৬ষ্ঠ শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন ১ম অধ্যায়ের সমাধান (আকাশ কত বড় )

মহাবিশ্ব প্রতিনিয়ত বড় হচ্ছে । এই পোস্টে ৬ষ্ঠ শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন ১ম অধ্যায়ের (আকাশ কত বড় শিরোনামে) সবগুলো ছক সমাধান করেছি।

Image with Link Descriptive Text

৬ষ্ঠ শ্রেণি বিজ্ঞান অনুশীলন ১ম অধ্যায়ের ছক

আকাশ কত বড়

প্রথম সেশন

শুরুতেই চলো আমাদের মাথার উপরের আকাশটাকে দেখি। আকাশের দিকে তাকালে আমরা কী
কী দেখতে পাই? চট করে নিচের ছকে লিখে ফেলো!

দিনের আকাশে কী কী দেখিরাতের আকাশে কী কী দেখি?

দিনের আকাশে আমরা সূর্যকে দেখি,
সাদা মেঘ আকাশে ভেসে বেড়াতে দেখি,
কখনো রংধনু দেখা যায়,
কখনো কখনো আকাশে পাখি উড়ে,
উড়োজাহাজ দেখা যায়,
বৃষ্টি আসার আগে কালো মেঘ  ইত্যাদি ।
রাতের আকাশে আমরা চাঁদকে স্পষ্ট করে দেখি,
নক্ষত্রমন্ডলী, গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু,
মেঘ ইত্যাদি দেখতে পাই। কখনো কখনো উল্কাপিণ্ড
দেখা যায়। রাতের আকাশে তারা ছোটাছুটি
করতে দেখা যায়। যাকে নক্ষত্রপতন বলে।

দ্বিতীয় সেশন

তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে বিশ্বজগতের ধারণার ক্রমবিবর্তন (২.১) অংশে যা
লেখা আছে তা পাশের বন্ধুর সাথে একসাথে বসে একবার পড়ে নাও। তারপর নিচের প্রশ্নগুলোর
উত্তর লেখো।


প্রাচীনকালে মানুষ মনে করত, পৃথিবীটা নিশ্চয়ই সমতল এবং এই সমতল পৃথিবীকে উপর করে রাখা বাটির মতো একটা আকাশ ঢেকে রেখেছে। সেই আকাশে মেঘ এবং চাঁদ সূর্য ও নানা ধরনের নক্ষত্র লাগানো থাকে। যেগুলো পৃথিবীতে ঘিরে ঘুরতে থাকে। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার লোকজন ধারণা করত, পৃথিবী একটা থালার মতো এবং সেই থালা সমুদ্রে ভাসছে। মাথার উপরে গোলাকার একটা আকাশ পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে।

খ্রিস্টপূর্ব ২৪০ বছর আগে গণিতবিদ এরোটোস্থেনিস লক্ষ্য করেন যে, আলেক্সান্দ্রিয়াতে যখন সূর্য ঠিক মাথার উপর ছিল, তখন সেখান থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে সূর্য রশ্মি ৭.২ ডিগ্রিতে আপতিত হচ্ছে। পৃথিবীর সমতল হলে সব জায়গাতেই সূর্য রশ্মি লম্বা ভাবে আপতিত হতো। সেখান থেকে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, পৃথিবী নিশ্চয়ই গোলাকার। এমনকি তিনি আপাতিত কোণের পার্থক্য এবং মাঝখানের দূরত্ব থেকে নিখুঁতভাবে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ মেপে ছিলেন। এভাবেই সূর্য কেন্দ্রিক মডেলের ধারণা এসেছিল।

যখন জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করা মানুষেরা আকাশে চন্দ্র, সূর্যকে পূর্ব দিকে উদিত এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যেতে দেখেছেন। তারা স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করে নিয়েছেন যে, নিশ্চয়ই চন্দ্র, সূর্য এমনকি নক্ষত্রগুলো পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে। এরিস্টটলের মতবাদকে জ্যোতির্বিদ টলেমি সমর্থন দিয়ে বলেছিলেন যে, পৃথিবী হচ্ছে সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু এবং সকল গ্রহ নক্ষত্র চন্দ্র সূর্য এই পৃথিবীতে ঘিরে ঘুরে। এটাই পৃথিবীকেন্দ্রিক মডেল থেকে সূর্য কেন্দ্রিক মডেলের ধারণার বিবর্তনের পক্ষে যুক্তি ছিল।

চতুর্থ সেশন

পৃথিবীর সাথে অন্য গ্রহগুলোর আকার, গঠন, উপগ্রহের সংখ্যা, সৌরবছর ও বিবিধ তথ্যের তুলনা।

গ্রহের নামপৃথিবীর তুলনায় কত গুন বড় বা ছোটগঠন কেমনগ্রহের তাপমাত্রা কেমনসূর্য থেকে কত দূরে অবস্থিতউপগ্রহ কয়টিবায়ুমন্ডল আছে কিনাদিনের দৈর্ঘ্য কত ঘন্টাবছরের দৈর্ঘ্য কত
বুধ৩ গুন ছোটপাথুরে১৭৮.৯°
সেলসিয়াস
৪৬,০০০,০০০ 
থেকে ৭০,০০০,০০০ কিলোমিটারের মধ্যে
কোনো উপগ্রহ নাইবায়ুমণ্ডল 
নেই
১৪০৮ ঘণ্টা৮৮ দিন
শুক্র০.২ গুন ছোটমেঘে ঢাকা থাকে৪৭৬° সেলসিয়াস০.৭ জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিটকোনো উপগ্রহ নাইবায়ুমণ্ডল আছে৫৮৩২ ঘন্টা২২৫ দিন
মঙ্গল২ গুন ছোটধুলাময়, লালচে এবং
মরুভূমির মতো

−৬৩°
সেলসিয়াস
২৩০ মিলিয়ন কিলোমিটার২ টিবায়়ুমণ্ডল আছে২৪ ঘণ্টা, ৩৯ মিনিট, ৩৫সেকেন্ড১ বছর, ৩২০ দিন ও ১৮.২ ঘণ্টা
বৃহস্পতি১৩২১ গুণ বড়গ্যাসের তৈরি-১৪৫°
সেলসিয়াস
৭৭৮.৫ লক্ষ কিলোমিটার৯৫টিবায়ুমণ্ডল আছে১০ ঘন্টা৪৩৮০ দিন
শনি৯৫ গুণ বড়দৃশ্যমান বলয় ব্যবস্থা। গ্যাসের তৈরি−১৯২°
সেলসিয়াস
৯.৫ জ্যোতির্বিদ্যা ইউনিট৮৩ টিবায়ুমণ্ডল আছে১০ ঘন্টা ৩৯ মিনিট২৯.৪ বছর
ইউরেনাসপ্রায় ৪ গুণ বড়দৃশ্যমান বলয় ব্যবস্থা। গ্যাসের তৈরি-১৮২°
সেলসিয়াস
সর্বোচ্চ দূরত্ব ৩,০০,৪৪,১৯,৭০৪ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন দূরত্ব ২,৭৪,৮৯,৩৮,৪৬১ কিলোমিটার২৭ টিবায়ুমণ্ডল আছে১৭ ঘণ্টা৮৪ বছর
নেপচুন৫৮ গুণ বড়অন্ধকার
এবং হিমশীতল
-২০১°
সেলসিয়াস
৪.৫ মিলিয়ন কিমি
বা ২.৮ বিলিয়ন মাইল
১৪টিবায়ুমণ্ডল আছে১৬ ঘণ্টা  ১৬৫ বছর

পঞ্চম সেশন

তুমি আর তোমার পাশের সহপাঠী মিলে তারার ছবি আর গল্প তৈরির চেষ্টা করে দেখো তো!


বৃশ্চিক নক্ষত্রমন্ডলীঃ আকাশে তারাগুলোর মধ্যে ধনুকের মতো দেখতে যে সকল নক্ষত্রমন্ডলী রয়েছে তাকে বৃশ্চিক নক্ষত্রমন্ডলী বলে। বৃশ্চিক বা কাঁকড়ার মতো দেখতে এক ধরনের বিষাক্ত প্রাণী দেবতারা কালপুরুষ কে শাস্তি দেওয়ার জন্য পাঠান এবং এর কামড়েই কালপুরুষের মৃত্যু হয়।

কাল পুরুষঃ কালপুরুষ ছিল একজন বিখ্যাত যোদ্ধা ও শিকারি। সে খুব অহংকার করত সে দাবি করত যে পৃথিবীর সকল জন্তুই সে স্বীকার করতে পারে। এতে করে দেবতারা অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বৃশ্চিক বা বিষাক্ত প্রাণী পাঠালেন এবং তার কামড়েই তার মৃত্যু হল। দেবতারা পৃথিবীর মানুষকে অহংকারের পরিণতি দেখানোর জন্যই কালপুরুষ এবং বৃশ্চিককে মহাকাশে স্থান দিলেন।

সপ্তর্ষি মন্ডলঃ সপ্তর্ষিমণ্ডল হল আকাশের উত্তর দিকের একটি নক্ষত্রমন্ডল। এটি দেখতে প্রশ্নবোধক চিহ্নের মতো। ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনী মতে সাতজন ঋষিকে বলা হতো সপ্তর্ষি। ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই সাতজন ঋষিকে নিয়ে যে নক্ষত্রমন্ডলী কল্পনা করেছিলেন তাকে বলা হয় সপ্তর্ষিমণ্ডল।

তোমরা একমত হবার পর উত্তরগুলো পরের পৃষ্ঠার ছকে লিখে রাখো। একমত না হতে পারলে
সেটাও লিখে রেখো।

বাংলা বর্ষপঞ্জিজ্যোতিষবিদ্যা বা ভাগ্যগণনা
কীভাবে এল?পৃথিবীর খুব বেশি জাতির নিজস্ব ক্যালেন্ডার নেই। আমাদের বাংলা মাসগুলো নক্ষত্রমন্ডলীর উদয়ের সাথে সম্পর্ক রেখে তৈরি করা হয়েছে।জ্যোতিষী চর্চার জন্মক্ষণে কোন নক্ষত্রমন্ডলীর উদয় হয়েছিল। সেটি দিয়ে একজনের রাশি নির্ণয় করা হয়। এভাবেই এই কুসংস্কারটি এসেছিল।
কী কাজে
ব্যবহার করা
হয়?
বাংলা বর্ষপঞ্জি বাংলা মাস, দিন ও তারিখ গণনার কাজে ব্যবহার করা হয়।জ্যোতিষীবিদ্যা ভাগ্য গননার কাজে ব্যবহার করা হয়। শুভ সময় এবং অশুভ সময় নির্ণয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি
আছে কি না?
এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। বাংলা মাসগুলো নক্ষত্র মন্ডলীর উদয়ের সাথে সম্পর্ক রেখে তৈরি করা হয়েছে।এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি কুসংস্কার। নক্ষত্রমন্ডলীর সাথে মানুষের ভাগ্য গণনার কোন সম্পর্ক নেই এবং এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও নেই।
প্রচলিত
অবৈজ্ঞানিক চর্চা
বা কুসংস্কার
১। ঝাড়-ফুঁকের মাধ্যমে সাপের বিষ নামানো।

২। জন্ডিস হলে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে কবিরাজের ডাকা
দলের সবাই আমার সাথে একমত।
নির্দিষ্ট ঘটনা বা
প্রমাণ, যেখানে
এই চর্চার নজির
দেখেছ
১। আমাদের গ্রামে এক ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালে তার
পরিবার রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে উদার কাছে নিয়ে গেছিল।

২। আমার জন্ডিস হওয়ায় আমার পরিবার ডাক্তারের কাছে না
নিয়ে প্রতিবেশীর বাসায় ঝাড়ফুক করে জন্ডিস দিয়ে সারানোর জন্য নিয়ে গেছিল।
দলের সবাই আমার সাথে একমত।
অবৈজ্ঞানিক বা
কুসংস্কারপ্রসূত
মনে করার
পেছনে যুক্তি কী
কী?
.১। সাপে কামড়ালে সাথে সাথে কামড়ের স্থান থেকে একটু
উপরে বাঁধতে হবে এবং যথাসম্ভব দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।

২। জন্ডিস হলে রোগীকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম
এবং ওষুধ সেবন করতে হবে।
দলের সবাই আমার সাথে একমত।
তোমার দায়িত্ব
কী হওয়া
উচিত?
কুসংস্কার থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে হলে তাদেরকে
আমাদের সচেতন করে তুলতে হবে। কুসংস্কারের ক্ষতিকারক দিকগুলো তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে এবং এগুলোর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই সেগুলো তাদেরকে জানাতে হবে। মানুষকে তারা ধোঁকা দিচ্ছে সেটা বোঝাতে হবে।
দলের সবাই আমার সাথে একমত।

ষষ্ঠ সেশন

শেষ করার আগে নিচের ছকে নিজের চিন্তাটা টুকে রাখো তাহলে এবার। বাম দিকের প্রশ্নগুলো
একটু ভেবে ডান পাশে তোমার উত্তরটুকু বসিয়ে দাও।

আকাশের দিকে তাকালে এখন
নতুন কী কী চোখে
পড়ছে, বা নতুন
কী চিন্তা মাথায়
আসছে?
আকাশের দিকে এখন তাকিয়ে আমি দেখছি, সুবিশাল নীল আকাশ। মাঝে মাঝে মেঘ ভেসে যাচ্ছে। আমার মাথায় একটা চিন্তা আসলো যে,
কিভাবে এই মেঘগুলো ভেসে যাচ্ছে?
এই বিষয়ে আর
কী কী প্রশ্ন মাথায়
ঘুরপাক খাচ্ছে?
কেন এই মেঘগুলো নিচে আমাদের দিকে আসছে না অথবা পড়ে যাচ্ছে না?
এই সুবিশাল আকাশ কিভাবে আমাদের মাথার অনেক উপরে টিকে আছে?
কিভাবে এটি খুঁটি ছাড়া টিকে আছে?

Related Posts