কোকিল গল্পটি একটি রূপকথার। এটি লিখেছেন ডেনমার্কের হ্যান্স অ্যান্ডারসন। অনুবাদ করেছেন বুদ্ধদেব বসু। এই পোস্টে ৮ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায়ের কল্পভনির্ভর লেখা কোকিল গল্পের মূলভাব লিখে দিলাম।
Table of Contents
কোকিল গল্পের মূলভাব
গল্পটি একটি রাজা এবং তার রাজ্যের এক বিশেষ পাখি কোকিল সম্পর্কে। চীন দেশের রাজা, যিনি তাঁর রাজ্যের প্রাসাদ ও বাগানের গর্বে সজীব, সেখানে অমলিন ফুলের সাজানো বাগান। প্রতিটি ফুলের গলায় রূপোর ঘণ্টা বাঁধা, যা দিয়ে বাগানের সৌন্দর্য আরও বাড়ে। বাগানে হাঁটলেই, ঘণ্টার সুরে মানুষের মন মুগ্ধ হয়ে যায়।
একদিন, রাজার কাছে শুনা যায় যে তাঁর রাজ্যে একটি কোকিল পাখি রয়েছে, যার গান এতই সুন্দর যে, মানুষ দূরদূরান্ত থেকে তার গান শুনতে আসে। রাজা জানতে পারে, কোকিলের গান শুনে সকলেই মুগ্ধ হয়ে যায়। সে গানের যাদুতে জেলে থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলেই প্রশংসা করে ফিরে যায়। তারা কোকিলের গল্প করে, আর পণ্ডিতরা তার গান নিয়ে পুস্তক লেখে। কিন্তু রাজা অবাক হয়ে যান যখন জানতে পারেন, তাঁর প্রাসাদে কোকিল নেই। তিনি তাঁর প্রধান অমাত্যকে ডাকেন এবং জানান, তিনি চান কোকিল যেন সন্ধ্যায় রাজসভায় গান গায়। যদি কোোকিল না আসে, তাহলে তার সভাসদদের শাস্তি হবে। প্রধান অমাত্য ভেবে বলেন, তারা কোকিলের নামই শোনেনি। এরপর, রান্নাঘরের এক ছোট মেয়ে বলে, সে প্রতিদিন কোকিলের গান শুনে। তারা সকলেই বনটিতে যায় যেখানে কোকিল গান গায়। তারা কোকিলকে খুঁজে পায় এবং রাজসভায় গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
সন্ধ্যায় রাজসভায় কোকিল এসে গান গায় এবং তার গানের মাধুর্যে রাজা মুগ্ধ হন। রাজা কোকিলকে পুরস্কার দিতে চান, কিন্তু কোকিল জানায়, রাজার চোখের অশ্রু তাকে সবচেয়ে বড় পুরস্কার। কিন্তু একদিন রাজা একটি কলের কোকিল পান। সেই পাখি নিখুঁত গান গায়, যা রাজাকে আরও মুগ্ধ করে। রাজা খুব খুশি হন, কিন্তু আসল কোকিল একদিন পালিয়ে যায় এবং রাজা আবার তাকে অনুভব করেন। রাজা অসুস্থ হয়ে পড়লে আসল কোকিল ফিরে এসে গান গায়। তার গান রাজাকে সুস্থ করে তোলে। রাজা উপলব্ধি করেন, আসল শিল্প কখনোই কৃত্রিম কিছু দ্বারা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।
গল্পটি আমাদের শেখায়, জীবনে সত্যিকারের শিল্পের গুরুত্ব কতটা। কোকিলের গান যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য কেবল সত্যিকার অনুভূতিতে পাওয়া যায়। এইভাবে, গল্পটি হৃদয়ে স্থান করে নেয়, শিল্পের আসল মানে বোঝাতে।
কোকিল গল্পের মূলভাব সংক্ষেপে
গল্পটি চীন দেশের এক রাজা এবং তার প্রিয় কোকিল পাখি নিয়ে। রাজা তাঁর অসাধারণ প্রাসাদ ও বাগানের গর্ব করেন, যেখানে কোকিলের গান শুনতে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসে। রাজা কোকিলের প্রশংসা শোনার পর তাকে রাজসভায় গান গাইতে ডাকেন। কিন্তু কোকিল প্রথমে পাওয়া যায় না। অবশেষে, একটি রান্নাঘরের মেয়ে কোকিলের গান শোনায় এবং তারা তাকে খুঁজে পায়। কোকিল রাজসভায় এসে তার মধুর গান গায়, যা রাজাকে মুগ্ধ করে। রাজা তাকে পুরস্কার দিতে চান, কিন্তু কোকিল জানায়, রাজার চোখের অশ্রু তার সবচেয়ে বড় পুরস্কার। পরে রাজা একটি কলের কোকিল পায়, যা নিখুঁত গান গায়। তবে আসল কোকিল একদিন পালিয়ে যায়। যখন রাজা অসুস্থ হয়ে পড়েন, আসল কোকিল ফিরে এসে তার জন্য গান গায় এবং রাজাকে সুস্থ করে তোলে। গল্পটি শেখায়, জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য কেবল সত্যিকার শিল্পে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ কোকিল গল্পের প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (MCQ) – ৮ম শ্রেণির বাংলা
Related Posts
- জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় (পেশার রূপ বদল)
- রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- সাম্যবাদী কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি (MCQ)
- জোঁক গল্পের মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- আমি সাগর পাড়ি দেবো কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
- আষাঢ়ের এক রাতে গল্পের এক কথায় প্রশ্ন উত্তর ও সৃজনশীল প্রশ্ন -৭ম শ্রেণি
- ৬ষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন নির্দেশিকা ২০২৪ PDF সহ
- বাঁচতে দাও কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
- কোষ পরিভ্রমণ সপ্তম শ্রেণীর বিজ্ঞান অনুশীলন বই সমাধান ৩য় অধ্যায়
- ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ১ম অধ্যায় (কাজের মাঝে আনন্দ)