লালন শাহের ‘মানবধর্ম’ কবিতায় তিনি মানুষকে জাত-ধর্মের বিভাজন ভুলে গিয়ে মানবতার পথ অনুসরণ করতে বলেছেন। এই কবিতার মূল শিক্ষা হলো মানুষের আসল পরিচয় তার মানবতা। জাত-ধর্মের বিভাজন ভুলে আমরা যদি সবাই মানবধর্মকে গ্রহণ করি, তবে পৃথিবীটা আরও সুন্দর হবে। এই পোস্টে মানবধর্ম কবিতার মূলভাব ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর (MCQ) ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
মানবধর্ম কবিতার মূলভাব
লালন শাহের ‘মানবধর্ম’ কবিতায় তিনি অত্যন্ত সহজ অথচ গভীর এক প্রশ্ন তুলেছেন—মানুষের প্রকৃত পরিচয় কী? সমাজে আমরা জাত-ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করি, অথচ লালন মনে করেন এসব বিভাজনের আসলে কোনো ভিত্তি নেই। কবিতায় তিনি বলেন, কেউ গলায় মালা পরে, কেউ হাতে তসবিহ ধরে—এগুলো শুধু বাইরের চিহ্ন, যা মানুষকে ধর্ম বা জাতের ভিত্তিতে আলাদা করে। কিন্তু জন্মের সময় কিংবা মৃত্যুর পর এসব চিহ্নের কোনো গুরুত্ব থাকে না। জীবনযাত্রার এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে মানুষ কেবল মানুষই থাকে, সেখানে জাত বা ধর্মের কোনো স্থান নেই।
লালন আরও উদাহরণ দিয়ে বলেন, কুয়োর পানি আর গঙ্গার পানি নাম ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আসলে তারা একই। ঠিক তেমনি, পৃথিবীর সব মানুষও মূলত এক। ধর্ম বা জাতের ভিন্নতাকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা একে অন্যের থেকে দূরে সরে যাই, অথচ আমাদের সকলের ভেতরে একই মানবতা বিরাজমান। লালনের মতে, মানুষের আসল পরিচয় তার মানবধর্মে। জাত-ধর্মের বাহ্যিক চিহ্ন বা বিভাজন শুধু মানুষের তৈরি, যা প্রকৃতপক্ষে কোনো মূল্য বহন করে না। এই কবিতার মাধ্যমে লালন মানুষকে মনে করিয়ে দিতে চান, আমরা যেন এই বিভেদ ভুলে গিয়ে একে অপরকে মানবতার দৃষ্টিতে দেখি।
মানবধর্ম কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর (MCQ)
১। লালন শাহের মতে মানুষ জাত-ধর্ম দিয়ে কীভাবে আলাদা হয়?
ক) জন্মের সময়
খ) বাইরের চিহ্ন দিয়ে
গ) চরিত্র দিয়ে
ঘ) শিক্ষা দিয়ে
উত্তর: খ) বাইরের চিহ্ন দিয়ে
২। ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ বাক্যে লালন কী নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন?
ক) ধর্ম
খ) জাত
গ) বয়স
ঘ) অর্থ
উত্তর: খ) জাত
৩। কখন জাতের কোনো চিহ্ন থাকে না?
ক) শিক্ষার সময়
খ) জীবনের শেষে
গ) জন্ম বা মৃত্যুর সময়
ঘ) কাজের সময়
উত্তর: গ) জন্ম বা মৃত্যুর সময়
৪। ‘গর্তে গেলে কূপজল কয়’—এখানে ‘কূপজল’ কী বোঝায়?
ক) পবিত্র জল
খ) নদীর জল
গ) কুয়োর পানি
ঘ) বরফের জল
উত্তর: গ) কুয়োর পানি
৫। গঙ্গার জল কীভাবে ভিন্ন পরিচয় পায়?
ক) রঙে
খ) স্বাদে
গ) পাত্র অনুসারে
ঘ) উষ্ণতায়
উত্তর: গ) পাত্র অনুসারে
৬। লালনের মতে, জন্ম-মৃত্যুর সময় মানুষের পরিচয় কী থাকে?
