সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৮ম শ্রেণির বাংলা

‘সুখী মানুষ’ মমতাজউদদীন আহমদের একটি নাটিকা। এর দুটি মাত্র দৃশ্য। নাটিকাটির কাহিনিতে আছে, মানুষকে ঠকিয়ে, মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে, ধনী হওয়া এক মোড়লের জীবনে শাস্তি নেই। এই পোস্টে সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের]
জোবেদ আলী ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্য। এই নিয়ে টানা পঞ্চম বারের মতো তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলেন। হবেনই বা না কেন? এলাকার মানুষের অসুখ-বিসুখ হলে সুস্থ না হওয়া অবধি তিনি তার শয্যা ছাড়েন না। সমস্যায় পড়লে সমাধান। নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তার মুখে অন্ন রোচে না। সেই তার অসুখ হলে গাঁয়ের লোক ভেঙে পড়ল। চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে প্রার্থনা করল- আল্লাহ, তুমি আমাদের জোবেদ ভাইকে সুস্থ করে দাও।

ক. আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে যাঁরা চিকিৎসা করেন তাঁদের কী বলে?

খ. হাসু মোড়লের মৃত্যুকামনা করে কেন?

গ. জোবেদ আলীর সঙ্গে ‘সুখী মানুষে’র যে মিল আছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘মোড়ল যদি জোবেদ আলীর মতো হতেন তাহলে তার চিকিৎসার জন্য সুখী মানুষের জামা তালাশ করতে হতো না।’- বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে যাঁরা চিকিৎসা করেন তাঁদের কবিরাজ বলে।

খ. হাসু মোড়লের মৃত্যুকামনা করে, কারণ মোড়ল তাকে ও গ্রামের অন্যদের অনেক অত্যাচার করেছে। সে অন্যের গরু, ধান, এমনকি হাসুর মুরগিও জোর করে নিয়ে খেয়েছে। মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখেও মোড়ল হাসত। তাই হাসু মনে করে, এমন পাপী আর লোভী মানুষের সুস্থ হওয়া উচিত নয়। তার বিশ্বাস, অন্যকে কষ্ট দিলে সেই মানুষ কখনো সুখী হতে পারে না। এজন্যই সে চায় মোড়ল যেন মারা যায়।

গ. জোবেদ আলী ও ‘সুখী মানুষ’ নাটকের সুখী লোকটি দুজনেই মানুষের উপকারে আত্মতৃপ্তি পায়। তারা নিজের সুখের কথা না ভেবে অন্যের দুঃখে পাশে দাঁড়ায়। জোবেদ আলী অসুস্থ হলেও মানুষকে সাহায্য করতে ছাড়েন না। তেমনি নাটকের সেই কাঠুরে মানুষটি নিজের প্রয়োজন খুব কম রাখে, তবুও সে সুখী। দুজনেই লোভহীন, শান্ত স্বভাবের এবং মানুষের দোয়া নিয়ে বাঁচে। তারা অন্যের দুঃখ দূর করেই নিজের সুখ খোঁজে। জোবেদের মতো লোককে সবাই ভালোবাসে, যেমন নাটকের লোকটিও কারও ক্ষতি করে না। তারা বাহ্যিক জিনিসে সুখ খোঁজে না, খোঁজে মনের শান্তিতে। এভাবেই জোবেদ আলী ও নাটকের সুখী লোকটির মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ঘ. মোড়ল ছিলেন এক কঠিন, লোভী ও অত্যাচারী ব্যক্তি। তিনি মানুষের গরু, ধান, এমনকি হাসুর মুরগি জোর করে নিয়ে খেয়েছেন। তাই অসুখ হলে ওষুধে কাজ হয়নি, কারণ তার মনে ছিল অশান্তি ও পাপ। অন্যদিকে, জোবেদ আলী ছিলেন মানুষের সেবক, বিনয়ী ও নিঃস্বার্থ। তিনি মানুষের দুঃখে পাশে থাকতেন, বিপদে ছুটে যেতেন। তাই গ্রামের মানুষ তাকে ভালোবাসে এবং তার জন্য দোয়া করে। যদি মোড়ল জোবেদের মতো হতেন, তবে তিনি মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া পেতেন। সেক্ষেত্রে তাকে সুখী মানুষের জামা খুঁজে বেড়াতে হতো না। তার নিজের জীবনটাই হয়ে উঠত এক ‘সুখী মানুষের জামা’। ভালো কাজ ও মানুষের প্রতি সহানুভূতিই মানুষের সত্যিকারের আরোগ্য এনে দেয়।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [বোর্ড বইয়ের]
সেলিম সাহেব নানা উপায়ে নানা পন্থায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। নদীর পাড় ভেঙে পড়ার মতো ইদানীং বিভিন্ন অজুহাতে। সেই পাহাড়ের বিরাট বিরাট অংশ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। রাতে দুশ্চিন্তায় ঘুম হয় না। তার মনে হচ্ছে যাকে তিনি এক সময় সুখের উৎস ভেবেছিলেন তাই হয়ে উঠেছে এখন অসুখের মূল কারণ। ভাঙন যেভাবে লেগেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তেই যাবে।

ক. নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদের পেশাগত পরিচয় কী?

খ. হাসু মোড়লের আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও তার অকল্যাণ কামনা করে কেন?

গ. মোড়ল চরিত্রের সঙ্গে সেলিম সাহেবের চরিত্রের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ. ‘মোড়ল আর সেলিম সাহেবের অসুখের মূল কারণ অভিন্ন সূত্রে গাঁথা।’- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদের পেশাগত পরিচয় তিনি একজন শিক্ষক ও বিখ্যাত অভিনেতা।

খ. হাসু মোড়লের আত্মীয় হলেও মোড়ল অনেক বেশি অত্যাচারী এবং লোভী ছিল। মোড়ল তার গরু কেড়ে নিয়েছে, ধান লুট করেছে, এমনকি হাসুর মুরগিও জোর করে খেয়েছে। মানুষের কষ্ট দেখে মোড়ল হাসতো, যার কারণে হাসুর মনে মোড়লের প্রতি রাগ ও অবজ্ঞা জমে গেছে। তাই হাসু মোড়লের সুস্থতা চায় না, কারণ মোড়ল যদি সুস্থ হয়, তাহলে সে আবার অন্যদের কষ্ট দেবে। হাসু বিশ্বাস করে যে যারা অন্যকে কষ্ট দেয়, তারা কখনো সত্যিকারের সুখ পায় না।

গ. মোড়ল আর সেলিম সাহেব দুইজনেই ধনী এবং ক্ষমতাশালী হলেও তারা দুজনেই লোভী ও স্বার্থপর। মোড়ল গ্রামের মানুষের সম্পদ লুটেপুটে নিজের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করেছে, আর সেলিম সাহেবও নানা উপায়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন, তবে একই সঙ্গে ধ্বংসের পথেও এগোচ্ছেন। দুইজনের আচরণে স্বার্থপরতা ও অন্যদের কষ্টের প্রতি উদাসীনতা স্পষ্ট। তাদের ধন-সম্পদ যেমন তাদের জন্য সুখের উৎস হওয়ার কথা, বাস্তবে তা তাদের অসুখ এবং দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা নিজেদের পাপের কারণে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এই দিক থেকে মোড়ল ও সেলিম সাহেবের চরিত্রে মিল রয়েছে। তারা ধনী হলেও সত্যিকারের সুখ পাননি।

ঘ. মোড়ল আর সেলিম সাহেব দুইজনেই ধনী ও ক্ষমতাশালী হলেও তাদের অসুখের কারণ একই ধরনের। তারা উভয়ে লোভী ও স্বার্থপর। তারা অন্যের সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজের ধন-সম্পদ বাড়িয়েছে। মোড়ল গ্রামে গরু, ধান, মুরগি লুট করেছে, আর সেলিম সাহেব নানা অজুহাতে সম্পদের পাহাড় গড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত ভাঙন ধরিয়েছে। তাদের এই লোভ ও অত্যাচারই তাদের মনের অশান্তির মূল কারণ। ধন-সম্পদ থাকলেও তারা সুখী নয়, বরং দুশ্চিন্তায় ভুগছে। তারা যা পেয়েছে, তা তাদের জন্য পাপের ধন, যা পরিশোধ করতে হবে। এই কারণেই তাদের অসুখ গভীর এবং ওষুধে সহজে সেরে উঠবে না। নাটকটি দেখায়, ধন-সম্পদের পিছনে অন্ধ লোভ ও অন্যায়ের কারণে মানুষ আত্মিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই মোড়ল ও সেলিম সাহেবের অসুখের মূল কারণ একই—অন্যায়ের লোভ ও পাপ।

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [জে. এস. সি. পরীক্ষা কুমিল্লা বোর্ড ২০১৯]


অংশ-১: ‘ভাঙা কুঁড়েঘর, ছেঁড়া কাঁথা তবুও এখানে আমার শান্তি গাঁথা।

অংশ-২: ‘যার নেই- তারে যদি দাও

পাবে দ্বিগুণ ফিরে নিজের শুধু ভাব যদি দুঃখ থাকবে ঘিরে।’

ক. কবিরাজ কোন কঠিন কাজটি করতে বলেছিলেন?

খ. “মনের মধ্যে অশান্তি থাকলে ওষুধে কাজ হয় না”- কথাটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের অংশ-১ এ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন চরিত্রের প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের অংশ-২ এ ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার মোড়লের জন্য কতটা শিক্ষণীয় তা মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [জে. এস. সি. পরীক্ষা ঢাকা বোর্ড ২০১৯]
আনোয়ার সাহেব অনেক পরিশ্রম করে সততার সাথে ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কোনোদিনও কারো ক্ষতি করেননি। পরিশ্রম আর সততাই ছিল তাঁর প্রেরণাশক্তি। পক্ষান্তরে রজব আলী সুদের কারবার করে ধনাঢ্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। মানুষকে বিপদে ফেলে চড়া সুদে টাকা ধার দেয়াই তার প্রধান লক্ষ্য। শেষ বয়সে এসে তার মনে কোনো সুখ নেই। তার ভেতরে শুধুই অতৃপ্তি আর হাহাকার।

ক. ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মোড়লের কথিত রোগের নাম কী?

খ. সুখকে বড় কঠিন জিনিস বলা হয়েছে কেন?

গ. উদ্দীপকের রজব আলীর সাথে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্রটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের আনোয়ার সাহেব এবং ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার কাঠুরে যেন এক অভিন্ন সত্তা- যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
রফিক সাহেব সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কিন্তু তার বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির নানা অভিযোগ। অফিসের কর্মচারীদেরও নানাভাবে হেনস্থা করেন। অবশেষে তিনি একদিন ঘুষ গ্রহণকালে দুদকের অফিসারের কাছে ধরা পড়েন। তার সমস্ত সুখের বিসর্জন হয়। অধিক অর্থের মোহ মনুষ্যত্বের বিনাশ ঘটায়, তখন মানুষ। অসুখী হয়ে পড়ে।

ক. ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় কে হাউমাউ করে কাঁদতে চায়?

খ. হাসু মোড়লকে কঠিন লোক বলেছে কেন?

গ. উদ্দীপকের রফিক সাহেবের সঙ্গে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘অর্থমোহ ও অনৈতিক কাজ মানুষকে অসুখী করে তোলে’-উক্তিটির আলোকে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার মূলভাব তোমার নিজের ভাষায় প্রকাশ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
একদিন এক কৃষক একটি রাজহংসী কিনে। রাজহংসীটি প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাড়ে। কৃষক ডিম বিক্রি করে শীঘ্রই ধনী হলো। কিন্তু সে ছিল খুব লোভী। সে ভাবল রাজহংসীকে হত্যা করে একসঙ্গে সব সোনার ডিম বের করে নেবে। তখন সে রাজহংসীটির পেট চিড়ে দেখল সেখানে কোনো ডিম নেই। এভাবে অধিক লোভই কৃষককে সর্বস্বান্ত করল।

ক. ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার দ্বিতীয় সংলাপটি কার?

খ. “আমার কত টাকা, কত বড় বাড়ি! আমার মনে দুঃখ কেন?”-‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মোড়ল কেন একথা বলেছেন?

গ. কৃষকের লোভের সঙ্গে মোড়লের লোভের সাদৃশ্য কতটুকু? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “”সুখী মানুষ’ নাটিকার মোড়লের মাঝে আমরা উদ্দীপকের কৃষককে খুঁজে পাই”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
একটি অফিসে কর্মরত জনৈক মি. হাসেম আলী বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন পন্থায় এখন অঢেল সম্পত্তির মালিক। পাহাড় ধসে পড়ার মতো ইদানীং নানা ঘটনায় সেই অঢেল সম্পত্তির বিশাল বিশাল অংশ হাতছাড়া প্রায়। দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। হাসেম আলীর মনে হচ্ছে, যে সম্পত্তিকে তিনি একসময় সকল সুখের আশ্রয় ভেবেছিলেন তাই হয়ে উঠেছে এখন অসুখের মূল কারণ। ধস যেভাবে শুরু হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তেই যাবে।

ক. ‘সুখী মানুষ’ নাটিকায় মোট চরিত্র সংখ্যা কতটি?

খ. কীভাবে মোড়লের হাড় মড়মড় রোগ ভালো হবে?- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের মি. হাসেম আলী চরিত্রের সাথে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন চরিত্রের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার বিষয়বস্তুকে সম্পূর্ণরূপে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে কি? মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
হাসান সাহেব একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি আজ দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। দেশে-বিদেশে অনেক চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হননি। অথচ এক সময় তিনি মানুষের জায়গা-জমি জোরপূর্বক দখল করে। সর্বস্বান্ত করেছেন। সবকিছুর বিনিময়ে হলেও তিনি এখন সুস্থ হতে চান।

ক. কবজির নাড়ির অবস্থা দেখে রোগ নির্ণয় করাকে কী বলে?

খ. সুখী মানুষটির প্রাণখোলা হাসির কারণ বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের হাসান সাহেবের মতো মানুষদের চেতনা জাগাতে ‘সুখী মানুষ’ নাটিকার শিক্ষাই কি যথেষ্ট? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

নিচে উত্তরসহ সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

সুখী মানুষ সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment