বন্দনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

শাহ মুহম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতায় কবি প্রথমে তাঁর জন্মদাতা মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানান, তারপর শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন, সমাজের লোকজন এবং সব প্রিয়জনের প্রতি প্রণাম নিবেদন করেন। এই পোস্টে বন্দনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখে দিলাম।

বন্দনা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। বায়েজিদ বোস্তামির মা এক রাতে পানি খেতে চান। ঘরে পানি না থাকায় তা বাহির থেকে সংগ্রহ করে ফিরে এসে দেখেন মা ঘুমিয়ে পড়েছেন। পানির বর হাতে বায়েজিদ সারারাত মায়ের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকেন, যাতে ঘুম থেকে জাগলেই মাকে পানি দিতে পারেন। মা যেন পিপাসায় কষ্ট না পান।

ক. ”বন্দনা’ কবিতায় পিতার চেয়েও কাকে বেশি শ্রদ্ধা দেখাতে বলা হয়েছে?

খ. ‘দোসর জন্ম’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের বায়েজিদের মাঝে ‘ ঘ বন্দনা’ কবিতার যে দিক প্রকাশ পেয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “প্রকাশিত দিকটিই ‘বন্দনা’ কবিতার একমাত্র দিক নয়”- মন্তব্যটির পক্ষে তোমার যুক্তি দাও।

উত্তরঃ

ক. ”বন্দনা’ কবিতায় পিতার চেয়েও ওস্তাদ/ শিক্ষককে বেশি শ্রদ্ধা দেখাতে বলা হয়েছে।

খ. ‘দোসর জন্ম’ বলতে বোঝানো হয়েছে — দ্বিতীয় জন্ম। কবিতায় ‘ওস্তাদে প্রণাম করো পিতা হস্তে বাড়, / দোসর-জনম দিলা তিহ সে আহ্মার’— এই পংক্তিতে কবি বলতে চেয়েছেন, শিক্ষকই মানুষকে জ্ঞানের আলো দিয়ে দ্বিতীয়বার জন্ম দেন। পিতা-মাতা শরীরের জন্ম দেন, আর ওস্তাদ বা শিক্ষক জ্ঞান, নীতি ও মূল্যবোধ দিয়ে মানুষের মানসিক ও আত্মিক জন্ম ঘটান। তাই শিক্ষককে ‘দ্বিতীয় জন্মদাতা’ বা ‘দোসর জন্ম’ দানকারী বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে বায়েজিদের যেভাবে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে, তা শাহ মুহম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’ কবিতার মূল ভাবের সঙ্গে মিলে যায়। কবিতায় কবি বলেছেন, মা পিপঁড়ের ভয়ে শিশুকে মাটিতে রাখেননি—যা মায়ের অগাধ স্নেহের পরিচয়। ঠিক তেমনি বায়েজিদও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকে সারারাত মায়ের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি মায়ের ঘুম ভাঙা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, যেন মা জেগেই পানি পান করতে পারেন। এটি বায়েজিদের মায়ের প্রতি গভীর ভক্তি ও দায়িত্ববোধের পরিচয় দেয়। কবিতায় কবি বলেছেন, মা-ই আমাদের প্রথম আশ্রয়, তাঁর দয়াতেই শিশুরা বড় হয়। বায়েজিদের আচরণ সেই কথাকেই প্রমাণ করে। উভয় ক্ষেত্রেই মায়ের প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ ঘটেছে। তাই বলা যায়, বায়েজিদের কাজের মধ্যেও ‘বন্দনা’ কবিতার শ্রদ্ধাবোধের দিকটি সুন্দরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

ঘ. উক্ত মন্তব্যটি সঠিক—“প্রকাশিত দিকটিই ‘বন্দনা’ কবিতার একমাত্র দিক নয়।” কবিতায় শুধু মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা নয়, শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা, গুরুজনদের সম্মান ও সমাজের সকল মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতার কথাও বলা হয়েছে। কবি বলেছেন, শিক্ষক মানুষকে ‘দ্বিতীয় জন্ম’ দেন অর্থাৎ জ্ঞান দিয়ে তাকে আলোকিত করেন। তাই শিক্ষককেও পিতার মতো সম্মান করতে হবে। শুধু তাই নয়, কবি নগরের সব লোকজন, বন্ধু-বান্ধব, সভাসদদের প্রতিও প্রণাম জানিয়েছেন। এর মানে হলো, জীবনে যারা যেকোনোভাবে উপকার করেন বা পাশে থাকেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কবি সকলের দোয়া কামনা করে নিজেকে পাপী ও তুচ্ছ বলে বিনয় প্রকাশ করেছেন। এতে নম্রতা, কৃতজ্ঞতা ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটেছে। তাই দেখা যায়, এই কবিতায় শ্রদ্ধা, ভক্তি ও মানবিকতার অনেকগুলো দিক প্রকাশিত হয়েছে। ফলে ‘মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা’—শুধু এটিই নয়, বরং পুরো কবিতার মূল বার্তা হলো—সকল গুণী ও উপকারকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
মরিল বাবর- না, না, ভুল কথা, মৃত্যু কে তারে কয়?
মরিয়া বাবর অমর হয়েছে, নাহি তার কোনো ক্ষয়।
পিতৃস্নেহের কাছে হইয়াছে মরণের পরাজয়।

ক. শাহ মুহম্মদ সগীর কোন শতকের কবি?

খ. “অশক্য আছিলু মুই দুর্বল ছাবাল।”- বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বন্দনা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘বন্দনা’ কবিতার আংশিক মূলভাবের ধারক।”-মন্তব্যটি সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। বিশেষত, তাহার মা তাহাকে নিজের একটা ত্রুটিম্বরূপ দেখিতেন; কেননা মাতা পুত্র অপেক্ষা কন্যাকে নিজের অংশরূপে দেখেন- কন্যার কোনো অসম্পূর্ণতা দেখিলে সেটা যেন বিশেষরূপে নিজের লজ্জার কারণ বলিয়া মনে করেন। বরঞ্জ কন্যার পিতা বাণীকণ্ঠ সুভাকে তাঁহার অন্য মেয়েদের অপেক্ষা যেন একটু বেশি ভালোবাসিতেন; কিন্তু মাতা তাহাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক জ্ঞান করিয়া তাহার প্রতি বড়ো বিরক্ত ছিলেন।

ক. ‘জিউ’ শব্দের অর্থ কী?

খ. “দোসর-জনম দিলা তিহ সে আহ্মার।”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের মায়ের সঙ্গে ‘বন্দনা’ কবিতার মাতার বৈসাদৃশ্য নিরূপণ কর। 

ঘ. “উদ্দীপকটি যেন ‘বন্দনা’ কবিতার মূলভাবের বিপরীত চিত্র ধারণ করেছে।”- মন্তব্যের যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
প্রণমিয়া পাটুনী কহিছে জোড় হাতে
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে
তথাস্তু বলিয়া দেবী দিলা বরদান
দুধে ভাতে থাকিবেক তোমার সন্তান।

ক. ‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্যের রচয়িতা কে?

খ. “কত দুক্ষে একে একে বছর গোঞাএ।”- পঙ্ক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বন্দনা’ কবিতাটি কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? আলোচনা কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘বন্দনা’ কবিতার মূলসুর একই।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতা আমাদের উপলব্ধি করতে শেখায়; শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষক হলেন কান্ডারি। তিল তিল করে নীরবে-নিভৃতে শিক্ষক তার আদর্শ দ্বারা জাতীয় আকাঙ্ক্ষার উপযোগী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলেন। সমাজ ও দেশের জন্য শিক্ষকের অবদান অপরিসীম।

ক. কার শাসনামলে কবি ‘ইউসুফ-জোলেখা’ কাব্য রচনা করেন? 

