বাংলা ব্যাকরণে শব্দ এবং বাক্য এই দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের পোস্টে আমরা ৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায়ের ‘অর্থ বুঝে বাক্য লিখি’ শিরোনামের সবগুলো ছক করে দেখাবো। বাংলা ভাষাকে সঠিকভাবে বলা এবং বুঝার জন্য অবশ্যই শব্দ এবং বাক্যকে সঠিক স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় সমাধান
Table of Contents
অর্থ বুঝে বাক্য লিখি
৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ
শ্রেণি অনুযায়ী শব্দ আলাদা করি
বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ, ক্রিয়া, ক্রিয়াবিশেষণ, অনুসর্গ, যোজক ও আবেগ-এই আট শ্রেণির শব্দ চিহ্নিত করে নিচের ছকে লেখা হল।
বিশেষ্য | বাংলাদেশ ,জেলা, কক্সবাজার ,পর্যটক, পৃথিবী,সমুদ্র-সৈকত,মানুষ ,আনন্দ, বালি ,ঘর ,ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, অফিসার ,পালংকি, পরিচালক, প্রতিষ্ঠান ,বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, মোটেল,হোটেল, দোকান, জিনিসপত্র, হিমছড়ি, পর্যটন কেন্দ্র, পাহাড়। |
সর্বনাম | এর, তাদের, তিনি, আমি, কেউ কেউ ,তারা ,তাঁর, যার। |
বিশেষণ | সবচেয়ে, আকর্ষণীয় ,ছোটো-বড়ো, বাহারি, সুন্দর, রোমাঞ্চকর, বৈচিত্র্যময়, । |
ক্রিয়া | পড়ে, এসেছে ,ছিলেন, ছিল, নিযুক্ত হন, করা হয়, দেওয়া হয় ,গড়ে উঠেছে, করেছে, হয়েছে, আছে, পাওয়া যায়, রয়েছে, বেড়াতে যায়। |
ক্রিয়াবিশেষণ | জোরে জোরে,মাঝে মাঝে, বড়ো বড়ো। |
অনুসর্গ | দিয়ে, থেকে ,আগে, করে, কাছে, জন্য, । |
যোজক | আর ,তবুও, এছাড়া, ও ,কি |
আবেগ | বাহ, আহা |
শ্রেণি অনুযায়ী বাক্য আলাদা করি
বিবৃতিবাচক, প্রশ্নবাচক, অনুজ্ঞাবাচক ও আবেগবাচক-এই চার রকমের বাক্য
নিচের ছকে লেখা হল।
বিবৃতিবাচক বাক্য | বিকাল সাড়ে চারটায় সবার মাঠে আসার কথা৷ আজ কোন খেলা হবে না,জরুরী সভা হবে। ঈমানদের পুরাতন ভিটায় একটা পোড়াবাড়ি আছে ৷ সেখানে কয়েকদিন ধরে কিছু অপরিচিত লোকের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। কামাল বলছিল, ওখানে গুপ্তধন থাকতে পারে। আসলেই কোনো গুপ্তধন আছে কি না ,তা যাচাই করার জন্য অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছিল কামাল৷ ইমনদের পোড়াবাড়িতে কবে এবং কিভাবে অভিযান চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনার জন্যই আজকের সভা। |
প্রশ্নবাচক বাক্য | কী রে ইমন, ওই বাড়িতে গুপ্তধন আছে নাকি? তবে ঠিক তারা প্রশ্ন করবে, এখানে কি করছো তোমরা ? তখন আমরা কী উত্তর দেবো ? |
অনুজ্ঞাবাচক বাক্য | চল, আমরাই খোঁজ করে দেখি। গুপ্তধন থাকলে ঠিক খুঁজে পাব। এখানে আর আসবে না ৷ যাও, চলে যাও |
আবেগবাচক বাক্য | তাই নাকি ! আমি তো জানি না। অপরিচিত লোকগুলো যদি ঠিক গুপ্তধন খুঁজতে আসে! যদি আমাদের সাথে ওদের দেখা হয়ে যায়! যে পুরাতন বাড়ি! বাড়ির চারপাশে কত বড়ো বড়ো গাছ ! |
৩য় অধ্যায় ২য় পরিচ্ছেদ
শব্দের গঠন
নমুনা ১ঃ দুটি অর্থযুক্ত শব্দজোড়া দিয়ে একটি নতুন শব্দ তৈরি হতে পারে। এ রকম শব্দ খুুঁজে বের করে নিচের ছকে লিখে দিলাম।
রেলগাড়ি | রেললাইন | দেশে-বিদেশে |
যানবাহন | জনপ্রিয় | ছেলেবুড়ো |
নদী-নালা | কুঁড়েঘর | ধানখেত |
নীলাকাশ | ডিমসিদ্ধ | ঝালমুড়ি |
একতারা | হাততালি | চিড়াভাজা |
অনুচ্ছেদ লিখে সমাস-সাধিত শব্দ খুুঁজি
কোনো একটি বিষয় নিয়ে ১০০ শব্দের মধ্যে একটি অনুচ্ছেদ লিখে সমাস প্রক্রিয়ায় গঠিত শব্দগুলোর দেখানো হল। বোল্ড করা সব্দগুলো সমাস-সাধিত।
গত গ্রীষ্মের ছুটিতে আমরা দুই ভাই-বোন মামাবাড়ি গিয়েছিলাম। আমাদের মামাবাড়ি সিলেটে। আমরা সেদিন খুব ব্যস্ত ছিলাম। সকালে খুব তাড়াতাড়ি উঠে রেল স্টেশনে পৌছালাম। ট্রেনের টিকিট কিনে আমরা যখন সিটে বসতে গেলাম তখন দেখি আমাদের সিটে টাকমাথার একজন ব্যক্তি বসে আছে। আমরা তাকে আমাদের থেকে উঠিয়ে তার ছিট খুঁজে দিলাম। আমার হাতে একটি হাতঘড়ি থাকার কারণে দেখতে পেলাম মামাবাড়ি পৌঁছাতে ৫ ঘন্টা লেগেছে। মামি আমাদের দেখে অনেক খুশি হয়েছিল। তারা আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করতে লাগলেন। আমাদের মামাবাড়ি সিলেটে হওয়ার কারণে সেখানে অনেক চা-বাগান রয়েছে। আমাদের মামা একটু গোঁফখেজুরে প্রকৃতির লোক। আমরা বিকেলে ঘুরতে চাইলে মামা বললেন, কালকে নিয়ে যাব। আমাদের মামা বাড়িটা চৌরাস্তার খুব কাছে। এজন্য চারদিকের মানুষের আসা-যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। মামা বললেন, এক সময় এই রাস্তা দিয়ে গরুরগাড়ি চলতো। এখন কত রকমের গাড়ি দেখা যায়। রান্নাঘর থেকে আমরা মামীর সুস্বাদু রান্নার ঘ্রান পাচ্ছি। আসলেই সবাই বলে, মামার বাড়ি যেন মধুমাখা নাম। |
নমুনা ২ঃ অর্থযুক্ত শব্দের আগে অর্থহীন অংশ জোড়া দিয়েও নতুন শব্দ তৈরি হতে পারে। এ রকম শব্দ খুুঁজে বের করে নিচের ছকে লেখা হল।
উপহার | বিশেষ | নিখাদ |
অচেনা | অজানা | পরাজয় |
অবদান | সম্মান | উপভোগ |
আজীবন | অবস্থান | নিঃসন্দেহে |
সুকীর্তি | প্রতিদিন | প্রত্যেক |
অনুচ্ছেদ লিখে উপসর্গ সাধিত শব্দ খুুঁজি
কোনো একটি বিষয় নিয়ে ১০০ শব্দের মধ্যে একটি অনুচ্ছেদ লিখে উপসর্গ গঠিত শব্দগুলো দেখানো হল। বোল্ড করা সব্দগুলো উপসর্গ।
বাবা আমাকে একটি অঞ্চলের অত্যাচারী শাসকের গল্প বলেছিলেন, সেখানকার অধিবাসীরা শাসকের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারত না। সমাজে মারামারি, খুনাখুনি ইত্যাদি অপকর্ম লেগেই থাকতো। শুধুমাত্র অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা রাজাকে কর দিয়ে টিকিয়ে রাখত এবং তারা সুবিধা ভোগ করত। কিন্তু গরিব শ্রেণীর লোকেরা ভরপেট খেতে পারত না। এভাবে ওই অঞ্চলের মানুষের দুঃসময়ে দিন পার হতে লাগলো। একটি নাবালক ছেলে রাজার বিরোধিতা করলো। ছেলেটির সাহস দেখে সমাজের সকলে তাকে বাহবা দিল এবং তাকে অনুপ্রাণিত করল। এভাবে এর প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। সবাই মিলে সেই অত্যাচারী শাসকের প্রসাদকে অবরোধ করল এবং তাকে শাসকের স্থান থেকে পরিত্যাগ করতে বাধ্য করা হলো। এরপর থেকে গরিব লোকদেরকে আর কোনদিন হাভাতে দিন পার করতে হলো না। সবাই সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো। নাবালকটি সমাজে সম্মানিত স্থান পেল। |
নমুনা ৩ঃ অর্থযুক্ত শব্দের পরে অর্থহীন অংশ জোড়া দিয়ে নতুন শব্দ তৈরি হতে পারে। এ রকম শব্দ খুুঁজে বের করে নিচের ছকে দেয়া হল।
চানাচুরওয়ালা | হাতা | মানানসই |
খেলনা | বুদ্ধিমান | সরলতা |
ছাত্রী | মধুর | দয়ালু |
সরলতা | ছাত্রীরা | জামাটা |
দেখলাম | খেলনাটি | আটের |
অনুচ্ছেদ লিখে প্রত্যয় -সাধিত শব্দ খুুঁজি
কোনো একটি বিষয় নিয়ে ১০০ শব্দের মধ্যে একটি অনুচ্ছেদ লিখে প্রত্যয় গঠিত শব্দগুলো চিহ্নিত করে দেখানো হল। বোল্ড করা সব্দগুলো প্রত্যয় -সাধিত।
আমার নানা গ্রামের চাষি। কিন্তু মামা একটু উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। মামার দাপটে গ্রামের সবাই চুপ করে থাকে। মামা গ্রামীণ সংস্কৃতির লোক হলেও তার মধ্যে ঢাকাই স্বভাব পাওয়া যায়। গ্রামে কোন ধরনের অনুষ্ঠান হলে সে নতুন প্যান্ট জামা পরে বাবুয়ানী হয়ে ঘুরে বেড়ায়। তার এই পাগলামি নানার একটুও ভালো লাগেনা। তবে মামার একটা ভালো গুন আছে। তিনি বই পড়া পছন্দ করেন। এজন্য গ্রামে একটি পাঠাগার স্থাপন করেছেন। যেখানে পাঠকেরা বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারে। নানা ভাবতেছেন ছেলেকে এভাবে বসিয়ে না রেখে একটা দোকান খুলে দিতে যেখানে সেলাই মেশিনের কাজ করতে পারবে এবং শিশুদের বিভিন্ন খেলনা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। আমার মামা তার কর্তব্য সম্পর্কে একেবারেই অসচেতন। তবুও নানা সবসময় চেষ্টা করেন রসালো কথা দিয়ে তাকে সঠিক দিকে নিয়ে আসতে। |
৩য় পরিচ্ছেদ
অর্থ বুঝে বাক্য লিখি
৭ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় ৩য় পরিচ্ছেদটি বাংলা ব্যাকরণ এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে করা হয়েছে। এর মধ্যে সমার্থক শব্দ/প্রতিশব্দ, বিপরীত শব্দ এবং যতিচিহ্ন অন্তর্ভুক্ত আছে। নিচের শব্দগুলো ব্যবহার করে মুখ্য অর্থ ও এক বা একাধিক গৌণ অর্থের প্রয়োগ দেখানো হল।
১. পাকা | মুখ্য অর্থ (পরিপক্ক) | গাছে আম পেকে আছে। |
গৌণ অর্থ ১ (বখাটে) | অল্প বয়সেই ছেলেটা পেকে গেছে। | |
গৌণ অর্থ ২ (চূড়ান্ত) | তার মেয়ের বিয়ের কথা পাকা হয়ে গেছে। | |
২. ধরা | মুখ্য অর্থ (নির্ধারণ করা) | আগে জমির দাম ধর , তারপর কেনার কথাবার্তা |
গৌণ অর্থ ১ ((অনুরোধ) | প্রয়োজনে তার হাতে পায়ে ধরে রাজি করাবো। | |
গৌণ অর্থ ২ (ত্রুটি) | কাজ ফাঁকি দিয়ে সে ধরা পড়েছে। | |
৩. কথা | মুখ্য অর্থ (বচন) | তার কথা খুব মিষ্টি। |
গৌণ অর্থ ১ (অঙ্গীকার) | সে আমাকে কথা দিয়েছে পড়াশুনা করবে৷ | |
গৌণ অর্থ ২ (অনুরোধ) | তুমি অন্তত আমার এই কথাটা শোন। | |
৪. বড়ো | মুখ্য অর্থ (বৃহৎ) | বাড়িটা বেশ বড়। |
গৌণ অর্থ ১ (শ্রেষ্ঠ) | নিজেকে সব কাজে বড় মনে করা ঠিক নয়। | |
গৌণ অর্থ ২ (উদার) | লেখাপড়া শিখেও তোমার মনটা বড় হলো না। | |
৫. মুখ | মুখ্য অর্থ (অঙ্গ) | তোমার মুখটা চাঁদের মতো সুন্দর। |
গৌণ অর্থ ১ (গালি) | মুখ খারাপ করো না বলছি, ভালো হবে না। | |
গৌণ অর্থ ২ (আশীর্বাদ) | লেখাপড়া শিখেও তোমার মনটা বড় হলো না। | |
৬. পাগল | মুখ্য অর্থ (উন্মাদ) | লোকটি পাগল হয়ে গেছে। |
গৌণ অর্থ ১ (বিরক্ত) | ছেলেটি মাথা পাগল করে ছাড়বে। | |
গৌণ অর্থ ২ (প্রচুর) | তার মুখে ফুল-চন্দন পড়ুক। |
একই রকম অর্থ প্রকাশ করে এমন শব্দগুলো আলাদা করে দেখানো হলো।
১. | অন্ধকার | আঁধার | তিমির |
২. | দুঃখ | যন্ত্রণা | কষ্ট |
৩. | গাছ | তরু | বৃক্ষ |
৪. | কূল | পাড় | তীর |
৫. | খারাপ | মন্দ | নিকৃষ্ট |
৬. | চাঁদ | শশী | চন্দ্র |
৭. | পাথর | শিলা | প্রস্তর |
৮. | চুল | অলক | চিকুর |
৯. | ঘোড়া | অশ্ব | ঘোটক |
১০. | ঢেউ | ঊর্মি | তরঙ্গ |
প্রতিশব্দ বসিয়ে আবার লিখিঃ
রাত যত গভীর হয়, সকাল তত নিকটে আসে। এ উক্তির মানে হলো সমস্যা দেখে ভীত হওয়ার কিছু নেই। সংকট যেমন আছে, তেমনই সেই সংকট সমাধানের উপায়ও আছে। দুনিয়ায় নানা রকম ঘটনা ঘটে বলেই দুনিয়া এত বিচিত্র। কষ্টের ঘটনা যেমন ঘটে, তেমনিই খুশির ঘটনাও ঘটে। অপরের বেদনায় ব্যথিত হতে হয়, আর অন্যের খুশিতে খুশি হতে হয়। তবে অনেক সময় নিজের দুঃখের সময়ে কাউকে কাছে পাওয়া যায় না। তাতে নিরাশ হওয়ার কিছুই নেই। মেঘ কেটে যেমন তপন উদিত হয়, তেমনই খারাপ সময় কেটে ভালো সময় আসে।
বিপরীত শব্দ
দাগ দেওয়া শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ বসিয়ে বাক্যগুলো আবার লেখো।
এই গ্লাসের পানি ঠান্ডা। | এই গ্লাসের পানি গরম। |
তিনি শক্ত মনের মানুষ। | তিনি নরম মনের মানুষ। |
কথাটি সত্য নয়। | কথাটি মিথ্যা নয়। |
নতুন রাস্তাটি অনেক সরু। | নতুন রাস্তাটি প্রশস্ত। |
এ আয়নাতে সব ঝাপসা দেখা যায়। | এ আয়নাতে সব স্পষ্ট দেখা যায়। |
কাজটি যৌথভাবে করো। | কাজটি এককভাবে করো। |
কাল দিনের বেলায় এসো। | কাল রাতের বেলায় এসো। |
লোকটি কৃপণ। | লোকটি দানশীল। |
টেবিলে বইগুলো গোছানো আছে। | টেবিলে বইগুলো অগোছালো আছে। |
আজকের খেলা তাড়াতাড়ি শেষ হলো। | আজকের খেলা দেরিতে শেষ হলো। |
বাক্যের অর্থ ঠিক রেখে বিপরীত শব্দ বসাই
এই গ্লাসের পানি ঠান্ডা। | এই গ্লাসের পানি গরম নয়। |
তিনি শক্ত মনের মানুষ। | তিনি নরম মনের মানুষ নয়। |
কথাটি সত্য নয়। | কথাটি মিথ্যা। |
নতুন রাস্তাটি অনেক সরু। | নতুন রাস্তাটি প্রশস্ত নয়। |
এ আয়নাতে সব ঝাপসা দেখা যায়। | এ আয়নাতে সব স্পষ্ট দেখা যায় না। |
কাজটি যৌথভাবে করো। | কাজটি এককভাবে করো না। |
কাল দিনের বেলায় এসো। | কাল রাতের বেলায় এসো না। |
লোকটি কৃপণ। | লোকটি দানশীল নয়। |
টেবিলে বইগুলো গোছানো আছে। | টেবিলে বইগুলো অগোছালো নেই। |
আজকের খেলা তাড়াতাড়ি শেষ হলো। | আজকের খেলা দেরিতে শেষ হলো না। |
৪র্থ পরিচ্ছেদ
বুঝতে চেষ্টা করি
যতিচিহ্ন কেন ব্যবহার করা হয়? | লেখার সময় যাতে মনের ভাব অর্থ অনুযায়ী ঠিকভাবে প্রকাশ পায় , সেজন্য যতিচিহ্ন ব্যবহার করা হয়। |
মুখের ভাষায় যতিচিহ্ন লাগে না কেন? | মুখের ভাষায় আমরা প্রয়োজনমতো থামি এবং বাক্য অনুযায়ী কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন করি তাই যতিচিহ্ন লাগে না। |
লেখার ভাষায় যতিচিহ্ন কেন দিতে হয়? | বাক্যের সমাপ্তি বোঝানোর জন্য এবং কথা ও ভাব স্পষ্ট করার জন্য যতিচিহ্ন দিতে হয়। |
বাক্যের শেষে কোন কোন যতিচিহ্ন বসে? | বাক্যের শেষে দাঁড়ি , প্রশ্নবোধক চিহ্ন ও বিস্ময়চিহ্ন বসে। |
বাক্যের ভিতরে কোন কোন যতিচিহ্ন বসে? | বাক্যের ভেতরে কমা , সেমিকোলন , কোলন , ড্যাশ , হাইফেন , উদ্ধারচিহ্ন বসে। |
কোথায় কোন যতিচিহ্ন বসে
আবেগ শব্দ ও আবেগবাচক বাক্যের শেষে | বিস্ময়চিহ্ন (!) |
উদাহরণ দেওয়ার আগে | কোলন (:) |
এক ধরনের কয়েকটি শব্দ পরপর থাকলে | কমা (,) |
একজোড়া শব্দের মাঝখানে | হাইফেন (-) |
দুটি বাক্যকে এক করতে | ড্যাশ (-) |
নাটকের সংলাপে চরিত্রের নামের পরে | কোলন (:) |
পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি বাক্যের মাঝে | সেমিকোলন (;) |
প্রশ্নবাচক বাক্যের শেষে | প্রশ্নচিহ্ন (?) |
বইয়ের নামে | উদ্ধারচিহ্ন (‘ ’) |
বক্তার কথা সরাসরি বোঝাতে | উদ্ধারচিহ্ন (‘ ’) |
বাক্যের বিভিন্ন অংশকে আলাদা করতে | কমা (,) |
বিবৃতিবাচক ও অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের শেষে | দাঁড়ি (।) |
শব্দ সংক্ষেপ করার কাজে | বিন্দু (.) |
যতিচিহ্ন বসাইঃ নিচের অনুচ্ছেদে কিছু যতিচিহ্ন বসানো আছে, কিছু যতিচিহ্ন বসানো নেই। বাদ পড়া যতিচিহ্নগুলো বসিয়ে অনুচ্ছেদটি আবার লেখো:
আকমাল স্যার সেদিন ক্লাসে এসে বললেন, ‘শোনো ছেলে-মেয়েরা, তোমাদের জন্য একটা খুশির খবর আছে।’ সব শিক্ষার্থী খুশির খবরটা শোনার জন্য তাঁর দিকে তাকিয়ে রইল।স্যার বললেন, ‘ স্কুল থেকে প্রতিটি শ্রেণিতে একটি করে বুক-সেলফ দেওয়া হচ্ছে।’ বিনু বলল, ‘বুক-সেলফ দিয়ে কী হবে, স্যার? স্যার বললেন, ‘এই বুক-সেলফে আমরা নানারকম বই রাখব ৷ গল্প ,কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক, পছন্দমত যেকোনো ধরনের বই আমরা রাখতে পারি ৷’ শানু প্রশ্ন করল, ‘বইগুলো আমরা কোথায় পাব, স্যার?’ স্যার বললেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে একটি করে বই জমা দেবে। সেসব বই এই সেলফে থাকবে। এভাবে আমরা একটি ক্লাসরুম লাইব্রেরি গড়ে তুলব। এই সেলফ থেকে বই নিয়ে সবাই পড়তে পারবে।’ মিতু খুশি খুশি গলায় বলল, ‘বাহ! দারুন হবে।’ |
যতিচিহ্ন ব্যবহার করে অনুচ্ছেদ লিখি
একটি অনুচ্ছেদ লেখো যেখানে বিভিন্ন রকম যতিচিহ্নের ব্যবহার আছে।
রাজু , রনি ও মাহি একসাথে স্কুল থেকে ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। রাজু এক অন্ধ ভিখারিকে ১০ টাকা দিল। পরক্ষণে রাজু ভিখারিকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি কি দুপুরের খাবার খেয়েছেন?’ ভিখারি বলল, সে দুদিন ধরে না খেয়ে আছে। রাজু আশ্চর্য হয়ে বলল, দুদিন ধরে! রাজু ভিখারিকে তার বাসায় নিয়ে আসলো এবং মাকে বলল, আম্মু এই লোকটি দুদিন ধরে না খেয়ে আছে। তাকে কিছু খেতে দাও। আম্মু: এই নাও তাকে খেতে দাও। আমি ভিখারিকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনার বাসায় কে কে আছে?’ তিনি উত্তর দিলেন, তার বাসায় একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। ওরা দুই ভাই-বোন একসাথেই বাসায় থাকে। ওদের মা নেই ;মারা গেছে দুই বছর আগে। খাওয়া শেষে রাজু তাকে তার বাসায় পৌঁছে দিল। রাজুর মা রাজুকে বলল, ‘তুমি ভালো কাজ করেছ, ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিলে স্রষ্টা খুশি হন।’ |
৫ম পরিচ্ছেদ
১. চেষ্টা করলে সফল হবে।
২. যদি চেষ্টা করো, তবে সফল হবে।
৩. চেষ্টা করো, সফল হবে।
উপরের বাক্যগুলো একই অর্থ প্রকাশ করছে কি না? | হ্যাঁ, একই অর্থ প্রকাশ করছে। |
বাক্য তিনটির গঠন এক রকমের কি না? | না , বাক্য তিনটির গঠন একরকম নয়। |
কোন বাক্যে কেবল একটি সমাপিকা ক্রিয়া আছে? | ১ নং বাক্যে কেবল একটি ক্রিয়া আছে। |
কোন বাক্যের একটি অংশ অন্য অংশের সাহায্য ছাড়া পুরোপুরি অর্থ প্রকাশ করে না? | ২ নং বাক্যের দ্বিতীয় অংশ প্রথম অংশের সাহায্য ছাড়া পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে না। |
কোন বাক্যে একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া আছে? | ৩ নং বাক্যে একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া আছে। |
বিভিন্ন ধরনের বাক্য
নিচে তিন ধরনের বাক্যের নমুনা দেওয়া হলো। এগুলো কোন ধরনের বাক্য এবং তার কারণ কী, তা খুুঁজে বের করে দেখানো হল।
১ নং, ২ নং ও ৩ নং | মূল বইয়ে করা আছে। |
৪. তুমি কোথা থেকে এসেছ? | এটি একটি সরল বাক্য। কারণ , এর একটি কর্তা এবং একটি সমাপিকা ক্রিয়া আছে। |
৫. যেমন কাজ করেছ, তেমন ফল পেয়েছ। | এটি একটি জটিল বাক্য। কারণ, এটি ‘যেমন- তেমন’ জোড়া শব্দ দিয়ে পরস্পর যুক্ত ৷ বাক্যের একটি অংশ ছাড়া অন্যটি পুরো অর্থ প্রকাশ করতে পারে না। |
৬. আমি সকালে হাাঁটি, আর তিনি বিকালে হাাঁটেন। | এটি একটি যৌগিক বাক্য। কারণ, এটি একটি যোজক শব্দ ‘আর’ দিয়ে যুক্ত। এতে দুটো সমাপিকা ক্রিয়া আছে হাঁটি এবং হাটেন। |
৭. সে ভাত খেয়ে স্কুলে গেল। | এটি একটি সরল বাক্য। কারণ , এখানে সে কর্তা এবং গেল সমাপিকা ক্রিয়া। |
৮. আমি পড়াশোনা শেষ করব, তারপর খেলতে যাব। | এটি একটি যৌগিক বাক্য। কারণ, এটি যোজক শব্দ ‘তারপর’ দিয়ে যুক্ত ৷ এখানে দুটো সমাপিকা ক্রিয়া আছে করব এবং যাব |
৯. যখন তুমি আসবে, তখন আমরা রান্না শুরু করব। | এটি একটি জটিল বাক্য। কারণ, এটি জোড়া শব্দ ‘যখন-তখন’ দিয়ে যুক্ত। |
১০. আজ ভোরে সুন্দর একটা পাখি দেখতে পেলাম। | এটি একটি সরল বাক্য। কারণ, এর কর্তা উহ্য আছে এবং এর সমাপিকা ক্রিয়া হলো পেলাম। |
বাক্য তৈরি করি
নিচে দুটি করে সরলবাক্য, জটিলবাক্য ও যৌগিকবাক্য তৈরি করি:
সরল বাক্য ১: | দরিদ্রকে দান কর। |
সরল বাক্য ২: | পরিশ্রমী মানুষ সুখী হয়। |
জটিল বাক্য ১: | যে সত্য কথা বলে তাকে সবাই পছন্দ করে |
জটিল বাক্য ২: | যাদের অর্থ আছে তারা প্রায়ই কৃপণ হয়। |
যৌগিক বাক্য ১: | সে দরিদ্র কিন্তু তার মনটা বড়। |
যৌগিক বাক্য ২: | আমি সেখানে গিয়েছি কিন্তু তোমাকে দেখিনি। |
উপসংহারঃ অর্থ বুঝে বাক্য লিখি ৭ম শ্রেণির বাংলা বইয়ের সবচেয়ে বড় অধ্যায়। এই পোস্টে তোমাদের যাতে কষ্ট না হয় তাই সম্পূর্ণ অধ্যায়টি করে দেখালাম। পোস্ট থেকে উত্তরগুলো লেখার পাশাপাশি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়ে নিতে হবে। যাতে আমরা বাংলা শব্দ এবং বাংলা বাক্যের সঠিক ব্যবহার করতে পারি।
Related Posts
- ডিজিটাল প্রযুক্তি ৮ম শ্রেণির ১ম অধ্যায় (শিখন অভিজ্ঞতা-১ এর সমাধান)
- ৮ম শ্রেণির বাংলা ৩য় অধ্যায় সম্পূর্ণ PDF (বার্ষিক পরীক্ষার সমাধান)
- জহির রায়হানের সময়ের প্রয়োজনে গল্পের মূলভাব – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- নোলক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ৭ম শ্রেণি
- ৭ম শ্রেণি বাংলা ১ম অধ্যায় (প্রসঙ্গের মধ্যে থেকে যোগাযোগ করি)
- রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- যোগাযোগে নিয়ম মানি প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি- ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি
- শব্দ থেকে কবিতা গল্পের মূলভাব হুমায়ুন আজাদের লেখা – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- জীবন ও জীবিকা ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায় (আর্থিক ভাবনা সব ছক সমাধান)
- ডিজিটাল প্রযুক্তি ৬ষ্ঠ শ্রেণি ২য় অধ্যায় সমাধান