প্রার্থনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -৮ম শ্রেণির বাংলা

কায়কোবাদের প্রার্থনা’ কবিতাটিতে কবি ভাষা বা প্রশংসার মাধ্যমে ভক্তি প্রকাশ করতে না পারলেও চোখের জল ও আন্তরিক নিবেদনের মাধ্যমে বিধাতার কাছে নিজেকে সঁপে দেন। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে তিনি সর্বদা ঈশ্বরের কাছ থেকে শক্তি কামনা করেন। এই পোস্টে প্রার্থনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

প্রার্থনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
নমশিরে সুখের দিনে
তোমারি মুখ লইব চিনে,
দুখের রাতে নিখিল ধরা
যেদিন করে বঞ্চনা
তোমারে যেন না করি সংশয়।

ক. স্তুতি কথার অর্থ কী?

খ. ‘তোমার দুয়ারে আজি রিক্ত করে’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘প্রার্থনা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করলেও সমগ্রভাব প্রকাশে সক্ষম নয়”- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ

ক. ভূতি কথার অর্থ- প্রশংসা।

খ. ‘তোমার দুয়ারে আজ রিক্ত করে’ বলতে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, সব অহংকার ও মনের সব ইচ্ছা ত্যাগ করে তিনি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করতে চান।

কবি নিজেকে একেবারে নিঃসম্বল মানুষ বলে মনে করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর ভক্তির জ্ঞান নেই, আবার স্রষ্টার প্রশংসা করার মতো সুন্দর ভাষাও তিনি জানেন না। তবে তাঁর অন্তরে স্রষ্টার প্রতি গভীর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা আছে। তাই নিজের দুর্বলতা ও ক্ষুদ্রতা স্বীকার করে, একেবারে খালি হাতে কাঙালের মতো তিনি স্রষ্টার সামনে দাঁড়িয়েছেন।

গ. বিপদের দিনে স্রষ্টাকে স্মরণ ও শ্রদ্ধার দিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘প্রার্থনা’ কবিতার সাদৃশ্য রয়েছে।

স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস মানুষের মনকে ভেতর থেকে শক্ত করে তোলে। দুঃখের সময় তাঁকে স্মরণ করলে মনের কষ্ট অনেকটাই কমে যায়। ‘প্রার্থনা’ কবিতায় কবি স্রষ্টার অসীম শক্তি ও মহিমার কথা বলেছেন। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সব সময় তিনি স্রষ্টার কাছে শক্তি প্রার্থনা করেন।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, সুখের দিনেও যেন মানুষ স্রষ্টাকে মনে রাখে। সাধারণত মানুষ সুখে স্রষ্টাকে ভুলে যায়, আর দুঃখে পড়লে তাঁর অস্তিত্ব নিয়েই সন্দেহ করে। কিন্তু উদ্দীপকে কবি চেয়েছেন, দুঃখের সময় সারা পৃথিবী মুখ ফিরিয়ে নিলেও তিনি যেন স্রষ্টার ওপর বিশ্বাস হারান না। ‘প্রার্থনা’ কবিতাতেও দেখা যায়, কবি দারিদ্র্য ও বিপদের মধ্যেও স্রষ্টার প্রতি আস্থা রাখেন। মনের সব কষ্ট ও শূন্যতা নিয়ে তিনি স্রষ্টার কাছে আশ্রয় চান। এ কারণে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘প্রার্থনা’ কবিতার মিল দেখা যায়।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করলেও সমগ্র ভাব প্রকাশে সক্ষম নয়”— উক্তিটি যথার্থ।
এই সুন্দর পৃথিবীর একজন সর্বশক্তিমান স্রষ্টা আছেন এই বিশ্বাস মানুষকে নতুন শক্তি ও সাহস দেয়। স্রষ্টা সব সময় মানুষের কাজকর্ম দেখছেন। মানুষ যদি তার প্রতিটি কাজে স্রষ্টাকে স্মরণ করে, তবে তিনি তার ডাকে সাড়া দেন। এই বিশ্বাসই মানুষকে আশাবাদী করে তোলে।

উদ্দীপকে স্রষ্টার প্রতি গভীর বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। সুখের দিনেও যেন মানুষ বিশ্বস্রষ্টাকে চিনে নেয়। এই দৃঢ় অঙ্গীকার এখানে প্রকাশ পেয়েছে। আবার দুঃখের সময় যাতে স্রষ্টার প্রতি কোনো সন্দেহ তৈরি না হয়, সেই প্রত্যাশাও উদ্দীপকে তুলে ধরা হয়েছে।

‘প্রার্থনা’ কবিতার মূল কথাও হলো স্রষ্টার প্রতি অটল বিশ্বাস ও ভরসা। কবি নিজের দারিদ্র্য, দুঃখ ও বিপদের সময় স্রষ্টার কাছে মাথা নত করে প্রার্থনা করেছেন। তবে এই কবিতায় আরও দেখা যায়, সমগ্র বিশ্ব ও প্রকৃতি স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে উপস্থিত। এই দিকটি উদ্দীপকে পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার একটি দিক তুলে ধরলেও কবিতার সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করতে পারেনি—উক্তিটি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [ঢাকা বোর্ড ২০১৯]
দৃশ্যকল্প-১: সরল সঠিক পুণ্য পন্থা
মোদের দাও গো বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার
প্রিয়জন গেছে চলি।

দৃশ্যকল্প-২:
যে পথে তোমার চির অভিশাপ
যে পথে ভ্রান্তি, চির পরিতাপ
হে মহাচালক, মোদের কখনো
করো না সে পথগামী।

ক. কবি কায়কোবাদ রচিত মহাকাব্যের নাম কী?

খ. ‘তোমারি নিঃশ্বাস বসন্তের বায়ু’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. দৃশ্যকল্প-১ এর সাথে ‘প্রার্থনা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. দৃশ্যকল্প-২ কায়কোবাদের প্রত্যাশাকেই ধারণ করেছে-মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [সিলেট বোর্ড ২০১৭]
১২ জুন ২০১৭ বিরামহীন মুষলধারে বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হয়। রাঙামাটি জেলায় পাহাড়ধসে বহুলোকের বসতবাড়ি মাটির নিচে বিলীন হয়ে যায়। শত শত লোকের মৃত্যু হয়। চারিদিকে মানুষের কান্না ও আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে যায়। দীপেন সপরিবারে কোনোমতে। জীবন রক্ষা পায়। সেদিন রাতে দীপেন পরিবারের সকলকেই। সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে বলেন, তিনিই আমাদের রক্ষা করবেন।

ক. কায়কোবাদের আসল নাম কী?

খ. ‘তুমি মোর পথের সম্বল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের দীপেন বাবুর মধ্যে ‘প্রার্থনা’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার ভাবার্থকে কতটুকু সমর্থন করে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০১৮]
উদ্দীপক-১:
মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করা হলেও পৃথিবীর সব সৃষ্টিই স্রষ্টার গুণগানে সদা মশগুল। ক্ষুদ্র পিপীলিকাও তাঁর অপার মহিমা থেকে বঞ্চিত নয়।

উদ্দীপক-২:
তোমার দয়া বিনা পাব না’ত ক্ষমা ওগো মোর দয়াময়
তব করুণা লভিলে হৃদয়
আজিকে ধন্য হয়।

ক. একাগ্র হৃদয়ে স্রষ্টাকে স্মরণ করলে কী নিভে যায়?

খ. “দেহ হৃদে বল!”- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

গ. ১নং উদ্দীপকে ‘প্রার্থনা’ কবিতার ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ২নং উদ্দীপকটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার মূলভাবকে ধারণ করে।-মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
এলাহি, আমাকে ভাষা দাও প্রভু। মিনতি করার ভাষা। ক্ষমা প্রার্থনা এবং পাপ মোচনের শব্দ এখনও আমার অনায়ত্ত আমার চাই প্রার্থনার ভাষা, যা কাব্য বা কান্না নয়। বরং আত্মনিবেদনের মানবিক অনুতাপ। যেমন হযরত আদম তার শরীরছেঁড়া সঙ্গিনীকে নিয়ে অপরাধী কপাল বেহেশতের ধূলিতে স্থাপন করে বলেছিলেন, ক্ষমা, প্রভু একটিবারের মতো ক্ষমা।

ক. ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্যটির রচয়িতা কে?

খ. কবির হৃদয়ে শক্তি কামনার কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি কোন দিক দিয়ে ‘প্রার্থনা’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “মিল থাকলেও উদ্দীপকটি ‘প্রার্থনা’ কবিতার সম্পূর্ণ ভাব ধারণ করতে পারেনি।”- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
যে ভুলে তোমারে ভুলে
হীরা ফেলে কাচ তুলে
ভিখারি সেজেছি আমি
আমার সে ভুল, প্রভু,
তুমি ভেঙে দাও।

ক. ‘প্রার্থনা’ কবিতাটি কোন কাব্য থেকে সংকলিত?

খ. “ভুলিতে তোমারে, প্রাণে অবসাদ”- কথাটি বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটিতে ‘প্রার্থনা’ কবিতার যে ভাবের প্রতিফলন ঘটেছে। তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘প্রার্থনা’ কবিতায় প্রকাশিত কবির অনুভূতির একটি খন্ডচিত্র উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে- মন্তব্যটির সাথে কি তুমি একমত? মতের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
“আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণ ধুলার তলে,
সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখেও জলে।”

ক. কার নামে অশেষ মঙ্গল নিহিত?

খ. ‘না জানি ভকতি, নাহি জানি স্মৃতি’- কেন বলা হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘প্রার্থনা’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? আলোচনা কর।

ঘ. “স্রষ্টার কাছে মাথা নত করলে অন্তরে প্রশান্তি জাগে”- উদ্দীপক ও ‘প্রার্থনা’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
(1) হে প্রভু, এ পৃথিবীতে কারও কাছে যদি সহায়তা না জোটে,
মানুষ যদি আমার ক্ষতি করে, আমাকে লাঞ্ছনা-বঞ্চনার
শিকার হতে হয়, তারপরও যেন আমি মনোবল না হারাই।

(ii) হে প্রভু, সুখের দিনেও যেন তোমার নাম কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করতে পারি এবং দুঃখের রাতেও যেন তোমার প্রতি আস্থা না হারাই।

ক. ‘শিবমন্দির’ কায়কোবাদের লেখা কোন ধরনের গ্রন্থ?

খ. কবি নিজেকে নিঃসম্বল বলেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকের (ii) ‘প্রার্থনা’ কবিতার কোন দিককে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের (i) ও (ii) ‘প্রার্থনা’ কবিতার কি সমগ্র ভাব সার্থকভাবে ধারণ করে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

নিচে প্রার্থনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

প্রার্থনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment