হাসান রোবায়েতের ‘সিঁথি’ কবিতায় সাম্প্রতিক বাংলাদেশের এক নির্মম ও মর্মন্তুদ অভিজ্ঞতার প্রকাশ ঘটেছে। শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থান ২০২৪-এ বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের মানুষ নতুনভাবে মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। এই পোস্টে সিঁথি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৭ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
সিঁথি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা তোমাকে পাওয়ার জন্যে আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়? আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন? দ্বিতীয় অংশ সেই তেজি তরুণ যার পদভারে একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে– সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা। ক. ‘শাহাদাত’ বলতে কী বোঝ? খ. ‘গোরস্থানে কান্দে শহিদ- পঙ্গু যেন হয় না দ্যাশ।’- এখানে কীসের আশঙ্কা ব্যক্ত হয়েছে? গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশটিতে ‘সিঁথি’ কবিতায় ছাত্র-জনতার আত্মদানের বিষয়টি কীভাবে ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা কর। ঘ. “উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূল বক্তব্য।”-ব্যাখ্যা কর। |
উত্তরঃ
ক. শাহাদাত’ বলতে বুঝি শহিদ হওয়া।
খ. প্রশ্নোক্ত অংশে শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচারে দেশের শোচনীয় পরিণতির আশঙ্কা ব্যক্ত হয়েছে।
২০২৪ সালের ‘শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন’-এ শাসকদের অত্যাচারে দেশে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। তাদের নির্মম আঘাতে মানুষের প্রাণ প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। এই আন্দোলনে কেউ চোখ হারিয়েছে, কেউ পা হারিয়েছে, অনেকেই আহত বা নিহত হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছিল। তখন গোরস্থানের শহিদরাও যেন দেশের সবাই পঙ্গু হয়ে যাবে ভেবে কেঁদেছিল। আসলে সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে—প্রশ্নের চরণে এই আশঙ্কাই প্রকাশ পেয়েছে।
গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশটিতে ‘সিঁথি’ কবিতায় ছাত্র-জনতার আত্মদানের বিষয়টি বিগত দিনগুলোতে স্বাধীনতা আন্দোলনে এদেশবাসীর পুনঃপুন অংশগ্রহণ ও আত্মদানের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার, আর সবাই এই স্বাধীনতা চায়। যদি কেউ এই অধিকারে বাধা দেয়, মানুষ রুখে দাঁড়ায়। শত্রুর সবকিছু ধ্বংস করে দিতে চায় তাদের অন্তরের জ্বলে ওঠা আগুনে। যুগে যুগে মানুষ স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে, আর তাতে রক্তপাত ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে।
উদ্দীপকের কবিতায় প্রশ্ন করা হয়েছে—স্বাধীনতার জন্য আর কতবার রক্তপাত ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দেখতে হবে? বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ঘটনা অনেকবার ঘটেছে। ‘সিঁথি’ কবিতাতেও একই দৃশ্য পাওয়া যায়, যেখানে ২০২৪ সালের শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে। শাসকদের অত্যাচারে দেশের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মানুষ মুক্তি চেয়েছিল, কিন্তু তাতে মৃত্যু, রক্তপাত ও আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘটেছিল। এই দেশ বহুবার এমন আত্মত্যাগ করেছে স্বাধীনতার জন্য। এই ত্যাগই উদ্দীপকের ছাত্র-জনতার আত্মদানের কথা মনে করিয়ে দেয়।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূল ‘বক্তব্য।”-উক্তিটি যথার্থ।
তারুণ্যের শক্তিতে পৃথিবীতে নতুনের সূচনা হয়, আর এই শক্তি দিয়েই পৃথিবী এগিয়ে চলে অগ্রগতির পথে। স্বাধীনতাও আসে এমন তেজি ও প্রাণবন্ত মানুষের হাত ধরে।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, তরুণদের তেজেই নতুন পৃথিবীর জন্ম হয়। কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতাও আসে তারুণ্যশক্তির মাধ্যমে। যুগে যুগে স্বাধীনতার জন্য মানুষ লড়াই করেছে, আর বিজয় এসেছে তাদের তারুণ্যের অমিত তেজে। এই বিষয়টি ‘সিঁথি’ কবিতার মূল বক্তব্যেও আছে।
‘সিঁথি’ কবিতায় ২০২৪ সালের শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনা বলা হয়েছে। শাসকের ভয়ানক দমন উপেক্ষা করে ছোট-বড় সবাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে। ন্যায়ের পক্ষে তারা বুক পেতে দিয়েছে অস্ত্রের মুখে, প্রাণ দিয়েছে নির্ভয়ে। অবশেষে সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিজয় এসেছে, মুক্তি মিলেছে সবার। এই মুক্তি এসেছে তেজি তারুণ্যের কারণে, আর বিজয়ের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে সবার মাঝে। স্বাধীনতার জন্য তারুণ্যের এই অবদানই কবিতার মূল কথা। উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশেও একই বিষয় রয়েছে, তাই মন্তব্যটি সঠিক।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। মোরা নতুন একটি কবিতা লিখতে যুদ্ধ করি মোরা নতুন একটি গানের জন্য যুদ্ধ করি মোরা একখানা ভালো ছবির জন্য যুদ্ধ করি মোরা সারা বিশ্বের শান্তি বাঁচাতে আজকে লড়ি মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি। ক. ‘শাহাদাত’ শব্দের অর্থ কী? খ. “ভাই মরল রংপুরে” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকের দেশাত্মবোধক গানের বাণীতে ‘সিঁথি’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপক ও ‘সিঁথি’ কবিতার চেতনা একসূত্রে গাঁথা।” মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিকে সীমাহীন নির্যাতন সহ্য করতে হয়। ঘরবাড়ি ছেড়ে জীবন বাঁচাতে উদ্বাস্তু হতে হয়। এসময় পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যা-নির্যাতন ও ধ্বংসলীলায় সারা দেশ যেন শ্মশানে পরিণত হয়। কিন্তু সে সময় তাদের রুখে দাঁড়ায়, এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দেশকে শত্রুমুক্ত করাই ছিল তাদের ব্রত। ক. ‘মুসলমানের ছেলে’ বইটির লেখক কে? খ. “খোদার আরশ কাঁইপা ওঠে, শুইনা বাপের হাহাকার”- কথাটি ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকে ‘সিঁথি’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? আলোচনা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূলভাবকেই যেন প্রতিফলিত করে।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিয়েছিল। সেসময় দেশবাসী মূলত ঐক্যের শক্তিতেই শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এবং বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। আর বাঙালিদের সেই সাহস ও দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখে বিশ্ব যেন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। ক. ‘আরশ’ কী? খ. “সারা আকাশ ছাইয়া আছে, কোন শহিদের গায়ের শাল”-উক্তিটি ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘সিঁথি’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূলভাব সম্পূর্ণ তুলে ধরতে পারেনি”- মন্তব্যটি বিচার কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এদেশের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করতে শুরু করে। তাদের এই অপশাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে বারবার বাঙালি সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু ভাষা-আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে বাঙালিকে বুকের রক্ত দিতে হয়েছে। অবশেষে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের জীবনের বিনিময়ে বাংলার মানুষ মুক্তিলাভ করে। ক. কোন আন্দোলনে জয়ী হয়ে বাংলার মানুষ নতুনভাবে মুক্তির স্বাদ পেয়েছে? খ. “কত রক্ত লাইগা আছে/বাংলাদেশের সিঁথিতে।”- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘সিঁথি’ কবিতার সাদৃশ্য আলোচনা কর। ঘ. “উদ্দীপক ও ‘সিঁথি’ কবিতার চেতনা একসূত্রে গাঁথা।”-মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতীক হাসান দেশ ও মানুষকে শত্রুমুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দীর্ঘকাল কেটে গেলেও সে আর ফিরে আসেনি। অনেকে বলে যুদ্ধে গিয়ে সে প্রাণ দিয়েছে। অথচ তার মা এ কথা বিশ্বাসই করতে চায় না। ক. ‘খাটিয়া’ শব্দের অর্থ কী? খ. “লাশের ভিতর লাশ ডুইবা যায়” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। গ. উদ্দীপকের প্রতীক হাসান চরিত্রে ‘সিঁথি’ কবিতার কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে? আলোচনা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূলভাবকে কতটা তুলে ধরতে। পেরেছে? যৌক্তিক বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। এ লাশ আমরা রাখব কোথায়? তেমন যোগ্য সমাধি কই? মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলো অথবা সুনীল-সাগর-জল-সবকিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই! তাইতো রাখি না এ লাশ আজ মাটিতে পাহাড়ে কিম্বা সাগরে হৃদয়ে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই। ক. ‘সিঁথি’ কবিতায় দেশের কোথায় ভাই মারা যাওয়ার কথা বলা হয়েছে? খ. বাংলাদেশের সিঁথিতে রক্ত লেগে থাকার কথা বলার মাধ্যমে। মূলত কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকে ‘সিঁথি’ কবিতার কোন বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপক ও ‘সিঁথি’ কবিতার মূল সুর একই”- উদ্দীপক ও ‘সিঁথি’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে। তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না। বলো, মা, তাই কি হয়? তাইতো আমার দেরি হচ্ছে। তোমার জন্য কথার ঝুরি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরবো। ক. কবির দৃষ্টিতে দোজখ কী ছড়ায়? খ. “চিরকালই স্বাধীনতা আসে এমন রীতিতে”- কথাটি বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকের কবিতাংশে ‘সিঁথি’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘সিঁথি’ কবিতার মূলভাব কতটা তুলে ধরতে পেরেছে? যৌক্তিক বিশ্লেষণ কর। |
নিচে উত্তরসহ সিঁথি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।