রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতাটি শ্রমজীবী মানুষ রানারদের নিয়ে লেখা। তাদের কাজ হচ্ছে গ্রাহকদের কাছে ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনের চিঠি পৌঁছে দেওয়া। এই পোস্টে রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
সামাদ সাহেব ব্যাংকে ক্যাশিয়ার হিসেবে ৩০ বছর যাবৎ কর্মরত আছেন। সবার আগে অফিসে আসেন এবং সবশেষে অফিস ত্যাগ করেন। একদিন ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে অপরাহে তিনি বাড়ি যান। পরদিন যথাসময়ে তিনি ফিরে আসেন। তার কারণে কারো এতটুকু কষ্ট যাতে না হয় সে ব্যাপারে তিনি বেশ সচেতন।

ক. রানার ভোরে কোথায় পৌছে যাবে?

খ. ‘রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে’ রানার কেন ছোটে?

গ. উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর ৷

ঘ. “সামাদ সাহেব ‘রানার’ চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

উত্তরঃ

ক. রানার ভোরে শহরে পৌছে যাবে।

খ. ‘রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ঘোটে।’- এ কথার মধ্য দিয়ে দায়িত্বে অবহেলা না করে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রানারের ছুটে চলাকে বোঝানো হয়েছে।

মানুষের সুখ-দুঃখের সংবাদবাহক হিসেবে রানার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পিঠে খবারের বোঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে সে ছুটে চলে, ঝুমঝুম বৃষ্টিতে বা কষ্টকর আবহাওয়াতেও। কবি এখানে মানুষের জীবনযাপন, দুঃখবোধ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে সততার দিকটি তুলে ধরেছেন। রানার এতটাই দায়িত্বশীল যে, কোনো বাধা তাকে থামাতে পারে না। নির্জন রাত, দুর্গম পথ, দস্যুর ভয় বা খারাপ আবহাওয়া সবকিছু উপেক্ষা করে সে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে চায়। সূর্য ওঠার আগেই সে পৌঁছানোই তার প্রধান লক্ষ্য। তাই নির্জন পথে তার সবচেয়ে বড় ভয় হল কখন সূর্য উঠবে।

গ. উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের মাঝে ‘রানার’ কবিতার রানার চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি হলো পেশাগত দায়িত্ববোধ।
পেশাগত দায়িত্ব পালনে কখনো অবহেলা করা উচিত নয়। সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষরা তাদের দায়িত্ব পালন করে সভ্যতার অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করে।

উদ্দীপকে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সামাদ সাহেবের দায়িত্ববোধ, সততা ও সময়নিষ্ঠার বিষয়টি দেখানো হয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়ি গেলেও পরের দিন তিনি অফিসে সময়মতো পৌঁছেছেন। ‘রানার’ কবিতায় রানারও পেশাগত দায়িত্ব পালনে অতান্ত সচেতন। পিঠে খবরের বোঝা ও টাকার বোঝা নিয়ে রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন জ্বালিয়ে সে ছুটে চলে। ক্ষুধার যন্ত্রণা থাকা সত্ত্বেও সে তার দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্দীপক ও কবিতায় উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যায় দুজনই কর্তব্যনিষ্ঠ ও সময়নিষ্ঠ পেশাজীবী।

ঘ. ‘সামাদ সাহেব রানার চরিত্রের বিশেষ দিককে ধারণ করলেও রানার স্বতন্ত্র’ মন্তব্যটি যথার্থ।
সমাজে নানা পেশা ও বৈশিষ্ট্যের মানুষ বসবাস করে। পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে এদের মধ্যে মিল থাকলেও জীবনযাপন, দুঃখবোধ বা কাজের ধরনে মিল কম দেখা যায়।

উদ্দীপকে সামাদ সাহেব ব্যাংকে ৩০ বছর ধরে ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল, কারও কষ্ট যাতে না হয় সে বিষয়ে সচেতন। অফিস সময়মতো আসেন এবং কাজ শেষে যথাসময়ে ত্যাগ করেন। ভাইয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়ি গেলেও পরের দিন তিনি অফিসে উপস্থিত থাকেন। উদ্দীপকে দারিদ্র্যের বিষয় নেই, যা ‘রানার’ কবিতায় স্পষ্ট। ক্ষুধিত রানারের জীবনযন্ত্রণা শহর বা গ্রামের সাধারণ মানুষ জানে না।

