মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ রচিত ‘ইবনে বতুতার ভ্রমণ’ মূলত একটি ভ্রমণকাহিনী (travelogue) যা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সামাজিক জীবনের অনন্য চিত্র উপস্থাপন করে। এটি একটি ঐতিহাসিক নথি হিসেবেও বিবেচিত হয়, যেখানে ভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের রাজনীতি, ধর্ম, দর্শন, এবং সমাজের অবস্থান বর্ণিত হয়েছে। এই পোস্টে ৮ম শ্রেণির ইবনে বতুতার ভ্রমণ গল্পের মূলভাব লিখে দিলাম।
Table of Contents
ইবনে বতুতার ভ্রমণ গল্পের মূলভাব সংক্ষেপে
ইবনে বতুতা, মরক্কোর তানজাহ শহরের বিখ্যাত ভ্রমণকারী ও পর্যটক, ১৩০৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩২৬ সালে ২২ বছর বয়সে হজের উদ্দেশ্যে তার ভ্রমণ শুরু হয়। তিনি বহু দেশে ভ্রমণ করেন, যেমন মিসর, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, আফ্রিকা, তুরস্ক, এবং ভারতের বিভিন্ন স্থান। তিনি মক্কায় প্রথম হজ সম্পন্ন করেন এবং পরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করেন। দিল্লিতে সুলতান মুহম্মদ তুঘলক তাকে বিশেষ সম্মান দিয়ে কাজি নিযুক্ত করেন। ১৩৪২ সালে তিনি চীনের জন্য বাদশাহর দূত হন। ইবনে বতুতা সুমাত্রা, জাভা, এবং অন্যান্য স্থানে ভ্রমণের পর, ২৫ বছর পর ১৩৪৯ সালে মরক্কো ফিরে আসেন। কিন্তু দেশে ফিরে তিনি স্থির থাকতে পারেননি এবং সুদান ভ্রমণে বের হন। সামগ্রিকভাবে, ইবনে বতুতার ভ্রমণপঞ্জিতে ৯৫,০০০ মাইল পথ পরিভ্রমণ উল্লেখিত। ১৩৭৮ সালে তিনি ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার ভ্রমণবৃত্তান্ত ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিল, যা তখনকার বিশ্বের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে।
ইবনে বতুতার ভ্রমণ গল্পের মূলভাব
ইবনে বতুতা, মরক্কোর তানজাহ শহরের একজন অসাধারণ ভ্রমণকারী, ১৩০৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার জীবন ও ভ্রমণ কাহিনি সত্যিই অনন্য এবং চমৎকার। ১৩২৬ সালে, মাত্র ২২ বছর বয়সে, হজের উদ্দেশ্যে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। প্রথমে তিনি আফ্রিকার নানা শহর ঘুরে মিসরে পৌঁছান। সেখান থেকে আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরে গিয়ে মক্কা যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জাহাজ না পাওয়ার ফলে আবার মিসরে ফিরে আসেন। সিরিয়া গিয়ে দামেস্কে তিনি হাদিসের বিদ্যায় শিক্ষা নেন। সেখানে তার কিছু গুণী শিক্ষকের মধ্যে দুজন বিদুষী রমণীও ছিলেন। এরপর তিনি মদিনা এবং মক্কা গিয়ে হজ সম্পন্ন করেন। হজ শেষ করে, তিনি ইরানের দিকে যাত্রা করেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করেন, যেমন বাগদাদ, নাজাফ, এবং শিরাজ। শিরাজে তিনি সুফি শেখ আবু আবদুল্লাহ খফিফ ও শেখ সাদির কবর দর্শন করেন।
১৩২৯ সালে, তিনি দ্বিতীয়বার মক্কা আসেন এবং সেখানে দুই বছর কাটান। তারপর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন, ইয়েমেন, আদেন, ওমান, এবং হাজরামাউত ঘুরে বেড়ান। হরমুজ শহরে বিখ্যাত দাতা বাদশাহ তহম্তনের সাথে দেখা করেন। তারপর আনাতোলিয়ায় যান এবং সেখানে অরাজকতা দেখতে পান। বুরসা থেকে কৃষ্ণসাগরের তীরে বিভিন্ন শহর ঘুরে ক্রিমিয়ায় পৌঁছেন, যেখানে সুলতান উজবুকের রাজত্ব ছিল। বুলগার দেশে গিয়ে ঈদ উদযাপন করেন এবং কুসতুনতিনিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিছু সময় কাটিয়ে আবার সরায় শহরে ফিরে আসেন। এরপর বোখারায় পৌঁছে সেখানকার সুলতান আলাউদ্দিন তরমশিয়ারিনের দরবারে সময় কাটান। তার ভ্রমণ অব্যাহত থাকে, তিনি হিরাত, জাম, মশহদ, নয়শাবুর, গজনি, এবং কাবুল হয়ে সিন্ধুর তীরে পৌঁছান।
১৩৩৩ সালে ভক্করে পৌঁছে লাহোর হয়ে মুলতানে আসেন। দিল্লিতে, সুলতান মুহম্মদ তুঘলক তাকে কাজি নিযুক্ত করেন এবং সেখানে নয় বছর কাটান। ১৩৪২ সালে তিনি চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। অবশেষে, ১৩৪৯ সালে ইবনে বতুতা মরক্কো ফিরে আসেন। তবে দেশে ফিরে তিনি স্থির থাকতে পারেননি এবং সুদানে ভ্রমণের জন্য বের হন। ১৩৫৪ সালে তার ভ্রমণবৃত্তান্ত লেখার কাজ শেষ করেন এবং ১৩৭৮ সালে ৭৩ বছর বয়সে মারা যান। মোট ২৫ বছরের ভ্রমণে ইবনে বতুতা ৯৫,০০০ মাইল পথ পরিভ্রমণ করেন। তার লেখা ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিল, যা তখনকার সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং সাংস্কৃতিক পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে। তার জীবন এবং অভিজ্ঞতাগুলি সত্যিই অসাধারণ!
Related Posts
- Have You Filled a Bucket Today Class 7 English Chapter 5 (বাংলা অর্থসহ)
- স্বাস্থ্য সুরক্ষা ৮ম শ্রেণির ২য় অধ্যায়- নিরাপদ খাবার নিরাপদ জীবন
- শওকত আলীর যাত্রা গল্পের মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- জহির রায়হানের সময়ের প্রয়োজনে গল্পের মূলভাব – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- আষাঢ়ের এক রাতে গল্পের এক কথায় প্রশ্ন উত্তর ও সৃজনশীল প্রশ্ন -৭ম শ্রেণি
- বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের ব্যবহার প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি- ৭ম শ্রেণি ডিজিটাল প্রযুক্তি
- জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় (পেশার রূপ বদল)
- চিঠি বিলি কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি (MCQ)- ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
- ৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
- মাগো ওরা বলে কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা