ত দিয়ে পুরুষ সাহাবীদের নাম অর্থসহ তালিকা ও তাদের পরিচয়

ইসলামের প্রাথমিক যুগে সাহাবীরা ইসলামের বিস্তার এবং প্রতিষ্ঠায় বিশাল অবদান রেখেছেন। তাদের কর্ম ও ত্যাগ ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজকের পোস্টে ত দিয়ে পুরুষ সাহাবীদের নাম অর্থসহ তালিকা ও তাদের পরিচয় সম্পর্কে জানবো।

ত দিয়ে পুরুষ সাহাবীদের নাম

ক্রমিকনামসংক্ষিপ্ত নামনামের অর্থ
হযরত তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ (রাঃ)তালহামিষ্টি ফল বা ছাতিম বৃক্ষের ফল
হযরত তালহা ইবনে বারা (রাঃ)তালহামিষ্টি ফল বা ছাতিম বৃক্ষের ফল
হযরত তুফাইল ইবনে আমর আদ-দাওসি (রাঃ)তুফাইলমৃদু (যিনি কোমল বা সদয়)
হযরত তুলাইব ইবনে উমাইর (রাঃ)তুলাইবউজ্জ্বল (যিনি ঝলমলে বা দীপ্তিমান)
হযরত তামিম আল-আনসারি (রাঃ)তামিমপরিপূর্ণ (যিনি পূর্ণ বা সম্পূর্ণ)

ত দিয়ে পুরুষ সাহাবীদের নাম ও পরিচয়

১। হযরত তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ (রাঃ)

তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ ৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা উবাইদিল্লাহ এবং মাতা সা’বা ছিলেন কুরাইশ গোত্রের সদস্য। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তালহা আবু বকরের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কায় ফিরে এসে তিনি নবী মুহাম্মদ (সা:) এর ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং মুসলিম হিসেবে পরিচিত হন। তালহা উহুদের যুদ্ধে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যুদ্ধের সময় মুহাম্মদ (সা:) কে রক্ষা করতে তিনি মানব প্রাচীর তৈরি করেন। বদর যুদ্ধে তার অবদান ছিল পরোক্ষ, কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তালহা আবু বকর এবং উমর ইবনে খাত্তাবের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। উমরের মৃত্যুর পর, খলিফা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাকে ছয়জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রাখা হয়। তালহা অত্যন্ত দানশীল ছিলেন। তার অধিকাংশ সম্পদ তিনি গরীবদের সাহায্যের জন্য দান করে দিতেন। ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে উহুদের যুদ্ধের সময় একটি তীর তার পায়ে বিদ্ধ হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স তখন ৬৪ বছর ছিল।

২। হযরত তালহা ইবনে বারা (রাঃ)

হযরত তালহা ইবনে বারা (রাঃ) ছিলেন ইসলামের প্রাথমিক যুগের একজন সম্মানিত সাহাবী। তিনি কুরাইশ বংশের সদস্য, পিতার নাম বারা ইবনে আজব। তালহা বদর এবং উহুদের যুদ্ধসহ বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। উহুদের যুদ্ধে তাঁর সাহসিকতা বিশেষভাবে প্রশংসিত। তাঁর মৃত্যুর সঠিক তারিখ জানা যায়নি, তবে তাঁর জীবন ও কাজ ইসলামের ইতিহাসে স্মরণীয়।

৩। হযরত তুফাইল ইবনে আমর আদ-দাওসি (রাঃ)

তুফাইল ইবনে আমর আদ-দাওসী ছিলেন একজন মহান সাহাবি এবং ইসলামের প্রথম যুগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি মক্কার আউস গোত্রের সদস্য এবং ইসলামের প্রাথমিক প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম। তুফাইল আদ-দাওসী কুরাইশ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তুফাইলের ইসলাম গ্রহণের ঘটনা খুবই উল্লেখযোগ্য। নবী মুহাম্মদ (সা:) যখন ইসলাম প্রচার করছিলেন, তখন তুফাইল ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তার পরেই ইসলামের প্রচারে মনোযোগী হন। তার প্রচেষ্টায় ইসলামের শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত হয় এবং অনেক নতুন মুসলিম হন। তুফাইল ইসলামের বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন, বিশেষ করে ইসলামের প্রাথমিক সময়ে। তুফাইল ইবনে আমর আদ-দাওসী ৬৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

৪। হযরত তুলাইব ইবনে উমাইর (রাঃ)

তুলাইব ইবনে উমাইর (মৃত্যু: ১৩ হিজরি) ছিলেন নবী মুহাম্মদের (সা:) মামাত ভাই এবং একজন গুরুত্বপূর্ণ সাহাবি। তার মায়ের নাম ছিল আরওয়া বিনতে আব্দুল মুত্তালিব, যিনি নবীর ফুফু ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তুলাইব মক্কায় কঠিন নির্যাতনের শিকার হন। একবার পাথর নিক্ষেপ করে তাকে ও হাতিব ইবনে আমরকে আক্রমণ করা হয়। ১৩ হিজরির জামাদিউল উলা মাসে আজনাদাইন যুদ্ধে শহীদ হন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। কিছু সূত্র তাকে ইয়ারমুক যুদ্ধে শহীদ বলা হয়েছে।

৫। হযরত তামিম আল-আনসারি (রাঃ)

তামিম ইবনে জায়েদ আল-আনসারি একজন প্রখ্যাত মুসলিম সাধক এবং সাহাবী যিনি ইসলামের প্রথম যুগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বদর যুদ্ধের সাহাবী ছিলেন। উমর ইবনুল খাত্তাবের খেলাফতকালে তিনি এশিয়া মহাদেশে এসেছিলেন এবং সেখানে ১৮ বছর সিন্ধুতে অবস্থান করেছিলেন। তামিম ইবনে জায়েদ আল-আনসারি ভারতের তামিলনাড়ুর কোভালামে একটি দরগার প্রতিষ্ঠা করেন, যা চেন্নাই থেকে ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত।

আরও পড়ুনঃ ১৫০ জন পুরুষ সাহাবীদের নামের তালিকা অর্থসহ

Related Posts