৭ম শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ-তথ্যমূলক লেখা

তথ্যমূলক লেখা বলতে কোন একটি বিষয়ের আলোচনা করে সেটা গণনার মাধ্যমে অথবা পরিমাপের মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপন করা। আজকের পোস্টে আমরা ৭ম শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদদের তথ্যমূলক লেখা সম্পর্কে জানব এবং সবগুলো ছকের সমাধান করব।

৭ম শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদ সমাধান

তথ্য পরিবেশন করে যে লেখা হয় তাকে তথ্যমূলক লেখা বলে। তথ্য মূলক লেখায় তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হয়। যেমন বই পত্র অনলাইন কিংবা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেও এই তথ্য পাওয়া যায়। তথ্য উপস্থাপনের সময়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে মিলিয়ে নিতে হয় যে তথ্যটি সঠিক কিনা।

তথ্যমূলক লেখা

পড়ে কী বুঝলাম

ক. জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে এই লেখায় কী কী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে?

এই লেখায় জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে। যেমন—তাঁর জন্ম, পরিচয়, শিক্ষাদীক্ষা,চাকরিজীবন ,কর্ম ও নানা আবিষ্কারের কথা রয়েছে। এমনকি তাঁকে সম্মান জানিয়ে ব্রিটিশ সরকার কাগজি মুদ্রার নোটে যে ছবি ছাপে তার তথ্যও প্রবন্ধটিতে রয়েছে।

খ. এই লেখা থেকে সাল-ভিত্তিক তথ্যগুলো ছকের আকারে উপস্থাপন করো:

সালতথ্য
১৮৫৮জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম।
১৮৭৯বিএ পাস করেন।
১৮৮০ডাক্তারি পড়ার জন্য জগদীশচন্দ্র বসু ইংল্যান্ডে যান।
১৮৮৪প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে ট্রাইপস ডিগ্রি করেন।
১৮৯৪কলকাতার টাউন হলে তাঁর আবিষ্কারের কয়েকটা জিনিস প্রকাশ্যে দেখান।
১৮৯৬রেডিওর মাধ্যমে বিনা তারে যোগাযোগের মূল কৌশলটি আবিষ্কার করেন।

গ. এই ধরনের জীবন-তথ্যমূলক আর কী কী রচনা তুমি পড়েছ?

এই ধরনের জীবন-তথ্যমূলক বিভিন্ন রচনা এর আগে আমি পড়েছি। যেমন— রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইত্যাদি।

ঘ. এই লেখা থেকে জগদীশচন্দ্র বসুর কী কী আবিষ্কারের কথা জানতে পারলে?

এই লেখা থেকে জগদীশচন্দ্র বসুর যেসব আবিষ্কারের কথা জানতে পেরেছি সেগুলো হচ্ছে বৈদ্যুতিক চুম্বক-তরঙ্গ ,উদ্ভিদের প্রাণ আছে তার আবিষ্কার ,উদ্ভিদের বৃদ্ধি মাপার যন্ত্র ক্রেসকোগ্রাফ, রেডিওর মাধ্যমে বিনা তারে যোগাযোগের মূল কৌশল ইত্যাদি।

ঙ. বিবরণমূলক লেখার সাথে তথ্যমূলক লেখার মিল-অমিল খুুঁজে বের করো।

বিবরণমূলক লেখায় থাকে কোন কিছু বর্ণনা এবং তথ্যমূলক লেখায় থাকে কোন কিছু সম্পর্কে বিশেষ কোনো তথ্য বা তথ্যাদি ৷ তবে বিবরণমূলক লেখায় যেমন নানা তথ্য থাকতে পারে , তেমনই তথ্যমূলক রচনা বিবরণমূলকও হতে পারে।

বলি ও লিখি

‘জগদীশচন্দ্র বসু’ রচনায় লেখক যা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।

জগদীশচন্দ্র বসু পৃথিবীখ্যাত একজন পদার্থবিজ্ঞানী। তাঁর জন্ম বাংলাদেশের বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামের এক সাধারণ পরিবারে ৷ তাঁর বাবা ভগবানচন্দ্র বসু ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ৷ তিনি দেশে ও বিদেশের নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করেন। তিনি কেমব্রিজ ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন ডিগ্রী অর্জন করেন। ছেলেবেলায়ই তাঁর প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় এবং তা আরও গভীর রূপ লাভ করে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়ার সময়। তিনি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান নিয়ে ট্রাইপস ডিগ্রী অর্জন করেন ১৮৮৪ সালে।

কর্মজীবনে একজন পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারগুলো হলো —- বৈদ্যুতিক চুম্বক-তরঙ্গ , রেডিওর মাধ্যমে বিনা তারে যোগাযোগের মূল কৌশল ইত্যাদি। রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট , মাইক্রোওয়েভ কুকার ইত্যাদি তাঁর আবিষ্কারের  উপর নির্ভর করে তৈরি। এছাড়া উদ্ভিদের প্রাণ আছে এই তত্ত্ব এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধি মাপার যন্ত্র ক্রেসকোগ্রাফ আবিষ্কার প্রাকৃতিক বিজ্ঞানী হিসেবে তাঁর বিশেষ কীর্তি। জগদীশচন্দ্র বসুর এসব আবিষ্কার বিশেষ কীর্তির জন্য কয়েকটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করেন। তাঁকে সম্মান জানিয়ে ব্রিটিশ  সরকার কাগজি মুদ্রার নোটে তাঁর ছবি ছাপে। তিনি এমনই নামকরা বিজ্ঞানী যে চাঁদের একটি গর্তের নাম তাঁর নাম অনুসারেই করা হয়েছে।

লেখা নিয়ে মতামত

‘জগদীশচন্দ্র বসু’ রচনাটির যেসব বক্তব্য নিয়ে তোমার মতামত রয়েছে, বা মনে প্রশ্ন জেগেছে, তা নিচের
ছকে লেখো।

জগদদীশশচন্দ্র বসু’ রচনায় যা আছেআমার মতামত ও জিজ্ঞাসা
১৷ চাঁদের একটা গর্তের নাম দেওয়া হয়েছে বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর নামে।
 তিনি বাঙালি এবং নামকরা বিজ্ঞানী হিসেবে সম্মানিত হওয়ার জন্য আমি গর্বিত।
২৷ কলেজ শিক্ষক ইউজিন লাফোঁ তাঁর মনে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের আগ্রহ সৃষ্টি করেন , যা পরবর্তীতে তাঁকে প্রভাবিত করে।ইউজিন লাফোঁকে ধন্যবাদ। না হলে তো আমরা ‘গাছের প্রাণ আছে’ এ কথা প্রামাণিক হিসেবে জানতে পারতাম না।

তথ্যমূলক রচনা লিখি

একেকটি দল একেকটি বিষয়ের তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর এসব তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যেকে পৃথকভাবে একটি তথ্যমূলক রচনা লিখবে।

সিংগুড়িয়া হাই স্কুল আমার প্রিয় স্কুল। টাঙ্গাইল- সরিষাবাড়ি রোডের পাশেই এটির অবস্থান ৷ শহরের স্কুলগুলোর মতোই এখানে প্রায় সব রকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ডিপ টিউবওয়েলের মাধ্যমে রুমে রুমে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, কম্পিউটার ল্যাবে অডিও ভিজ্যুয়েল সিস্টেম , ক্লাসে ক্লাসে মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা রয়েছে। তিনটি তিনতলা বড় বিল্ডিংসহ বড় মাঠ রয়েছে এখানে। টিফিনে খেলাধুলার জন্য গেমস রুম যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে অডিটোরিয়াম।

স্কুলের আশেপাশে রয়েছে আম ,জাম, কাঁঠাল ,লিচু, বরই ইত্যাদি ফলের গাছ এবং সেগুন, মেহগনি, কড়ই, দেবদারু ইত্যাদি কাঠের গাছ। বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে পনেরো টি, জাম গাছ দুটি ,কাঁঠাল গাছ ছয়টি ,লিচু গাছ চারটি, নারকেল গাছ আটটি ,কামরাঙা গাছ দুটি, পেয়ারা গাছ চারটি, বরই গাছ দুইটি ৷ কাঠের গাছের মধ্যে সেগুন দশটি, মেহগনি দশটি , কড়ই গাছ চারটি ও দেবদারু চারটি।

স্কুলের আশেপাশে বড় ফুলের গাছের মধ্যে রয়েছে বকুল দুইটি, পলাশ দুইটি, কৃষ্ণচূড়া দুইটি , কদম দুইটি, কাঁঠালি চাঁপা চারটি, শেফালি দুইটি। ফুলের বাগানে রয়েছে জুঁই চারটি, গন্ধরাজ চারটি, কামিনী চারটি ,হাসনাহেনা চারটি, টগর চারটি ,বেলি চারটি ,পাঁচ রকম জমা দশটি ,গোলাপ ১৫টি ৷ এছাড়া প্রতি মৌসুমেই মৌসুমি ফুল লাগানো হয় অনেক রকম।

আমাদের এলাকায় শালিক, চড়ুই, টিয়া ,ঘুঘু , কোকিল, বক, দোয়েল ,বউ কথা কও ,ফিঙে, কুটুম পাখি ইত্যাদি বেশি দেখা যায়। চড়ুই,ঘুঘু কোকিল কালো ,  বক সাদা, কুটুম পাখি হলুদ,নীল-সাদা, শালিক লালচে-সাদা রঙের।

 আমার এলাকায় কৃষক জমি চাষ করে ফসল ফলান; নাপিত চুল-নখ কাটেন ;ধোপা কাপড় ইস্ত্রি করেন ;কামার লোহা দিয়ে দা,কাঁচি, কোদাল ইত্যাদি তৈরি করেন। সুতার কাঠের কাজ করেন, মুচিজুতা সেলাই ও পলিশ করেন ,তাঁতি কাপড় বোনেন, জেলে মাছ ধরেন ও চাষ করেন। এছাড়া শিক্ষক, উকিল ,ব্যবসায়ী,চাকরিজীবী রয়েছেন।

স্কুলের আশেপাশে মুদি দোকান ,ফাস্টফুডের দোকান, লনড্রি,  সেলুন, চা-পানের দোকান , ফলের দোকান, আইসক্রিমের দোকান, ফুলের দোকান ,ফটোকপির দোকান রয়েছে ৷ দোকানগুলোতে প্রতিদিনের দরকারি অনেক জিনিসই পাওয়া যায়।

আমার স্কুলের প্রাকৃতিক পরিবেশ খুবই মনোরম ও স্বাস্থ্যকর।

Related Posts

Leave a Comment