উদ্দীপকের সামাদ সাহেবের দায়িত্ববোধ ও সময়নিষ্ঠা রানারের চরিত্রের একটি বিশেষ দিক ধারণ করে। তবে রানার একজন শ্রমজীবী, নিম্নশ্রেণির মানুষের প্রতিনিধি, যিনি অসাম্য ও অমানবিকতার শিকার। সামাদ সাহেব এই চরিত্রের সঙ্গে মিলিত নন। তাই রানার চরিত্র স্বতন্ত্র। এ কারণে প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [রাজশাহী বোর্ড ২০২২]
লাল আগুন ছড়িয়ে পড়েছে দিগন্ত থেকে দিগন্তে, কী হবে আর কুকুরের মতো বেঁচে থাকায়? কত দিন তুষ্ট থাকবে আর অপরের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট হাড়ে? মনের কথা ব্যক্ত করবে ক্ষীণ অস্পষ্ট কেউ-কেউ শব্দে? ক্ষুধিত পেটে ধুঁকে ধুঁকে চলবে কত দিন?

ক. দস্যুর চেয়ে রানারের বেশি ভয় কিসে?

খ. “এর দুঃখের চিঠি জানি কেউ পড়বে না কোনো দিনও”- বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? 

গ. উদ্দীপকের ‘কুকুরের মতো বেঁচে থাকা’- ‘রানার’ কবিতায় রানারের জীবনের যে দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘রানার’ কবিতার আংশিক রূপ মাত্র”-উক্তিটি মূল্যায়ন কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [সিলেট বোর্ড ২০২২]
শাহেদ একজন হকার। প্রতিদিন সকাল হলেই সে খবরের কাগজ নিয়ে দ্বারে দ্বারে যায়। এটাকে সে অনেক বড় দায়িত্ব মনে করে। সে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেও দায়িত্ব পালন করে। এতে তার কোনো ক্লান্তি নেই। স্বল্প পারিশ্রমিকেও তার অসন্তুষ্টি নেই। সে মনে করে, টাকার চেয়ে দায়িত্ব বড়।

ক. কত বছর বয়সে সুকান্ত ভট্টাচার্য মারা যান?

খ. রানার প্রতিদিন কেন ছুটে চলে?

গ. উদ্দীপকে ‘রানার’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘রানার’ কবিতার মূলভাবের আংশিক রূপ”-উক্তিটি মূল্যায়ন কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [ঢাকা বোর্ড ২০২৪]
সান্তাহার রেল স্টেশনে সিগন্যাল ম্যান ফজু মিয়ার একমাত্র সন্তান অসুস্থ। তাই নিয়ে সে গত রাতে খুব ব্যতিব্যস্ত ছিল। এদিকে রাত ৩ টায় ‘বাংলার দূত’ ট্রেনটি স্টেশনের দিকে ধেয়ে আসছিল। একই । সময়ে বিপরীত দিক থেকে আন্তঃনগর ট্রেন এসে পড়লে সিগন্যাল না দেওয়ায় ট্রেন দুটি দুর্ঘটনায় কবলিত হয়।

ক. ‘রানার’ কবিতায় কোনটিকে ছোঁয়া যাবে না?

খ. ‘দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।’ ব্যাখ্যা কর। 

গ. উদ্দীপকে ফজু মিয়ার কার্যক্রমে ফুটে ওঠা দিকটি ‘রানার’ কবিতায় কীভাবে বৈসাদৃশ্যে পরিণত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. “রানারের সংসার ভাবনা যেন ফজু মিয়ার সংসারের ব্যতিব্যস্ততাকেও হার মানিয়েছে”- ‘রানার’ কবিতার আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [রাজশাহী বোর্ড ২০২০]
বাড়ির সকলের প্রতি সমান দায়িত্ব তার। কে, কখন চা খাবে, কখন ঔষধ খাবে; কোনো কিছুই তার বাদ পড়ে না। কারো কাপড় ময়লা হলে ধুয়ে ফেলা, খাওয়া-দাওয়ার খোঁজ নেয়া যেন তার প্রাত্যহিক রুটিন। গৃহিণীর কখন কী লাগবে তাও সে জানে। হেলেনার এমন কর্তব্যপরায়ণতায় সবাই মুগ্ধ। এগারো বছরের এই মেয়েটির প্রতি সবাই তাই খুব আন্তরিক। তার একটু সর্দি-জ্বর হলেও সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। গৃহের লোকদের এমন ব্যবহারে হেলেনা নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে।

ক. রানার দস্যুর চেয়ে বেশি ভয় পায় কাকে?

