কুলি মজুর কবিতায় নজরুল শ্রমজীবী মানুষের প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন দেশ গড়ার মূল কারিগর হলো এই কুলি-মজুরেরা। অথচ তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। সময় আসছে, যখন তারা জেগে উঠবে, তাদের অধিকার নিয়ে ফিরে আসবে। এই পোস্টে কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে চেয়ারম্যান আজমল সাহেবের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে, কিন্তু তাঁর ছেলে কারণে-অকারণে বাড়ির কাজের লোক, আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। চেয়ারম্যান ছেলেকে ডেকে বুঝিয়ে বলেন, তুমি যাদের আজ তুচ্ছ জ্ঞান করছ – সত্যিকার অর্থে তারাই আধুনিক সভ্যতার নির্মাতা, তাদের কারণেই আমরা সুন্দর জীবন যাপন করছি। ক. ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে কোনটি চলে? খ. ‘শুধিতে হইবে ঋণ’- কথাটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? গ. চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে- ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘চেয়ারম্যান সাহেবের মনোভাব ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাবেরই প্রতিফলন’ বিশ্লেষণ কর। |
উত্তরঃ
ক. ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে বাষ্প-শকট (রেলগাড়ি) চলে।
খ. ‘শুধিতে হইবে ঋণ’ কথার মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন—শ্রমিকদের অবদান আমরা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করে এসেছি, এখন সময় এসেছে তাদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার। তারা কষ্ট করে সমাজ গড়েছে, আর আমরা সেই সুবিধা ভোগ করছি। এভাবে অন্যায়ভাবে উপকার নেওয়াটা এক ধরনের ঋণ। সেই ঋণ শোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কবি তাই ন্যায়ের আহ্বান জানিয়ে এই বাক্যটি বলেছেন।
গ. চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূল দিকটি প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ধনী লোকেরা গরিব মানুষদের অবজ্ঞা করে। কবি নজরুল তাঁর কবিতায় তুলে ধরেছেন, যেভাবে কুলি-মজুররা কঠোর পরিশ্রম করে, তাতে তারা সমাজের বাস্তব নির্মাতা। চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে যাদের তুচ্ছ মনে করছে, তারা আসলে সমাজের উন্নতি এবং সভ্যতার উন্নয়নে অবদান রাখে। এর মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে যে, সমাজে শ্রমিক শ্রেণীর অবদান অস্বীকার করা উচিত নয়, বরং তাদের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে যেভাবে খেটে-খাওয়া মানুষের প্রতি খারাপ আচরণ করছে, তা সেই শ্রেণীকে অবমূল্যায়ন করার মত। এই পরিস্থিতি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে শ্রমিকদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে, অথচ তারা সমাজের মূল চালিকাশক্তি।
ঘ. চেয়ারম্যান সাহেবের মনোভাব ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাবের প্রতিফলন, কারণ তিনি তাঁর ছেলেকে বুঝিয়ে বলছেন, যারা আজ তুচ্ছ মনে হচ্ছে, তারা আসলে সমাজের ভিত্তি গড়ে দেয়। কবিতায় কবি নজরুল বলেছেন, কুলি-মজুররা কঠোর পরিশ্রম করে সমাজের উন্নতি সাধন করেন, এবং তাদের কারণে আমরা উন্নত জীবন যাপন করছি। চেয়ারম্যান সাহেব এই বিষয়টি তুলে ধরে তাঁর ছেলেকে শিক্ষা দিচ্ছেন যে, শ্রমিক শ্রেণীকে অবমূল্যায়ন করা অন্যায়। ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূল বার্তা হচ্ছে, সমাজের উন্নতি ও সভ্যতার বিকাশে শ্রমিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চেয়ারম্যান সাহেবও তাঁর ছেলেকে এ বিষয়ে সচেতন করতে চাইছেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি কবিতার শিক্ষাকে সমর্থন করে, যেখানে শ্রমিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা জরুরি বলে মনে করা হয়েছে। তাই, চেয়ারম্যান সাহেবের মনোভাব কবিতার মূল ভাবেরই প্রতিফলন, যেখানে শ্রমিক শ্রেণীকে তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরের মতো লক্ষ-কোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। এদেরই অক্লান্ত শ্রমে ও ঘামে মোটর জাহাজ চলছে, দালান-কোঠা গড়ে উঠছে, কল-কারখানা স্থাপিত হচ্ছে। অথচ এক শ্রেণির হৃদয়হীন স্বার্থান্ধ মানুষ এদের শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিত্ত-সম্পদের সবটুকুই ভোগ করছে। শ্রমজীবীদের তারা মানুষ হিসেবেও গণ্য করে না। ক. ‘কুলি-মজুর’ কবিতার উৎস কী? খ. ‘দধীচিদের হাড়’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপকটি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক এবং ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে খেটে খাওয়া কুলি-মজুর ও শ্রমজীবী, মানুষের মানবেতর জীবনযাপন ও অবদানের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। রানার ছুটেছে তাই ঝুমঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে, রানার চলেছে, রানার! রাত্রির পথে পথে চলে কোনো নিষেধ জানে না মানার। দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার- কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার। এমনি করেই জীবনের বহু বছরকে পিছু ফেলে পৃথিবীর বোঝা ক্ষুধিত রানার পৌছে দিয়েছে ‘মেলে’। ক. দধীচি কে? খ. পথের প্রতি ধূলিকণা কী জানে? গ. উদ্দীপকে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত রানার এবং ‘কুলি-মজুর’ কবিতার শ্রমজীবী মানুষ প্রত্যেকেই সভ্যতার বিকাশ ঘটালেও নিজেরা হয়েছে অবহেলিত।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। বড় কাজে দিলেই হাত পাব দারুণ লাজ, ছোট কাজেই রব। যন্ত্র যেথা নির্ঘোষে তার কানে লাগায় তালা, উত্তাপে যায় রুদ্ধশ্বাস, গাত্রে ধরে জ্বালা; সহ্য আমার কি না-হয় আজ। যাইতে শিখি দিনে-দিনে একটু দূরে থেকে, করতে শিখি কর্মী যারা তাদের দেখে-দেখে, পরতে শিখি শক্ত কাজের যোগ্য যেই সাজ চর্ম বর্ম নব। ক. দিনে দিনে বহু কী বেড়েছে? খ. ‘কুলি-মজুর’ কবিতার উল্লিখিত ‘দধীচি’র পরিচয় দাও। গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত কাজের দিকটি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকে কাজের দিকটি প্রকাশ পেলেও তা ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাব প্রকাশ করে না”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। “মুক্তিকামী মহাসাধক মুক্ত করে দেশ, সবারই সে অন্ন জোগায় নাইকো গর্ব লেশ। দ্রুত তাহার পরের হিত সুখ নাহি চায় নিজে রৌদ্র দাহে শুকায় তনু মেঘের জলে ভিজে। ক. ‘কুলি-মজুর’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত? খ. ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় কাদের দুর্বল বলা হয়েছে? গ. উদ্দীপকের মুক্তিকামী মহাসাধকের বৈশিষ্ট্যের সাথে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কুলি-মজুরেরা কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের কবিতাংশটি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার আংশিক ভাবার্থ ব্যক্ত করেছে। ব্যাখ্যা কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে যেসব শ্রমজীবী মানুষ পৃথিবীকে বসবাসের যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন কাজী নজরুল ইসলাম ‘জীবন বন্দনা’ কবিতায় তাঁদের জয়গান করেছেন। তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হিংস্র বন্য-শ্বাপদকে বিতাড়িত করে মানুষের বাসের উপযোগী পৃথিবী উপহার দিয়েছেন। মানবকল্যাণে অনেকে নিজের জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে গেছেন। ক. বাষ্প-শকট কী? খ. কবি শ্রমজীবীদের দেবতা বলে আখ্যায়িত করেছেন কেন? গ. উদ্দীপকটি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন বিষয়টি তুলে ধরে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক এবং ‘কুলি-মজুর’ কবিতার আলোকে কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যবৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। কেউ ছোট কেউ বড় কেন হয়ে যায়! কেন তবে পদতলে পড়ি বাক্কার? ‘মনুষ্যত্ব’ জাগাইলে পাইব উদ্ধার-। যত অপমান, যত লাঞ্ছনা পীড়ন একতার বলে সব হইবে দমন! ক. ‘শকট’ মানে কী? খ. “চোখ ফেটে এল জল”- কেন? বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের মতো ‘কুলি-মজুর’ কবিতার শ্রমজীবী মানুষেরাও বারবার লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। বংশে বংশে নাহিকো তফাত বনেদি কে আর গর-বনেদি, দুনিয়ার সাথে গাঁথা বুনিয়াদ দুনিয়া সবারি জনম-বেদি। ক. কারা শ্রমজীবী মানুষদের ঘৃণা করে? খ. কবি মানুষরূপী দেবতা বলেছেন কাকে? কেন? গ. উদ্দীপকে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ঘ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটিই ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাব-তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেখাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। গাহি তাহাদের গান- ধরণীর হাতে দিল যারা আনি ফসলের ফরমান। শ্রম-কিণাঙ্ক-কঠিন যাদের নির্দয় মুঠি-তলে এস্তা ধরণী নজরানা দেয় ডালি ভরে ফুলে ফলে। বন্য-শ্বাপদ-সঙ্কুল জরা-মৃত্যু-ভীষণা ধরা যাদের শাসনে হলো সুন্দর কুসুমিতা মনোহরা। ক. বাষ্প-শকটের তলে কে পড়ে? খ. কাদেরকে প্রকৃত মানুষ ও দেবতা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ঘ. উদ্দীপকটি ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মতো শ্রমজীবী মানুষের বঞ্চিত হওয়ার দিকটি ধারণ করেনি- বিশ্লেষণ কর। |
আরও পড়ুনঃ নতুন দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
নিচে উত্তরসহ কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।