মাদার তেরেসা অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

সন্‌জীদা খাতুনের মাদার তেরেসা গল্পে মাদার তেরেসার জন্ম, শৈশব, সন্ন্যাস জীবন, ভারতের কলকাতায় মানবসেবা, ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’ প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান এবং নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এই পোস্টে মাদার তেরেসা অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।

Image with Link Descriptive Text

মাদার তেরেসা অনুধাবন প্রশ্ন

১। মাদার তেরেসার শৈশবে কী ঘটনা তাঁর মনে গভীর প্রভাব ফেলে?
উত্তর: মাদার তেরেসার শৈশবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৯১৮) সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু তাঁর কোমল মনে গভীর আঘাত করে। এছাড়া, তাঁর বাবার মৃত্যু পরিবারে আর্থিক সংকট তৈরি করে, যা তাঁর জীবনকে কঠিন করে তোলে।


২। মাদার তেরেসা কেন মানুষের সেবায় আগ্রহী হন?
উত্তর: ছোটবেলা থেকেই মাদার তেরেসা মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে খুব কষ্ট পেতেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং বাবার মৃত্যু তাঁর মনে মানুষের সেবার ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে। তিনি মনে করতেন, মানুষের সেবা করাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য।


৩। মাদার তেরেসা কীভাবে সন্ন্যাসী জীবন শুরু করেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা ১৮ বছর বয়সে ‘লরেটো সিস্টার্স’ নামে একটি খ্রিষ্টান মিশনারি সংগঠনে যোগ দেন। তিনি ভারতে এসে দার্জিলিংয়ে তিন বছর প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তিনি কলকাতার সেন্ট মেরিজ স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।


৪। মাদার তেরেসা কেন লরেটো সিস্টার্স ছেড়ে দেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা লরেটো সিস্টার্স ছেড়ে দেন কারণ তিনি গরিব ও দুঃখী মানুষের সেবায় নিজেকে পুরোপুরি নিয়োজিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি মনে করতেন, স্কুলের চেয়ে রাস্তার মানুষদের সেবা করা তাঁর জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য।


৫। মাদার তেরেসা কীভাবে বাংলা ভাষা শিখেছিলেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা বাংলা ভাষা শিখেছিলেন দার্জিলিংয়ে প্রশিক্ষণের সময়। তিনি বাঙালিদের মধ্যে কাজ করার জন্য বাংলা ভাষা রপ্ত করেন। পরে কলকাতায় শিক্ষকতা করার সময়ও তিনি বাংলা ভাষা ব্যবহার করতেন।


৬। মাদার তেরেসা ‘নির্মল হৃদয়’ প্রতিষ্ঠান কেন গড়ে তোলেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা ‘নির্মল হৃদয়’ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন মৃত্যুপথযাত্রী এবং অসুস্থ মানুষের সেবার জন্য। তিনি রাস্তা থেকে অসুস্থ মানুষদের তুলে এনে তাদের যত্ন নিতেন এবং মর্যাদার সাথে শেষ সময় কাটানোর সুযোগ দিতেন।


৭। মাদার তেরেসা কুষ্ঠরোগীদের জন্য কী কাজ করেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা কুষ্ঠরোগীদের জন্য ‘প্রেমনিবাস’ নামে একটি আবাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজে কুষ্ঠরোগীদের সেবা করতেন, তাদের ঘা ধুয়ে দিতেন এবং সমাজে তাদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতেন।


৮। মাদার তেরেসা কীভাবে অনাথ শিশুদের সাহায্য করেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা অনাথ শিশুদের জন্য ‘শিশুভবন’ প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তিনি রাস্তা থেকে অনাথ শিশুদের তুলে এনে তাদের আশ্রয়, খাবার এবং শিক্ষার ব্যবস্থা করতেন। এই শিশুভবন অনেক শিশুর জীবন বদলে দেয়।


৯। মাদার তেরেসা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় কী করেন?
উত্তর: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মাদার তেরেসা শরণার্থী শিবিরে গিয়ে দুর্গত মানুষের সেবা করেন। তিনি অসুস্থ ও ক্ষুধার্ত মানুষদের খাবার, ওষুধ এবং যত্ন প্রদান করেন।


১০। মাদার তেরেসা তার নোবেল শান্তি পুরস্কার কী করেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থ গরিব ও দুঃখী মানুষের সেবায় দান করেন। তিনি পুরস্কারের অর্থ নিজের জন্য ব্যবহার করেননি, বরং তা মানবসেবায় ব্যয় করেন।


১১। মাদার তেরেসা তিনটি শাড়ি কেন রাখতেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা মাত্র তিনটি শাড়ি রাখতেন। একটি পরার জন্য, একটি ধোয়ার জন্য এবং আরেকটি জরুরি প্রয়োজনের জন্য। তিনি সরল জীবনযাপন করতেন এবং সম্পদের প্রতি অনাসক্তি দেখাতেন।


১২। মাদার তেরেসার মূল আদর্শ কী ছিল?
উত্তর: মাদার তেরেসার মূল আদর্শ ছিল নিঃস্বার্থ মানবসেবা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সবচেয়ে গরিব ও দুঃখী মানুষের সেবা করাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। তিনি ধর্ম, জাতি বা দেশের ভেদাভেদ না করে সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন।


১৩। মাদার তেরেসা কীভাবে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা মানুষের সেবা করে এবং ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতেন। তিনি শেখাতেন যে ছোট ছোট কাজ দিয়েও বড় পরিবর্তন আনা যায়। তাঁর কাজ দেখে অনেকেই মানবসেবায় আগ্রহী হয়েছেন।


১৪। মাদার তেরেসা কীভাবে ধর্ম ও জাতির ভেদাভেদ ভুলে যেতেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা ধর্ম, জাতি বা দেশের পার্থক্য না করে সবাইকে সমানভাবে সেবা দিতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সব মানুষই ঈশ্বরের সৃষ্টি এবং তাদের সেবা করাই ধর্মের প্রকৃত কাজ।


১৫। মাদার তেরেসার কাজের মূল লক্ষ্য কী ছিল?
উত্তর: মাদার তেরেসার কাজের মূল লক্ষ্য ছিল সবচেয়ে গরিব, অসুস্থ এবং দুঃখী মানুষের সেবা করা। তিনি চেয়েছিলেন যে প্রতিটি মানুষ মর্যাদার সাথে বাঁচুক এবং মরুক।


১৬। মাদার তেরেসার জীবন থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
উত্তর: মাদার তেরেসার জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি যে ভালোবাসা ও সেবার মাধ্যমে পৃথিবীকে সুন্দর করা যায়। তিনি শেখান যে ছোট ছোট কাজ দিয়েও বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব।


১৭। মাদার তেরেসা কীভাবে সমাজে পরিবর্তন আনেন?
উত্তর: মাদার তেরেসা সমাজে পরিবর্তন আনেন গরিব ও দুঃখী মানুষের সেবার মাধ্যমে। তিনি অসুস্থ, অনাথ এবং মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের জন্য আশ্রয় ও সেবার ব্যবস্থা করে তাদের জীবন বদলে দেন।


১৮। মাদার তেরেসার কাজের মাধ্যমে তিনি কী অর্জন করেন?
উত্তর: মাদার তেরেসার কাজের মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান এবং তাঁর কাজের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের জীবন বদলে যায়। তাঁর আদর্শ আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।


Related Posts

Leave a Comment