কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি (MCQ)- ৯ম শ্রেণির বাংলা

গোলাম মুরশিদের “কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু” এই লেখাটিতে কল্পনার রঙে রঙিন একটি জীবনচক্রের কাহিনি উঠে এসেছে। এই পোস্টে কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি (MCQ)- ৯ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু গল্পের মূলভাব

‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ একটি কল্পনানির্ভর লেখা। এই রচনায় কিশলয় হলো নতুন পাতা। প্রকৃতিতে গাছে গাছে বিভিন্ন ধরনের নতুন পাতা জন্ম নেয়। প্রকৃতির পালাবদলের সঙ্গে এদের রং ও রূপের পরিবর্তন হয়। প্রকৃতিকে সুন্দর করে তোলে। মানুষকে ফুল, ফল ও ছায়া দান করাসহ নানাবিধ উপকার করে। পশু-পাখি ও কীটপতঙ্গসহ সব প্রাণীর কাজে লাগে। আবার যারা এদের উপকার ভোগ করে তারাই তাদের আঘাত করে। পাতা ছিড়ে নেয়, মা-গাছকে আঘাত করে। এভাবে চলতে চলতে শীতের আগমন ঘটে। গাছের পাতারা একে একে ঝরে পড়ে। কোনো পাতা যদি শেষে ঝরে, তাহলে তাকে নিঃসঙ্গতা এসে ভর করে। এরপর অতিরিক্ত শীতের প্রতিকূলতা কাটিয়ে তারও এক সময় পতন ঘটে। ঝরে পড়ার পর পুরো গাছটার দিকে তাকালে এর বিশালতা টের পায় সে। বুঝতে পারে যে, সে বিদায় নিলেও এই গাছ বহুকাল বেঁচে থাকবে। এভাবেই কিশলয়ের মৃত্যু হয়। তবে তার দেহটা যে বিফলে যাবে না, তা সে জানত না। ঋতুর পরিবর্তন এলে শীতের বরফ গলে জল হবে। সেই জলে কিশলয়ের মৃত শুকনো দেহটা মিশে মা-গাছের শেকড়ে গিয়ে আবার গাছে মিশে যাবে। ফাল্গুনে সেই গাছে আবার নতুন পাতা গজাবে । কিশলয়ের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পর্যালোচনা করলে মানুষের জন্ম-মৃত্যুর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। মানুষের জীবনটাও বৃহত্তর জীবনের অংশ। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণের পর থেকে বড়ো হওয়া পর্যন্ত নানান পরিবর্তন আসে জীবনে। পৃথিবীতে সুখ-দুঃখ, আনন্দ- বেদনার মধ্য দিয়ে কাটে তাদের জীবন। অনেকের উপকারে আসে। এরপর এক সময় মৃত্যুর আহ্বান এলে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়। তবে মৃত্যুতেই জীবনের শেষ নয়। পৃথিবীতে ব্যক্তিমানুষের মৃত্যু হলেও জীবনের আয়োজন থেমে থাকে না, আবার নুতন প্রাণের সঞ্চার ঘটে। এভাবেই জীবনের পরিক্রমণ চলতে থাকে। এই রচনাটিতে বৃক্ষের সঙ্গে বৃহত্তর মানবজীবনের তুলনা করা হয়েছে। বৃক্ষ থেকে গাছের পাতা বা কিশলয়ের ঝরে পড়ার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর মানবজীবন থেকে ব্যক্তিজীবনের মৃত্যুর বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। তাছাড়া মানবজীবনের লক্ষ্য যে অন্যের কল্যাণ সাধন, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে।

কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু গল্পের প্রশ্ন উত্তর

১। গোলাম মুরশিদ কোন ক্ষেত্রে বিখ্যাত?
উত্তর: প্রাবন্ধিক ও গবেষক হিসেবে।

২। কিশলয়ের সবচেয়ে বড়ো বন্ধুর নাম কী?
উত্তর: ঋষি।

৩। কিশলয় কাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে?
উত্তর: বুড়ো-বুড়িদের।

৪। “হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি’, ‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত’ – কার রচিত গ্রন্থ?
উত্তর: গোলাম মুরশিদ।

৫। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পে জীবনের লক্ষ্য বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: বেঁচে থাকার জন্য একটা উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকতে হবে।

৬। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পে উল্লিখিত কিশলয়ের বাসা কোথায়?
উত্তর: বড়ো গাছের মগডালে।

৭। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ লেখক কোন ছবি এঁকেছেন?
উত্তর: প্রকৃতির পালাবদলের।

৮। শীতের রাতে কিশলয়ের পায়ে কী পড়েছে?
উত্তর: হিম।

৯। কিশলয় কীসের মতো আকাশে ভেসে থাকে?
উত্তর: ঘুড়ির মতো।

১০। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পটি কোন কাহিনি অবলম্বনে রচিত?
উত্তর: লিও বুসকাগলিয়ার কাহিনি।

১১। ‘কিশলয়’ কী?
উত্তর: নতুন পাতা।

১২। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পে উল্লিখিত কিশলয় রোজ কোথায় স্নান করে?
উত্তর: রোদে।

১৩। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ কোন প্রকৃতির রচনা?
উত্তর: কল্পনানির্ভর।

১৪। গাছ থেকে কিশলয় কোথায় ঝরে পড়ল?
উত্তর: বরফের উপর।

১৫। ‘কিশলয়’-এর জন্ম কখন?
উত্তর: বসন্তের এক ভোরবেলা।

১৬। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ রচনায় সবজান্তা কে?
উত্তর: ঋষি।

১৭। গোলাম মুরশিদ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: ১৯৪০ সালে।

১৮। ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পে কিশলয়ের ধারে কে থাকে?
উত্তর: আলো।

১৯। কীসের তালে কিশলয় নাচে?
উত্তর: হাওয়ার তালে।

২০। কিশলয়ের কী দিতে ভারি ভালো লাগে?
উত্তর: ছায়া।

২১। মগডাল কী?
উত্তর: গাছের সবচেয়ে উঁচু ডাল।

২২। গোলাম মুরশিদের একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের নাম লেখ।
উত্তর: ‘আশার ছলনে ভুলি’।

২৩। “কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পটির রচয়িতা কে?
উত্তর: গোলাম মুরশিদ।

কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু গল্পের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (MCQ)

১. “বিদ্রোহী রণক্লান্ত” গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
(ক) গোলাম সারোয়ার
(খ) গোলাম কিবরিয়া পিন্টু
(গ) গোলাম মুরশিদ
(ঘ) গোলাম মোস্তফা চৌধুরী
উত্তরঃ (গ) গোলাম মুরশিদ।

২. ‘কিশলয়’-এর জন্ম কোথায় হয়েছিল?
(ক) গ্রামের বাড়িতে
(খ) পাহাড়ের গায়ে
(গ) উঁচু হাসপাতালে বেডে
(ঘ) যানবাহনে
উত্তরঃ (খ) পাহাড়ের গায়ে

৩. শীতের শেষে সেই সবুজ কী রং ধারণ করে?
(ক) লাল
(খ) ফ্যাকাশে
(গ) গাঢ় হলুদ
(ঘ) নীল
উত্তরঃ (খ) ফ্যাকাশে।

৪. ‘কিশলয়’ কার নাম?
(ক) ছোট্ট বিড়াল ছানার
(খ) ছোট্ট পাখির ছানার
(গ) চারা গাছের
(ঘ) গাছের একটি পাতার
উত্তরঃ (ঘ) গাছের একটি পাতার

৫. ঋষির কথা কে নীরবে মেনে নিয়েছে?
(ক) বেণু
(খ) আলো
(গ) কিশলয়
(ঘ) পর্ণা
উত্তরঃ (গ) কিশলয়।

৬. ‘কিশলয়’ শব্দটির অর্থ কী?
(ক) পাকা পাতা
(খ) লম্বা পাতা
(গ) লাল পাতা
(ঘ) নতুন পাতা
উত্তরঃ (ঘ) নতুন পাতা।

৭. ‘কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু’ গল্পে সবজান্তা কে?
(ক) ঋষি
(খ) বেণু
(গ) কিশলয়
(ঘ) পর্ণা
উত্তরঃ (ক) ঋষি।

৮. ‘হেমন্তের প্রথম দিকে কিশলয়ের বন্ধু আলোর রং বদলে কী রং হয়েছে?
(ক) উজ্জ্বল কমলা
(খ) আগুন লাল
(গ) গাঢ় হলুদ
(ঘ) গাঢ় বেগুনি
উত্তরঃ (গ) গাঢ় হলুদ

৯. “বড়ো-ছোটো, দুর্বল-সবল – কেউই চিরদিন বেঁচে থাকে না” কথাটি কে বলেছে?
(ক) কিশলয়
(খ) আলো
(গ) ঋষি
(ঘ) পর্ণা
উত্তরঃ (গ) ঋষি।

১০. “কিশলয়ের জন্ম মৃত্যু” লেখাটি কী ধরনের রচনা?
(ক) বিবরণমূলক রচনা
(খ) বিশ্লেষণমূলক রচনা
(গ) তথ্যমূলক রচনা
(ঘ) কল্পনানির্ভর রচনা
উত্তরঃ (ঘ) কল্পনানির্ভর রচনা।

১১. কল্পনানির্ভর রচনার অন্তর্ভুক্ত—
i. আত্মজীবনী
ii. রম্যরচনা
iii. বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি
নিচের কোনটি ঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) ii ও iii
(গ) i ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তরঃ (খ) ii ও iii

১২. গোলাম মুরশিদ বাংলাদেশের একজন—
i. প্রাবন্ধিক
ii. গবেষক
iii. ভাষাসৈনিক
নিচের কোনটি ঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) ii ও iii
(গ) i ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তরঃ (ক) i ও ii

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৩ ও ১৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও ।

সাহিত্য এক বিশাল জগৎ। সাহিত্য হলো সমাজের দর্পণ। সাহিত্যের মধ্যে এমন এক শ্রেণির লেখা রয়েছে যেখানে বাস্তবতার সাথে কোনো মিল পাওয়া যায় না। কিন্তু লেখক এমনভাবে উপস্থাপন করেন যে সবকিছু বাস্তব বলে মনে হয় ।

১৩. উদ্দীপকে কোন ধরনের লেখার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে?
(ক) তথ্যমূলক লেখা
(খ) বিশ্লেষণমূলক লেখা
(গ) কল্পনানির্ভর লেখা
(ঘ) প্রায়োগিক লেখা
উত্তরঃ (গ) কল্পনানির্ভর লেখা।

১৪. ইঙ্গিতবহ লেখার বৈশিষ্ট্য হলো—
i. চরিত্র থাকে না
ii. অবাস্তব বিষয় থাকে
iii. কল্পনার প্রকাশ থাকে
নিচের কোনটি ঠিক?
(ক) i ও ii
(খ) ii ও iii
(গ) i ও iii
(ঘ) i, ii ও iii
উত্তরঃ (খ) ii ও iii

Related Posts

Leave a Comment