আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সুফিয়া কামাল আমার দেশ কবিতায় নিজের দেশের কথা বলছেন—বাংলাদেশের কথা, যার প্রকৃতি, মাটি আর মানুষকে তিনি খুব ভালোবাসেন। তিনি বলছেন, সূর্য ওঠে, চারদিক ঝলমল করে ওঠে তার আলোয়। তখন চারদিকে ফুটে ওঠে মৌসুমী ফুল, আকাশে থাকে স্নিগ্ধ রোদ। এই পোস্টে আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১।
ঝিঙে ফুল! ঝিঙে ফুল!
সবুজ পাতার দেশে ফিরোজিয়া ফিঙে-কুল-ঝিঙে ফুল।
গুল্মে পর্ণে
লতিকার কর্ণে
ঢলঢল স্বর্ণে
ঝলমল দোলে দুল-
ঝিঙে ফুল।

ক. ‘কিশ্তি’ শব্দের অর্থ কী?

খ. ‘শান্তি-কপোত বারতা লইয়া আসে’- এ কথা দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতায় বর্ণিত বিষয়ের সাদৃশ্যের দিকটি তুলে ধর।

ঘ. “বিষয়বস্তুর বর্ণনায় উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতার সাদৃশ্য থাকলেও চেতনাগত পার্থক্য স্পষ্ট”- যৌক্তিক বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. ‘কিশ্তি’ শব্দের অর্থ নৌকা।

খ. ‘শান্তি-কপোত বারতা লইয়া আসে’ এই বাক্যে কবি শান্তির প্রতীক কবুতরের কথা উল্লেখ করেছেন। কবুতর সাধারণত শান্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানে কবি বলতে চেয়েছেন যে, শান্তি বার্তা নিয়ে শান্তির কপোত বা শান্তির প্রতীক মানবসমাজে আসে। মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে তা জীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, যেমন কবুতরের শান্তি বার্তা মানুষের মনে পৌঁছায়। এই শান্তির বার্তা দিয়ে সমাজে শান্তি ও সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয়।

গ. ‘উদ্দীপক’ এবং ‘আমার দেশ’ কবিতার মধ্যে অনেক সাদৃশ্য পাওয়া যায়। দুটি কবিতাতেই দেশপ্রেম এবং দেশবাসীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে যেখানে ঝিঙে ফুলের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীবনের আনন্দময়তা বর্ণনা করা হয়েছে, সেখানে ‘আমার দেশ’ কবিতায় দেশের মাটির প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং দেশের মানুষের জন্য শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে। ‘আমার দেশ’ কবিতায় দেশের মাটি, মানুষ, এবং তাদের সংগ্রামের কথা বলা হয়েছে, ঠিক যেমন উদ্দীপকে ঝিঙে ফুলের মধ্যে দেশীয় জীবনের প্রতীক দেখা গেছে। উভয় কবিতায় প্রকৃতি এবং মানুষের সম্পর্ককে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দীপকে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের নির্মলতা চিত্রিত করা হয়েছে, এবং ‘আমার দেশ’ কবিতায় দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, এবং মানুষের ঐক্যতার প্রতি একাগ্রতা দেখা যায়। সুতরাং, উভয় কবিতায় দেশের প্রতি ভালোবাসা ও একাত্মতার মনোভাব একইভাবে ফুটে উঠেছে।

ঘ. ‘উদ্দীপক’ এবং ‘আমার দেশ’ কবিতার বিষয়বস্তুর বর্ণনায় সাদৃশ্য থাকলেও চেতনাগত পার্থক্য স্পষ্ট। ‘উদ্দীপক’ কবিতায় কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য, বিশেষ করে ঝিঙে ফুলের মাধ্যমে জীবনের আনন্দ এবং প্রাকৃতিক সুরভির বর্ণনা করেছেন। এখানে জীবনের সরলতা, সৌন্দর্য এবং নিরন্তর প্রকৃতি মানবমনের মধ্যে শান্তি এবং আনন্দ এনে দেয়। তবে ‘আমার দেশ’ কবিতায় শুধু দেশের প্রকৃতি ও সৌন্দর্য নয়, দেশের মানুষ এবং তাদের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে কবি দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা, ঐক্য, শান্তি এবং মানুষের মুক্তির কথাও বলেছেন। ‘উদ্দীপক’ কবিতার চেতনাতে যেখানে প্রকৃতি এবং জীবনকে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিতে চিত্রিত করা হয়েছে, সেখানে ‘আমার দেশ’ কবিতায় দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মানুষের সংগ্রাম এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাই, উভয় কবিতার বিষয়বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্য থাকলেও ‘আমার দেশ’ কবিতার চেতনায় সমাজ ও মানুষের বৃহত্তর উন্নতির আহ্বান দেখা যায়, যেখানে ‘উদ্দীপক’-এ শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য ও জীবনের আনন্দের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, চেতনাগত দিক থেকে ‘আমার দেশ’ কবিতার বার্তা আরও বড় ও গভীর।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
বৈশাখ মাসের অপরাহু বেলা। দগ্ধ আকাশখানা ধূসর হইয়া উঠিয়াছে।
কোথাও কণামাত্র মেঘের লেশ নাই। হু-হু করিয়া গরম বাতাস পৃথিবীর বুকের রস পর্যন্ত শোষণ করিয়া লইতেছিল। একখানা গ্রাম পার হইতে সম্মুখে এক বিস্তীর্ণ প্রান্তর আসিয়া পড়িল। ও-প্রান্তের গ্রামের চিহ্ন এ-প্রান্ত হইতে দৃষ্টিতে ধরা দেয় না। দক্ষিণে বামে শস্যহীন মাঠ ধূ-ধূ করিতেছে।

ক. ‘সাঁঝের মায়া’ গ্রন্থটি কার লেখা?

খ. “সূর্য-আলোকে আবার এ দেশে হাসে।”- কারা হাসে? ব্যাখ্যা কর। 

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমার দেশ’ কবিতার মিলের ক্ষেত্রটি নির্ণয় কর। 

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতার দৃশ্যগত পার্থক্য থাকলেও প্রেক্ষাপট অভিন্ন।”- তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
সুন্দরগড় অরণ্য প্রকৃতির লীলানিকেতন। পথে পথে করম গাছের ফুলের ঝরা-পাপড়ি বিছানো। লম্বা-ঠোঁট ধনেশ পাখি ও বনটিয়া ডালে ডালে বেড়াচ্ছে। ক্বচিৎ কোনো পর্বতচূড়ায় প্রভাতের সোনালি রোদ এলানো, ক্বচিৎ কোনো পার্বত্য ঝরনার জলের ধারে লোহাজালি ফুটে ফুটে পাথর ঢেকে ফেলেছে। পথেরও শেষ নেই, অরণ্যেরও শেষ নেই, মুক্ত শৈলমালা বেষ্টিত ভূমিশ্রীরও শেষ নেই, প্রান্তরেরও শেষ নেই। বনে বনে ময়ূর, বনে বনে কোটরা ভালুক, লেপার্ড।

ক. মানুষেরা সব পাশাপাশি কোথায় ঘর বাঁধে?

খ. “আমার দেশের এ মাটি মধুর, মধুর আমার ভাষা।”- বুঝিয়ে লেখ। 

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে কবিতার বৈসাদৃশ্যগুলো চিহ্নিত কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতার মধ্যে ভাবগত মিল থাকলেও প্রেক্ষাপট আলাদা।”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
“গ্রাম্যপথে পদচিহ্ন নেই। গোঠে গরু নেই কোনো, রাখাল উধাও, সরু আল খাঁ খাঁ পথপার্শ্বে বৃক্ষেরা নির্বাক;

নগ্ন রৌদ্র চতুর্দিকে, স্পন্দমান কাক, শুধু কাক।

ক. সুফিয়া কামালের উপাধি কী ছিল?

খ. “সেই চরে ফের মানুষেরা সব পাশাপাশি বাঁধে ঘর।”- ব্যাখ্যা কর। 

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমার দেশ’ কবিতার অমিলের ক্ষেত্রটি খুঁজে বের কর।। 

ঘ. উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতার চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
খাদীজা এই প্রথম বর্ষাকালে বাবা মায়ের সঙ্গে চাঁদপুর দাদা বাড়ি যাচ্ছে। সতেরো বছরের জীবনে সে নদী বলতে বুড়িগঙ্গার মতো এক মুমূর্ষু শীর্ণকায় স্রোতধারাকে দেখেছে। মেঘনার বিশাল বিস্তার ও উত্তাল ঢেউ তাকে ভীত ও শিহরিত করে তোলে। নদীর দু-তীরে যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। তাদের তিনতলা জাহাজটি যেন মহাপ্লাবনে ভাসমান নুহ নবির কিস্তি। সাগর সমান পানির মাঝে শত শত ঘরবাড়ি যেন অনুদ্বীপ। খাদীজার জিজ্ঞাসায় বাবা বললেন, মাটি এদেশের মানুষের প্রাণ। একদিন বন্যার পানি সরে যাবে, তখন এ জনপদে গরুর রাখাল খেলে বেড়াবে, আকাশে ঘুঘু শালিক পায়রা ওড়াউড়ি করবে। 

ক. ‘আমার দেশ’ কবিতাটি কোন কাব্যের অন্তর্ভুক্ত?

খ. ‘নুহের কিশতি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমার দেশ’ কবিতার অমিলের ক্ষেত্রটি চিহ্নিত কর।

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার দেশ’ কবিতা উভয়ই বাংলাদেশের কথা বলে।”- যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
 চরের নাম খাসমহালের চর। মাগুরা, নড়াইল আর ফরিদপুর সীমান্তে এ চরের অবস্থান। মহাসমুদ্রে ভেসে ওঠা বিশাল তিমির পিঠের মতো গত আশ্বিনের জল নামতে হঠাৎ করে এই চরটি জেগে উঠেছিল। এখন সেখানে সার বেঁধে গোটা কতক কুঁড়েঘর দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে কলাই, সরিষা আর সূর্যমুখীর প্রাণচাঞ্চল্য। পলিমাটির বুক ফুঁড়ে কৃষানির আঙিনায় প্রতিদিন খেলা করছে সমৃদ্ধির সম্ভাবনা। সূর্যের অবারিত স্নান আর পলিমাটির মিঠেল ঘ্রাণকে চরের চাষিরা তাদের গৌরবময় জীবনের মুকুট মনে করে।

ক. মানুষেরা ফের নতুন চরে পাশাপাশি কী বাঁধে?

খ. আমাদের দেশের মানুষেরা কেমন? বর্ণনা কর।

গ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটিতে ‘আমার দেশ’ কবিতায় ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকটি ‘আমার দেশ’ কবিতার বিশেষ একটি দিককে প্রতীকায়িত করেছে।- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়

লুকোচুরি খেলা।

নীল আকাশে কে ভাসালে

সাদা মেঘের ভেলা।

ক. সুফিয়া কামাল কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

খ. “নিতি নবরূপে ভরে ওঠে মন জীবনের আশ্বাসে।”- এখানে ‘জীবনের আশ্বাস’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘আমার দেশ’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? নির্ণয় কর। 

ঘ. “উদ্দীপকটির মূল সুর ‘আমার দেশ’ কবিতার সমধর্মী হলেও পুরোপুরি এক নয়।”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
আমার দেশের মাটির গন্ধে ভরে আছে সারা মন শ্যামল কোমল পরশ ছাড়া যে নেই কিছু প্রয়োজন।

প্রাণে প্রাণে যেন তাই

এই সুর শুধু পাই

দিগন্ত জুড়ে সোনা রং ছবি

এঁকে যাই সারাক্ষণ।

ক. কবি সুফিয়া কামাল কোন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন? 

খ. সূর্য-আলোকে এদেশ আবার কীভাবে হাসে? বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকে ‘আমার দেশ’ কবিতার কোন বিষয়টি উপস্থাপিত হয়েছে? বর্ণনা দাও।

ঘ. “উদ্দীপকে দেশের প্রতি কবির যে মমত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা ‘আমার দেশ’ কবিতায় সমভাবে বিরাজিত।”-বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯।
আমার এ দেশ সব মানুষের, সব মানুষের। চাষাদের মুটেদের মজুরের। গরিবের নিঃম্বের ফকিরের আমার এ দেশ সব মানুষের, সব মানুষের।

ক. ‘বারতা’ শব্দের অর্থ কী?

খ. “নিতি লভে নব জীবনের সন্ধান।”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমার দেশ’ কবিতার সাদৃশ্য চিহ্নিত কর। 

ঘ. “উদ্দীপকে ‘আমার দেশ’ কবিতার মূলভাবের আংশিক প্রতিফলিত হয়েছে”- মূল্যায়ন কর।

নিচে উত্তরসহ আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ যাব আমি তোমার দেশে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

Related Posts

Leave a Comment