খ. “পিপিড়ার ভয়ে মাও না খুইলা মাটিত।”- পক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকে ‘বন্দনা’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকটি ‘বন্দনা’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতনিধিত্ব করে কি? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান নয়, কিন্তু ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন। সিনিয গুরু, তিনি শিষ্যের আত্মাকে উদবোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিজিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে মুক্ত এবং ব্যস্ত করে তোলেন।

ক. ‘নেহায়’ শব্দের অর্থ কী?

খ. “যান দয়া হন্তে জন্ম হৈল বসুধায়।”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘বন্দনা’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? আলোচনা কর।

ঘ. “যথার্থ গুরুর যোগ্য শিক্ষাই শিষ্যকে দ্বিতীয় জন্মের মাধ্যযে আলোর পথে নিয়ে আসে।”- উদ্দীপক ও ‘বন্দনা’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর ৷
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। একটা কঠিন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে গত দুদিন থেকে শরিয় আর আমি খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছি। শেষ পর্যন্ত শরিফ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। না, মার্সিপিটিশন সে করবে না। চোখের জলে ভাসতে ভাসতে আমিও শরিফের মতকে সমর্থন করেছি। রুমীকে অনাভাবে বের করে আনার যতরকম চেষ্টা আছে, সব করা হবে। কিন্তু মার্সিপিটিশন করে নয়।

ক. কে কবিকে চট্টগ্রামের অধিবাসী বলে বিবেচনা করেছেন?

খ. ‘দুর্বল ছাবাল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 

গ. ‘বন্দনা’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। শিক্ষার ফলে মনুষ্যত্বের স্বাদ পেলে অন্নবস্ত্রের সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে ওঠে। শিক্ষার আসল কাজ মূল্যবোধ সৃষ্টি, জ্ঞান দান নয়, আনে মূল্যবোধ সৃষ্টির উপায় মাত্র। ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ প্রবন্ধে মোতায়েত হোসেন চৌধুরী শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের সম্পর্ক চিহ্নিত করেছেন। জ্ঞান ও অন্তরের মুক্তি ব্যক্তিকে মনুষ্যত্ববোধে উন্নীত হওয়ার শিক্ষা দেয়।

ক. ‘বন্দনা’ শব্দের অর্থ কী?

খ. কবি মা-বাবার পায়ে প্রণাম করেছেন কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘বন্দনা’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য আলোচনা কর।

ঘ. ‘উদ্দীপকের মনুষ্যত্ববোধে জাগ্রত হওয়ার বাণীই ‘বন্দনা’ কবিতায় অন্যভাবে প্রকাশিত হয়েছে।”- উক্তিটি সম্পর্কে তোমার মতামত উপস্থাপন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। দেশকালের সীমারেখা পিতৃহৃদয়ের স্বাভাবিক প্রবণতায় কোনো প্রভাব বিস্তার করে না। যে দেশের, যে সময়ের বা যে সংস্কৃতিরই মানুষ হোক না কেন পিতা সব সময়ই তার সন্তানকে একই রকম ভালোবাসেন। সন্তানের মঙ্গলচিন্তা সব পিতারই সহজাত আকাঙ্ক্ষা। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বের সকল পিতার পিতৃত্বের সর্বজনীন ও চিরন্তন রূপ উন্মোচিত করেছেন।

ক. ‘মহামতি গোছ’ বলে কবি কাকে সম্বোধন করেছিলেন?

খ. “তান দয়া হন্তে হৈল এ ধড় বিশাল”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপক ও ‘বন্দনা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি আলোচনা কর। 

ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘বন্দনা’ কবিতার একটিমাত্র দিকের প্রতিনিধিত্ব করে।” মন্তব্যটির সত্যাসত্য বিচার কর।

Related Posts

Leave a Comment