কোষ পরিভ্রমণ সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান অনুশীলন বই সমাধান ৩য় অধ্যায়

কোষকে বলা হয় জীবের গঠন এবং কাজ সম্পাদনের একক। অর্থাৎ একটি জীবের শারীরিক গঠনের একক হচ্ছে কোষ। প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজকের পোস্টে তোমাদের কোষ পরিভ্রমণ সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান অনুশীলন বই সমাধান ৩য় অধ্যায়ের সমাধান করে দিলাম।

কোষ পরিভ্রমণ সপ্তম শ্রেণী

সকল জীবই কোষ নিয়ে গঠিত। বাংলা কোষ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Cell, যার আক্ষরিক
অর্থ ছোট ঘর বা প্রকোষ্ঠ। Cell নামকরণটি করেছেন বিজ্ঞানী রবার্ট হুক (Robert Hooke), যিনি
অণুবীক্ষণযন্ত্রের (Microscope) আবিষ্কারক।

কোষ পরিভ্রমণ ক্লাস ৭

সব ধরনের কোষের গঠন ও কাজের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেলে এবার দলে ফিরে এসে আলোচনা করে নাও। তোমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো: নিজেদের মডেলের সাথে অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের কোষের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য, কোন কোন উপাদান সব কোষেই বিদ্যমান আছে, কোনটা বিশেষ কোনো ধরনের জীবকোষেই শুধু থাকে। আলোচনার ভিত্তিতে তোমার ধারণা কী দাঁড়ালো তা নিচে লিখে রাখো।

তৃতীয় সেশন

কোন কোন উপাদান উদ্ভিদ ও প্রাণী দুই ধরনের কোষেই থাকে? এদের কাজ কী?


কোষঝিল্লি, নিউক্লিয়াস, সাইটোপ্লাজম, মাইটোকনড্রিয়া উদ্ভিদ ও প্রাণী দুই ধরনের কোষেই থাকে। কোষঝিল্লি কোষকে নিরাপদ রাখে। নিউক্লিয়াস সব ধরনের কোষের কার্যকলাপের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। কোষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেমন শক্তি উৎপাদন, জীবাণুর আক্রমণ প্রতিরোধ, পরিবেশের প্রতি সংবেদনশীল ইত্যাদি সম্পন্ন হয় সাইটোপ্লাজমে। মাইটোকনড্রিয়া শক্তি উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।

কোন কোন উপাদান শুধু উদ্ভিদ বা শুধুপ্রাণিকোষে থাকে? এদের কাজ কী?


কোষপ্রাচীর, ক্লোরোপ্লাস্ট, প্লাস্টিড শুধু উদ্ভিদ কোষে থাকে। লাইসোসোম ও সেন্ট্রোসোম শুধু প্রাণী কোষে থাকে। কোষ প্রাচীর উদ্ভিদের বাহিরে প্রতিকূল অবস্থা থেকে ভেতরের বস্তুকে রক্ষা করে। ক্লোরোপ্লাস্টের উপস্থিতির কারণে উদ্ভিদের পাতা সবুজ ও কচি দেখায়।লাইসোসোম অন্তকোষীয় পরিপাকে সহায়তা করে। সেন্ট্রোসোম কোষের গঠন প্রদান করে।

নিচের ভেন-ডায়াগ্রামে উদ্ভিদকোষ ও প্রাণিকোষের অঙ্গাণুর মধ্যে যে মিল-অমিলগুলো লেখো।

চতুর্থ সেশন

এবার কী লিখে অথবা বলে কিংবা অন্য কোনোভাবে বুঝাতে পারবে—জীবের স্বাভাবিক প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য স্বাভাবিক কোষ বিভাজন কেন গুরুত্বপূর্ণ?


জীবের দৈহিক বৃদ্ধির জন্য তার কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি দরকার। কোষ সংখ্যায় বাড়ে বিভাজনের মাধ্যমে। অর্থাৎ একটি কোষ বিভাজিত হয়ে দুটি হয়, দুটি থেকে চারটি হয় ইত্যাদি। জীবের দেহ গঠনের জন্য দরকার দেহকোষ। অপরদিকে তার প্রজননের জন্য দরকার হয় প্রজননকোষ। উচ্চশ্রেণির জীবে, যেমন মানুষের ক্ষেত্রে দেহকোষ বিভাজিত হয় যে প্রক্রিয়ায়, তাকে বলা হয় মাইটোোসিস কোষ বিভাজন। অপরদিকে প্রজনন কোষ তৈরি হবার প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় মিয়োোসিস কোষ বিভাজন। জননকোষে নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রোমোজোম থাকা দরকার। যদি কোনো কোষে স্বাভাবিকতার চেয়ে বেশি বা কম ক্রোমোজোম থাকে, তবে এসব জনন কোষ থেকে অস্বাভাবিক বৈশিস্টট্যসম্পন্ন সন্তান জন্ম নেবে।

দলের সবার সাথে কাজগুলো করতে তোমাদের কেমন লেগেছে? নতুন কী শিখলে এই শিখন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে?


দলের সবার সাথে কাজ করতে আমাদের ভালো লেগেছে। এই শিখন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমরা উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের প্রধান অঙ্গ গুলো কিভাবে গঠিত হয় এবং এর কাজ সম্পর্কে জেনেছি। কিছু কিছু উপাদান প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয় কোষেই থাকে আবার কিছু কিছু উপাদান উদ্ভিদ ও প্রাণীতে ভিন্ন থাকে। এই নতুন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমরা আরো কোষের বিভাজন সম্পর্কে জেনেছি।

কোষের কোন বিষয়টি তোমার সবচেয়ে চমকপ্রদ লেগেছে?


কোষ বিভাজন বিষয়টি আমার কাছে সবচেয়ে চমকপ্রদ লেগেছে। জীবের দৈহিক বৃদ্ধির জন্য তার কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি দরকার। মানুষের ক্ষেত্রে দেহকোষ বিভাজিত হয় যে প্রক্রিয়ায় তাকে বলা হয় মাইটোসিস। কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি জীবের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কোষ বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোষ গুলোর মৃত্যু হয়। এভাবে জীবের কোষের সংখ্যার একটি ভারসাম্য রক্ষা হয়। জীবের স্বাভাবিক প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য কোষ বিভাজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

কোষ বিভাজন কাকে বলে?

যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । কোষ বিভাজন একটি মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবের দৈহিকবৃদ্ধি ও বংশ বৃদ্ধি ঘটে ।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় ঘটে?

জনন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসে মিয়োসিস কোষ বিভাজন ঘটে। মিয়ােসিসের ফলে একটি নিউক্লিয়াস থেকে চারটি অপত্য নিউক্লিয়াসের জন্ম হয়।

অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন কাকে বলে?

মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি—এভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে। কোনো কারণে এই নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে যে বিভাজন ঘটে থাকে, তাকে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন বলে। অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফলে হয় টিউমার, ক্যান্সার।

Related Posts

Leave a Comment