রুপাই কবিতায় কবি গ্রামীণ এক কৃষক পরিবারের ছেলে রুপাইয়ের গুণাবলি ও সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন। রুপাই কালো হলেও সেই কালো রঙেই আছে প্রকৃত সৌন্দর্য, শক্তি ও কর্মক্ষমতা। এই পোস্টে ৮ম শ্রেণির রুপাই কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।
রুপাই কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] পল্লিগ্রামের পিতৃহীন এক দুরন্ত বালক ছমির শেখ। ফসল বোনার ওস্তাদিতে দশগ্রামে তার সুনাম আছে। বন্যা-খরা তথা গ্রামের শত বিপদে বৃক্ষের ছায়ার মতো তাকে সবাই কাছে পায়। যাত্রাপালার অভিনয়ে তার জুড়ি মেলা ভার। গ্রামের সবাই তাকে স্নেহ করে, যেমন প্রকৃতি করে গ্রামকে। ক. চাষির ছেলের ‘গা-খানি’ দেখতে কেমন? খ. “চাষিদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়”- চরণটির মাধ্যমে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপক ও ‘রূপাই’ কবিতার আলোকে তোমার দেখা কোনো পল্লিগ্রামের বর্ণনা দাও। ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘রুপাই’ কবিতার মূলভাবের খণ্ডাংশ মাত্র’- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। |
উত্তরঃ
ক. চাষির ছেলের ‘গা-খানি’ দেখতে শাওন মাসের তমাল তরুর মতো।
খ. “চাষিদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়” — এই চরণে কবি বলতে চেয়েছেন, রুপাই শুধু চেহারায় নয়, গুণে, কাজে ও ব্যবহারে সবাইকে মুগ্ধ করেছে। সে গ্রামের খেলাধুলা, গান, লাঠি-নাচ, এমনকি চাষাবাদেও দক্ষ। তার ব্যবহার ও পরিশ্রম দেখে সবাই তাকে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। কালো গায়ের রঙ থাকলেও সে মন ও গুণের দিক থেকে সবার সেরা। এই কারণেই সে গ্রামের সবার হৃদয় জয় করতে পেরেছে। কবি এখানেই রঙ নয়, মানুষের গুণকে বড় করে দেখিয়েছেন।
গ. আমি আমার এলাকায় এমন এক পল্লিগ্রাম দেখেছি, যেখানে অনেকটা ‘রুপাই’ কবিতার মতোই মানুষজন সহজ-সরল ও পরিশ্রমী। সেখানে এক ছেলে আছে, তার নাম রহিম। সে গায়ে কালো হলেও মন থেকে খুব ভালো। সে মাঠে কাজ করে, আবার গ্রামের নাটকে অভিনয়ও করে। গ্রামের যে কোনো বিপদে সে ছুটে যায় সবার আগে। ছোট-বড় সবাই তাকে ভালোবাসে, ঠিক যেমন ‘রুপাই’কে সবাই স্নেহ করে। তার চোখে-মুখে আত্মবিশ্বাস, গলায় গান, আর শরীরে কাজের জোর। রঙ নয়, তার গুণই তাকে সবার প্রিয় করে তুলেছে। আমার দেখা এই গ্রাম ও রহিমের মতো ছেলেরা যেন ‘রুপাই’ কবিতার বাস্তব রূপ।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘রুপাই’ কবিতার মূল ভাবের একটি ছোট অংশ মাত্র, কারণ এখানে একজন পল্লিগ্রামের ছেলে রুপাইয়ের জীবন ও গুণাবলী বর্ণনা করা হয়েছে। কবিতার মূল ভাব হলো সাধারণ গ্রামের মানুষের কষ্ট, পরিশ্রম ও গুণাবলীর মাধ্যমে তারা কিভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়। উদ্দীপকেও দেখা যায় ছমির শেখ নামের ছেলে গ্রামের দুঃসময়ে সবাইকে সাহায্য করে, খেলায় ও সংস্কৃতিতে সেরা। যেমন ‘রুপাই’ কবিতায় কালো চাষার ছেলে রুপাই সব কাজেই সেরা, তেমনি উদ্দীপকেও দেখা যায় পল্লিগ্রামের ছেলে সমাজের জন্য এক অনুপ্রেরণা। এই দুইটিতে গ্রামের মানুষের মূল্যবান গুণাবলী, সাহস ও ভালোবাসার কথা উঠে এসেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘রুপাই’ কবিতার ভাবের প্রতিচ্ছবি ও মূলভাবের খণ্ডাংশ মাত্র।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [জে. এস. সি পরীক্ষা বরিশাল বোর্ড ২০১৮] হরিপদ কাপালি স্বশিক্ষিত কৃষক। তিনি নতুন জাতের একটি ধান উদ্ভাবন করেন। এই জাতের ধানে অধিক ফসল উৎপাদন হয়। প্রথমে আশেপাশের গ্রামের লোকেরা এই ধান উৎপাদনে এগিয়ে আসে। এ ধানের সুনাম শুনে পার্শ্ববর্তী জেলার কৃষকেরাও উৎপাদনে এগিয়ে আসে। দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে যায় হরি ধান। হরিপদ কাপালি কৃষকের গর্ব। ক. ‘শাল-সুন্দি-বেত’ কী? খ. ‘কালো চোখের তারা দিয়েই সকল ধরা দেখি’- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের হরিপদ কাপালির সঙ্গে ‘রূপাই’ কবিতার রূপাইয়ের সাদৃশ্য নির্ণয় কর। ঘ. উদ্দীপকের সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়টিই ‘রূপাই’ কবিতার একমাত্র বর্ণিত বিষয় নয়- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিচার কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [জে. এস. সি পরীক্ষা ময়মনসিংহ বোর্ড ২০১৯] সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা, দেশমাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা। দধীচি কি তাহার চেয়েও সাধক ছিল বড়? পুণ্য অত হবে নাক সব করিলেও জড়। ক. ‘রূপাই’ কবিতায় উল্লিখিত ‘পাগাল’ শব্দের অর্থ কী? খ. ‘শাল-সুন্দি-বেত’ কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের সাথে ‘রূপাই’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়টি ছাড়াও ‘রূপাই’ কবিতায় ‘রূপাই’-এর আরও গুণের কথা উল্লেখ আছে।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [জে. এস. সি পরীক্ষা ঢাকা বোর্ড ২০১৮] উদ্দীপক-১: কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক মেঘলা দিনে দেখেছিলাম মাঠে কালো মেয়ের কালো হরিণ চোখ। ঘোমটা মাথায় ছিল না তার মোটে মুক্ত বেণি পিঠের ‘পরে লোটে। উদ্দীপক-২: ময়মনসিংহের অজপাড়াগাঁয়ের কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিশোরী ফুটবল দল বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ চ্যাম্পিয়ন হলে সারাদেশে কলসিন্দুরের নাম ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তাদের কারণে ওই গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে। এখন কলসিন্দুর একটি আদর্শ গ্রাম। এখানকার মেয়েরা এখন বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের নাম-ছড়াচ্ছে। গ্রামবাসী এখন তাদের জন্য গর্ববোধ করে। ক. জসীমউদ্দীন কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন? খ. “কালো মুখেই, কালো ভ্রমর, কীসের রঙিন ফুল!” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপক-১-এ ‘রূপাই’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটির বর্ণনা কর। ৩ ঘ. উদ্দীপক-২ ‘রূপাই’ কবিতার মূলভাবকে তুলে ধরে কি? যুক্তি দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [জে. এস. সি পরীক্ষা রাজশাহী বোর্ড ২০১৭] শ্যামলীর একমাত্র ছেলে বাঁধন। গায়ের রং কালো হলেও বাঁধন পড়ালেখায়, খেলাধুলায় পারদর্শী। এ বছর জাতীয়ভাবে স্কাউট হিসেবে রাষ্ট্রপতি এওয়ার্ড অর্জন করলে চারিদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। শ্যামলী গর্ব করে বলে- আমার এ কালো ছেলে একদিন দেশের বাইরে গিয়েও দেশের সুনাম অর্জন করবে। ক. কালো দতের কী দিয়ে কবি কেতাব কোরান লেখেন? খ. ‘আখড়াতে তার বাঁশের লাঠি অনেক মানে মানী’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপকের শ্যামলীর মনোভাবের সাথে ‘রূপাই’ কবিতায় কবির মনোভাবের বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের ভাবনা ‘রূপাই’ কবিতার মূল চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। খেতের পরে খেত চলেছে, খেতের নাহি শেষ সবুজ হাওয়ায় দুলছে ও কার এলো মাথার কেশ। সেই কেশেতে গয়না পরায় প্রজাপতির ঝাঁক, চক্ষুতে জল ছিটায় সেথা কালো কালো কাক। সাদা সাদা বক-কনেরা রচে সেথায় মালা, শরৎকালের শিশির সেথা জ্বালায় মানিক আলা। তারি মায়ায় থোকা থোকা দোলে ধানের ছড়া; মার আঁচলের পরশ যেন সকল অভাব-হরা। ক. কবিতায় ‘মরণ’-এর রং কী? খ. কবিতায় রূপাইকে বাপের বেটা বলার কারণ কী? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটি ‘রুপাই’ কবিতার কোন অংশের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “মিল থাকলেও উদ্দীপকের বিষয়বস্তু এবং ‘রূপাই’ কবিতার বিষয়বস্তু এক নয়।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। নন্দ বাড়ির হত না বাহির, কোথা কী ঘটে কী জানি, চড়িত না গাড়ি, কী জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি। নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে কলিশন হয়, হাঁটিলে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়। তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল। সকলে বলিল, “ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল। ক. চাষার ছেলের মাথার চুল কেমন? খ. কবির দৃষ্টিতে কৃষক সবার কাছে দামি বলে গণ্য হয়েছে কেন? বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকটি ‘রূপাই’ কবিতার রূপাইয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে কীভাবে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের মূলভাব এবং ‘রূপাই’ কবিতার মূলভাব পরস্পর বিপরীতধর্মী।”- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। “রাখাল ছেলে! রাখাল ছেলে! সারাটা দিন খেলা, এ যে বড় বাড়বাড়ি, কাজ আছে যে মেলা।” “কাজের কথা জানিনে ভাই, লাঙল দিয়ে খেলি নিড়িয়ে দেই ধানের ক্ষেতের সবুজ রঙের চেলী। সরষে বালা নুইয়ে গলা হন্দে হাওয়ার সুখে মটর বোনের ঘোমটা খুলে চুমু দিয়ে যায় মুখে! ঝাউয়ের ঝাড়ে বাজায় বাঁশী পউষ-পাগল বুড়ী, আমরা সেথা চষতে লাঙল মুর্শীদা-গান জুড়ি। খেলা মোদের গান গাওয়া ভাই, খেলা-লাঙল-চষা, সারাটা দিন খেলতে জানি, জানিই নেক বসা।” ক. চাষার ছেলের বাহু কীসের মতো? খ. কার নামেতে সব গাঁ নামি হবে? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের রাখাল ছেলের সাথে ‘রূপাই’ কবিতার চাষার ছেলের কোন বিষয়টির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘রূপাই’ কবিতার চাষার ছেলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় মাত্র, কবিতার সমগ্র ভাব নয়।”- বিশ্লেষণ কর। |
নিচে উত্তরসহ রুপাই কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।