনের পর মূলত ফসলের ভালো অংশটা রেখে খারাপ অংশগুলোকে ফেলে দেওয়া হয় । ভালো বীজ সংরক্ষণের মূল হচ্ছে বীজ চেনার উপায় । কৃষকেরা বীজ চিনতে পারেন । কোন বীজ থেকে উদ্ভিদের চারা গজাবে এবং কোন বীজ থেকে উদ্ভিদের চারা গজাবে না । সেটা আমাদের আগে বেছে নিতে হবে । ভালো চারা গাছ বাছাইয়ের জন্য আগে সর্বপ্রথম ভালো বীজ বাছাই করে নিতে হবে এবং ভালো চারার বৈশিষ্ট্য গুলো খুঁজে নিতে হবে । | এসব উদ্ভিদের পরিচর্যা করতে হলে ফসল রোপনের পর প্রথমত আপনার আগাছা পরিষ্কার করতে হবে । ভালোভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে এবং কীট পতঙ্গ দমন করার জন্য আপনার কীটনাশক ব্যবহার করতে হতে পারে । গবাদি পশুর হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য ফসলের চারদিকে বেড়া দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে । এছাড়াও যদি ফসলের কোন ধরনের রোগ হয় তাহলে সেটা দমন করতে হবে । | ফসল উৎপাদন কিংবা চারাগাছ রোপণের আগে আপনার জানতে হবে আপনি যে মাটিতে চারা গাছ অথবা ফসল রোপন করছেন সেটি এই মাটির উপযুক্ত কিনা । কোন কোন ফসল সাধারণত বেলে মাটিতে জন্মে সেখানে দোআঁশ মাটি কিংবা বেলে-দোআঁশ মাটিতে ফসল রোপন করলে ফসল ভালো হবে না । তাই সর্বপ্রথম আমাদেরকে জমি নির্বাচন করতে হবে । |
এর বাইরেও অতিথি শিক্ষকের কাছ থেকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিচে নোট করে রাখতে
পারো।
শিক্ষকের কাছ থেকে পাওয়া যেসব গুরুত্বপূর্ণ নোট সেগুলো হলঃ ফসল উৎপাদনের জমিতে আমরা কীটনাশক প্রয়োগ না করে সেখানে পাখিদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে পারি । কোন লাঠি মাধ্যমে পাখি বসার জায়গা করে দিতে পারি । যাতে করে পাখি পতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করতে পারে। এতে করে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে না এবং মাটি দূষণ হবে না । চারা গাছ রোপনের পর আমাদেরকে অবশ্যই আগাছাগুলো তুলে ফেলতে হবে । না হলে আগাছাগুলো জমির উর্বর্তাকে নষ্ট করে ফেলবে । ফসলের যদি কোন ধরনের রোগ সৃষ্টি হয় তাহলে আগে জেনে নিতে হবে ফসলের কি ধরনের রোগ হয়েছে এবং সে অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে অথবা কোন কৃষি বিশেষজ্ঞ কে দেখাতে হবে । |
ছক ৩
তোমার এলাকায় দেখা যায় এমন পাঁচটি প্রাণীর নাম | এদের খাদ্যাভ্যাস কেমন? | এদের বাসস্থান কেমন? | অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যদি উল্লেখ করতে চাও | তোমার পরিবেশের কী কী বৈশিষ্ট্য তাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে? |
১. গরু | ঘাস, লতাপাতা, খড়-কুটা ইত্যাদি | বাসস্থান উঁচু এবং শুকনা স্থানে নির্মাণ করা হয় । | হাল চাষে ব্যবহার করা হয় এদের দুধ এবং মাংস সুস্বাদু খাদ্য | গৃহপালিত প্রাণী হওয়ার কারণে মানুষের পরিচর্যা তাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে । |
২. কুকুর | মানুষের উচ্ছিষ্ট অংশ খায় | মানুষের আশেপাশে যেকোন স্থানে বসবাস করে | এরা সাধারণত প্রভুভক্ত হয় | মানুষের সাথে সহজেই মিশে যায় আমাদের পরিবেশের আবহাওয়া এবং তাদের প্রতি মানুষের কোমল আচরণ তাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে । |
৩. কবুতর | এরা ধান , চাল , ডাল, গম ইত্যাদি খায় | বাসস্থান ছোট খোপ জাতীয় এবং মানুষ নির্মাণ করে | কবুতরকে প্রাচীন কাল থেকে সুখের প্রতীক বলা হয় | গৃহপালিত হওয়ার কারণে মানুষের পরিচর্যা তাকে পরিবেশে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে । |
৪. ইঁদুর | মানুষের উচ্ছিষ্ট অংশ খায় ও ফসল | মাটিতে গর্ত করে বসবাস করে | মাঠে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে | আবহাওয়ার অনুকুলতা এবং খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা পরিবেশে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে । |
৫. বিড়াল | দুধ ,মাছ ইত্যাদি মানুষের খাবার খেয়ে থাকে | মানুষের ঘরেই বসবাস করে থাকে | বিড়াল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন প্রাণী | গৃহপালিত হওয়ার কারণে মানুষের পরিচর্যা তাকে পরিবেশ বেচে থাকতে সহায়তা করে । |
এবার আরেকবার ভেবে দেখো, তোমাদের এলাকায় যে এত জীববৈচিত্র্য এর উৎপত্তি কী করে হলো? আর পরিবেশগত কী কী সুবিধার কারণে এই জীবসমূহ এই পরিবেশে টিকে থাকছে?
আবহাওয়ার অনুকূল অবস্থা এবং জীবের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য মজুদ থাকলে যে কোন পরিবেশে জীববৈচিত্র্য উৎপত্তি লাভ করে । জীবের প্রতি মানুষের মানবিক আচরণ একটি পরিবেশে জীবের বংশবৃদ্ধি ঘটায় । উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বাসস্থান সংরক্ষণের মাধ্যমেও এর উৎপত্তি বাড়ানো যায় । এভাবে আমাদের এলাকায় এত জীববৈচিত্র্যের উৎপত্তি হয়েছে । আর পরিবেশগত অনেক সুবিধার কারণে এই জীবসমূহ আজও আমাদের পরিবেশে টিকে আছে । আমরা বনাঞ্চলকে সংরক্ষণ করেছি এবং উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বাসস্থানকে ধ্বংস করিনা । পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাত এবং বনভূমি সৃষ্টি হওয়া তাদের খাদ্যে ঘাটতি না হওয়ার কারণে তারা পরিবেশে টিকে আছে । বনাঞ্চলে শিকারি না যাওয়ার কারণে এই জীবসমূহ এখনো পরিবেশে টিকে আছে । |
ছক ৪
তোমার এলাকার ফসল/ উদ্ভিদের নাম | এই এলাকার মাটি বা পরিবেশের যেসব বৈশিষ্ট্য ওই ফসল/উদ্ভিদের বেড়ে ওঠায় সহায়তা করে |
১। ধান | ধান আমাদের এলাকায় প্রচুর জন্মে । মাটির গুনাগুন এবং আবহাওয়ার অনুকূলতা ধান চাষের জন্য খুবই উপযোগী । |
২। গম | আমাদের এলাকা মাটি দোআঁশ হওয়ার কারণে এখানে গম উৎপাদনে ভালো হয় । পর্যাপ্ত পানি এবং মাটি উর্বর হওয়ার কারণে কৃষকেরা গমের চাষ করেন । |
৩। পাট | আমাদের এলাকায় বৃষ্টিবহুল হওয়ার কারণে এখানে পাটের চাষ করা হয় । পর্যাপ্ত পানি থাকা এবং মাটির গুনাগুন পাটের উপযোগী হওয়ার কারণে এখানে প্রচুর পরিমাণ উপার জন্মে । |
৪। আখ | আমার এলাকায় আখের চাষ করা হয় । নদীর তীরের বিস্তীর্ণ খালি জায়গাগুলো আখ চাষের জন্য খুবই উপযোগী । পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়ার কারণে আখ চাষ খুবই সমৃদ্ধ । |
৫। আলু | আলু চাষের জন্য বেলে-দোআঁশ কিংবা বেলে মাটির খুব প্রয়োজন । নদী তীরবর্তী এলাকা গুলোতে বেলে-দোআঁশ কিংবা বেলে মাটির পর্যাপ্ততার কারণে এখানে আলু চাষ ভালো হয় । |
৬। ডাল | আমাদের এলাকায় ধান চাষ শেষ হওয়ার সাথে সাথে কৃষকেরা ডালের চাষ করেন । ধান যে জমিতে উৎপন্ন হয় ডালও একই জমিতে উৎপন্ন করা যায় । দোআঁশ মাটি ডাল চাষের জন্য উপযোগী । |
৭। সবজি | বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ির আঙিনায় মহিলারা সবজি চাষ করেন । এছাড়াও বড় পরিসরে গ্রামের কৃষকেরা সবজির বাগান করেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং আবহাওয়ার অনুকুলতা সবজি ফলন ভালো হয় । |
ছক ৫
তোমার নির্বাচিত ফসল/উদ্ভিদের নাম: মেহেগনি গাছ
এক সপ্তাহ পর | দুই সপ্তাহ পর | তিন সপ্তাহ পর | চার সপ্তাহ পর | |
কী কী কাজ করেছ? | জমি প্রস্তুত করেছি ও জমির আগাছা পরিষ্কার করেছি | মেহেগনি গাছের বীজ বপন করেছি | বীজতলায় নিয়মিত পানি দিয়েছি | বীজতলার চারপাশে বেড়া দিয়েছি |
নতুন কী কী জানলে | জমি প্রস্তুতের আগেই আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে | সঠিকভাবে বীজ বপন করা শিখেছি | পানি দেয়ার সঠিক সময় জেনেছি | চারপাশে বেড়া কিভাবে দিতে হয় বুঝেছি |
