কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

মাইকেল মধুসূদন দত্ত কপোতাক্ষ নদ কবিতায় তাঁর শৈশবের নদী ‘কপোতাক্ষ’-কে স্মরণ করেছেন প্রবাস থেকে। তিনি দেখিয়েছেন—যে নদীর জলে তিনি বড় হয়েছেন, তার মতো আপন, তার মতো স্নেহময় কিছু আর নেই। প্রবাসজীবনে তাঁর একাকীত্বে নদীর স্মৃতি যেন একমাত্র সান্ত্বনা। এই পোস্টে কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।

কপোতাক্ষ নদ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। ছোটোকালে ছিলাম বাঙালিদের বালুচরে,
সাঁতরায়ে নদী পাড়ি দিতাম বারবার এপার হতে ওপারে, ডিভি লটারি সুযোগ করে দিলে ছুটে চলে যাই আমেরিকায় কিন্তু আজ মন শুধু ছটফটায় আর শয়নে স্বপনে বাড়ি দিয়ে যায়, মধুময় স্মৃতিগুলো আমাকে কাঁদায়, তবু দেশে আর নাহি ফেরা হয়।

ক. সনেটের ষটকে কী থাকে?

খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার আলোকে তুলে ধর।

ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতির অন্তরালে যে ভাবটি প্রকাশ পেয়েছে তা-ই ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব”-কথাটির সত্যতা বিচার কর

উত্তরঃ

ক. সনেটের ষটকে ভাবের পরিণতি থাকে।

খ. ‘স্নেহের তৃষ্ণা’ বলতে বোঝানো হয়েছে — একধরনের মায়াভরা টান বা ভালোবাসার ক্ষুধা। কবি মধুসূদন দত্ত যখন প্রবাসে ছিলেন, তখন তাঁর মনে জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও টান তৈরি হয়েছিল। তিনি কপোতাক্ষ নদের জন্য তৃষ্ণার মতো একটা অনুভব করতেন। অনেক নদী দেখলেও জন্মভূমির নদীর মতো শান্তি বা ভালোবাসা কোথাও পাননি। তাই তিনি বারবার তার কথা মনে করেন এবং মায়ায় বাঁধা পড়ে থাকেন। এটি প্রবাসী মানুষের স্বদেশের প্রতি গভীর অনুভবের প্রকাশ।

গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতিটি হলো এক ধরনের স্বদেশবোধ ও বাঙালির প্রতি গভীর ভালোবাসা। উদ্দীপকটি এক প্রবাসী বাঙালির মনে জন্মভূমি ও শৈশবের স্মৃতির প্রতি অগাধ টান প্রকাশ করে, যেমনি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাতেও কবি তাঁর জন্মভূমি ও নদীর প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। প্রবাসে বসবাস করলেও তিনি নিজেকে কখনো জন্মভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করেন না। কবি যেমন কপোতাক্ষ নদের কলকল শব্দ শোনে এবং তার প্রতি এক অমোঘ টান অনুভব করেন, তেমনি উদ্দীপকের প্রবাসীও তার স্মৃতি ও ভালোবাসা নিয়ে কাঁদে, এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি নিজের শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে দেশপ্রেমের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, তেমনই উদ্দীপকে প্রবাসী ব্যক্তি নিজের জন্মভূমির প্রতি সেই অমোঘ ভালোবাসা ও আকুতি প্রকাশ করেছেন। এই অনুভূতি দুটি একে অপরকে সমান্তরালভাবে ফুটিয়ে তোলে।

ঘ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাব হলো স্বদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং শৈশবের স্মৃতির প্রতি অগাধ টান। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর জন্মভূমি, কপোতাক্ষ নদী, ও শৈশবের স্মৃতির প্রতি এক অতুলনীয় ভালোবাসা অনুভব করেন। কবি প্রবাসে বসবাস করার পরও কপোতাক্ষ নদের কলকল শব্দ শুনে এবং তার নদীর প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন। উদ্দীপকটিতে যে অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে—প্রবাসে বসবাসকারী একজন বাঙালির স্বদেশের প্রতি কষ্ট, শৈশবের স্মৃতির প্রতি ভালোবাসা, এবং জন্মভূমির প্রতি অমোঘ আকর্ষণ—ঠিক সেরকমই ভাব ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে। কবি কপোতাক্ষ নদের নাম স্মরণ করে সেগুলোর মধ্যে তার শৈশবের সুখ ও দুঃখের চিত্র খুঁজে পান। এই ধরনের অনুভূতি একজন প্রবাসী বাঙালির মধ্যে ঘোর আচ্ছন্ন করে রাখে, ঠিক যেমন কবির মধ্যে জন্মভূমির প্রতি মায়ার অনুভূতি জেগে ওঠে। এই দুইটি ভাব একই প্রকৃতির—দেশপ্রেম ও শৈশবের স্মৃতি বাঙালি হৃদয়ে কখনোই মুছে যায় না, বরং একে অপরকে আরও গভীর করে তোলে।

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [ঢাকা বোর্ড ২০২৪]
(i) সুরমার তীরে হয়নি বসা 
সে তো অনেক কাল
 হয় না দেখা উথাল হাওয়ায় 
উড়ছে নায়ের পাল।

(ii) একটা নদী কলকলিয়ে দুলদুলিয়ে চলে
দুই কূলে তার দুঃখ-সুখের হাজার কথা বলে। 
রাগলে নদী গর্জনে তার বুক কাঁপে থরথর
শান্ত হলে অনেক সুখে জাগায় বুকে চর। 
চরের বুকে বাঁধলে সে ঘর প্রাণের মেলায় হাসে শান্ত নদী যমুনা সে জীবন ভালোবাসে।

ক. সনেটের অষ্টকে কী থাকে?

খ. ‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!’- বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের (i)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে- তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের (ii)-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূল চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে।”- উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [রাজশাহী বোর্ড ২০২৪]
আরাফ আর আয়মান যেন এক বৃন্তে দুটি কুসুম। এইচএসসি পাসের পর দুজনই ভর্তি হলো তাদের কাঙ্ক্ষিত ও স্বপ্নের বুয়েটে। এর মধ্যে আয়মান আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজখবর নেয়- কারণ, বুয়েট শেষ করে সে আমেরিকায় পাড়ি জমাতে চায়। কিন্তু আরাফের এক কথা, পড়াশুনা শেষ করে সে দেশেই থাকবে। যা করবে দেশের জন্যই করবে। এভাবে সবাই দেশ ছেড়ে গেলে দেশই বা কীভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করবে? আজ আয়মান আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তার মন পড়ে থাকে দেশের বিস্তীর্ণ মাঠ, অবারিত ধানক্ষেত, বন্ধু-বান্ধব, ছোটাছুটি এসবের মধ্যে। আরাফের সাথে কথা বললেই সে তার ফেলে যাওয়া সবকিছু নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।

ক. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অষ্টকের মিলবিন্যাস কীরূপ?

খ. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি কপোতাক্ষ নদকে দুগ্ধ-স্রোতোরূপী বলেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকের শেষাংশে আয়মানের মাধ্যমে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির মনোভাবের কোন বিশেষ দিকটির ইঙ্গিত রয়েছে- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের আরাফ ও আয়মান ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় প্রতিফলিত মূল চেতনাকেই ধারণ করে আছে- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [কুমিল্লা বোর্ড ২০২৪]
স্তবক-১:
একবার যেতে দে না আমায় ছোট্ট সোনার গাঁয়
যেথায় কোকিল ডাকে কুহু-দোয়েল ডাকে মুহু মুহ
নদী যেথায় ছুটে চলে আপন ঠিকানায়।।

স্তবক-২:
মিছা মণি মুক্তা হেম, স্বদেশের প্রিয় প্রেম,
তার চেয়ে রত্ন নাহি আর।
সুধাকরে কত সুধা দূর করে তৃষা ক্ষুধা,
স্বদেশের শুভ সমাচার।।

ক. সনেটের কোন অংশে ভাবের প্রবর্তনা থাকে?

খ. “আর কি হে হবে দেখা?” এ অংশে কবি মনের অভিব্যক্তি ব্যাখ্যা কর।

গ. স্তবক-১ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে ভাবের ইঙ্গিত বহন করে তা ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২৪]
উদ্দীপক-১:
আমার যেতে ইচ্ছে করে 
নদীটির ওই পারে 
যেথায় ধারে ধারে 
বাঁশের খোঁটায় ডিঙি নৌকা 
বাঁধা সারে সারে।

উদ্দীপক-২:
ওগো আমার জন্মভূমি, ওগো অপরূপা 
ফিরে কি আর পাবো তোমায়?
এ বিদেশ, বিভুঁয়ে তোমারে স্মরি আনমনে 
আঁখি মুছি সযতনে 
তবু আশা পারি না ছাড়িতে, 
বেঁধে রেখেছো যে মা, তোমার স্নেহডোরে।

ক. ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অষ্টকের মিলবিন্যাস কী?

