উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন প্রবন্ধে নজরুল বলেন, সমাজে জাতপাত, ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। সকল মানুষই এক মহা-আত্মার অংশ, তাই কাউকে ছোট বলে ঘৃণা করার অধিকার কারও নেই। এই পোস্টে উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন মূলভাব ও বহুনির্বাচনী প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন মূলভাব
কাজী নজরুল ইসলাম এই প্রবন্ধে বলেছেন, আমাদের দেশের যেসব মানুষকে আমরা “ছোটোলোক” বলে অপমান করি, অবহেলা করি, আসলে তারাই আমাদের জাতির আসল শক্তি। তারা সহজ, সৎ আর নিষ্ঠাবান, কিন্তু সমাজের ঘৃণা আর অবজ্ঞার কারণে তারা নিজেদের দুর্বল ভাবতে শুরু করে। ছোটবেলা থেকেই তারা শুনে এসেছে যে তারা নিচু জাতের, তাই তাদের মনে একরকম আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি হয়। সমাজের ভদ্রলোকেরা তাদের কাছে না গিয়ে নিজেরাই দেশ গড়ার দায়িত্ব নিতে চায়, কিন্তু এতে কোনো কাজ হয় না। কারণ, একটি দেশ গড়ে ওঠে সব শ্রেণির মানুষের সম্মিলিত চেষ্টায়। নজরুল বলেছেন, ভদ্রলোকরা শুধু ভাষণ দিতে জানে, কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতে মাঠে নামতে জানে না। অথচ যাদের আমরা নিচু ভাবি, তারাই বাস্তবের মাটি ছুঁয়ে কাজ করতে জানে। তিনি মহাত্মা গান্ধীর উদাহরণ দিয়েছেন। যিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করেছেন, তাদের দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নিয়েছেন, আর তাই সবাই তাকে আপন মনে করেছে।
নজরুল মনে করেন, যারা আজ অবহেলিত, তাদের ভালোবাসা আর সম্মান দিলে তারাই একদিন দেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারবে। এই মানুষদের ডেকে আনতে হবে ভাইয়ের মতো করে, হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতে হবে। প্রতিটি মানুষই আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার এক রকমের সৃষ্টি, তাই কাউকে ছোট করে দেখা অন্যায়। যদি আমরা সত্যি পরিবর্তন চাই, তাহলে উপেক্ষিত এই মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ওদের সম্মান দিতে হবে, ভালোবাসতে হবে। তাদের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে অসম্ভব কাজও সম্ভব হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুনঃ প্রবাস বন্ধু গল্পের মূলভাব ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর