তৈলচিত্রের ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর (অনুধাবন)

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈলচিত্রের ভূত গল্পটি নগেন নামের এক যুবকের অভিজ্ঞতা নিয়ে আবর্তিত, যে তার মামার তৈলচিত্রের সাথে জড়িত একটি অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হয়। এই পোস্টে তৈলচিত্রের ভূত অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।

Image with Link Descriptive Text

তৈলচিত্রের ভূত গল্পের প্রশ্ন উত্তর

১। পরাশর ডাক্তার কে?

উত্তর: পরাশর ডাক্তার গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি একজন বুদ্ধিমান ও যুক্তিবাদী ব্যক্তি, যিনি নগেনের সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করেন। তিনি নগেনের অভিজ্ঞতা শুনে প্রথমে অবিশ্বাস করেন, কিন্তু পরে নিজে ঘটনাটি পরীক্ষা করে এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেন।


২। নগেনের মামার সাথে তার সম্পর্ক কেমন ছিল?

উত্তর: নগেনের মামার সাথে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। নগেন জীবিতকালে মামার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখালেও তা ছিল কেবল ভান। মামার মৃত্যুর পর নগেন জানতে পারে যে মামা তাকে টাকা দিয়ে গেছেন, যা তার মনে অনুতাপ ও লজ্জার সৃষ্টি করে।


৩। নগেন কেন ভেবেছিল যে তার মামার আত্মা তাকে শাস্তি দিচ্ছে?

উত্তর: নগেন ভেবেছিল যে তার মামার আত্মা তাকে শাস্তি দিচ্ছে কারণ সে জীবিতকালে মামার প্রতি ভান করে ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখিয়েছিল। মামার মৃত্যুর পর নগেনের মনে অনুতাপ জেগেছিল, এবং সে ভেবেছিল যে মামার আত্মা তার এই ভান ধরে ফেলেছেন। যখন সে ছবিটি স্পর্শ করত, তখন একটি শক্তিশালী ধাক্কা অনুভব করত।


৪। নগেন কেন রাত্রে ছবি স্পর্শ করলে ধাক্কা অনুভব করত?

উত্তর: নগেন রাত্রে ছবি স্পর্শ করলে ধাক্কা অনুভব করত কারণ ছবিটির ফ্রেমে দুটি ইলেকট্রিক বাল্ব সংযুক্ত ছিল, যা রাত্রে জ্বলত। দিনে বাল্বগুলি জ্বলত না, তাই দিনে ছবি স্পর্শ করলে নগেন কোনো ধাক্কা অনুভব করত না। রাত্রে বাল্বগুলি জ্বলার কারণে নগেন ধাক্কা অনুভব করত।


৫। নগেনের মামার ছবিটি কিভাবে তৈরি হয়েছিল?

উত্তর: নগেনের মামার ছবিটি তৈরি হয়েছিল মামার নিজের ইচ্ছায়। মামা শখ করে ছবিটি আঁকিয়েছিলেন এবং রুপার ফ্রেমে বাঁধিয়েছিলেন। ছবিটি তৈরি করার সময় মামা নিজেই এর জন্য অর্থ ব্যয় করেছিলেন। ছবিটি তৈরি হওয়ার পর এটি লাইব্রেরির দেয়ালে টাঙানো হয়েছিল। 


৬। নগেন কিভাবে তার মামার প্রতি অনুতপ্ত হয়েছিল?

উত্তর: নগেন তার মামার প্রতি অনুতপ্ত হয়েছিল কারণ সে জীবিতকালে মামার প্রতি ভান করে ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখিয়েছিল। মামার মৃত্যুর পর নগেন জানতে পেরেছিল যে মামা তাকে টাকা দিয়ে গেছেন, যা তার মনে লজ্জা ও অনুতাপের সৃষ্টি করেছিল। নগেন বুঝতে পেরেছিল যে মামা তাকে সত্যিকারের ভালোবাসতেন, কিন্তু সে তা উপলব্ধি করতে পারেনি।


৭। নগেন কেন রাত্রে লাইব্রেরিতে যেত?

উত্তর: নগেন রাত্রে লাইব্রেরিতে যেত কারণ সে ভাবত যে রাত্রে তার মামার আত্মা সক্রিয় হয়। সে ছবিটি স্পর্শ করে প্রণাম করতে চাইত, কিন্তু বারবার ধাক্কা খেত। নগেনের মনে হয়েছিল যে মামার আত্মা তাকে ক্ষমা করবেন যদি সে সত্যিকারের ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখায়। এই কারণে সে রাত্রে লাইব্রেরিতে গিয়ে মামার তৈলচিত্রের সামনে প্রণাম করতে গিয়েছিল।


৮। নগেন কেন দিনে ছবি স্পর্শ করলে কিছু হয় না?

উত্তর: নগেন দিনে ছবি স্পর্শ করলে কিছু হয় না কারণ দিনে ইলেকট্রিক বাল্বগুলি জ্বলে না। বিদ্যুতের শক তখন কাজ করে না, তাই নগেন কোনো ধাক্কা অনুভব করে না। দিনে বাল্বগুলি অফ থাকে, তাই ছবিটি স্পর্শ করলে কোনো শক অনুভব হয় না।


৯। নগেন কিভাবে তার ভয় কাটিয়ে উঠল?

উত্তর: নগেন তার ভয় কাটিয়ে উঠল যখন পরাশর ডাক্তার তাকে ছবিটির পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলেন। পরাশর ডাক্তার নগেনকে বুঝালেন যে ছবিটির ফ্রেমে ইলেকট্রিক বাল্ব সংযুক্ত রয়েছে, যা বিদ্যুতের শক সৃষ্টি করে। নগেন যখন অন্ধকারে ছবিটি স্পর্শ করত, তখন এই শক তাকে ধাক্কা দেওয়ার অনুভূতি দিত।


১০। পরাশর ডাক্তার কীভাবে রহস্য উদঘাটন করেন?

উত্তর: পরাশর ডাক্তার নগেনের অভিজ্ঞতা শুনে প্রথমে অবিশ্বাস করেন, কিন্তু পরে তিনি নিজে লাইব্রেরিতে গিয়ে ছবিটি পরীক্ষা করেন। তিনি দেখেন যে ছবিটির ফ্রেমে ইলেকট্রিক বাল্ব সংযুক্ত রয়েছে, যা বিদ্যুতের শক সৃষ্টি করে। এইভাবে তিনি রহস্য উদঘাটন করেন।


১১। তৈলচিত্রের পেছনের রহস্য কী ছিল?

উত্তর: তৈলচিত্রের পেছনের রহস্য ছিল বৈজ্ঞানিক। ছবিটির ফ্রেমে দুটি ইলেকট্রিক বাল্ব সংযুক্ত ছিল, যা রাত্রে জ্বলত। নগেন যখন অন্ধকারে ছবিটি স্পর্শ করত, তখন বিদ্যুতের শক অনুভব করত। এই শকই তাকে ধাক্কা দেওয়ার অনুভূতি দিত।


১২। নগেন কেন মামার ছবিটি স্পর্শ করার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলত?

উত্তর: নগেন মামার ছবিটি স্পর্শ করার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলত কারণ ছবিটির ফ্রেমে সংযুক্ত ইলেকট্রিক বাল্বগুলি বিদ্যুতের শক সৃষ্টি করত। এই শক তাকে ধাক্কা দেওয়ার অনুভূতি দিত এবং কখনো কখনো জ্ঞান হারিয়ে ফেলত। নগেনের শরীরে বিদ্যুতের শক প্রবেশ করলে তার শরীর ঝনঝন করে উঠত এবং সে মেঝেতে পড়ে যেত। 


১৩। নগেন কেন পরেশের কাজ সম্পর্কে জানত না?

উত্তর: নগেন মামার ছবিটির ফ্রেমে ইলেকট্রিক বাল্ব সংযুক্ত হয়েছে। নগেনের মামার মৃত্যুর পর ছবিটির ফ্রেমে বাল্ব সংযুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু নগেন এই তথ্য জানত না। সে ভেবেছিল যে ছবিটি আগের মতোই আছে এবং কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই কারণে সে পরেশের কাজ সম্পর্কে জানত না।


Related Posts

Leave a Comment