অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় যতিন্দ্রমোহন বাগচী এক অন্ধ মহিলার অনুভূতি এবং তার জীবনের সংগ্রামকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবিতার মধ্যে অন্ধতার যন্ত্রণা, জীবনযুদ্ধে তার সাহসিকতা, এবং পরিবারের জন্য তার শঙ্কা ও ভালোবাসার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এই পোস্টে অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখে দিলাম।

অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। জীবনের এই স্বল্প সময়ের সমগ্র হিসাব চুকিয়ে, সব সম্পর্ক ছিন্ন করে পরপারে চলে যেতে হয়। গৃহবধূ সুদীপা মাঝে মাঝে দুঃখ করে বলেন, ‘সুন্দর এই পৃথিবী, ঝি ঝি ডাকা সন্ধ্যা, জোছনাভরা রাত সব ছেড়ে আমাদের বিদায় নিতে হবে।’

ক. ‘মধুমদির বাসে’ কথাটির অর্থ কী?

খ. ‘কোকিল-ডাকা শুনেছি সেই কবে’ পঙ্ক্তিটি দ্বারা প্রকৃতির কোন রূপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়?

গ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘অন্ধবধূ’ কবিতার যে বিশেষ দিকটিকে আলোকপাত করেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতিফলন ঘটেনি”- বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. ‘মধুমদির বাসে’ কথাটির অর্থ মধুর গন্ধে মোহময় সুগন্ধে আছন্ন।

খ. ‘কোকিল-ডাকা শুনেছি সেই কবে’ পঙ্ক্তিটি দ্বারা প্রকৃতির একটি বিশেষ রূপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যা হল ঋতুর পরিবর্তন। কোকিলের ডাক শুনলে সাধারণত মনে হয় যে, বসন্ত বা গ্রীষ্মের সময় এসেছে, কারণ কোকিল এই সময়টিতে বেশি ডাকে। এভাবে, কবিতায় কবি এই পঙ্ক্তির মাধ্যমে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং তার পরিবর্তনশীলতা অনুভব করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিশেষত, কোকিলের ডাক প্রকৃতির এক অনন্ত গতির প্রতিনিধিত্ব করে, যা কোনো নির্দিষ্ট সময়ে তার উপস্থিতি জানান দেয়।

গ. ‘অন্ধবধূ’ কবিতাটি বিশেষভাবে একজন দৃষ্টিহীন নারী, যিনি বধূ হিসেবে সমাজে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে আছেন, তার অনুভূতির জগৎকে প্রকাশ করেছে। কবিতায় অন্ধবধূ প্রকৃতির রূপ, গন্ধ, আওয়াজ ইত্যাদি সম্পর্কে গভীর ধারণা রাখেন, যদিও তিনি দেখতে পান না। তিনি তাঁর অনুভবের মাধ্যমে প্রকৃতির সৌন্দর্য, যেমন ঝি ঝি ডাকা সন্ধ্যা, কোকিলের ডাক, আকাশের বদল ইত্যাদি উপলব্ধি করেন। এভাবে, কবি দৃষ্টিহীন মানুষদের অবহেলিত অবস্থান থেকে তুলে এনে তাঁদের গভীর অনুভূতি এবং অন্তর্দৃষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি দেখাতে চেয়েছেন যে, দৃষ্টিহীনতা মানে জীবন থেকে আনন্দ বা অনুভূতি হারানো নয়; বরং, মানুষের অন্তর্দৃষ্টি এবং অনুভব শক্তি দ্বারা পৃথিবীকে সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব। কবিতার মাধ্যমে, মানুষের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও, তাদের অনুভূতির জগৎ কতটা বিস্তৃত এবং গভীর হতে পারে, তা চমৎকারভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

ঘ. “উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতিফলন ঘটেনি”—এই কথাটি সঠিক নয়, কারণ কবিতাটি আসলে একজন দৃষ্টিহীন বধূর জীবন এবং তার অনুভূতির জগৎকে বিশেষভাবে চিত্রিত করেছে। তবে, উদ্দীপকের বক্তব্যের মধ্যে যেভাবে জীবন ও মৃত্যু নিয়ে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি এসেছে, কবিতাটি সেই ভাবনায় পুরোপুরি মিলে না। উদ্দীপকের বক্তব্যে যে জীবন ও মৃত্যুর ক্ষণস্থায়ীত্বের কথা বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার ভেতরে অবশ্যই মৃত্যুর ধারণা এসেছে, তবে তা এমনভাবে এসেছে যে, অন্ধবধূ মৃত্যুর প্রতি তীব্র নৈরাশ্য বা বিরোধিতা করেন না। তিনি জানেন যে, একদিন তাকে এই পৃথিবী ছাড়তে হবে, কিন্তু তার অনুভূতিতে জীবন এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য নিয়ে এক ধরনের গভীর মমত্ববোধ রয়েছে। কবিতাটির মূল ভাবনা মৃত্যুর ভয়ের চেয়ে প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা এবং জীবনের প্রতি গভীর অনুভূতির প্রকাশ। ফলে, উদ্দীপকের বক্তব্যে যে জীবন এবং মৃত্যুর চিরস্থায়ী সত্যের কথাটি তুলে ধরা হয়েছে, তা কবিতাটির সমগ্র ভাবের সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফুলবানুর ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া শিখে স্বনির্ভর হবে। বাবার সহযোগিতায় সে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া শিখে পরবর্তীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও অদম্য ইচ্ছার কাছে হার মেনেছে অন্যত্বের অভিশাপ।

ক. সমাজ কাদের অবজ্ঞা করে?

খ. ‘দিঘির ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগে’- কথাটি বুঝিয়ে বল।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার কোন অংশটি সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. “উদ্দীপকের ফুলবানু এবং অন্ধবধূ চরিত্রের ভাব সম্পূর্ণ আলাদা।- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। নিশাতের সাথে ভালোবেসে বিয়ে হয় তৌহিদের। একদিন তৌহিদ স্ত্রীকে নিয়ে মোটর সাইকেলে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুজনে প্রাণে বেঁচে গেলেও নিশাত দুইটি পা হারিয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। তৌহিদ ও পরিবারের অন্য সদস্যরাও নিশাতের দৈনন্দিন কাজে যত্ন নিতে থাকে। নিশাত এখন আর নিজেকে অসহায় ভাবে না।

ক. পায়ের তলায় নরম কী ঠেকেছিল?

খ. বধূটির ঘরে ফিরে যাওয়ার তাড়া ছিল না কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার যে বিপরীত সত্তার পরিচয় পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. অন্ধবধূর প্রবাসী স্বামী যদি তৌহিদের মতো হতো তবে অন্ধবধূকে এত বিড়ম্বনায় পড়তে হতো না।” উক্তিটির যথার্থতা বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। ফুয়াদ হাসান কয়েক বছর যাবৎ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। তাকে নিয়ে পরিবারের সবাই বিরক্ত। তাদের আচরণ দেখেই তিনি তা বুঝতে পারেন। এদিকে ফুয়াদ হাসানও নিজ জীবনের ভার বহনে অক্ষম। মৃত্যুই যেন তার মুক্তিদূত।

ক. কীসের মধ্য দিয়ে দুঃখ-শোকের লাঘব ঘটে?

খ. ‘অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যায়’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার ফুঠে ওঠা দিক ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকের ফুয়াদ হাসান ‘অন্ধবধূ’ কবিতার কার প্রতিনিধি? মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। অসীম গত বছর এক দুর্ঘটনায় দুটি চোখই হারায়। এখন সে অন্ধ হয়ে এক দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। তাকে নিয়ে পরিবারের সবাই বড় কষ্টে আছে। এমনকি তার স্ত্রী এখন আর তাকে সহ্য করতে পারে না। মুখ ফুটে কিছু না বললেও তাদের কাজকর্ম তাকে জানিয়ে দেয় যে, সবাই তাকে নিয়ে খুব কষ্টে আছে। এদিকে অসীমও দুর্বিষহ জীবনে হাঁপিয়ে উঠেছে। এখন সে সর্বদা নিজের মৃত্যু কামনা করে।

ক. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কোন ফুলের উল্লেখ আছে?

খ. কীসের পরশ মায়ের স্নেহের মতো? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতিফলন ঘটেছে কি? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। মা-বাবার একমাত্র মেয়ে রূপা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। চাকরিজীবী মা-বাবা অফিসে চলে গেলে রূপাকে সারাদিন ঘরে বন্দি থাকতে হয়। সে অন্যান্য বালক-বালিকার মতো মাঠে দৌড়াদৌড়ি, খেলাধুলা করতে চাইলেও পারে না। সুন্দর পৃথিবী, ঝিঝি ডাকা সন্ধ্যা, জ্যোৎত্মাপ্লাবিত রাত, গাঁয়ের মেঠোপথ সবকিছু তাকে ব্যথিত করে তোলে। এভাবেই রূপার জীবন কাটে ঘরের কোণে।

ক. দৃষ্টিহীনদের প্রতিবন্ধিতা কীভাবে দূর করা যায়?

খ. “পায়ের তলায় নরম ঠেকল কী।” বোঝানো হয়েছে? 

 গ. উদ্দীপকটিতে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের রূপার জীবন এবং ‘অন্ধবধূ’ কবিতার অন্ধবন্ধুর জীবন সমসূত্রে বাঁধা বলা কতটুকু যৌক্তিক? বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। রানা প্লাজা ধসে পোশাককর্মী হাজেরা পা হারিয়ে এখন কাজ করতে পারে না। হাজেরার ভ্যানচালক বর পেশা পরিবর্তন করে ঘরের কাছেই চায়ের দোকান দেয়, যাতে সে হাজেরার প্রতি খেয়াল রাখতে পারে। কাশেমের সহযোগিতায় হাজেরা মানসিক শক্তি ফিরে পায়।

ক. ‘অন্ধবধূ’ কবিতার কবি কে?

খ. অন্ধবধূর কাঁদতে বারণ কেন?

গ. উদ্দীপকের কাশেমের কোন দিকটি অন্ধবধূর বরের মাঝে অনুপস্থিত? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. হাজেরা কি অন্ধবধূর সার্থক প্রতিনিধি? তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। বিকেএসপিতে হয়ে গেল প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট খেলা। বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা ক্রিকেটাররা এ খেলায় অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ইংল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান লাভকরে। এ খেলায় জিতে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশের একজন (এক হাত হারানো) খেলোয়াড় বলেন, লক্ষ্য অটুট থাকলে শরীরের অঙ্গ কোনো বিষয় নয়।

ক. মনের ব্যথা ক্ষণিক ভুলায় কে?

খ. অন্ধবধূ কান্নার মাধ্যমে শোক কমাতে চায় কেন?

গ. উদ্দীপকটির ‘অন্ধবধূ’ কবিতার গৃহবধূটির কোন অবস্থাকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকটি ‘অন্ধবধূ’ কবিতার মূলভাবকে পরিপূর্ণভাবে সমর্থন করে কি? তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। সদ্য বিবাহিতা ঝিল জন্ম থেকেই বোবা ও বধির। তার স্বামী সঞ্জু 8 কখনো তাকে বুঝতে দেয়নি যে, সে শারীরিকভাবে অন্যদের থেকে ভিন্ন। বরং পরম যত্নে সে ঝিলকে আগলে রাখে। সেদিক থেকে ঝিল নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে। তার মনে হয় সে অক্ষম বলেই তার স্বামী বেশি ভালোবাসে। তাই জীবনে তার কোনো দুঃখ নেই, কোনো অপূর্ণতা নেই।

ক. দখিনা হাওয়া বন্ধ হলে কী ধরে নিতে হবে?

খ. অন্ধবধূর ইন্দ্রিয়সচেতনতা কীভাবে কাজ করে?

গ. উদ্দীপকের ঝিলের সঙ্গে অন্ধবধূর বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। 

‘ঘ. অন্ধবধূর স্বামী যদি ঝিলের স্বামীর মতো হতো তবে তার জীবনটা অন্যরকম হতো- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

আরও পড়ুনঃ প্রাণ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা

নিচে উত্তরসহ অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment