‘জন্মভূমি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি সুন্দর কবিতা, যা জন্মভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও মমত্ববোধ প্রকাশ করে। কবিতাটিতে কবি তাঁর জন্মভূমির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে একাত্মতা বর্ণনা করেছেন। এই পোস্টে জন্মভূমি কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।
জন্মভূমি কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন
১। কবি কেন তাঁর জীবনকে সার্থক মনে করেন?
উত্তর: কবি তাঁর জীবনকে সার্থক মনে করেন কারণ তিনি জন্মভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং জন্মভূমিকে মায়ের মতো ভালোবাসেন। এই ভালোবাসার মাধ্যমেই তিনি জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেয়েছেন। কবির মতে, জন্মভূমির মাটি, জল, আলো এবং ছায়ায় তাঁর অস্তিত্ব জুড়ে আছে। এই ভালোবাসাই তাঁর জীবনের সার্থকতা।
২। কবি জন্মভূমির ধন-রত্ন সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর: কবি বলেছেন, তিনি জানেন না তাঁর জন্মভূমিতে ধন-রত্ন বা সম্পদ আছে কি না। তবে তিনি এটাই জানেন যে জন্মভূমির ছায়ায় তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শান্তি পায়। কবির কাছে জন্মভূমির প্রকৃত সম্পদ হলো এর স্নিগ্ধতা, শান্তি এবং সৌন্দর্য। ধন-রত্নের চেয়ে এই প্রকৃতির সম্পদই তাঁর কাছে বেশি মূল্যবান।
৩। কবি জন্মভূমির কোন জিনিস ভালোবাসেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির প্রকৃতির বিভিন্ন দিককে ভালোবাসেন, যেমন ফুলের গন্ধ, চাঁদের জ্যোৎস্না, সূর্যের আলো এবং ছায়ার শান্তি। তিনি প্রকৃতির এই সৌন্দর্য এবং শান্তিতে নিজেকে জুড়ে রাখেন। কবির মতে, জন্মভূমির প্রকৃতি তাঁর মনকে আকুল করে এবং তাঁর জীবনে সুখ ও শান্তি আনে।
৪। কবি জন্মভূমির আলোকে কীভাবে বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির আলোকে তাঁর জীবনের প্রথম আলো হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই আলোই তাঁর চোখ জুড়িয়েছে এবং তাঁর জীবনকে আলোকিত করেছে। কবির মতে, জন্মভূমির আলো তাঁর অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। তিনি চান, এই আলোতেই তাঁর চোখ শেষবারের মতো মুদে যাক।
৫। কবি জন্মভূমির ছায়ায় কী অনুভব করেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির ছায়ায় শান্তি ও সুখ অনুভব করেন। এই ছায়ায় তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জুড়িয়ে যায় এবং তিনি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন। জন্মভূমির ছায়া তাঁর জীবনে প্রশান্তি আনে এবং তাঁর মনকে শান্ত করে। কবির মতে, এই ছায়াই তাঁর জীবনের প্রকৃত সম্পদ।
৬। কবি জন্মভূমির ফুলের গন্ধ সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর: কবি বলেছেন, তিনি জানেন না কোন বনে এমন সুগন্ধী ফুল ফোটে, যা তাঁকে এত আকুল করে। ফুলের গন্ধ তাঁর মনকে মাতিয়ে তোলে এবং তিনি প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন। কবির মতে, ফুলের গন্ধ জন্মভূমির প্রকৃতির একটি অপরূপ দিক, যা তাঁর হৃদয়কে স্পর্শ করে।
৭। কবি জন্মভূমির চাঁদকে কীভাবে বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির চাঁদকে এমন একটি জ্যোৎস্না হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা মধুর হাসি ছড়ায়। তিনি জানেন না কোন আকাশে এমন সুন্দর চাঁদ ওঠে, যা তাঁর মনকে এত আকুল করে। চাঁদের জ্যোৎস্না তাঁর হৃদয়ে শান্তি ও সৌন্দর্যের অনুভূতি জাগায়।
৮। কবি জন্মভূমির মাটিকে কীভাবে ভালবাসেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির মাটিকে তাঁর জীবনের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখেন। এই মাটিতেই তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন এবং এই মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান। জন্মভূমির মাটি তাঁর অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে এবং তিনি এই মাটির স্নিগ্ধতা ও শান্তিকে ভালোবাসেন।
৯। কবি জন্মভূমির আলোতেই কেন শেষ নিঃশ্বাস চান?
উত্তর: কবি জন্মভূমির আলোতেই তাঁর চোখ বুজে যেতে চান কারণ এই আলোই তাঁর জীবনের প্রথম আলো। এই আলোতেই তিনি তাঁর চোখ খুলেছেন এবং এই আলোতেই তিনি তাঁর জীবনকে আলোকিত করেছেন। কবির মতে, এই আলোতেই তাঁর জীবনের পরিপূর্ণতা নিহিত আছে।
১০। কবি জন্মভূমির প্রকৃতিকে কিভাবে অনুভব করেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন ফুল, চাঁদ, সূর্য এবং ছায়ার মাধ্যমে। তিনি প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং শান্তিতে নিজেকে জুড়ে রাখেন। কবির মতে, জন্মভূমির প্রকৃতিই তাঁর জীবনের প্রকৃত সম্পদ এবং এই প্রকৃতির সঙ্গেই তাঁর অস্তিত্ব মিশে আছে।
১১। জন্মভূমির সূর্যালোক কীভাবে কবিকে আকর্ষণ করে?
উত্তর: কবি জন্মভূমির সূর্যালোককে তাঁর জীবনের প্রথম আলো হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই আলোই তাঁর চোখ জুড়িয়েছে এবং তাঁর জীবনকে আলোকিত করেছে। কবির মতে, সূর্যের আলো জন্মভূমির প্রকৃতির একটি অপরূপ দিক, যা তাঁর হৃদয়কে স্পর্শ করে।
১২। কবি জন্মভূমির ছায়ায় কী পেয়েছেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির ছায়ায় শান্তি ও সুখ পেয়েছেন। এই ছায়ায় তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জুড়িয়ে যায় এবং তিনি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন। জন্মভূমির ছায়া তাঁর জীবনে প্রশান্তি আনে এবং তাঁর মনকে শান্ত করে।
১৩। কবি জন্মভূমির ফুলের গন্ধে কী অনুভব করেন?
উত্তর: কবি জন্মভূমির ফুলের গন্ধে আকুলতা অনুভব করেন। তিনি জানেন না কোন বনে এমন সুগন্ধী ফুল ফোটে, যা তাঁর মনকে এত মাতিয়ে তোলে। ফুলের গন্ধ তাঁর হৃদয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্যের অনুভূতি জাগায়।
১৪। কবি জন্মভূমির আলোতেই কেন তাঁর চোখ মুদে যেতে চান?
উত্তর: কবি জন্মভূমির আলোতেই তাঁর চোখ মুদে যেতে চান কারণ এই আলোই তাঁর জীবনের প্রথম আলো। এই আলোতেই তিনি তাঁর চোখ খুলেছেন এবং এই আলোতেই তিনি তাঁর জীবনকে আলোকিত করেছেন। কবির মতে, এই আলোতেই তাঁর জীবনের পরিপূর্ণতা নিহিত আছে।
১৫। “সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে” – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণটির মাধ্যমে কবি তাঁর জীবনের সার্থকতা প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, এই দেশে জন্মগ্রহণ করেই তাঁর জীবন সার্থক হয়েছে। জন্মভূমির প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা এবং মমত্ববোধই তাঁর জীবনের প্রকৃত অর্থ। কবির মতে, জন্মভূমির মাটি, জল, আলো এবং ছায়ায় তাঁর অস্তিত্ব জুড়ে আছে। এই ভালোবাসাই তাঁর জীবনের সার্থকতা।
১৬। “জানি নে তোর ধন রতন আছে কি না রানির মতন”– ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণটির মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে, তিনি জানেন না তাঁর জন্মভূমিতে ধন-রত্ন বা সম্পদ আছে কি না। তবে তিনি এটাই জানেন যে জন্মভূমির ছায়ায় তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শান্তি পায়। কবির কাছে জন্মভূমির প্রকৃত সম্পদ হলো এর স্নিগ্ধতা, শান্তি এবং সৌন্দর্য। ধন-রত্নের চেয়ে এই প্রকৃতির সম্পদই তাঁর কাছে বেশি মূল্যবান।
১৭। “শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে”– ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণটির মাধ্যমে কবি জন্মভূমির ছায়ায় শান্তি ও সুখ অনুভব করেছেন। এই ছায়ায় তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জুড়িয়ে যায় এবং তিনি প্রকৃতির সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করেন। জন্মভূমির ছায়া তাঁর জীবনে প্রশান্তি আনে এবং তাঁর মনকে শান্ত করে। কবির মতে, এই ছায়াই তাঁর জীবনের প্রকৃত সম্পদ।
১৮। “কোন্ গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে”– ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণটির মাধ্যমে কবি জন্মভূমির চাঁদের জ্যোৎস্নাকে মধুর হাসি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানেন না কোন আকাশে এমন সুন্দর চাঁদ ওঠে, যা তাঁর মনকে এত আকুল করে। চাঁদের জ্যোৎস্না তাঁর হৃদয়ে শান্তি ও সৌন্দর্যের অনুভূতি জাগায়। কবির মতে, চাঁদের এই জ্যোৎস্নাই জন্মভূমির প্রকৃতির একটি অপরূপ দিক।
১৯। “ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে”– ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চরণটির মাধ্যমে কবি তাঁর শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি চান, জন্মভূমির আলোতেই তাঁর চোখ শেষবারের মতো মুদে যাক। কবির মতে, এই আলোই তাঁর জীবনের প্রথম আলো এবং এই আলোতেই তাঁর জীবনের পরিপূর্ণতা নিহিত আছে। তিনি জন্মভূমির আলোকেই তাঁর জীবনকে সার্থক মনে করেন।