নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

বনফুলের নিমগাছ একটি প্রতীকী গল্প। এই গল্পে নিমগাছের ঔষধি গুনাগুনের কথা বলা হয়েছে। এই পোস্টে নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখে দিলাম।

নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১।
রহিমদের বাড়িতে দীর্ঘ চল্লিশ বছর যাবৎ কাজ করছে আকলিমা খাতুন। এক কথায় সে তাদের সংসারটা শুধু বাঁচিয়ে রেখেছে তা নয় বরং তাদের সমৃদ্ধির মূলে তার অবদান সীমাহীন। বয়সের ভারে আজ সে অক্ষম হয়ে বিদায় নিতে চায়। কেননা তার পক্ষে এখন আর গতর খাটানো অসম্ভব। তার এ প্রস্তাবে রহিম বলে, ‘আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। জীবনের বাকি সময়টুকু আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে কাটাবেন।’

ক. চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ কোনটি?

খ. নিমগাছটি না কাটলেও কেউ তার যত্ন করে না কেন?

গ. উদ্দীপকের আকলিমার সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউয়ের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধর।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের সমগ্রভাবকে নয় বরং বিশেষ একটা দিককে তুলে ধরে”- যুক্তিসহ প্রমাণ কর।

উত্তরঃ

ক. চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ নিমগাছের পাতা।

খ. নিমগাছ ঔষধি গুণে ভরপুর, তবুও কেউ এর যত্ন করে না। বনফুলের ‘নিমগাছ’ গল্পটি প্রতীকী অর্থে লেখা হয়েছে। সাধারণভাবে এতে নিমগাছের উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে। নিমগাছের ছাল, পাতা আর ফল থেকে ওষুধ, কৃমিনাশক ও প্রসাধনী তৈরি করা হয়। এত উপকারি হওয়ার পরও কেউ নিমগাছ কাটে না, আবার কেউ যত্নও করে না। কারণ, এই গাছ যত্ন না করলেও নিজে নিজে বড় হয়ে যায়। তাই আলাদা করে কেউ এর খেয়াল রাখে না।

গ. উদ্দীপকের আকলিমা আর ‘নিমগাছ’ গল্পের নিমগাছ—দুজনের মধ্যে মিল আছে। নিমগাছ এখানে একজন পরিশ্রমী গৃহবধূর প্রতীক। আমাদের সমাজে অনেক নারী সংসার, সমাজ ও দেশের জন্য অনেক কাজ করেন, কিন্তু তারা ঠিকমতো সম্মান পান না। পুরুষশাসিত সমাজে তারা নানা রকম কষ্ট ও অবহেলার শিকার হন। তবুও তারা নীরবে নিজের কাজ করে যান। উদ্দীপকে দেখা যায়, আকলিমা বহু বছর ধরে রহিমদের বাড়িতে কাজ করেছে। সে পরিবারে উন্নতি এসেছে, যার পেছনে আকলিমার বড় অবদান আছে। পরিবারের লোকেরা তার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। ‘নিমগাছ’ গল্পেও দেখা যায়, এক গৃহবধূ সংসারে অনেক উপকার করলেও কেউ তার কথা মনে রাখে না। সে নিমগাছের মতো—অযত্নে বড় হয়, উপকার করে, কিন্তু তবুও অবহেলিত থাকে। তাই বলা যায়, আকলিমা আর ওই গৃহবধূর মধ্যে অনেক মিল আছে। তবে গৃহবধূটির অবস্থা আকলিমার চেয়েও বেশি কষ্টের।

ঘ. “উদ্দীপকের আম্বিয়া বেগম ও ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউ যেন একই সূত্রে গাঁথা”—এই মন্তব্য একদম ঠিক। সংসারে নারীরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন, কিন্তু তাদের সেই ত্যাগের মূল্য সাধারণত কেউ দেয় না। বরং সবাই তাদের কাছ থেকে উপকার নেয়, কিন্তু যত্ন বা ভালোবাসা দিতে কৃপণতা করে।‘নিমগাছ’ গল্পে নিমগাছের মাধ্যমে লেখক একজন পরিশ্রমী গৃহবধূর জীবন তুলে ধরেছেন। তিনি পরিবারে সবার জন্য নিজেকে উজাড় করে দেন, কিন্তু কেউ তাকে গুরুত্ব দেয় না। ঠিক তেমনি, উদ্দীপকে দেখা যায় আম্বিয়া বেগম তার সন্তানদের মানুষ করেছেন, তাদের সব দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু যখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন তার সন্তানরা তার খোঁজ রাখে না। এই রকম ঘটনা প্রায় সব সংসারেই ঘটে। ‘নিমগাছ’ যেমন অযত্নে বড় হয় আর সবাইকে উপকার করে, সেই গৃহবধূটিও তেমনি অবহেলার মধ্যেই সংসার চালিয়ে যান। নারীরা সবসময়ই সংসারের জন্য কাজ করেন, ভালোবাসা দেন, ত্যাগ করেন—তবুও তারা অবহেলিত থাকেন। তাই ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউ আর আম্বিয়া বেগম—দুজনেই এক রকম ভাগ্যের শিকার, এক সূত্রে গাঁথা।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [ঢাকা বোর্ড ২০২৪]
(i) ভোর বেলা শুরু কাজ শেষ হয় রাতে
প্রতিদিন এই নিয়ম ছাড় নেই তাতে।
নুন থেকে চুন হলে চলে রাগ-ঝাল
তবু ছিন্ন করতে পারে না এই মায়াজাল।

(ii) শিমুল গাছের চারা উপড়ে ফেললে বলাই ফুঁপিয়ে কেঁদেছিল। আবার কেউ ঢিল দিয়ে আমলকী পাড়লে সে কষ্ট পেয়েছে।

ক. নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না।- কারা বলে?

খ. “একঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে”- বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপক-(i) এ ‘নিমগাছ’ গল্পের যে দিক ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক-(ii)-এর বলাই যেন ‘নিমগাছ’ গল্পের কবির প্রতিরূপ”- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২৪]
বিধবা আম্বিয়া বেগম অবসরের সমস্ত টাকা ব্যয় করে দুই পুত্র ও এক কন্যাকে লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরা পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকে। তাদের সুখের কথা চিন্তা করে তিনি খুব আনন্দ পান, যদিও তাঁর দেখাশোনার মতো কেউ নেই। পুত্রদের সংবাদ দিলেও চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারে না। এক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন আম্বিয়া বেগম। অবস্থা খারাপ হলে প্রতিবেশী দিনমজুর জবেদ আলির ছেলে আশিক তাকে দেখতে আসে। সব কথা শুনে আশিক তাঁর অনেক প্রশংসা করে। সে বলে “আপনার মতো মা ঘরে ঘরে দরকার।”

ক. ‘শিলে পেষা’ অর্থ কী?

খ. “সে আর-এক আবর্জনা” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের আশিকের সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের যে চরিত্রের সাদৃশ্য আছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের আম্বিয়া বেগম ও ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউ যেন একই সূত্রে গাঁথা”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [সিলেট বোর্ড ২০২৩]
সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা, দেশ মাতারই মুক্তিকামী, দেশের সে যে আশা। দধীচি কি তাহার চেয়ে সাধক ছিল বড়? পুণ্য অত হবে নাক সব করিলেও জড়ো। মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ, সবারই সে অন্ন জোগায় নাইক গর্ব লেশ। ব্রত তাহার পরের হিত, সুখ নাহি চায় নিজে, রৌদ্র দাহে শুকায় তনু, মেঘের জলে ভিজে।

ক. ‘নিমগাছ’ গল্পটি বনফুলের কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

খ. কবিরাজরা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের মূলভাবকে ধারণ করেছে কি? তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২৩]
অংশ-১ : সালমান সাহেবের বাড়িতে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কাজ করেন রহিমা। সালমান সাহেব সবসময় তাঁর কাজের প্রশংসা করেন এবং তাঁকে যথাযথ সম্মান ও পারিশ্রমিক দেন।

অংশ-২: এ সংসারে এসেছিলাম ন বছরের মেয়ে
তারপরে এই পরিবারের দীর্ঘ গলি বেয়ে
দশের ইচ্ছা বোঝাই করা এই জীবনটা টেনে টেনে শেষে
পৌছিনু আজ পথের প্রান্তে এসে।

ক. ‘কবিরাজ’ অর্থ কী?

সুখের দুঃখের কথা/ একটুখানি ভাবব এমন সময় ছিল কোথা।

খ. ‘মাটির ভিতরে শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের অংশ-১ এর সালমান সাহেবকে ‘নিমগাছ’ গল্পে বর্ণিত কার সাথে মেলানো যায়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের অংশ-২ এ বর্ণিত গৃহবধূর জীবন আর ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউটার জীবন একই সূত্রে গাঁথা”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। [ঢাকা বোর্ড ২০২২]
কলি ও নিপুনের ছয় বছরের সংসারে দুইটি ফুটফুটে সন্তান রয়েছে। নিপুনের মা-বাবা বৃদ্ধ হওয়ায় কলি নিজের মা-বাবার মতো সেবায তাদের আগলে রেখেছে। নিপুন একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করে। সংসারের প্রতি মন দেওয়ার সময় নেই তার। কলি সন্তানদে আনা-নেওয়া, রান্না-বান্না, বাজার করাসহ সংসারের যাবতীয় কাজ করে থাকে। কিন্তু সামান্য ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নিপুন কলির সাথে কলহ সে কলিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিন্তু সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কলি নিপুনের শত লাঞ্ছনা সহ্য করে যাচ্ছে।

ক. বনফুলের প্রকৃত নাম কী?

খ. ‘নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না’- কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের নিপুনের আচরণের সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের কোন দিকের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘উদ্দীপকের কলি যেন বাঙালি নারীর বাস্তব প্রতিচ্ছবি’- ‘নিমগাছ’ গল্পের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২২]
আজগর আলির বয়স আশির কাছাকাছি। বয়সের ভারে তিনি অক্ষম। একসময় তিনি পুরো সংসারের দায়িত্ব পালন করলেও এখন তার আর সামর্থ্য নেই। তাই পরিবারের সদস্যরা তাকে বোঝাস্বরূপ মনে করে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে।

ক. বনফুলের প্রকৃত নাম কী?

খ. বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের আজগর আলির সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের লক্ষ্মীবউয়ের যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের সমগ্র ভাবকে নয়, বরং বিশেষ একটি দিককে তুলে ধরেছে।”- যুক্তিসহ তোমার মত উপস্থাপন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। [সিলেট বোর্ড ২০২২]
সাজেদা স্বামীর সংসারে এসে দেখল, এখানে তার অনেক দায়িত্ব। সংসারের প্রতিটি কাজেই তাকে প্রয়োজন। আস্তে আস্তে সে সংসারে গভীরভাবে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু অন্যদের কাছে তার কাজের তেমন গুরুত্ব নেই। সংসারের কঠিন মায়াজাল থেকে তার আর বেরোবারও সুযোগ নেই।

ক. নিমগাছ কোন রোগের মহৌষধ?

খ. বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন কেন?

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের সাদৃশ্য বর্ণনা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের সমগ্র ভাব ধারণ করেছে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। [বরিশাল বোর্ড ২০২২]
“বৃক্ষের দিকে তাকালে জীবনের তাৎপর্য উপলব্ধি করা যায়। তাই, বারবার সেদিকে তাকানো প্রয়োজন। মাটির রস টেনে নিয়ে নিজেকে মোটাসোটা করে তোলাতেই বৃক্ষের সমাপ্তি নয়। তাকে ফুল ফোটাতে হয়, ফল ধরাতে হয়। নইলে তার জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই বৃক্ষকে সার্থকতার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা, সজীবতা ও সার্থকতার এমন জীবন্ত দৃষ্টান্ত আর নেই।”

ক. বনফুলের প্রকৃত নাম কী?

খ. নতুন লোকটি নিমগাছের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘নিমগাছ’ গল্পের যে বিশেষ দিকের অবতারণা ঘটেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের মূলভাবকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

নিচে উত্তরসহ নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

নিমগাছ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ মানুষ মুহম্মদ স সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

Related Posts

Leave a Comment