শওকত আলীর যাত্রা গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা

শওকত আলীর ‘যাত্রা’ গল্পটি যুদ্ধকালীন সংকটের একটি চিত্র তুলে ধরে, যেখানে একটি নৌকায় চাপার সময় ভিড়ের মধ্যে আতঙ্ক ও অস্থিরতা দেখা দেয়। এটি মূলত একটি উপন্যাস। এই পোস্টে শওকত আলীর যাত্রা গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

যাত্রা গল্পের মূলভাব

গল্পটি যুদ্ধকালীন একটি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির বর্ণনা করে, যেখানে মানুষ আতঙ্ক ও অস্থিরতার মধ্যে জীবন বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করছে। একটি নৌকায় উঠার জন্য ভিড় করতে গিয়ে তাদের মধ্যে চিৎকার, হতাশা এবং চাপের সৃষ্টি হয়। প্রফেসর রায়হান এবং তার পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রী এবং সন্তানরা, বিপদের সম্মুখীন হয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। নৌকায় ওঠার সময় প্রফেসরের স্ত্রী চশমা পরে আছেন, কিন্তু তার চোখের নিচে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। দুই শিশু কখনোই নৌকায় ওঠেনি, ফলে তারা দুলুনিতে ভয় পেয়ে কাঁদছে। পেছনে একজন বুড়ি চিৎকার করছে যে তার রাখা জিনিস নৌকায় রয়ে গেছে। সবাই হুড়োহুড়ি করে নৌকায় উঠতে চাইছে, কিন্তু মাঝির সতর্কবাণী কেউ শুনছে না।

নৌকাটি যখন তীরে ছাড়ছে, তখন পেছনে মানুষের চাপ বাড়ছে। কেউ কেউ পাড়ে দাঁড়িয়ে পরিচিতদের খুঁজছে, উদ্বিগ্ন স্বরে তাদের সম্পর্কে প্রশ্ন করছে। পুরো পরিবেশটি যেন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ডুবছে, যেখানে কেউ কারো কথা শুনতে পারছে না। প্রফেসর রায়হান মনে মনে ভাবছেন, পায়ের ব্যথা এবং পরিবারের নিরাপত্তার চিন্তা নিয়ে। তার স্ত্রী চেষ্টা করছে সন্তানদের শান্ত রাখতে, কিন্তু উদ্বেগময় পরিবেশে তাদের জন্য উদ্বেগ আরও বেড়ে যাচ্ছে। পেছনের পাড়ে আরও অনেক মানুষ ভিড় করছে, আর সেই ভিড়ের মধ্যে কেউ সাহায্যের জন্য ডাকছে, কেউবা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি পুরো মানবতাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। রায়হান ও তার পরিবার প্রাণ বাঁচানোর জন্য অন্যদের মতোই যুদ্ধ করে চলছে, কিন্তু অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক এবং হতাশা তাদের চারপাশে।

গল্পটি শেষে, নৌকাটি যখন তীরে ভিড়ছে, রায়হান বুঝতে পারে যে এরা সবাই একসাথে, কিন্তু ভয়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের একতা, সাহস এবং সহানুভূতির কথাও যেন সামনে আসছে। সামগ্রিকভাবে, এটি একটি মানবিক সংকটের চিত্র, যেখানে বেঁচে থাকার জন্য সবাই একত্রে লড়াই করছে।

যাত্রা গল্পের প্রশ্ন উত্তর

১। কেন মানুষ নৌকায় উঠছে?
উত্তর: নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য।

২। প্রফেসরের স্ত্রী কেন উদ্বিগ্ন?
উত্তর: তার দুই শিশু নৌকায় উঠতে ভয় পাচ্ছে।

৩। বুড়ির চিৎকারের কারণ কী?
উত্তর: সে তার রাখালী ছেলেকে হারিয়ে ফেলেছে।

৪। প্রফেসরের পায়ের অবস্থা কেমন?
উত্তর: পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে।

৫। নৌকাটি কেমন অবস্থায় ছাড়ল?
উত্তর: ডুবতে ডুবতে।

৬। রায়হানের স্ত্রী কিভাবে পানিতে পা দিয়েছেন?
উত্তর: হাটু পরিমাণে কাপড় ভিজিয়ে।

৭। হুমকির মধ্যে মানুষ কেন শোরগোল করছে?
উত্তর: নিরাপত্তার জন্য ভীত হয়ে।

৮। হাসান কীভাবে রায়হানকে সাহায্য করতে চায়?
উত্তর: তার হাত ধরে।

৯। হাসানের পায়ের অবস্থা কেমন?
উত্তর: বেশি জখম নয়, কিন্তু ব্যথা আছে।

১০। রায়হানের মুখে কেন হাসি ফুটে?
উত্তর: ছাত্রদের দেখার কারণে।

১১। দিকনির্দেশনা দিতে কেউ কেন প্রস্তুত নয়?
উত্তর: সবাই আতঙ্কিত এবং ভিড়ে চাপা পড়েছে।

১২। নদীর ওপার থেকে কি দেখা যাচ্ছে?
উত্তর: ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং গোলাগুলি।

১৩। আসগার কি নিয়ে এসেছে?
উত্তর: একটি লাঠি।

১৪। রায়হান কোন কথা ভাবছেন?
উত্তর: নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়া।

১৫। বিনুর কষ্টের কারণ কী?
উত্তর: অসুস্থ ছেলেদের নিয়ে চলতে পারছেন না।

১৬। কি ঘটছে নদীর ওপারে?
উত্তর: মানুষ পালাচ্ছে এবং আতঙ্কিত হচ্ছে।

১৭। রায়হানের মনোভাব কেমন?
উত্তর: দিশেহারা।

১৮। মানুষ কেন ভিড়ে এসে দাঁড়াচ্ছে?
উত্তর: নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

১৯। বিনু কি রায়হানের পরামর্শ শুনছে?
উত্তর: আতঙ্কে এবং হতাশায় কষ্ট পাচ্ছে।

২০। নৌকা ভিড়তে সবাই কেমন আচরণ করছে?
উত্তর: সবাই তাড়াহুড়ো করছে।

যাত্রা গল্পের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (MCQ)

১। মাঝি নৌকায় ধীরে যাত্রা করতে বলছে কেন?
ক) নৌকা ডুবছে
খ) বাতাস আসছে
গ) মানুষ ভিড় করছে
ঘ) বৃষ্টি শুরু হচ্ছে
উত্তর: ক) নৌকা ডুবছে

২। প্রফেসরের স্ত্রীর চোখে কি ছিল?
ক) সানগ্লাস
খ) চশমা
গ) কাজল
ঘ) কোন কিছুই নয়
উত্তর: খ) চশমা

৩। বুড়ি কি বলতে চাচ্ছিল?
ক) খাবার নিয়ে এসেছে
খ) নৌকায় উঠতে চায়
গ) রাখাইল্যা রইয়া গেছে
ঘ) কোন কিছুই নয়
উত্তর: গ) রাখাইল্যা রইয়া গেছে

৪। প্রফেসর রায়হান কাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন?
ক) তার স্ত্রী
খ) ছাত্র হাসান
গ) বুড়িকে
ঘ) মাঝিকে
উত্তর: খ) ছাত্র হাসান

৫। নৌকা ভিড়তেই মানুষ কিভাবে নেমে আসছিল?
ক) ধীরে ধীরে
খ) লাফিয়ে
গ) একসঙ্গে
ঘ) পিছনে
উত্তর: খ) লাফিয়ে

৬। নদীর পাড়ে মানুষ কেন ভিড় করছে?
ক) খাবার সংগ্রহ করতে
খ) নৌকা পারাপার করতে
গ) জ্বালানির জন্য
ঘ) বিশ্রামের জন্য
উত্তর: খ) নৌকা পারাপার করতে

