নোলক কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা

‘নোলক‘ কবিতাটি আল মাহমুদ রচিত একটি উল্লেখযোগ্য বাংলা কবিতা। এই কবিতার মাধ্যমে কবি বাংলার প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষয় এবং হারানোর প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই পোস্টে নোলক কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা বিষয় তুলে ধরা হল।

নোলক কবিতার মূলভাব

কবি আল মাহমুদ তাঁর মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলক খুঁজতে বের হয়েছেন। প্রকৃতির বিভিন্ন স্থানে তিনি নোলকের সন্ধানে বিচরণ করেছেন। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের নিকট কবির কথোপকথন হয়েছে। কবি প্রথমে নোলক খুঁজতে নদীর কাছে যায়। নদী বলে আমাকে স্পর্শ করো না। আমার শরীর জুড়ে রয়েছে বোয়াল মাছের বসবাস। তিতাস নদীটি কেঁদে বলেছে তাঁর কাছে কোনো নোলক নেই। তার বুকে সাদা বকেরা ডানা মেলে বসে থাকে। কবি এবার বনের ভেতরে প্রবেশ করেন। যেখানে বিভিন্ন ধরনের পাখপাখালি রয়েছে। তারা জানায় আমরা অতি সাধারণ, আমাদের কাছে মূল্যবান নোলক নেই। সুগন্ধ ভরা ফুল গাছগুলোও একই কথা বলে। ফুলেরা হাসিমুখে গন্ধ নেয়ার জন্য হাত পাততে বলে। বনের মধ্যে হরিণগুলো পাতার ফাঁকে মুখ বাঁকিয়ে কবিকে বোঝাতে চায় তাদের কাছেও কোনো নোলক নেই। কিন্তু কবি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় যে, তার মায়ের নোলক ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না। আলোচ্য কবিতায় ‘নোলক’ শব্দটি প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলার অতীত ঐতিহ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পশু-পাখি, নদ-নদী, বন-জঙ্গল আগের মতো আর নেই। বাংলার মায়ের মূল্যবান এ সম্পদগুলো কালের আবর্তনে হারিয়ে গেছে। এগুলো রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। হারানো এ সম্পদগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে। মূলত এ বিষয়গুলোকে বোঝাতেই কবি ‘নোলক’ কবিতায় উপমা হিসেবে নোলক হারিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব হলো মা ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগ এ ভালোবাসা প্রদর্শন ।

নোলক কবিতার মূলভাব (ছোট করে)

কবি আল মাহমুদ তাঁর মায়ের হারানো নোলক খুঁজতে বেরিয়েছেন। প্রথমে তিনি নদীর কাছে যান, কিন্তু নদী তাকে জানিয়ে দেয় যে তার শরীরের মধ্যে বোয়াল মাছের বসবাস এবং সেখানে কোনো নোলক নেই। এরপর কবি বনের মধ্যে প্রবেশ করেন, যেখানে পাখপাখালি, ফুলগাছ, এবং হরিণদের কাছেও নোলক খুঁজে পান না। এসব প্রকৃতির অংশে তাঁকে জানানো হয় যে তারা সাধারণ এবং তাদের কাছে মূল্যবান নোলক নেই। কিন্তু কবি দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি মায়ের নোলক ছাড়া ঘরে ফিরবেন না। এই কবিতার মাধ্যমে কবি বাংলার হারানো ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘নোলক’ এখানে বাংলার হারানো সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা আমাদের রক্ষা করা উচিত। কবি আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে হারানো সম্পদগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সচেতন ও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

নোলক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১। ‘নোলক’ কবিতায় বাংলাদেশের কোন নিসর্গ-প্রকৃতির বর্ণনা আছে?
উত্তর: ‘নোলক’ কবিতায় বাংলাদেশের নদীনালা, সবুজ বন, পাখপাখালি, পাহাড়, আকাশ ও অন্ধকার রাতের বর্ণনা রয়েছে।

২। কার নোলক হারিয়েছে?
উত্তর: কবির বাংলা মায়ের নোলক হারিয়েছে।

৩। কবি প্রথমে কার কাছে গিয়েছিলেন?
উত্তর: কবি প্রথমে নদীর কাছে গিয়েছিলেন।

৪। কার শরীর বোয়াল মাছে ভরা?
উত্তর: নদীর শরীর বোয়াল মাছে ভরা।

৫। নদীর বাঁকে কারা পাখা ছড়িয়ে থাকে?
উত্তর: নদীর বাঁকে সাদা বকেরা পাখা ছড়িয়ে থাকে।

৬। কোন বনের হরিৎ টিয়ে ঝিকমিক করে?
উত্তর: সবুজ বনের হরিৎ টিয়ে ঝিকমিক করে।

৭। কবি কার কাছে মিনতি করে?
উত্তর: কবি সবুজ বনের কাছে মিনতি করে।

৮। কারা বনের অতি সাধারণ?
উত্তর: পাখপাখালিরা বনের অতি সাধারণ।

৯। ‘নোলক’ কবিতায় কারা সবুজ চুলে ফুল পিন্দেছে?
উত্তর: ‘নোলক’ কবিতায় ফুলেরা সবুজ চুলে ফুল পিন্দেছে।

১০। ফুলেরা কবিকে কী দিতে চায়?
উত্তর: ফুলেরা কবিকে গন্ধ দিতে চায়।

১১। কার আহার ভরা বুক?
উত্তর: পাহাড়ের আহার ভরা বুক।

১২। হরিণেরা কোথায় মুখ বাঁকিয়ে রাখে?
উত্তর: হরিণেরা পাতার ফাঁকে মুখ বাঁকিয়ে রাখে।

১৩। কবি কী ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না?
উত্তর: কবি তার মায়ের নোলক ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না।

১৪। ‘পাখপাখালি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘পাখপাখালি’ শব্দের অর্থ নানা জাতের পাখি।

১৫। ‘পিন্দেছি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘পিন্দেছি’ শব্দের অর্থ পরেছি।

১৬। ‘হরিণবেড়ের বাঁক’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘হরিণবেড়ের বাঁক’ হলো নদীর কোনো বাঁকের নাম।

১৭। ‘হরিৎ টিয়ে’ কী?
উত্তর: ‘হরিৎ টিয়ে’ হলো সবুজ রঙের টিয়ে পাখি।

নোলক কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। কোন নদী কেঁদে কথা বলল?
(ক) গড়াই
(খ) মহানন্দা
(গ) তিতাস
(ঘ) আত্রাই
উত্তর: (গ) তিতাস

২। টিয়েরা কোন বনে থাকে?
(ক) ঘন বনে
(খ) বাঁশ বনে
(গ) ঝাউ বনে
(ঘ) সবুজ বনে
উত্তর: (ঘ) সবুজ বনে

৩। ‘নোলক’ কবিতায় টিয়ের গায়ের রং কেমন?
(ক) সবুজ
(খ) হলুদ
(গ) লাল
(ঘ) সাদা
উত্তর: (ক) সবুজ

৪। ফুলেরা কবিকে কী দিতে চেয়েছে?
(ক) পাতা
(খ) গন্ধ
(গ) পাঁপড়ি
(ঘ) গাছ
উত্তর: (ব) গন্ধ

৫। আহার ভরা বুক কার?
(ক) ঝরনার
(খ) মাঠের
(গ) সবুজ বনের
(ঘ) পাহাড়ের
উত্তর: (ঘ) পাহাড়ের

৬। ‘নোলক’ কবিতায় মুখ বাঁকিয়ে থাকে-
(ক) হাতি
(খ) পাখি
(গ) বাঘ
(ঘ) হরিণ
উত্তর: (ঘ) হরিণ

৭। কোথায় হরিণেরা মুখ বাঁকিয়ে থাকে?
(ক) গাছের আড়ালে
(খ) পাতার ফাঁকে
(গ) বনের মধ্যে
(ঘ) নদীর তীরে
উত্তর: (খ) পাতার ফাঁকে

৮। কবি কী ছাড়া ঘরে ফিরে যাবেন না?
(ক) বালা
(খ) কানের দুল
(গ) নোলক
(ঘ) ছড়ি
উত্তর: (গ) নোলক

৯। ‘ছড়িয়ে’ শব্দের অর্থ কী?
(ক) পাখা মেলে
(খ) আঁখি মেলে
(গ) হা করে
(ঘ) বসে থাকা
উত্তর: (ক) পাখা মেলে

১০। ‘পিন্দেছি’ শব্দের অর্থ কোনটি?
(ক) তা দেখেছি
(খ) শুনেছি
(গ) পরেছি
(ঘ) বলেছি
উত্তর: (গ) পরেছি

আরও পড়ুনঃ ময়নামতির চর কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা

আরও পড়ুনঃ মাঝি কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা

Related Posts

Leave a Comment