খ. ‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে’- চরণটি ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপক-১ এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক-২ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির মনোভাব একই সূত্রে গাঁথা।”- বিশ্লেষণ কর।।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। [বরিশাল বোর্ড ২০২৪]
উদ্দীপক-১: ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা 
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।


উদ্দীপক-২: “হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে বছর পনেরো-ষোলো 
একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে বড়োই বাসনা হল।
 অবারিত মাঠ, গগন ললাট চুমে তব পদধূলি-
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।’

ক. সনেট-এর বাংলা প্রতিশব্দ কী?

খ. ‘দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপক-২-এ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা কর।

ঘ. “উদ্দীপক-১ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূলভাবের নামান্তর।”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। [দিনাজপুর বোর্ড ২০২৪]
বহুদিন পরে মনে পড়ে আজি পল্লিমায়ের কোল;
ঝাউশাখে যেথা বনলতা বাঁধি হরষে খেয়েছি দোল;
কুলের কাঁটার আঘাত সহিয়া কাঁচাপাকা কুল খেয়ে
অমৃতের স্বাদ যেন লভিয়াছি গাঁয়ের দুলালী মেয়ে।

ক. মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কীর্তি কোনটি?

খ. ‘আর কি হে হবে দেখা?’ কবি একথা বলেছেন কেন?

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার সাদৃশ্যগত অনুভূতি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতির অন্তরালে যে ভাবটি প্রকাশ পেয়েছে তা-ই ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির মূল চেতনা”- মন্তব্যটি যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। [ঢাকা বোর্ড ২০২৩]
আমার দেশের মাটিতে মেশানো আমার প্রাণের ঘ্রাণ
গৌরবময় জীবনের সম্মান।
প্রাণ-স্পন্দনে লক্ষ তরুর করে
জীবন প্রবাহ স্যারি মর্মরে, 
বক্ষে জাগায়ে আগামী দিনের আশা-
আমার দেশের এ মাটি মধুর, মধুর আমার ভাষা।

ক. সনেটের অষ্টকে কী থাকে?

খ. ‘আর কি হে হবে দেখা?’- কবি এরূপ সংশয় প্রকাশ করেছেন কেন?

গ. উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় বর্ণিত সাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় বিশেষ দিকের সাদৃশ্য থাকলেও আঙ্গিক ও চেতনাগত পার্থক্য স্পষ্ট।”- মন্তব্যটির যৌক্তিক মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। [যশোর বোর্ড ২০২৩]
বহুদিন পরে মনে পড়ে আজি পল্লিমায়ের কোল;
ঝাউশাখে যেথা বনলতা বাঁধি হরষে খেয়েছি দোল;
কুলের কাঁটার আঘাত সহিয়া কাঁচাপাকা কুল খেয়ে
অমৃতের স্বাদ যেন লভিয়াছি গাঁয়ের দুলালী মেয়ে।

ক. সনেটের ষটকে কী থাকে?

খ. ‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মূল সুর অভিন্ন।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১০। [কুমিল্লা বোর্ড ২০২২]
মিজান সাহেব যে গ্রামে বড় হয়েছেন তার পাশে ছোট একটি নদী ছিল। নদীটির নাম ভৈরব। শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এ নদীটির সাথে। কত বছর কেটে গেল নদীটিকে চোখের দেখাও দেখতে পাননি তিনি। কিন্তু শহুরে জীবনের কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তার শৈশবের সেই নদীটির স্মৃতি ম্লান হয়ে যায়নি। অবসরে কল্পনায় সেই নদীর ছবি আঁকেন তিনি।

ক. ‘বিরলে’ অর্থ কী?

খ. ‘বারি-রূপ কর’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের মিজান সাহেবের অনুভূতিতে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার যে বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ.

উদ্দীপকের মিজান সাহেব ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কবির উপলব্ধি একই ধারায় উৎসারিত- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

আরও পড়ুনঃ বন্দনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

Related Posts

Leave a Comment