জাহান্নাম কয়টি ও জাহান্নামের বর্ণনা

জাহান্নাম পাপীদের আবাসস্থল এবং এখানে সাতটি স্তর রয়েছে, প্রতিটি স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দণ্ডিত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি স্তর অনুযায়ী পাপের প্রকৃতি অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে, এবং সেখানে যারা প্রবেশ করবে তারা চূড়ান্ত যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। এই পোস্টে জাহান্নাম কয়টি ও জাহান্নামের বর্ণনা দিলাম।

জাহান্নাম কয়টি ও কি কি

জাহান্নাম ৭টি। জাহান্নামের স্তরগুলি হলো:

  • ১. হাবিয়া
  • ২. জাহিম
  • ৩. সাকার
  • ৪. লাযা
  • ৫. সাঈর
  • ৬. হুতামাহ
  • ৭. জাহান্নাম

জাহান্নামের বর্ণনা

জাহান্নাম শব্দটি আরবি, যার অর্থ শাস্তির স্থান বা দুঃখময় স্থান। এটি এক অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং বিপদসংকুল স্থান, যেখানে সব সময় আগুন জ্বলছে। এটি পাপীদের আবাসস্থল এবং সেখানে সাতটি স্তর রয়েছে, প্রতিটি স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দণ্ডিত ব্যক্তিরা নির্ধারিত।

পাপীদের শাস্তি পাপের প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন স্তরে ভোগ করতে হবে, এবং তারা সেখানে যুগ যুগ ধরে থাকবে। জাহান্নামে প্রবেশকারীদের অবস্থা হবে অত্যন্ত শোচনীয়। জাহান্নামের রক্ষীরা কঠোর স্বভাব ও ভয়ঙ্কর চেহারার ফেরেশতাগণ হবে, যাদের দর্শনও একটি শাস্তি হিসেবে গণ্য হবে।

জাহান্নামে পাপীদের জন্য রয়েছে বিষধর সাপের দংশন, জ্বলন্ত আগুন, এবং ৭০ হাত দীর্ঘ শিকল। তাদেরকে সেখানে অশান্তি ও ক্ষুধা-তৃষ্ণার মধ্যে থাকতে হবে। তারা চিৎকার করে মৃত্যুর প্রার্থনা করবে, কিন্তু তাদের প্রার্থনা গ্রহণ করা হবে না। আল্লাহ বলেন, “আজ তোমরা এক মৃত্যুকে ডেকো না, বরং অনেক মৃত্যুকে ডাকো।”

জাহান্নামের আগুনের বিছানা ও চাদর তাদের চারপাশে থাকবে। যখন তাদের চামড়া পুড়ে যাবে, তখন তা বদলানোর জন্য নতুন চামড়া দেওয়া হবে। তাদের পোশাক হবে আগুনের এবং মুখমণ্ডল দগ্ধ হবে। সেখানে খাবার হিসেবে তাদেরকে যাক্কুম নামক কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ খেতে দেওয়া হবে, যার স্বাদ ও গন্ধ অসহনীয়।

তারা পান করার জন্য প্রচণ্ড তৃষ্ণায় ছটফট করবে, কিন্তু তাদের পানীয় হবে ফুটন্ত পানি ও গলিত পুঁজ। জান্নাতবাসীদের কাছে তারা সাহায্য চাইবে, কিন্তু তাদেরকে জানানো হবে যে, এই পানীয় ও খাবার আল্লাহর পক্ষ থেকে অবিশ্বাসীদের জন্য হারাম।

জাহান্নামে প্রবেশের কারণ সম্পর্কে তারা বলবে, “আমরা সালাত আদায়কারী ছিলাম না এবং মিসকিনদের খাবার খাওয়াতাম না।” আল্লাহ বলেন, “তবে তোমরা সে আগুনকে ভয় করো, যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত।” (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৪)

এ দুনিয়ার জীবনের পর, আখিরাতের জীবন জান্নাত ও জাহান্নাম ছাড়া অন্য কোনো স্থান নেই। প্রত্যেককেই জাহান্নামের ওপর স্থাপিত পুলসিরাত অতিক্রম করতে হবে। আল্লাহ বলেন, “এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তা অতিক্রম করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। পরে আমি মুত্তাকিগণকে উদ্ধার করব এবং যালিমদের সেখানে নতজানু অবস্থায় রেখে দেব।” (সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৭১-৭২)

Related Posts