রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘প্ৰাণ’ কবিতায় কবি মৃত্যুকে প্রত্যাখ্যান করে জীবনের প্রতি, বিশেষ করে মানবজীবনের আনন্দ-বেদনা-মমতা-র প্রতি আকর্ষণ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রকৃতির সৌন্দর্য, মানুষের ভালোবাসা, এবং সংগীতের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে চান। এই পোস্টে প্রাণ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
প্রাণ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর, অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি- চারদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশ্বত্থের করে আছে চুপ। ক. কবি কাদের মাঝে বাঁচতে চান? খ. এ পৃথিবীতে কবি অমর আলয় রচনা করতে চান কেন? গ. উদ্দীপকে প্রত্যাশিত বিষয়টি ‘প্রাণ’ কবিতার ভাবের সাথে কীভাবে মিশে আছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার আংশিকভাব মাত্র, পূর্ণরূপ নয়”- যুক্তিসহকারে বুঝিয়ে লেখ। |
উত্তরঃ
ক. কবি মানবের মাঝে বাঁচতে চান।
খ. কবি অমর আলয় রচনা করতে চান যেন তিনি মানুষের মনে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারেন। মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, বিরহ-মিলনের গল্প যদি তিনি তাঁর কবিতায় তুলে ধরতে পারেন, তবে সেই সৃষ্টি হবে অমর। কবি চান তাঁর কবিতা যেন মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। তিনি শুধু নিজের জন্য নয়, মানুষের অনুভূতির জন্য কবিতা লিখতে চান। তাঁর সৃষ্টি যদি মানুষের ভালোবাসা পায়, তাহলেই তিনি নিজেকে ধন্য মনে করবেন। এজন্যই তিনি অমর আলয় গড়ে তুলতে চান।
গ. উদ্দীপকে কবি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জীবনের সঙ্গতির মধ্যে তাঁর হৃদয়ের গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, যা ‘প্রাণ’ কবিতার ভাবের সাথে মিলিত হয়। ‘প্রাণ’ কবিতায় যেমন কবি জীবনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং মানুষের মাঝে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন, তেমনি এখানে বাংলার প্রকৃতি ও পাখিদের মধ্যে জীবনের মধুরতা খুঁজে পাওয়া যায়। উদ্দীপকের “ডুমুরের গাছে চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি” – এ দৃশ্যের মাধ্যমে কবি জীবন ও প্রকৃতির সুন্দর সম্পর্ককে ফুটিয়ে তুলছেন। ‘প্রাণ’ কবিতায়ও কবি তাঁর জীবনকে মানুষের মাঝে, প্রকৃতির মাঝে দেখতে চান। উদ্দীপকের প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং তার মধ্যে বেঁচে থাকার ইচ্ছা, কবির ‘প্রাণ’ কবিতার ভাবের সাথে মিলে যায়, যেখানে কবি চেয়েছেন, তিনি যেন মানুষের মধ্যে ও প্রকৃতির মধ্যে চিরকাল বেঁচে থাকেন। এভাবে উদ্দীপক এবং ‘প্রাণ’ কবিতার মধ্যে একটি আন্তরিক সম্পর্ক বিদ্যমান।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার আংশিকভাব মাত্র, পূর্ণরূপ নয়”—এটি বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? উদ্দীপকে যে প্রকৃতির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, তা শুধুমাত্র এক দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে প্রকৃতি ও জীবনের সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছে। তবে ‘প্রাণ’ কবিতায় কবি আরও গভীরভাবে জীবনের অর্থ, মানুষের মাঝে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা এবং মৃত্যুর পরও মানুষের মন ও হৃদয়ে স্থান করে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনা করেছেন। উদ্দীপকে প্রকৃতি ও পাখিদের মধ্যে জীবনের সুন্দর দৃশ্য তুলে ধরা হলেও ‘প্রাণ’ কবিতায় কবি তার সৃষ্টির মাধ্যমে পৃথিবীজুড়ে তার অস্তিত্বের অমরত্ব খোঁজার চেষ্টা করেছেন। উদ্দীপকটি প্রকৃতির রূপ এবং এর মধ্যে জীবনের উজ্জ্বল দিকগুলি দেখায়, কিন্তু কবির ‘প্রাণ’ কবিতায় জীবনের সুষম ভাব, মানুষের মনোভাব, এবং তার অস্তিত্বের অমরত্বের কথা ফুটে ওঠে। উদ্দীপকটি সেই ভাবের সূক্ষ্মতা ও গভীরতা প্রকাশ করতে পারে না, যা ‘প্রাণ’ কবিতায় পরিপূর্ণভাবে মেলে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার আংশিক ভাব মাত্র, পূর্ণরূপ নয়।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। বাঙালির সনে মিশে প্রাণে প্রাণে থাকিব সতত জীবনে মরণে। সুখে দুঃখে তারা এসে মোর পাশে তোষে সদা মোরে মধুর সন্তাষে। ক. অমর আলয় কী? খ. কবি মানবের মাঝে বাঁচতে চান কেন? গ. উদ্দীপকের সাথে ‘প্রাণ’ কবিতার সাদৃশাপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি যেন ‘প্রাণ’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষার প্রতিরূপ। বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। অমর করিয়া রব ফুটি যেন স্মৃতি-জলে, মানসে, মা, যথা ফলে মধুময় তামরস দেহ দাসে, সুবরদে। কী বসন্ত, কী শরদে। ক. মানবমনের সুখ-দুঃখ নিয়ে সংগীত রচনার উদ্দেশ্য কী? খ. “মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে।”- কবি একথা বলেছেন কেন? গ. উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “অমরত্বের প্রবল বাসনাই উদ্দীপকে ও ‘প্রাণ’ কবিতায় মূর্ত হয়ে উঠেছে।” মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই বাংলায় হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এই কাঁঠাল ছায়ায়; ক.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? খ. ‘নব নব সঙ্গীতের কুসুম ফুটাই” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপকের প্রত্যাশিত বিষয়টি ‘প্রাণ’ কবিতার ভাবের সাথে কীভাবে সংগতিপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার সমগ্রতা প্রকাশ করে না-উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। মৃত্যুও অজ্ঞাত মোর। আজি তার তরে ক্ষণে ক্ষণে শিহরিয়া কাঁপিতেছি ডরে। সংসারে বিদায় দিতে, আঁখি ছলছলি জীবন আঁকড়ি ধরি আপনার বলি দুই তুজে। ক. ‘লডি’ অর্থ কী? খ. “বিরহ মিলন কত হাসি-অশ্রুময়” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের মূলভাব এবং ‘প্রাণ’ কবিতার মূলভাবের, মিল থাকলেও পুরোপুরি এক নয়।”- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে, সার্থক জনম মাগো তোমায় ভালোবেসে। জানি না তোর ধন-রতন আছে কিনা রানির মতন, শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে। কোন বনেতে জানিনে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল, কোন্ গগনে ওঠেরে চাঁদ এমন হাসি হেসে। আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো, ঐ আলোতেই নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে। ক. ‘প্রাণ’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে? খ. এ পৃথিবীতে কবি অমর আলয় রচনা করতে চান কেন? গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত অনুভূতি ‘প্রাণ’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের প্রতিফলিত ভাবটি ‘প্রাণ’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করে কি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। ব্যবসায়ে বড় ধরনের লোকসান হয়েছে আরিফ সাহেবের। এ কারণে তিনি একেবারে ভেঙে পড়েছেন। সারাদিন শুধু চিয়া 8 করেন- যে ব্যবসায় তিনি তিল তিল করে বড় করেছেন, ভবিষ্যতের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য স্বপ্ন দেখেছেন তা এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। বর্তমানের দারিদ্র্য তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। কেননা কিছুদিন আগেও তিনি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন করতেন, আর আজ তিনি একেবারে নিঃয়। এই জীবনের প্রতি আরিফ সাহেব অত্যন্ত বিরক্ত। তিনি বুঝতে পারছেন না এই মুহূর্তে তার কী করা উচিত। ক. ‘ডাকঘর’ কার লেখা? খ. কবি ‘চিরতরঙ্গিত’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? গ. ‘প্রাণ’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. “প্রাণ’ কবিতায় প্রকাশিত চেতনা উদ্দীপকের আরিফ সাহেব ধারণ করলে সমস্ত প্রতিকূলতার মাঝেও জীবনকে উপভোগ করতে পারতেন।”- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। আশিক রহমানকে এই এলাকায় সবাই চেনেন। কারণ তিনি এখ এক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। আশিক রহমান সারাদিন ছবি আঁকেন মাঝে মাঝে সেসব ছবির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেন। অনেক ন থেকে অনেকেই আসেন সেসব চিত্র দেখার জন্য। একজন সাদাসি তাঁর আঁকা ছবির ঝাপারে জিজ্ঞেস করলে আশিক রহমান বলেন, এএ ছবি আঁকা আমার শখ। আবার এই ছবি দেখে অনেকে অনন্দ্য পান। সেটিই আমার ভালো লাগে, আমি আর কিছু চাই না। ক. ‘বিসর্জন’ কে লিখেছেন? খ. ‘সংগীতের কুসুম’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. ‘প্রাণ’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. “কল্যাণকামী সৃষ্টিশীল মানুষ চিরদিনই স্মরণীয়।” এই সত্যটি উদ্দীপক এবং ‘প্রাণ’ কবিতায় চমৎকারভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। বৈকুণ্ঠ সাহার গদিতে ডাকাতি করিতে গিয়া তাহাদের দলকে-দল ধর পড়িয়া যায়। এগারজনের মধ্যে কেবল ভিখুই কাঁধে একটা বর্ণর খোঁচা খাইয়া পলাইতে পারিয়াছিল। […] বন কাছেই ছিল মাইজ পাঁচেক উত্তরে। ভিখু অগত্যা বনেই আশ্রয় লইল। […] রাত্রে তিয়া জ্বর আসিল। […] সবুজ রঙের একটা সাপকে একবার মাথার কয়ে সিন্ঞ্চুরি গাছের পাতার ফাঁকে উঁকি দিতে দেখিয়া পুরা দুঘন্টা লা হাতে সেদিকে চাহিয়া বসিয়া রহিল এবং […] যথাসাধ্য শব্দ করা সাপ তাড়াইতে লাগিল। মরিবে না। সে কিছুতেই মরিবে না। বরে পশু যে অবস্থায় বাঁচে না, সেই অবস্থায়, মানুষ সে বাঁচিবেই। ক. কোথায় প্রাণের খেলা চিরতরঙ্গিত? খ. কবি জীবন্ত হৃদয়ে স্থান পেতে চান কেন? গ. ভিখুর কিছুতেই মরতে না চাওয়ার মধ্যে ‘প্রাণ’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “সামান্য সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি ‘প্রাণ’ কবিতার সমভাব ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটি যাচাই কর। |
আরও পড়ুনঃ অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
নিচে উত্তরসহ প্রাণ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
Amazing things here. I am very happy to look your post.
Thanks so much and I am looking ahead to touch you. Will you please drop me
a e-mail?
my site – Podii.net