৭। প্রফেসর রায়হান পায়ের ব্যথার জন্য কি ভাবছিলেন?
ক) তিনি চিকিৎসা নেবেন
খ) তিনি বিশ্রাম করবেন
গ) হাঁটতে পারবেন না
ঘ) অন্য কিছু
উত্তর: গ) হাঁটতে পারবেন না

৮। কোন জিনিসটি প্রফেসরের স্ত্রীর হাতে ছিল?
ক) মোবাইল
খ) চশমা
গ) ব্যাগ
ঘ) ছাতা
উত্তর: খ) চশমা

৯। ছাত্র হাসান কাকে বলেছিল, “পারবে তুমি?”
ক) রায়হানকে
খ) তার বাবাকে
গ) একজন সহপাঠীকে
ঘ) একজন বুড়িকে
উত্তর: ক) রায়হানকে

১০। নৌকা থেকে নামার সময় প্রফেসরের স্ত্রী কি করছিলেন?
ক) ডাকছিলেন
খ) পানিতে পা দিচ্ছিলেন
গ) কান্না করছিলেন
ঘ) খাবার খাচ্ছিলেন
উত্তর: খ) পানিতে পা দিচ্ছিলেন

১১। বুড়িগঙ্গার পানি কেমন ছিল?
ক) স্বচ্ছ
খ) দূষিত
গ) পরিষ্কার
ঘ) নীল
উত্তর: খ) দূষিত

১২। নৌকা উল্টে যাওয়ার সময় মানুষ কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিল?
ক) হাসছিল
খ) চিৎকার করছিল
গ) মুভি দেখছিল
ঘ) ঘুমাচ্ছিল
উত্তর: খ) চিৎকার করছিল

১৩। ছাত্র হাসান কি সম্পর্কে রায়হানের?
ক) বন্ধু
খ) ছাত্র
গ) প্রতিবেশী
ঘ) আত্মীয়
উত্তর: খ) ছাত্র

১৪। প্রফেসর রায়হান কী নিয়ে চিন্তিত ছিলেন?
ক) নিরাপত্তা
খ) পরিবারের সদস্য
গ) ভবিষ্যৎ
ঘ) খাদ্য
উত্তর: খ) পরিবারের সদস্য

১৫। আসগার কিভাবে সাহায্য করতে চেয়েছিল?
ক) খাবার এনে
খ) হাত ধরে
গ) লাঠি দিয়ে
ঘ) আশ্বাস দিয়ে
উত্তর: গ) লাঠি দিয়ে

১৬। পাড়ে মানুষজন কিভাবে চলছিল?
ক) দ্রুত
খ) ধীরে
গ) ভিড়ে
ঘ) একা
উত্তর: গ) ভিড়ে

১৭। রায়হান কাদের দেখতে পাচ্ছিলেন?
ক) তার বন্ধুদের
খ) পরিচিতদের
গ) ছাত্রদের
ঘ) পরিবারকে
উত্তর: খ) পরিচিতদের

১৮। ছাত্র হাসান কি করতে চেয়েছিল?
ক) বিশ্রাম নেওয়া
খ) পানি খাওয়া
গ) গান গাওয়া
ঘ) খাবার খাওয়া
উত্তর: খ) পানি খাওয়া

১৯। নদীর ওপার থেকে কি সমস্যা হচ্ছিল?
ক) শত্রুরা আসছে
খ) পানি কমে যাচ্ছে
গ) মানুষের সংখ্যা বেড়েছে
ঘ) যানজট হচ্ছে
উত্তর: ক) শত্রুরা আসছে

২০। রায়হান কেন দিশেহারা লাগছিল?
ক) ভিড়ের কারণে
খ) অসুস্থতার কারণে
গ) নিরাপত্তাহীনতার কারণে
ঘ) খাবারের অভাবে
উত্তর: গ) নিরাপত্তাহীনতার কারণে

Related Posts