মহিলা সাহাবীদের ভূমিকা ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথেই ইসলামের প্রাথমিক যুগে একাধিকভাবে ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের কাজ ও অবদান বিভিন্ন দিক থেকে উল্লেখযোগ্য। আজকের পোস্টে আপনাদের জ দিয়ে মহিলা সাহাবীদের নাম ও তাদের পরিচয় তুলে ধরলাম।
Table of Contents
জ দিয়ে মহিলা সাহাবীদের নাম অর্থসহ তালিকা
ক্রম | নাম | সংক্ষিপ্ত নাম | নামের অর্থ |
---|---|---|---|
১ | হযরত জয়নব বিনতে আলী | জয়নব | নতুন প্রভাত |
২ | হযরত জয়নব বিনতে খুযায়মা | জয়নব | নতুন প্রভাত |
৩ | হযরত জয়নব বিনতে জাহশ | জয়নব | নতুন প্রভাত |
৪ | হযরত জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ | জয়নব | নতুন প্রভাত |
৫ | হযরত জামিলা বিনতে সাবিত | জামিলা | সৌন্দর্য |
৬ | হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিস | জুওয়াইরিয়া | ছোট পাখি |
৭ | হযরত জুমানাহ বিনতে আবু তালিব | জুমানাহ | প্রকাশিত |
জ দিয়ে মহিলা সাহাবীদের নাম ও পরিচিতি
১. হযরত জয়নব বিনতে আলী (রাঃ)
হযরত জয়নব বিনতে আলী (রাঃ) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তার নাম আমরা পরিচিতি হিসেবে জানি “জয়নব” বা “জইনব”। তিনি ছিলেন চতুর্থ রাশিদুন খলিফা আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) এর কন্যা এবং ফাতিমা (রাঃ) এর তৃতীয় সন্তান। তাঁর পরিবার ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত সম্মানিত। তাঁর ভাই হলেন হযরত হাসান (রাঃ) এবং হযরত হোসেন (রাঃ)।
২. হযরত জয়নব বিনতে খুযায়মা (রাঃ)
হযরত জয়নব বিনতে খুযায়মা নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রী এবং খুযায়মা (রাঃ) এর কন্যা। তিনি ‘উম্মুল মাসাকীন’ নামে পরিচিত ছিলেন, যা ‘মিসকিনদের মা’ অর্থে ব্যবহৃত হত। তিনি নিজের দানশীলতা এবং গরীবদের প্রতি সহানুভূতির জন্য খ্যাত ছিলেন। তাঁর স্বামী হযরত আবু সালমা (রাঃ) এর মৃত্যুর পর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন, এবং তার জীবন ইসলামের দারিদ্র্য মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে আছে।
৩. হযরত জয়নব বিনতে জাহশ (রাঃ)
নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সপ্তম স্ত্রী। তিনি নবীর পালক পুত্র জায়েদের প্রাক্তন স্ত্রী ছিলেন। এই বিবাহ ইসলামের সামাজিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেখা হয়। আপনি অল্প পড়ে যাতে ভুল না বুঝেন সে জন্য হযরত জয়নব বিনতে জাহশ পড়ুন। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে তার বিবাহ সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। তাঁর জীবন ইসলামের সামাজিক ও আইনি পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
৪. হযরত জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ (রাঃ)
হযরত জয়নব বিনতে মুহাম্মাদ (রাঃ) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এবং খাদিজা (রাঃ) এর জ্যেষ্ঠ কন্যা। তাঁর জন্ম হয়েছিল ৬০০ খ্রিষ্টাব্দে, খাদিজার বিবাহের ৫ম বছরে। তিনি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর নবুওয়াত লাভের দশ বছর পরে জন্মগ্রহণ করেন।জয়নব (রাঃ) এর প্রথম স্বামী ছিলেন আবুল আস ইবনে রাবি, যিনি খাদিজার ছোট বোন হালা বিনত খুওয়াইলিদের ছেলে এবং জয়নবের খালাতো ভাই। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর নবুওয়াত শুরু হওয়ার পর জয়নব ইসলাম গ্রহণ করেন, কিন্তু তার স্বামী আবুল আস ইসলাম গ্রহণ করেননি।৮ম হিজরিতে, মাত্র ৩০ বছর বয়সে জয়নব (রাঃ) ইন্তেকাল করেন। তাঁর জীবন এবং অবদান ইসলামের প্রথম যুগের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।
৫. হযরত জামিলা বিনতে সাবিত (রাঃ)
জামিলা বিনতে সাবিত (রাঃ) ছিলেন একজন সম্মানিত সাহাবা এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর একজন অনুসারী। তার আসল নাম ছিল আসিয়া, কিন্তু নবী (সাঃ) তার নাম পরিবর্তন করে জামিলা রেখেছিলেন, যার মানে ‘সুন্দরী’। তিনি ৬২৭ বা ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে উমর (রাঃ) কে বিবাহ করেন। তাদের একটি পুত্র ছিল, নাম আসিম ইবনে উমর। যদিও পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে, জামিলা (রাঃ) তার পুত্রকে নিয়ে কুবায় ফিরে যান।
একদিন, উমর (রাঃ) আসিমকে মসজিদ প্রাঙ্গণে খেলতে দেখে তাকে তুলে নিতে গেলে, জামিলার মা আল-শামুস বাধা দেন। পরে আবু বকর (রাঃ) বিষয়টি মীমাংসা করে দেন, এবং জামিলা (রাঃ) তার পুত্রকে রেখে দেন। পরবর্তীতে, জামিলা (রাঃ) ইয়াজিদ ইবনে যারিয়াকে বিবাহ করেন এবং তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়, নাম আব্দুল রহমান।
৬. হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিস (রাঃ)
হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিস নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রী ছিলেন এবং বনি মুস্তালিক গোত্রের সদস্য। তার বিবাহ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে গোত্রটির ইসলাম গ্রহণে সহায়ক হয়েছিল। তিনি ইসলামের প্রচার এবং গোত্রের একীকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
৭. হযরত জুমানাহ বিনতে আবু তালিব (রাঃ)
জুমানাহ বিনতে আবু তালিব (রাঃ) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাচাত বোন এবং ইসলামের প্রথম সহচরদের একজন। তিনি আবু তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং ফাতেমা বিনতে আসাদের কন্যা। জুমানাহ (রাঃ) এর স্বামী ছিলেন আবু সুফিয়ান ইবনুল হারিথ, যিনি শুরুতে ইসলামের বিরুদ্ধে ছিলেন। মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা বিজয়ের পর, জুমানাহ (রাঃ) এবং তার পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করেন এবং খাইবার থেকে ৩০ wusūq খেজুর উপহার দেন। জুমানাহ (রাঃ) মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে কিছু হাদীস বর্ণনা করেননি, তবে তার জীবনের ইতিহাস ইসলামের প্রাথমিক যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আরও পড়ুনঃ মহিলা সাহাবীদের নাম অর্থসহ (মেয়েদের নাম রাখার জন্য)
Related Posts
- পবিত্র কুরআনের ১১৪ টি সূরার নাম অর্থসহ তালিকা ও আয়াত সংখ্যা
- ১৫০ জন পুরুষ সাহাবীদের নামের তালিকা অর্থসহ
- সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত বাংলা অর্থসহ – surah hashr last 3 ayat bangla
- দুই অক্ষরের মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
- স দিয়ে সাহাবীদের নাম অর্থসহ ও তাদের পরিচয়
- ২৫ জন নবীর নামের তালিকা ও তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
- ন দিয়ে সাহাবীদের নাম অর্থসহ তালিকা ও তাদের পরিচিতি
- ১০০+ ইসলামিক শর্ট প্রশ্ন উত্তর (কুইজ প্রতিযোগিতার জন্য)
- মহিলা সাহাবীদের নাম অর্থসহ (মেয়েদের নাম রাখার জন্য)
- হ দিয়ে সাহাবীদের নাম অর্থসহ তালিকা ও তাদের পরিচিতি