আমাদের কৈশোর কালটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। অনেক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায় এই সময়। আজকের পোস্টে আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায়-কৈশোরের আনন্দযাত্রার সবগুলো ছক সমাধান করে দিলাম।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ৭ম শ্রেণি ৪র্থ অধ্যায়
শৈশব কালে আমাদের আনন্দের অভিজ্ঞতাকে বাড়িয়ে তোলার মাধ্যমে আনন্দময় জীবন যাপন করতে পারি। শৈশবকালে আমাদের বিভিন্ন চ্যানেল মোকাবেলা করতে হয়। ফলে আমাদের চিন্তাশক্তি সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বাড়তে থাকে।
কৈশোরের আনন্দযাত্রা
Table of Contents
আমার যত্নে আমার কাজ
১। নিজেকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করব। ২। নিয়মিত খাবার খাব এবং সুষম খাবার খেতে চেষ্টা করব। ৩। অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড পরিহার করব। ৪। প্রতিদিন শরীরচর্চা করব এবং খেলাধুলায় অংশ নেব। ৫। গ্রীষ্মকালে দীর্ঘসময় রোদে কাজ করা এবং খেলাধুলা থেকে বিরত থাকব। ৬। মনকে প্রফুল্ল রাখতে পরিবার,প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সাথে মিশব এবং হাসিমুখে কথা বলব। |
আমার কৈশোরের অভিজ্ঞতা
আনন্দময় অভিজ্ঞতা | বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আমি একবার দৌড় খেলা,হাই জাম্প ও গোলক নিক্ষেপ খেলায় যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও প্রথম হই। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমার নাম পরপর তিনবার ঘোষণা করে পুরস্কার নিতে ডাকলে সকলেই অবাক হয়। সবাইকে অবাক করে তিনটি পুরস্কার গ্রহণ করে আমি অনেক আনন্দ পেয়েছি। |
উপজেলা পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে “গণতন্ত্র নয়,উন্নয়নই জাতির কাম্য” বিষয়ের পক্ষে বিতর্ক করি,যেখানে আমি দলনেতা ছিলাম। সেখানে আমাদের দল জয়ী হয়। বিদ্যালয় থেকে উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করে পুরস্কার নিয়ে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত হই। | |
চালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা | বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার বন্ধু সাইকেল নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে খাদে পড়ে যায় এবং তার হাতের হাড় ভেঙে যায়। আশেপাশে আমি ছাড়া আর অন্য কেউ ছিল না। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আমি দুইটি কাঠি দিয়ে তার ভাঙা স্থানে দুই দিকে বেঁধে দেই। এরপর বাসায় খবর পাঠাই এবং স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই , যা অনেক চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা ছিল। |
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের সাথে আমাদের ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। আমি যখন ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছিলাম তখন জেতার জন্য শেষ তিন বলে ১১ রান দরকার ছিল। আমি প্রথম বলে ছয় দ্বিতীয় বলে দুই ও তৃতীয় বলে চার রান নিয়ে দলকে জয়ী করি। |
আমার ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ
শারীরিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | শারীরিক গঠনের পরিবর্তন হওয়া। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগা। শারীরিক শাস্তির শিকার হওয়া। বীর্যপাত অথবা মাসিক হওয়া। |
মানসিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | ভয়, বিভ্রান্তি, দ্বিধা, অদ্বিগ্ন ও বিষণ্ণতা। মানসিক চাপ। অস্বস্তিবোধ করা। আবেগপ্রবণ হওয়া। |
সামাজিক ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ | যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হওয়া। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে চাপ সৃষ্টি করা। চাপ প্রয়োগ করে মাদকদ্রব্য গ্রহণে বাধ্য করা। |
আমার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমি এখন যা করছি
চ্যালেঞ্জ | আমার পদক্ষেপ | আমার পদক্ষেপ কি ইতিবাচক/ নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে? |
শারীরিক পরিবর্তন | বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে শারীরিক যত্ন ও পরিচর্যা করছি। | ইতিবাচক |
প্রযুক্তিগত হয়রানি | প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্তকতা অবলম্বন করছি এবং কোনো তথ্য ও ছবি শেয়ার করছি না। | ইতিবাচক |
সমবয়সীদের চাপ | সমবয়সী বা বয়সে বড় যারা নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে তাদের সাথে নিরিবিলি কোথাও যাওয়া থেকে বিরত থাকছি। | ইতিবাচক |
আবেগ অনুভূতির পরিবর্তন | অন্যদের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে না পারায় সবসময় ঘরে অবস্থান করছি। | নেতিবাচক |
অশালীন বিষয়ে কৌতূহল জাগা | অভদ্র ও খারাপ সঙ্গীদের ত্যাগ করেছি। | ইতিবাচক |
চিন্তাধারার পরিবর্তন | মানসিকভাবে না ভেঙে পরে বয়স্কদের সাহায্য নিয়েছি। | ইতিবাচক |
চ্যালেঞ্জের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলার পরিকল্পনা ও চর্চা
আমার নিরাপদ থাকা : চ্যালেঞ্জের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলার কৌশল |
১। আমার শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন বিষয়ক সঠিক তথ্য জেনে শরীর ও মনের যত্ন এবং পরিচর্যা করব। |
২। বয়ঃসন্ধিকালীন বিভিন্ন পরিবর্তনগুলোকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে কোনো বিষয়ে মানসিক চাপ হলে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত কারো সাথে শেয়ার করে সহযোগিতা চাইব। |
৩। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে ভয় বা লজ্জা না পেয়ে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কারো সহযোগিতা চাইব। |
৪। প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করব এবং ব্যক্তিগত কোনো তথ্য ও ছবি শেয়ার করব না। |
৫। মন খারাপ ,রাগ , হতাশা বা অন্য কোনো কারণে অন্যের প্রতি ক্ষতিকর আচরণ বা আত্মহত্যার চিন্তা হলে অবশ্যই নিকটস্থ কাউকে জানাব। |
৬। কখনো সমবয়সী ,সহপাঠী এবং বড় ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে কেউ নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করতে চাপ প্রয়োগ করলে সেই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাব। |
কৈশোরের কিছু সামাজিক সমস্যা
আমার কিছু সমবয়সি বন্ধু আমাকে মাদক সেবনে চাপ দিচ্ছে। নিজেকে মাদক থেকে বিরত রাখতে আমি কী করব? | আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে মাদক থেকে বিরত রাখতে আমি কী করব? |
১ ৷ মাদক সেবন আমাকে শারীরিক মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে ,এই বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করব। ২ ৷ আমার পরিবারের লোকজন আমাকে মাদক থেকে দূরে থাকতে বলেছেন এমনটি বলব। ৩ ৷ যেসব স্থানে তারা মাদক সেবন করে সেসব স্থানে যাব না। ৪ ৷ প্রয়োজন হলে তাদের সাথে মেলামেশা বন্ধ করে দেব। | ১ ৷ মাদক সেবনের কুফলগুলো জানাব। ২ ৷ এটি একটি অপরাধ সেটা বোঝানোর চেষ্টা করব। ৩ ৷ মাদক সেবন করার পর তাঁর যেসব পরিবর্তন ঘটেছে সেগুলো তাকে জানানোর চেষ্টা করব। ৪ ৷ এর ফলে তার ভবিষ্যৎ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা বোঝানোর চেষ্টা করব। ৫ ৷ তার পিতা-মাতাকে এ বিষয়ে জানিয়ে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। |
বাল্যবিবাহের ফলে ক্ষতি
শারীরিক | মানসিক | সামাজিক |
১ ৷ অপরিণত গর্ভধারণ হতে পারে। ২ ৷ গর্ভাবস্থার রক্তক্ষরণ হতে পারে। ৩ ৷ শরীরে পানি আসে। ৪ ৷ অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগে। ৫ ৷ চোখে ঝাপসা দেখে। ৬ ৷ বিভিন্ন শারীরিক রোগ দেখা দেয়। ৭ ৷ গর্ভপাত ঘটে। ৮ ৷ মা ও সন্তানের মৃত্যু হতে পারে। | ১ ৷ মানসিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২ ৷ ভয় ,বিভ্রান্তি ও দ্বিধা কাজ করে। ৩ ৷ পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতন বৃদ্ধি পায়। ৪৷ মানসিক চাপ, অস্থিরতা ও অসহায়ত্ব রোধ করে | ১ ৷ বিষণ্ণতা ও হতাশা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে মাদক সেবনে অভ্যাস্ত হয়ে পড়ে। ২ ৷ মেয়েরা বাল্যবিবাহের জন্য লজ্জায় বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে যোগাযোগ করতে চায় না। ৩ ৷ শিক্ষার হার হ্রাস ও নিরক্ষরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে না। ৪ ৷ দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। |
বন্ধু বা বান্ধবীর বাল্যবিবাহ যেভাবে রোধ করব
প্রথমে আমরা আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানাব। এরপর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত আকারে বিষয়টি জানাব এবং বাল্যবিবাহ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব। এরপর নির্দিষ্ট দিনে স্কুলের বন্ধু-বান্ধব শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হব। |
আমার অংশগ্রহণ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ে করা কাজ
শ্রেণিকাজে অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রদ্ধাশীল আচরণ | শ্রেণিকাজে অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্কের প্রতি সচেতনতা ও গুরুত্ব | বইয়ে সম্পাদিত কাজের মান ও অনুশীলন | |
নিজের মন্তব্য | শ্রেণীর কাজে অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে শ্রদ্ধাশীল আচরণ করেছি। তাদের মন খারাপ হয় এমন কোন কাজ করিনি। | শ্রেণী কাজে অংশগ্রহণের সময় অন্য শিক্ষার্থীদের মতামতের গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রেণীর কাজে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাদের সচেতন করেছি। | বইয়ের সম্পাদিত আমার কাজের মান সুন্দর হয়েছে। সম্পন্ন করা কাজ আমি নিয়মিত অনুশীলন করেছি। |
শিক্ষকের মন্তব্য | শিক্ষক লিখবেন | শিক্ষক লিখবেন | শিক্ষক লিখবেন |
কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমার চর্চা
কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সংক্রান্ত পরিকল্পনার যথার্থতা | কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সংক্রান্ত চর্চাগুলো জার্নালে লিপিবদ্ধকরণ | সহপাঠীদের কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমার সহায়তা/ভূমিকা | |
নিজের মন্তব্য | কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমি যে সকল পরিকল্পনা করেছি তা যথাযথভাবে মেনে চলেছি। কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতিবাচক বিষয়গুলো পরিহার করেছি। | কৈশোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইতিবাচক ও নেতিবাচক চর্চাগুলো জানালে লিপিবদ্ধ করেছি। বয়সন্ধিকালে আমার যে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছিল তা জার্নালে লিখে রেখেছি। | কৈশোরের বিভিন্ন পরিবর্তন সহপাঠীর মনে কৌতূহল ও ভয়ের সৃষ্টি করেছে। তাদেরকে সে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমি ভূমিকা রেখেছি। |
শিক্ষকের মন্তব্য | শিক্ষক লিখবেন | শিক্ষক লিখবেন | শিক্ষক লিখবেন |
Related Posts
- ময়নামতির চর কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা
- স্বাস্থ্য সুরক্ষা ৮ম শ্রেণির ১ম অধ্যায় (সবগুলো ছকের সমাধান)
- ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ৮ম শ্রেণির ১ম ও ২য় অধ্যায় (সবগুলো ছক)
- ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পরামর্শ দিয়ে বন্ধুকে চিঠি
- আমি যদি হই রোবট প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি- ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি
- আষাঢ়ের এক রাতে গল্পের প্রশ্ন উত্তর – ৭ম শ্রেণির বাংলা
- ৭ম শ্রেণির বাংলা ৫ম অধ্যায় ১ম ও ২য় পরিচ্ছেদ-বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
- ইবনে বতুতার ভ্রমণ গল্পের প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
- নোলক কবিতার মূলভাব, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির বাংলা
- ইসলাম শিক্ষা ৮ম শ্রেণি ১ম অধ্যায় (সব ছকের সমাধান)