ফসল/উদ্ভিদের বৃদ্ধি/পরিবর্তন | অপরিবর্তনীয় | বীজ বপন করেছি | বীজ থেকে গাছ অল্প গজানো দেখা যাচ্ছে | বীজ থেকে গাছ গজিয়েছে |
সহায়তাদানকারী কৃষকের স্বাক্ষর (অথবা অন্য যে পেশাজীবী প্রযোজ্য) | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া |
ছক ৬
পাঁচ সপ্তাহ পর | ছয় সপ্তাহ পর | সাত সপ্তাহ পর | আট সপ্তাহ পর | |
কী কী কাজ করেছ? | গোবর ও ইউরিয়া সার দিয়েছি । | বীজতলা থেকে তুলে নির্দিষ্ট স্থানে রোপণ করেছি | নিয়মিত পানি দিতেছি | গাছের চারপাশে বেড়া দিয়েছি |
নতুন কী কী জানলে | কতটুকু সার দিতে হবে বুঝেছি | বীজতলা থেকে চারাগাছ তুলতে যেন ভেঙে না যায় | অতিরিক্ত পানি দেয়া যাবে না | গাছকে গবাদি পশুর থেকে রক্ষা করতে হবে |
ফসল/উদ্ভিদের বৃদ্ধি/পরিবর্তন | বীজতলায় গাছ বড় হচ্ছে | বীজতলায় গাছ রোপণের উপযুক্ত হয়েছে | গাছ ক্রমশ বড় হচ্ছে | গাছ বড় হচ্ছে |
সহায়তাদানকারী কৃষকের স্বাক্ষর (অথবা অন্য যে পেশাজীবী প্রযোজ্য) | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া | রহমত মিয়া |
ফসলের মাঠ/নার্সারি/ছাদবাগানে কাজ করতে তোমাদের কেমন লেগেছে?
ফসলের মাঠে আমরা প্রথম কাজ করেছি । আমার খুবই ভালো লেগেছে । একসাথে আমরা বীজ রোপণের কাজ করেছি । জমিতে সেচ দিয়েছি এবং আগাছা গুলোকে উপড়ে ফেলেছি । কৃষিকাজ আগে আমরা কখনো করিনি । আমাদের অনুভূতি কৃষি কাজের প্রতি আরো অনেক বেড়ে গেল । নিজদের হাতে ফসল রোপণ করে আমরা নিজেদেরকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি । ফসলের মাঠে কাজ করতে হলে একটু ধৈর্য থাকতে হয় । জমিতে নতুনভাবে বীজ বেড়ে ওঠা দেখে আমাদের খুব আনন্দ অনুভুত হয়েছে । সর্বোপরি কৃষিকাজ আমাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে । |
এ কাজে তোমরা নতুন কী কী শিখেছ?
ফসলের জমিতে আমরা কাজ করে নতুন অনেক কিছুই শিখেছি । এর আগে আমরা এগুলো সব বইতে পড়েছি । এখন আমরা কৃষিকাজ প্রাক্টিক্যালি করলাম । কিভাবে বীজ বপন করতে হয়, কিভাবে বীজে সার প্রয়োগ করতে হয় এবং কিভাবে আগাছা উপড়ে ফেলতে হয় । সে সব বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি । এছাড়াও কৃষকেরা আমাদেরকে জানিয়েছেন কিভাবে ফসলকে ক্ষতিকর পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে হয় । কিভাবে ভালো বীজ বাছাই করতে হয় । ফসলের চারপাশে বেড়া দেওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ এগুলো আমাদেরকে কৃষকরা ভালোভাবে বুঝিয়েছেন । |
Related Posts
- শিল্প ও সংস্কৃতি ৭ম শ্রেণি সমাধান (সব অধ্যায়ের ছক)
- The Frog and The Ox Class 7 English Chapter 4 Solution (বাংলা অর্থসহ)
- গ্রাহক সেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি- ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি
- চিঠি বিলি কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি (MCQ)- ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
- বাঁচতে দাও কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা