পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

কামিনী রায়ের ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় মানুষ কোনো মহৎ কাজ করতে গেলে অনেক সময় দ্বিধা ও ভয় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কে কী বলবে, কে সমালোচনা করবে এই ভাবনায় অনেকেই শুরু করতে সাহস পান না। এই পোস্টে পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
১. ‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে
আসে নাই কেহ অবনী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’

২. নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো
যুগ-জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আলো।
সবাই মোরে ছাড়তে পারে বন্ধু যারা আছে
নিন্দুক সে ছায়ার মতো থাকবে পাছে পাছে।
নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে,
আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে। [সংক্ষেপিত)

ক. ‘প্রশমিতে’ শব্দটির অর্থ কী?

খ. ‘সংশয়ে সংকল্প সদা টলে’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কোন স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুকের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তরঃ

ক. ‘প্রশমিতে’ শব্দটির অর্থ উপশম ঘটাতে বা নিবারণ করতে।

খ. অন্যের সমালোচনার ভয়ে সংশয়ে সংকল্প টলে।

সমাজে কোনো কাজ করতে গেলে অনেক মানুষ নানা ধরনের কথা বলে এবং সমালোচনা করে। এসব কথা আমাদের মনে সন্দেহ ও লজ্জা তৈরি করে। এর ফলে আমরা নিজের লক্ষ্য ঠিকভাবে অর্জন করতে পারি না। যদি মন শক্ত না হয়, তবে অন্যের সমালোচনা সহজেই আমাদের দুর্বল করে ফেলে। তখন আমরা ধীরে ধীরে নিজের সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য থেকে সরে যাই।

গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকে অন্যের কথা ও সমালোচনার ভয়ে মানুষ কীভাবে ভয় পায় ও সংকুচিত হয়ে পড়ে, তা বলা হয়েছে। কেউ ভালো বা মহৎ কাজ করতে চাইলে কিছু মানুষের কটুকথার ভয় তাকে পিছিয়ে দেয়। এই ভয়েই তারা নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে পারে না।

উদ্দীপকের প্রথম অংশে বলা হয়েছে, মানুষ শুধু লজ্জা বা সংকোচে ভোগার জন্য জন্মায়নি। প্রত্যেক মানুষ তার কাজের মাধ্যমে অন্যের উপকার করতে পারে। বিপদে-আপদে একে অন্যকে সাহায্য করতে লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই বলা যায়, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় সমালোচনার ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হয়েছে, আর উদ্দীপকের প্রথম অংশে তার বিপরীত কথা বলা হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশ এবং ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় দেখানো নিন্দুকদের প্রভাব একরকম নয়। তাই এ দুটিকে পুরোপুরি একসঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় না।

উদ্দীপকের কবিতাংশে যে নিন্দুকের কথা বলা হয়েছে, তাদের কথায় মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং নিজেকে সংশোধন করার অনুপ্রেরণা পায়। কিন্তু ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকদের কথায় মানুষ কাজ করার আগ্রহই হারিয়ে ফেলে।

নিন্দুক ও তাদের সমালোচনা মানুষের জীবনেরই একটি অংশ। অনেক সময় তারা নিজের ইচ্ছাতেই অন্যের সমালোচনা করে। এর ফলে কখনো ভালো ফল হয়, আবার কখনো খারাপ ফলও দেখা যায়। উদ্দীপক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় যে নিন্দুকদের কথা বলা হয়েছে, তাদের ভূমিকা এই দিক থেকে ভিন্ন।

সমাজের বা মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে গেলে নানা বাধা ও সমালোচনা আসে। অনেক সময় এসব সমালোচনার মাধ্যমে মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পারে। উদ্দীপকে এমন নিন্দুকদের কথাই সম্মানের সঙ্গে বলা হয়েছে। কিন্তু ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকদের ভয়ে মানুষ অনেক সময় নিজের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে যায়। তাই বলা যায়, এই দুই ধরনের নিন্দুকের প্রভাব এক নয়।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [কুমিল্লা বোর্ড ২০১৭; চট্টগ্রাম বোর্ড ২০১৬]
রুবেল ও সোহেল দুই বন্ধু। রুবেল সোহেলের সব গুণের ভক্ত। কিন্তু সোহেল মাঝে মাঝে রুবেলের সমালোচনা করে। রুবেল সোহেলের এই বৈশিষ্ট্য মোটেও পছন্দ করে না। সে সোহেলের ওপর বিরক্ত হয়। কিন্তু রুবেল যদি কখনও সোহেলের সমালোচনা করে তবে সোহেল বিরক্ত হয় না। সোহেল মনে করে রুবেলের সমালোচনার মাধ্যমে তার উপকার করেন।

ক. ম্রিয়মাণ শব্দের অর্থ কী?

খ. ‘শক্তি মরে ভীতির কবলে, পাছে লোকে কিছু বলে’- বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকে সোহেল ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় যে শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার সবটুকু উদ্দীপকে উপস্থাপিত হয়নি- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [দিনাজপুর বোর্ড ২০১৮]
মনের মধ্যে মাঝে মাঝে ওঠে উঁকি মারি দেশের তরে হিতকর কিছু একটা করি। কিন্তু হঠাৎ হৃদয় মাঝে ওঠে দারুণ ভয় ব্যর্থ হলে মানুষজনে না জানি কী কয়। এমন ভাবনায় কল্যাণ-চিন্তা যায় যে দূরে চলে জাতির সেবায় নিজেকে আর হয় না ধরা মেলে।

ক. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটি কার লেখা?

খ. মহৎ উদ্দেশ্যে একসাথে মিলতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার বক্তব্যের সাদৃশ্য কোথায়? বর্ণনা কর।

ঘ. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার বিষয়বস্তুর সামগ্রিকতা উদ্দীপকে আছে কি? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [যশোর বোর্ড ২০১৯]
মিলনের অমায়িক ব্যবহারে সকল মানুষ মুগ্ধ। সে ধনী-গরিব, ছোট-বড় সবার সাথে সুন্দর ব্যবহার করে। শ্রমজীবীদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে দেখে তার বন্ধু শিপন বলে, ‘ছোটলোকদের এত আঙ্কারা দিতে নেই।’ কিন্তু মিলন শিপনকে বলে, ‘সকল শ্রেণির মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করলে সম্মান কমে না, বরং বাড়ে।’

ক. হৃদয়ে বুদবুদের মতো কী ওঠে?

খ. ‘একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা’- ব্যাখ্যা কর।

গ. শিপনের মধ্যে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের মিলনের মানসিকতা এবং ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবির মানসিকতা একসূত্রে গাঁথা”- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [দিনাজপুর বোর্ড ২০১৯]
নিপুণ শারীরিক প্রতিবন্ধী। পা দিয়ে লিখে এইচ.এস.সি. পরীক্ষা পাস করেছে। লেখাপড়া করে এইটুকু আসতে তাকে অনেক বাঁধা পার হতে হয়েছে। মা-বাবার সহযোগিতা ছাড়া যা কখনই সম্ভব ছিল না। সমাজের কিছু মানুষের মুখের কথা শুনলে তার হয়তো পড়ালেখাই হতো না। পাস করার পর নিপুণ অতি আনন্দে কেঁদে কেঁদে বলেছিল, “আমাদের মতো মানুষদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করুন।”

ক. কীসে কবির ব্যথা প্রশমিত হয়?

খ. ‘আড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি’- কেন?

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমাজের কিছু মানুষের আচরণে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার যে বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. নিপুণের মতো দৃঢ়চেতা মনোভাব সৃষ্টিই ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মূলভাব- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। [ঢাকা বোর্ড ২০১৮; কুমিল্লা বোর্ড ২০১৮]
উচ্চ মাধ্যমিকে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সীমান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। প্রথমদিকে ভালো করতে না পারলেও সে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ইংরেজি ভালো বলতে না পারার কারণে মঞ্চে তার হাত-পা কাঁপতে শুরু হয়। এ দৃশ্য কিছু শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে ধারণ করে তা ফেসবুকে দেয়। এতে সে হতাশা প্রকাশ না করে বিতর্ক চর্চা চালিয়ে যায়। সীমান্ত এখন বাংলাদেশের অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তি। সে এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বে আলো ছড়াচ্ছে।

ক. ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় সবাই একসঙ্গে মিলে কেন?

খ. হৃদয়ের শুভ্র চিন্তা বুদবুদের মতো মিশে যায় কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কিছু শিক্ষার্থী ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কাদের প্রতিনিধিত্ব করে? বর্ণনা দাও।

ঘ. “উদ্দীপকের সীমান্তই হলো ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবির কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি।”- উক্তিটির যৌক্তিকতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। [রাজশাহী বোর্ড ২০১৯]
স্টিভ জবস নিজে কখনো কলেজের পাঠও চুকোতে পারেননি। রিড কলেজে ভর্তি হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে তিনি ড্রপ আউট হয়ে। যান। তারপর কোকের বোতল কুড়িয়ে পাঁচ সেপ্টেন্টর বিনিময়ে খাওয়ার খরচ জোটানো শুরু করেন। বন্ধু-বান্ধব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আচরণ তাঁকে দারুণভাবে আহত করে। সারাদিন। দৌড়াদৌড়ি করে রাতে বন্ধুদের রুমের মেঝেতে মরার মতো। ঘুমানো স্টিভ জবস-ই আজ অ্যাপল কোম্পানির মালিক, যেখানে চার হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করছে।

ক. ‘একটি স্নেহের কথা’-এর পরের চরণটি লেখ।

খ. শুভ্র চিন্তা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত স্টিভ জবস-এর বন্ধু-বান্ধব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আচরণ ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কোন দিককে ফুটিয়ে তোলে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘উদ্দীপকের স্টিভ জবস-ই কামিনী রায়ের কাঙ্ক্ষিত মানুষ।’-উক্তিটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে কলিশন হয়;
হাঁটিতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা-পড়া ভয়,
তাই শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল
সকলে বলিল ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল।

ক. কামিনী রায়ের লেখা ছোটদের কবিতা সংগ্রহের নাম কী?

খ. একটি স্নেহের কথায় কীভাবে আমাদের ব্যথা দূর হতে পারে?

গ. উদ্দীপকে ‘পাছে লোক কিছু বলে’ কবিতার কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে? আলোচনা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের নন্দর মতো আচরণ ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় প্রত্যাশিত হয়নি।”- মূল্যায়ন কর।

নিচে পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment