বেগম রোকেয়ার “হিমালয় দর্শন” গল্পটি একটি গভীর অভিজ্ঞতার বর্ণনা, যা মূলত প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য এবং মানব জীবনের আধ্যাত্মিক চেতনা নিয়ে আলোচনা করে। এই পোস্টে বেগম রোকেয়ার হিমালয় দর্শন বিষয়বস্তু ও প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
হিমালয় দর্শন বিষয়বস্তু
বেগম রোকেয়ার ‘হিমালয় দর্শন’ গল্পে শেফালী নামের এক নারী তার স্বামী এবং অন্যদের সঙ্গে শিলিগুড়ি থেকে হিমালয় যাত্রা শুরু করেন। রেলগাড়িতে চড়ে তিনি ধীরে ধীরে পাহাড়ের দিকে উঠতে থাকেন, পথের দুই ধারে মনোরম দৃশ্য এবং অদ্ভুত প্রকৃতি তার চোখে পড়ে। তিনি বিভিন্ন জলপ্রপাত, চা বাগান, নিবিড় অরণ্য দেখতে পান। গাড়ি থামলে শেফালী জলপ্রবাহ দেখে তার মন ভরে ওঠে। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর তিনি হিমালয়ের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন এবং শীতল বাতাসে তার দেহ এবং মন শান্তি পায়।
শেফালী অনুভব করেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য ও নির্মল প্রকৃতির মধ্যে মানুষের অস্তিত্ব কত ক্ষুদ্র এবং ঈশ্বরের শক্তি কত মহান। গল্পে শেফালী তার অভ্যন্তরীণ আত্মিক জাগরণ অনুভব করেন, যা তাকে ঈশ্বরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় পূর্ণ করে তোলে। এখানে বেগম রোকেয়া নারী স্বাধীনতা, আধ্যাত্মিক চেতনা এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে মানব জীবনের সম্পর্ক তুলে ধরেছেন।
হিমালয় দর্শন প্রশ্ন উত্তর
১। ‘হিমালয় রেলগাড়ির আকৃতি’ – এই রেলগাড়ির আকৃতি কেমন ছিল?
উত্তর: হিমালয় রেলগাড়ির আকৃতি ছিল ছোট, এমনকি দেখতে পুতুলের মতো।
২। ‘চলন্ত গাড়ি থেকে যাত্রীরা নামতে পারতেন’ – কীভাবে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নামতেন?
উত্তর: গাড়ির গতি এত ধীর ছিল যে যাত্রীরা সহজেই চলন্ত গাড়ি থেকে নামতে এবং উঠতে পারতেন।
৩। ‘রেলগাড়ির চলার শব্দ’ – রেলগাড়ি চলার সময় কী ধরনের শব্দ শোনা যেত?
উত্তর: রেলগাড়ি চলার সময় হুইসেল ও চাকার মৃদু ঠকঠক শব্দ শোনা যেত।
৪। ‘মনোরম দৃশ্য লেখককে মুগ্ধ করেছিল’ – কোন দৃশ্যগুলো লেখককে মুগ্ধ করেছিল?
উত্তর: চা-বাগানের সারি, পাহাড়ি ঝরনা এবং সবুজ বনভূমির মনোরম দৃশ্য লেখককে মুগ্ধ করেছিল।
৫। ‘মেঘের ভেতর দিয়ে চলা’ – মেঘের ভেতর দিয়ে চলার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
উত্তর: মেঘের ভেতর দিয়ে চলার অভিজ্ঞতা ছিল একেবারে স্বর্গীয় ও রহস্যময়।
৬। ‘চায়ের ক্ষেত্রগুলির শোভা’ – এই শোভা লেখকের মনে কী প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তর: চায়ের ক্ষেত্রগুলির অপরূপ শোভা লেখকের মনে গভীর প্রশান্তি এবং আনন্দ এনে দিয়েছিল।
৭। ‘জলপ্রপাতগুলি দেখে লেখক’ – জলপ্রপাতগুলি দেখে লেখক কী ভাবলেন?
উত্তর: লেখক জলপ্রপাতের সৌন্দর্য দেখে বিস্মিত ও প্রফুল্ল বোধ করলেন।
৮। ‘ট্রেন থেমেছিল’ – ট্রেন কেন থেমেছিল?
উত্তর: ট্রেন থেমেছিল যাত্রীদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ দিতে।
৯। ‘গরমের জ্বালা থেকে মুক্তি’ – কীভাবে চার হাজার ফিট উচ্চতায় গরম থেকে মুক্তি পাওয়া গেল?
উত্তর: চার হাজার ফিট উচ্চতায় বাতাস ছিল ঠান্ডা এবং সতেজ, যা গরমের জ্বালা থেকে মুক্তি দিয়েছিল।
১০। ‘কারসিয়ং স্টেশনের উচ্চতা’ – কারসিয়ং স্টেশনের উচ্চতা কত?
উত্তর: কারসিয়ং স্টেশনের উচ্চতা ছিল চার হাজার আটশো বত্রিশ ফিট।
১১। ‘গৃহসুখের অভাব’ – জিনিসপত্র না আসায় কেন গৃহসুখের অভাব অনুভূত হচ্ছিল?
উত্তর: জিনিসপত্র না আসার কারণে ঘর ছিল শূন্য, তাই গৃহসুখ অনুভূত হচ্ছিল না।
১২। ‘পার্বত্য বসন্তকাল’ – লেখকের মতে, পার্বত্য বসন্তকাল কীভাবে অনন্য?
উত্তর: লেখকের মতে, পার্বত্য বসন্তকাল তার হালকা শীতল বাতাস ও ফুলে ফুলে সজ্জিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য অনন্য।
১৩। ‘পানীয় জলের সতর্কতা’ – লেখক পানীয় জলে কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেছিলেন?
উত্তর: লেখক স্থানীয় পানীয় জল না খেয়ে ফুটিয়ে নেওয়া জল পান করতেন।
১৪। ‘মেঘ এবং বায়ুর লুকোচুরি’ – এই খেলা দেখে লেখক কী অনুভব করেছিলেন?
উত্তর: মেঘ এবং বায়ুর লুকোচুরি দেখে লেখক আনন্দ ও মুগ্ধতা অনুভব করেছিলেন।
১৫। ‘ঝরনার কল্লোল’ – এই শব্দ শুনে লেখক কী ভাবলেন?
উত্তর: ঝরনার কল্লোল শুনে লেখক প্রকৃতির সংগীত বলে মনে করেছিলেন।
১৬। ‘ভুটিয়ানিদের পোশাক’ – ভুটিয়ানিদের পোশাক সম্পর্কে লেখক কী বলেছিলেন?
উত্তর: ভুটিয়ানিদের পোশাক ছিল রঙিন ও উজ্জ্বল, যা তাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের পরিচয় দিত।
১৭। ‘ভুটিয়ানিরা লেখককে কোন নামে ডাকত’ – তারা লেখককে কী নামে ডাকত এবং কেন?
উত্তর: ভুটিয়ানিরা লেখককে ‘সাহেব’ বলে ডাকত, কারণ লেখক তাঁদের কাছে একজন ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
১৮। ‘নীচেকা আদমি’ – ভুটিয়ানিদের সাথে মেশার ফলে কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তর: ভুটিয়ানিদের সাথে মেশার ফলে লেখক তাদের সরলতা ও মানবিকতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন।
১৯। ‘প্রকৃত উপাসনার উপাদান’ – লেখকের মতে প্রকৃত উপাসনার উপাদান কী?
উত্তর: লেখকের মতে প্রকৃত উপাসনার উপাদান হলো প্রকৃতির সৌন্দর্য ও মানবিকতা।
২০। ‘হিমালয় স্রষ্টার তুলনায় ক্ষুদ্র’ – লেখকের এই মন্তব্যের অর্থ কী?
উত্তর: লেখকের মতে, হিমালয় যতই বিশাল হোক না কেন, এটি স্রষ্টার সৃষ্টি মাত্র, তাই স্রষ্টার তুলনায় ক্ষুদ্র।
২১। হিমালয় রেল রোডের গাড়িগুলির বিশেষত্ব কী ছিল?
উত্তর: হিমালয় রেল রোডের গাড়িগুলি খুব ছোট এবং নীচু ছিল, যা খেলনা গাড়ির মতো সুন্দর এবং যাত্রীদের সহজে উঠানামা করার সুবিধা প্রদান করত।
২২। গাড়িগুলি যাত্রীদের কীভাবে উঠানামা করতে সাহায্য করত?
উত্তর: গাড়িগুলি খুব নীচু হওয়ায় যাত্রীদের চলন্ত অবস্থায়ও সহজে উঠানামা করার সুবিধা ছিল।
২৩। লেখকের ট্রেনের যাত্রা কোন পথে চলছিল?
উত্তর: লেখকের ট্রেন অনেক আঁকাবাঁকা পথ অতিক্রম করে ধীরে ধীরে উপরে উঠছিল, কখনও দক্ষিণে, কখনও উত্তরে বাঁকিয়ে চলছিল।
২২। রেলপথের দুই ধারের দৃশ্য কেমন ছিল?
উত্তর: রেলপথের দুই ধারে মনোরম দৃশ্য ছিল, কোথাও উঁচু চূড়া, কোথাও নিবিড় অরণ্য এবং বিশাল চা-বাগানগুলি।
২৪। লেখক সমুদ্র স্তর থেকে কত উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন?
উত্তর: লেখক সমুদ্র স্তর থেকে তিন হাজার ফুট উচ্চতায় পৌঁছেছিলাম।
২৫। শীত অনুভব না হওয়ার কারণ কী ছিল?
উত্তর: আমরা মেঘের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং উচ্চতায় উঠেও শীত অনুভব হচ্ছিল না কারণ বাতাস খুব শীতল ছিল না।
২৬। লেখক কোথায় মেঘের ভেতর দিয়ে চলছিলেন?
উত্তর: লেখক মেঘের ভেতর দিয়ে চলছিলাম, যা যাত্রাকে আরও রোমাঞ্চকর এবং সুন্দর করে তুলেছিল।
২৭। হরিদ্বর্ণ চায়ের ক্ষেত্রগুলি কিভাবে প্রাকৃতিক শোভা বৃদ্ধি করেছিল?
উত্তর: হরিদ্বর্ণ চায়ের ক্ষেত্রগুলি প্রাকৃতিক শোভা বাড়িয়ে তুলেছিল, বিশেষ করে দূর থেকে দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল।
২৮। রেলপথের পথে কোন ধরনের জলপ্রপাত আপনি দেখেছিলেন?
উত্তর: রেলপথে অনেকগুলি জলপ্রপাত বা নির্ঝর দেখতে পেয়েছিলাম, যেগুলোর সৌন্দর্য বর্ণনাতীত।
২৯। ঝরনার সৌন্দর্য কেমন ছিল?
উত্তর: ঝরনার সৌন্দর্য ছিল অপরূপ, এর পানি বিশাল বেগে প্রবাহিত হচ্ছিল এবং এর সৃষ্টিতে প্রকৃতির শক্তি প্রতিফলিত হচ্ছিল।
৩০। ট্রেন থামার কারণ কী ছিল?
উত্তর: ট্রেন থামেছিল একটি বড় ঝরনার কাছে, তবে মূলত জল পরিবর্তন করার কারণে ট্রেন থামানো হয়েছিল।