জসীমউদ্দীনের ‘প্রতিদান’ কবিতার মূলভাব হলো, জীবনের প্রকৃত সার্থকতা এবং শান্তি প্রতিহিংসা ও ক্রোধের মধ্যে নয়, বরং পরার্থপরতা, ভালোবাসা, ক্ষমা এবং মানবিকতা প্রদর্শনের মধ্যে নিহিত। এই পোস্টে প্রতিদান কবিতার মূলভাব বা পাঠ পরিচিতি সহজ ভাষায় লিখে দিলাম।
Table of Contents
প্রতিদান কবিতার মূলভাব
‘প্রতিদান’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। জসীম উদ্দীনের “প্রতিদান” কবিতার মূলভাব হল মানবিকতা, ত্যাগ, এবং ভালোবাসার চেতনা। কবিতায় কবি ব্যক্তিগত কষ্ট ও আঘাতের পরও প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার পথে না গিয়ে পরোপকার ও ক্ষমার মহত্ত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি অনিষ্টকারীর প্রতি প্রতিহিংসা না পোষণ করে, বরং ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমে সুন্দর পৃথিবী গড়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। কবি মনে করেন, ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে পরার্থপরতার মধ্যে প্রকৃত সুখ এবং জীবনের সার্থকতা নিহিত। সমাজের বিভেদ ও হিংসার মধ্যেও ভালোবাসা এবং ক্ষমার মাধ্যমে মানুষ একটি শান্তিময়, সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
প্রতিদান কবিতা পাঠ পরিচিতি
‘প্রতিদান’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের ‘বালুচর’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। জসীম উদ্দীনের “প্রতিদান” কবিতায় এক অসাধারণ মানবিকতার বার্তা তুলে ধরা হয়েছে। কবি যাকে ভালোবেসেছেন, যার জন্য তিনি জীবন কাটিয়েছেন, সেই মানুষই তাকে কষ্ট দিয়েছে, ঘর ভেঙেছে, পর করে দিয়েছে। তবুও, কবির মনে প্রতিশোধের কোনো জায়গা নেই। বরং কবি তার জন্যই ঘর বেঁধে দিয়েছেন, যে তাকে আঘাত করেছে তার জন্য তিনি কেঁদেছেন, যে তাকে বিষবাণ মেরেছে তার জন্য কবি বুকভরা গান নিয়ে এসেছেন। কবিতার প্রতিটি চরণে এই গভীর ভালোবাসা, ক্ষমা, আর মানবিকতা ফুটে উঠেছে।
এখানে মূল ভাবটা খুব সহজ: জীবনে যতই আঘাত আসুক, যতই কষ্ট দেওয়া হোক, তার জবাব প্রতিশোধ দিয়ে নয়, ভালোবাসা আর সহানুভূতি দিয়েই দিতে হবে। কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, অন্যের ক্ষতি করে নয়, বরং আঘাতের প্রতিদান ভালো কিছু করে, মানুষের উপকার করেই প্রকৃত শান্তি পাওয়া যায়। এমনকি যারা কষ্ট দেয়, তাদেরও উপকার করার মধ্যেই জীবনের আসল মানে খুঁজে পাওয়া যায়।
এই কবিতায় তাই আমাদের শেখায়, ক্ষুদ্র স্বার্থ, প্রতিহিংসা এসবের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীকে আরও সুন্দর আর বাসযোগ্য করতে হলে ভালোবাসা, ক্ষমা আর সহানুভূতি দিয়েই সেটা সম্ভব।
Related Posts
- বিদ্রোহী কবিতার ব্যাখ্যা লাইন বাই লাইন -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- বিলাসী গল্পের মূল বিষয়বস্তু সহজ ভাষায় – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- বায়ান্নর দিনগুলো মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- Paragraph The Wonders of The Internet (বাংলা অর্থসহ)
- সোনার তরী কবিতার লাইন বাই লাইন ব্যাখ্যা ও মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- মাসি পিসি গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (জ্ঞানমূলক প্রশ্ন)- একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- রেইনকোট গল্পের মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- আঠারো বছর বয়স কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা