আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

জসীমউদ্দীনের “আমার বাড়ি” কবিতাটি একটি মধুর, স্নেহসিক্ত ও আতিথেয়তায় পরিপূর্ণ কবিতা। কবিতাটিতে কবি এক প্রিয়জনকে ভোমর (মৌমাছি) বলে সম্বোধন করে তাঁর গ্রামের বাড়িতে আসার জন্য আন্তরিক আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। এই পোস্টে আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে, 
আমাদের ছোট গাঁয়, 
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়,
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভাইয়ের স্নেহের ছায়।

ক. ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কাজলা দীঘির কাজল জলে কী ভাসে? 

খ. ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কেন? 

গ. উদ্দীপকের প্রথম চরণের সাথে ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কোন অংশের মিল আছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপক ও ‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাবার্থ কি এক? বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কাজলা দিঘির কাজল জলে হাঁস ভেসে বেড়ায়।

খ. ‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আদর-যত্ন করে আপ্যায়ন করার জন্য।

‘আমার বাড়ি’ কবিতায় কবি তার বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানান। তিনি শুধু আমন্ত্রণই জানান না, আপ্যায়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। বন্ধুকে বলেন, তার বাড়িতে গেলে কবি তাকে পিঁড়ে পেতে বসতে দেবেন। দই, খই, কলা দিয়ে জলখাবার খাওয়াবেন। সারা দিন বন্ধুর সঙ্গে খেলা করবেন। আর এই আদর-যত্ন ও আপ্যায়ন করার জন্যই কবি বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

গ. উদ্দীপকের প্রথম চরণের সঙ্গে ‘আমার বাড়ি’ কবিতার প্রথম অংশের মিল আছে।

বাঙালি মানুষ বন্ধু-বান্ধবকে নিজের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করতে খুব ভালোবাসে। মানুষের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার প্রকৃতিও যেন নিমন্ত্রিত বন্ধুর সেবায় নিজেকে সমর্পণ করে।

উদ্দীপকের প্রথম চরণে কবি তার প্রিয় মানুষটিকে গ্রামের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বলেছেন, তার সঙ্গে লতা-পাতায় ঘেরা ছোট গ্রামে যেতে। উদ্দীপকের কবির এই আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি ‘আমার বাড়ি’ কবিতার প্রথম অংশে প্রকাশ পেয়েছে। কবি জসীমউদ্‌দীনও তার বন্ধুকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দুই জায়গাতেই বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

ঘ. হ্যাঁ, উদ্দীপক ও ‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাবার্থ এক।

বাংলাদেশ একটি গ্রামপ্রধান দেশ। এদেশের মানুষ অতিথিকে আদর-যত্ন করতে আন্তরিকভাবে সব রকম চেষ্টা করে। অতিথির নিবিড় সেবা ও পরিচর্যা করে। উদ্দীপকের কবিতাংশে আমরা দেখি, কবি তার গাছ-লতা-পাতায় ঘেরা ছোট্ট গ্রামের নিজের বাড়িতে বন্ধুকে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তার ঘরখানি স্নেহ-মায়ার বন্ধনে জড়ানো। কবির ঘরটি মা, বোন ও ভাইয়ের আদর-স্নেহে ভরা। বন্ধু যদি তার বাড়িতে যায়, তবে সেও এই স্নেহ-ভালোবাসা পাবে। ‘আমার বাড়ি’ কবিতায়ও কবি বন্ধুকে নিজের গ্রামের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

শুধু আমন্ত্রণই জানাননি, আপ্যায়ন করার, খেলাধুলা করার এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে দেহ-মন জুড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

উদ্দীপক ও ‘আমার বাড়ি’ কবিতা দুই জায়গাতেই বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করা এবং তাকে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ পেয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি, উদ্দীপক ও কবিতার ভাবার্থ এক।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
সোহাগের শহরের ফ্ল্যাটে বিদেশ থেকে চাচা এসেছেন। সোহাগ উৎসুক হয়ে চাচাকে জিজ্ঞেস করল, “চাচা, তোমাদের দেশে কী কী আছে?” চাচা মিষ্টি হেসে উত্তর দিলেন, “বাবা, সেখানে বড় বড় অট্টালিকা আছে, দামি গাড়ি আছে। কিন্তু তুমি যদি আমার ছেলেবেলার গ্রামের বাড়িতে যেতে, তাহলে দেখতে পেতে আম-কাঁঠালের বন, ডালিম গাছের ফুল, কাজলা দিঘির পাড়। সেখানে খেতে পেতে শালি ধানের চিঁড়ে, গামছা-বাঁধা দই। সেটাই ছিল আসল সম্পদ।”

ক. ‘ভোমর’ শব্দের অর্থ কী?

খ. “আমার বাড়ি যাইও ভোমর, এই বরাবর পথ”— কবি ভোমরকে কেন এই নির্দেশ দিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের চাচার বর্ণনার সাথে ‘আমার বাড়ি’ কবিতার বর্ণনার কী কী মিল রয়েছে?

ঘ. “চাচার বক্তব্যে বস্তুগত সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব প্রতিফলিত হয়েছে, যা ‘আমার বাড়ি’ কবিতার মূলভাবের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ”— বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
শ্রীমঙ্গলের চা-বাগানের কর্মকর্তা শহুরে বন্ধু রফিককে চিঠি লিখল, “তুমি যদি আমাদের এখানে আসো, তবে দেখবে সবুজের অফুরান সমারোহ। চা-গাছের সারি সারি বুকে নিয়ে আছে শিশির ফোঁটা। সকালে কুয়াশার চাদর, বিকেলে পাহাড়ি ঝর্ণার শব্দ। আমি তোমাকে নিয়ে ঘুরব পাহাড়ে, খাওয়াব আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আসো না একবার, প্রকৃতির এই রাজ্য দেখবে?”

ক. ‘গামছা-বাঁধা দই’ বলতে কী বোঝায়?

খ. কবি কেন অতিথিকে “তারা ফুলের মালা গাঁথি, জড়িয়ে দেব বুকে” বলেছেন?

গ. উদ্দীপকের চিঠি এবং ‘আমার বাড়ি’ কবিতার আমন্ত্রণের মধ্যে কোন সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়?

ঘ. “উদ্দীপক ও কবিতা উভয়ই প্রকৃতির মাঝে আতিথেয়তার অনন্য দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে, তবে ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন”— মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
নতুন বছর উপলক্ষে টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানে বলছিলেন প্রবীণ কৃষক জমির উদ্দীন: “আমাদের সময়ে বাড়িতে অতিথি এলে আমরা বলতাম, ‘ঘরে আসো, বসো। আমাদের যা আছে তাই দেব।’ হয়ত দিইনি দামি পোলাও-কোরমা, কিন্তু দিয়েছি মিষ্টি চালের পায়েশ, নিজ হাতে ধরে আনা পুকুরের মাছ। আজকাল অতিথি আসে, কিন্তু সেই আত্মীয়তা থাকে না। বাড়ি আসে মোবাইল ফোন, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘর, কিন্তু হারিয়ে যায় আত্মার উষ্ণতা।”

ক. ‘বিন্নি ধান’ কী?

খ. “শালি ধানের চিঁড়ে দেব, বিন্নি ধানের খই”— কবি কেন সাধারণ এই খাবারগুলোর কথা বলেছেন?

গ. উদ্দীপকের জমির উদ্দীনের বক্তব্য ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কোন মূল্যবোধের প্রতিফলন?

ঘ. “উদ্দীপকের জমির উদ্দীনের আক্ষেপ ‘আমার বাড়ি’ কবিতার আতিথেয়তার ভাবধারাকে সমৃদ্ধ করেছে”— বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
শিল্পী নাসরিন তার আঁকা একটি ছবির ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন: “এই ছবিতে আমি আমার নানার বাড়ির স্মৃতি আঁকতে চেয়েছি। এই যে ডালিম গাছ, এই কাজলা দিঘি, এই হাঁসগুলো—এসব আমার শৈশবের সাথী। আমি মনে করি, শিল্পের কাজ হলো এমন স্মৃতিকে রং ও রেখায় ধরে রাখা, যা হারিয়ে যাচ্ছে।”

ক. কবি জসীমউদ্দীন কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

খ. “আমার বাড়ি ডালিম গাছে ডালিম ফুলের হাসি”— চরণটির শৈল্পিক সৌন্দর্য ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের শিল্পী নাসরিনের শৈল্পিক উদ্দেশ্য এবং ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কবির উদ্দেশ্যের মধ্যে সাদৃশ্য কী?

ঘ. “শিল্প ও সাহিত্য উভয় মাধ্যমেই ব্যক্তিগত স্মৃতি ও আবেগকে চিরস্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়”— উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
একটি ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগে লেখা ছিল: “যদি কখনো বাংলাদেশের গ্রামে যাওয়ার সুযোগ পান, তবে দেখবেন সেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা কম, কিন্তু হৃদয়ের সম্পদ অফুরান। সেখানকার মানুষ আপনাকে অচেনা মনে করবে না। তাদের বাড়ির উঠানে দাঁড় করিয়ে দেবে, বাড়ির ডাল-ভাত খাওয়াবে, ছায়ায় বসিয়ে গল্প শোনাবে। এটা তাদের রক্তে।”

ক. ‘পিঁড়ে’ কী?

খ. “মৌরি ফুলের গন্ধ শুঁকে থামিও তব রথ”— কবি এই পঙ্ক্তি দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের ব্লগের বর্ণনা ‘আমার বাড়ি’ কবিতার কোন বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়?

ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘আমার বাড়ি’ কবিতার স্নেহ ও আতিথেয়তার দিকটি একটি বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বর্ণিত হয়েছে”— মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
শহুরে মেয়ে তানিয়া গ্রামের নানি বাড়িতে বেড়াতে গেল। ফিরে এসে স্কুলের অ্যাসাইনমেন্টে লিখল: “আমার নানি বাড়ির আঙিনায় একটা বড় আমগাছ। তার নিচে বসে নানি আমাকে শালি ধানের চিঁড়ে-গুড় খেতে দেন। সেখানে দুপুরে গাইয়ের দোহনের শব্দে ঘুম ভাঙে। সন্ধ্যায় দিঘির পাড়ে হাঁস ভাসে। এসব দেখে আমার মনে হয়, শহরের চাকচিক্য অনেক, কিন্তু গ্রামের এই শান্তি ও মায়ার তুলনা হয় না।”

ক. কবিতায় আমন্ত্রিত অতিথিকে কী দিয়ে জলপান করানোর কথা বলা হয়েছে?

খ. “চাঁদমুখে তোর চাঁদের চুমো মাখিয়ে দেব সুখে”— চরণটির ভাবার্থ ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের তানিয়ার অভিজ্ঞতার কোন অংশগুলো ‘আমার বাড়ি’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?

ঘ. “তানিয়ার লেখনী ‘আমার বাড়ি’ কবিতার ভাবকে একটি বাস্তব জীবনচিত্রের মাধ্যমে যাচাই করেছে”— উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

নিচে আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

আমার বাড়ি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ আমার বাড়ি কবিতার MCQ | বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর

Related Posts

Leave a Comment