খ. রানারের কাছে পৃথিবীটা কালো ধোঁয়া মনে হয় কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকের হেলেনার সাথে ‘রানার’ কবিতার রানারের সাদৃশ্য বর্ণনা কর।

ঘ. উদ্দীপকের বাড়ির লোকজনের আন্তরিকতা ‘রানার’ কবিতার কবির চেতনাকে ধারণ করে কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও । 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২৪]
 শফিক ঢাকায় একটি কোম্পানিতে নাইটগার্ডের চাকরি করে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তার ডিউটি। সারা রাত কোম্পানির মালামালের পাহারাদারির গুরুদায়িত্ব সে বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করে। ছয় মাস পর পর সে ছুটিতে বাড়ি আসে। এদিকে তার স্ত্রী-সন্তানেরা তার পথ চেয়ে বসে থাকে কবে সে ফিরবে। স্বামীর কথা ভাবতে ভাবতে তার স্ত্রীর কত নির্ঘুম রাত কাটে।

ক. অবাক রাতের তারারা কীভাবে চায়?

খ. “জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে”- চরণটি ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে শফিকের স্ত্রীর মধ্যে ‘রানার’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. “উদ্দীপকের শফিক ‘রানার’ কবিতার রানারের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠেনি”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
সভ্যতা গড়েছি আমি/শ্রমে আর ঘামে-
সভ্যতার পাঁজরে আমি/বুনেছি আমার নামে।
হে পৃথিবী শোন,/পানির দামে বেচেছি আমি
শরীরের সব নুন।/আমি হতভাগ্য শ্রমিক
আমি চাই, পৃথিবী আমার ঘামের মূল্য দিক।

ক. রানার দস্যুর চেয়ে ভয় পায় কাকে?

খ. ‘জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে’- কেন?

গ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা চিত্রের সাথে ‘রানার’ কবিতার সাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর। 

ঘ. উদ্দীপকের শেষ চরণ ‘রানার’ কবিতার বিশেষ একটি দিককে প্রতিফলিত করেছে। মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
ঝড়ের রাত্রে, বৈশাখী দিনে,
বর্ষার দুর্দিনে অভিযাত্রিক। নির্ভীক তারা পথ লয় ঠিক চিনে।
‘হয়তো বা ভুল। তবু ভয় নেই, তরুণের তাজা প্রাণ
পথ হারালেও হার মানে নাকো, করে চলে সন্ধান
অন্য পথের, মুক্ত পথের, সন্ধানী আলো জ্বলে
বিনিদ্র আঁখি তারকার সম, পথে পথে তারা চলে।

ক. রানারের ছোটার সময় ঝুমঝুম করে কী বাজে?

খ. ‘এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?’ কথাটি কেন বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 

গ. অভিযাত্রিকের পথচলার সঙ্গে রানারের পথচলার সাদৃশ্য বুঝিয়ে লেখ। 

ঘ. উদ্দীপক ও ‘রানার’ কবিতা উভয়েরই মূল সুর এক ও অভিন্ন।-মূল্যায়ন কর। 
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। [সিলেট বোর্ড ২০২৩]
দৃশ্যকল্প-১: রহিম মিয়া বর্গাচাষি। রাত-দিন পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েও ন্যায্য অংশ পান না। জমির মালিক জোর করে ফসল নিয়ে নেন। এতে রহিমের মন দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়।

দৃশ্যকল্প-২: আবুল মিয়া একটি দোকানের কর্মচারী। নিয়মিত বেতন পান। থাকা-খাওয়াসহ কোনো সমস্যা হয় না। মালিক প্রতি বছর বেতন বৃদ্ধি করেন। সেও সততা ও পরিশ্রমের সাথে কাজ করে।

ক. ‘রানার’ কবিতায় শয্যায় একা বিনিদ্র রাত জাগে কে?

খ. ‘তার জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে সরে যায় বন’- একথা বলার কারণ ব্যাখ্যা কর। 

গ. দৃশ্যকল্প-১ এর সাথে ‘রানার’ কবিতার রানারের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।

নিচে উত্তরসহ রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ 

বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা

আমি কোনো আগন্তুক নই সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণি

তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

Related Posts

Leave a Comment