আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব সহজ ভাষায় – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

কাজী নজরুল ইসলামের “আমার পথ” প্রবন্ধে কেবল একটি নতুন দিশা দেখাচ্ছে না, বরং ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস এবং মানবিকতার গুণগত উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। এই পোস্টে আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব সহজ ভাষায় – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব

নজরুল ইসলামের “আমার পথ” প্রবন্ধে তিনি সত্যের সন্ধানে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। এখানে ‘আমি’ ভাবনাকে কেন্দ্র করে সত্যের প্রতি অবিচল থাকা ও তা নির্ভীকভাবে প্রকাশের গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। নজরুল মনে করেন, সমাজের সমস্যাগুলো তখনই তৈরি হয় যখন মানুষ নিজের বিশ্বাস প্রকাশে সংকোচ বোধ করে। তিনি বলেন, ‘আমার কর্ণধার আমি’—অর্থাৎ সত্যের পথিক হতে হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, ভুল মানব জীবনের একটি অংশ, কিন্তু ভণ্ডামি কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। সত্যের উপলব্ধি আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি ও মানবিকতা বৃদ্ধি করবে। ধর্মীয় বিভেদ ভুলে গিয়ে মানুষের হৃদয়ে মিলন ঘটানোর প্রয়োজন। এই প্রবন্ধ আমাদের আহ্বান জানাচ্ছে একটি সমৃদ্ধ, সহনশীল ও সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলার দিকে।

আমার পথ প্রবন্ধের মূলভাব বড় করে

নজরুল ইসলামের “আমার পথ” প্রবন্ধটি আমাদের সামনে সত্যের সন্ধানে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। এখানে তিনি ‘আমি’ ভাবনাকে কেন্দ্র করে এমন এক চেতনার জন্ম দেন, যেখানে সত্যের প্রতি অবিচল থাকা এবং সেটা নির্ভীকভাবে প্রকাশ করা জরুরি। এই ‘আমি’ সত্তা বাস্তবতা ও সমাজের গভীর পর্যবেক্ষণের ফল। তিনি প্রত্যেক ব্যক্তিকে পূর্ণাঙ্গ ‘আমি’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। নজরুলের মতে, মানবিক সম্পর্কের মধ্যে সত্য ও যুক্তির স্পষ্টতা অপরিহার্য। যখন কেউ নিজের বিশ্বাস প্রকাশে সংকোচ বোধ করে, তখন ব্যক্তি ও সমাজ উভয়েই সমস্যায় পড়ে। তিনি তাই বলেন, ‘আমার কর্ণধার আমি’—এটা বলার মাধ্যমে সত্যের পথিক হতে হবে। রুদ্র তেজের সঙ্গে তিনি মিথ্যার ভয়কে জয় করার আহ্বান জানাচ্ছেন, কারণ সত্যের সঙ্গেই আমাদের সত্তার পরিচয়।

নজরুল মনে করেন, ভুল মানুষ জীবনের একটি অংশ, কিন্তু ভণ্ডামি নয়। তিনি ভুলকে গ্রহণযোগ্য মনে করেন, তবে কপটতা বা ভণ্ডামি তার কাছে অপরাধ। ভণ্ডামির জালে আটকা পড়লে মানুষ একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে যায়, যা ব্যক্তিত্বের ক্ষতি করে। এই কারণেই তিনি বলেন, যারা সত্যের দম্ভে বিশ্বাসী, তাদের পক্ষেই কেবল অসাধ্য সাধন সম্ভব। তিনি আরও বলেন, এই সত্যের উপলব্ধি আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি ও মানবিকতা বৃদ্ধি করবে। ধর্মীয় বিভেদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা গড়ে তুলতে হবে। ধর্ম ও বিশ্বাসের পার্থক্য ভুলে গিয়ে মানুষের হৃদয়ে মিলন ঘটানোই নজরুলের মূল লক্ষ্য। ফলে, সমাজের প্রতিটি স্তরে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন তৈরি হবে।

নজরুলের এই প্রবন্ধ কেবল একটি নতুন দিশা দেখাচ্ছে না, বরং ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস এবং মানবিকতার গুণগত উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। এটি মানব সমাজকে একত্রিত করার এবং একটি সমৃদ্ধ, সহনশীল ও সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

Related Posts

Leave a Comment