ক) ধর্মীয় চিহ্ন
খ) জাতের চিহ্ন
গ) কোনো চিহ্ন থাকে না
ঘ) বয়সের চিহ্ন
উত্তর: গ) কোনো চিহ্ন থাকে না
৭। লালন শাহ কী বিক্রি করেছেন ‘সাধ বাজারে’?
ক) জাতের ফাতা
খ) ধর্মীয় মূল্য
গ) মানবতা
ঘ) সততা
উত্তর: ক) জাতের ফাতা
৮। মানুষ জাত নিয়ে কী করে?
ক) অহংকার করে
খ) লজ্জিত হয়
গ) দুঃখিত হয়
ঘ) আনন্দিত হয়
উত্তর: ক) অহংকার করে
৯। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
ক) জাত
খ) ধর্ম
গ) মানবতা
ঘ) অর্থ
উত্তর: গ) মানবতা
১০। ‘কেউ মালা, কেউ তসবি গলায়’—এখানে মালা ও তসবি কী বোঝায়?
ক) শিক্ষা
খ) পেশা
গ) ধর্মীয় চিহ্ন
ঘ) বয়স
উত্তর: গ) ধর্মীয় চিহ্ন
১১। লালন কোথায় ‘গঙ্গাজল’ সম্পর্কে কথা বলেছেন?
ক) পবিত্রতা নিয়ে
খ) জাতিভেদ নিয়ে
গ) নদী নিয়ে
ঘ) ধর্মীয় কাজ নিয়ে
উত্তর: খ) জাতিভেদ নিয়ে
১২। ‘গঙ্গাজল’ কোন ধর্মের পবিত্রতা বোঝায়?
ক) ইসলাম
খ) হিন্দু
গ) খ্রিস্টান
ঘ) বৌদ্ধ
উত্তর: খ) হিন্দু
১৩। লালন শাহ জাত-ধর্মকে কীভাবে দেখেছেন?
ক) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
খ) গুরুত্বহীন
গ) ঐশ্বরিক
ঘ) আবশ্যিক
উত্তর: খ) গুরুত্বহীন
১৪। লালনের মতে, মানুষের প্রকৃত পরিচয় কী?
ক) ধর্ম
খ) জাত
গ) মানবতা
ঘ) পেশা
উত্তর: গ) মানবতা
১৫। ‘জগৎ বেড়ে জেতের কথা’—এখানে লালন কী বোঝাতে চেয়েছেন?
ক) ধর্মের উত্থান
খ) জাত নিয়ে গর্ব
গ) বিজ্ঞান নিয়ে কথা
ঘ) সমাজের উন্নতি
উত্তর: খ) জাত নিয়ে গর্ব
১৬। লালন কোথায় জাতের ফাতা বিক্রি করেছেন?
ক) হাটে
খ) সাধ বাজারে
গ) মেলায়
ঘ) ধর্মীয় স্থানে
উত্তর: খ) সাধ বাজারে
১৭। ‘গঙ্গায় গেলে গঙ্গাজল হয়’—এই বাক্যের মাধ্যমে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) পানির রং পরিবর্তন হয়
খ) স্থানভেদে পানির পরিচয় বদলায়
গ) পানির স্বাদ বদলায়
ঘ) পানির পরিমাণ কমে যায়
উত্তর: খ) স্থানভেদে পানির পরিচয় বদলায়
১৮। লালন কোথায় জাত-ধর্মের কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি?
ক) চোখে
খ) মনের ভেতর
গ) আত্মায়
ঘ) সমাজে
উত্তর: ক) চোখে
১৯। ‘গঙ্গাজল’ এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) গঙ্গা নদীর জল
খ) সাধারণ নদীর জল
গ) মিষ্টি জল
ঘ) কুয়োর পানি
উত্তর: ক) গঙ্গা নদীর জল
২০। লালন কোন ধর্মের ছিলেন?
ক) হিন্দু
খ) মুসলিম
গ) সুনির্দিষ্ট কোনো ধর্মের ছিলেন না
ঘ) বৌদ্ধ
উত্তর: গ) সুনির্দিষ্ট কোনো ধর্মের ছিলেন না
২১। লালন ‘মানবধর্ম’ কবিতায় কী বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন?
ক) ধর্মীয় উৎসব
খ) জাত-ধর্মের ভেদাভেদ
গ) সামাজিক অনুষ্ঠান
ঘ) শিক্ষার অভাব
উত্তর: খ) জাত-ধর্মের ভেদাভেদ
২২। ‘কয়’ শব্দের অর্থ কী?
ক) জানানো
খ) বলা
গ) দেখানো
ঘ) চাওয়া
উত্তর: খ) বলা
২৩। লালন ‘মানবধর্ম’ কবিতায় কীভাবে পানি ও জাতকে তুলনা করেছেন?
ক) পানি ভিন্ন ভিন্ন হয়
খ) পানি এক, নাম ভিন্ন
গ) পানি অপরিহার্য
ঘ) পানি পরিবর্তনশীল
উত্তর: খ) পানি এক, নাম ভিন্ন
২৪। লালনের মতে, মানবধর্মের প্রধান উপাদান কী?
ক) অর্থ
খ) মানবতা
গ) ধর্মীয় চিহ্ন
ঘ) শিক্ষা
উত্তর: খ) মানবতা
২৫। ‘জেতের’ শব্দের অর্থ কী?
ক) কাজের
খ) জাতের
গ) ধর্মের
ঘ) নামের
উত্তর: খ) জাতের
২৬। ‘যাওয়া কিংবা আসার বেলায়’—এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) ভ্রমণ
খ) কাজের সময়
গ) জন্ম-মৃত্যু
ঘ) শিক্ষা গ্রহণ
উত্তর: গ) জন্ম-মৃত্যু
২৭। লালনের ‘মানবধর্ম’ কবিতা কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে লেখা?
ক) ধর্মীয় উৎসব
খ) মানবতার গুরুত্ব
গ) শিক্ষা প্রসার
ঘ) অর্থনৈতিক উন্নয়ন
উত্তর: খ) মানবতার গুরুত্ব
২৮। লালন শাহ কবে জন্মগ্রহণ করেন?
ক) ১৮০০
খ) ১৭৭২
গ) ১৮০৫
ঘ) ১৭৭৫
উত্তর: খ) ১৭৭২
২৯। লালন শাহ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ক) ঝিনাইদহ
খ) কুষ্টিয়া
গ) ঢাকা
ঘ) রাজশাহী
উত্তর: ক) ঝিনাইদহ
৩০। লালন শাহ কোন ধরনের কবি ছিলেন?
ক) প্রেমকাব্যিক
খ) মরমি কবি
গ) আধুনিক কবি
ঘ) রোমান্টিক কবি
উত্তর: খ) মরমি কবি
৩১। লালন শাহ কতগুলো গান রচনা করেছেন?
ক) কয়েকশো
খ) সহস্রাধিক
গ) দেড়শো
ঘ) হাজার
উত্তর: খ) সহস্রাধিক
৩২। লালন শাহ কবে মৃত্যুবরণ করেন?
ক) ১৮৭৫
খ) ১৮৮০
গ) ১৮৯০
ঘ) ১৮৯৫
উত্তর: গ) ১৮৯০
৩৩। লালন শাহের গানের মধ্যে কোন বৈশিষ্ট্যটি বিশেষভাবে দেখা যায়?
ক) ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য
খ) বিদ্রোহী ভাবনা
গ) মরমি রসব্যঞ্জনা
ঘ) রাজনৈতিক বিষয়
উত্তর: গ) মরমি রসব্যঞ্জনা
৩৪। লালন শাহ কার শিষ্য ছিলেন?
ক) সিরাজ শাহ
খ) গোপাল দাস
গ) রামপ্রসাদ
ঘ) শিবকালী
উত্তর: ক) সিরাজ শাহ
৩৫। ‘যাওয়া কিংবা আসার বেলায়’ এখানে কী বোঝানো হয়েছে?
ক) কোনো বিশেষ স্থান
খ) জন্ম বা মৃত্যুর সময়
গ) কোনও যাত্রা
ঘ) সামাজিক অবস্থান
উত্তর: খ) জন্ম বা মৃত্যুর সময়
৩৬। ‘কূপজল’ শব্দের অর্থ কী?
ক) পবিত্র জল
খ) নদীর জল
গ) কুয়োর পানি
ঘ) সমুদ্রের জল
উত্তর: গ) কুয়োর পানি