সেই ছেলেটি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর -৭ম শ্রেণির বাংলা

নাট্যকার মামুনুর রশীদ রচিত ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকাটিতে একটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। একই সাথে প্রকাশ পেয়েছে শিশুর প্রতি বড়োদের মমত্ববোধ। এই পোস্টে সেই ছেলেটি সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | সেই ছেলেটি ৭ম শ্রেণির বাংলা লিকখে দিলাম।

সেই ছেলেটি সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
আবিদ স্যার ৭ম শ্রেণির ছাত্র রওশনের কাছে তার স্কুলে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে সে কিছু না বলে চুপ থাকে। শ্রেণির অন্য শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞেস করলে তারা প্রায় একযোগে বলে- স্যার, রওশন প্রায়ই স্কুল কামাই করে। শিক্ষক রওশনকে। বলেন- আর কামাই করবে? কোনো উত্তর দেয় না রওশন। পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে মেঝে খুঁড়তে থাকে। উত্তর না পেয়ে শিক্ষক রওশনকে অনেক বকা দেন। কয়েকদিন পর রওশনের বাবা আবিদ। স্যারকে বলেন- স্যার, রওশনের স্নায়ু রোগ আছে। নিয়মিত স্কুল করলে ওর অসুখটা বেড়ে যায়। বকাঝকা করলে ওর স্কুলে আসা বন্ধ হয়ে যাবে।

ক. মিঠু আরজুকে কোথায় বসে থাকতে দেখেছে?

খ. আইসক্রিমওয়ালা আরজুকে স্কুল ফাঁকি দিতে নিষেধ করল কেন?- বুঝিয়ে লেখ।

গ. রওশন ও আরজুর মধ্যকার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. আবিদ স্যারের বিচার কাজটি লতিফ স্যারের তুলনায় কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে?- তা মূল্যায়ন কর।

উত্তরঃ

ক. মিঠু আরজুকে পলাশতলীর আমবাগানে বসে থাকতে দেখেছে।

খ. আইসক্রিমওয়ালা আরজুকে স্কুল ফাঁকি দিতে নিষেধ করল। কারণ স্কুল ফাঁকি দেওয়ার ফলাফল ভালো ‘হয় না। এক সময় আইসক্রিমওয়ালাও স্কুলে না গিয়ে পালাত। তাই সে আজ আইসক্রিম বিক্রি করে। যদি সে পড়াশোনা করত, তাহলে জীবনে আরও ভালো করতে পারত। তাই যখন সে দেখল আরজু স্কুলে না গিয়ে আমবাগানে বসে আছে, তখন তার নিজের ভুলের কথা মনে পড়ে যায়। সে মন থেকে কষ্ট পায় আর অনুশোচনা করে। তাই সে আরজুকে বলে দেয়, যেন স্কুল ফাঁকি না দেয়।

গ. শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার দিক থেকে রওশন ও আরজু উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে।

শিশুরা সবসময় বড়দের সাহায্য আর সহানুভূতি চায়। আর যেসব শিশু অসুস্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, তারা সবার কাছ থেকে আরও বেশি সহানুভূতি আশা করে। তাই তাদের পাশে থাকা দরকার। উদ্দীপকে রওশন প্রায়ই স্কুলে যেতে পারে না। এজন্য শিক্ষক তাকে বকেন। কিন্তু রওশন অসুস্থ, তার শরীর ভালো নয়, তাই সে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার আরজুও এমনই এক শিশু, যে শরীরের সমস্যার কারণে স্কুলে যেতে পারে না। স্কুলে যাওয়ার সময় হঠাৎ তার পা অবশ হয়ে যায়। এই কারণে তাকেও স্কুল কামাই করতে হয়। তাদের দুজনেরই শরীর খারাপ থাকায় স্কুলে না যাওয়া দেখা যায়। তাই রওশন ও আরজুর মধ্যে মিল আছে।

ঘ. আবিদ স্যারের বিচার কাজটি লতিফ স্যারের তুলনায় অধিকতর অযৌক্তিক।

উদ্দীপকে আবিদ স্যার ছাত্র রওশনকে স্কুলে না আসার কারণ জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু রওশন কিছু বলে না, চুপ করে থাকে। এজন্য স্যার তাকে বকা দেন। আর ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার লতিফ স্যার ঠিক উল্টো। তিনি আরজুর অসুস্থতার কথা শুনে তাকে কিছু বলেন না, বরং সহানুভূতি দেখান।

কারও অপরাধ বা দোষ জানার আগে তাকে দোষ দেওয়া ঠিক না। আগে সবকিছু জানা দরকার, তারপর বিচার করা উচিত। কিন্তু আবিদ স্যার সেটা না করে রওশনকে বকা দেন। আর লতিফ স্যার আরজুর সঙ্গে কথা বলে বুঝে নেন তার সমস্যার কথা এবং তাকে সাহায্য করার কথা বলেন। তাই বোঝা যায়, আবিদ স্যারের আচরণ ঠিক হয়নি, কিন্তু লতিফ স্যারের আচরণ ছিল ভালো এবং যুক্তিসম্মত।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
ব্ল‍্যাকবোর্ডে একটা জ্যামিতির চিত্র এঁকে স্যার ক্লাসরুমের শেষের সারিতে বসা পলাশকে বললেন, চিত্রটি বুঝিয়ে দাও। কিন্তু পলাশ কিছু না বলে দাঁড়িয়ে থাকল। স্যার জিজ্ঞাসা করলেন, চুপ করে না থেকে বল পারবে কিনা? পলাশ কিছু না বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল এবং কাঁদল। স্যার রেগে গিয়ে বেত মারতে মারতে বললেন, পড়া না তৈরি করে স্কুলে আসবে না। পলাশের বাবাকে বিষয়টি জানাতে গেলে তিনি বললেন, ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। দূরের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পায় না। স্যার তখন নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং দুঃখ প্রকাশ করলেন।

ক. মামুনুর রশীদ কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?

খ. আরজু কেন হাঁটতে পারছিল না?

গ. উদ্দীপকের পলাশের সাথে ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার কোন চরিত্রের মিল পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের পলাশ এবং ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার আরজুর দুঃখের উৎস একই ধরনের।”- বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
‘চোখ গেল’- তার ভরসা তবু আছে
চক্ষুহীনার কী কথা কার কাছে!
তার চেয়ে এই স্নিগ্ধ শীতল জল
দুটো যেন প্রাণের কথা বলে-
দরদ-ভরা দুখের আলাপন;

ক. সোমেন, সাবু ও আরজু কীভাবে স্কুলে যাচ্ছে?

খ. আরজু স্কুলে যায়নি কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের প্রথম দুই পঙ্ক্তি ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার কোন বিষয়টিকে নির্দেশ করে?

ঘ. পাখির সঙ্গে মেঘের সঙ্গে আরজুর আলাপনকে উদ্দীপকের কবিতাংশের অংশটুকুকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। এ বিষয়ে তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
লোকে অবশ্য বলে যোগেন বসাক মহৎ লোক বলেই অনাথ বোবা মেয়েটাকে আশ্রয় দিয়েছেন। মহৎ হয়ে সুবিধাই হয়েছে যোগেন বসাকের। পেটভাতায় এমন সর্বগুণান্বিতা চব্বিশ ঘণ্টার চাকরানি পাওয়া শক্ত হতো তাঁর পক্ষে। বোবা হওয়াতে আরো সুবিধা হয়েছে, নীরবে কাজ করে। মিনু শুধু বোবা নয়, ঈষৎ কালাও।

ক. নাট্যকার মামুনুর রশীদ রচিত ‘সেই ছেলেটি’ কোন ধরনের রচনা?

খ. “এরকম মাঝে মাঝেই করে আরজু।”- কথাটি কে এবং কেন বলেছে?

গ. উদ্দীপকের বোবা মেয়েটির সঙ্গে ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে, তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত বিষয়টি ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার শরীরিক প্রতিবন্ধিতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, কিন্তু নাটিকার মূল চেতনা নয়।”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
মিনু শুধু বোবা নয়, ঈষৎ কালাও। অনেক চেঁচিয়ে বললে, তবে শুনতে পায়। সব কথা শোনার দরকারও হয় না তার। ঠোঁটনাড়া আর মুখের ভাব দেখেই সব বুঝতে পারে। এছাড়া তার আর একটা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে যার সাহায্যে সে এমন সব জিনিস বুঝতে পারে, এমন সব জিনিস মনে মনে সৃষ্টি করে, সাধারণ বুদ্ধিতে যার মানে হয় না। মিনুর জগৎ চোখের জগৎ, দৃষ্টির ভিতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে। শুধু গ্রহণ করে নি, নতুন রূপে নতুন রং আরোপ করেছে তাতে।

ক. কোন পাখিটি আরজুর সাথে কথা বলে না?

খ. আরজুর পায়ের ব্যথার কারণ কী? বর্ণনা কর।

গ. উদ্দীপকের মিনুর সঙ্গে ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে?

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার আংশিক ভাবকে ধারণ করে।”- তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
অমি-র বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে তাঁর দুই পা হাঁটুর নিচ থেকে উড়ে যায়। এখন দুটো নকল পা লাগিয়ে জীবন যাপন করছেন। তাঁর শুধুই মনে হয়, অমি বড় হয়ে পঙ্গু বাবাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো?

ক. ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকা কতটি দৃশ্যে বিভক্ত?

খ. আরজু কাঁদতে থাকে কেন?

গ. অমির বাবা ও আরজু-র মাঝে যে বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান, তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. অসুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে কাছের মানুষের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ- উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকা অবলম্বনে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
আমরা সবাই মানুষ। আমাদের সকলের বাঁচার অধিকার আছে, শিক্ষাগ্রহণের অধিকার আছে, অধিকার আছে সহানুভূতি পাওয়ার। আমরা সবাই সমান ক্ষমতার অধিকারী নই। আমাদের কেউ শারীরিক বা আর্থিকভাবে অসচ্ছল। আবার কেউ মানসিকভাবে অসচ্ছল। কিন্তু আমাদের মতো তাদেরও এ সুশীল সমাজে, এ সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচার অধিকার আছে। সে দায়িত্ব আমাদের। তাদেরকে যদি আমরা আন্তরিকতার হাত না বাড়িয়ে দিই, তবে আমাদের জীবন, আমাদের সাফল্য সব অপূর্ণ থেকে যাবে।

ক. পলাশতলীর আমবাগানে কে বসে আছে?

খ. লতিফ স্যার কেমন লোক?

গ. ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার আরজু উদ্দীপক অনুযায়ী কেমন?

ঘ. প্রমাণ কর যে, উদ্দীপক ও ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকা আমাদেরকে একই শিক্ষা প্রদান করে।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
প্রত্যয় ও ইমন দুই বন্ধু। রোজ তারা একসঙ্গে স্কুলে যায়। একদিন প্রত্যয় পায়ে ব্যথা পেয়ে আর হাঁটতে না পারায় স্কুলে যেতে পারে না। কিন্তু বন্ধু ইমন প্রত্যয়কে সাহায্য না করে তাকে ফেলে রেখেই স্কুলে চলে যায়। ইমনের এমন ব্যবহারে প্রত্যয় কষ্ট পায় মনে।

ক. ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকাটি কার লেখা?

খ. আরজু কেন হাঁটতে গিয়ে কষ্ট পায়? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের ইমন ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার কোন চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?

ঘ. উদ্দীপকটি ‘সেই ছেলেটি’ নাটিকার খন্ডচিত্র মাত্র- বিশ্লেষণ কর।

নিচে উত্তরসহ সেই ছেলেটি নাটকের সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

সেই ছেলেটি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment