মাসি পিসি গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর-একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাসি পিসি’ গল্পটিতে নারী জীবনের নানা সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলে। গল্পের মূল চরিত্র আহ্লাদি, একজন তরুণী, যিনি স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার। তার জীবন এক অমানবিক দুঃখের চিত্র, যেখানে তাকে সহায়তার জন্য তার মাসি ও পিসির কাছে আশ্রয় নিতে হয়। এই পোস্টে মাসি পিসি গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা দিলাম।

মাসি পিসি গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন

১. “যুদ্ধের আয়োজন করে তৈরি হয়ে থাকে মাসি-পিসি” – ব্যাখ্যা কর।
এই উক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে, মাসি-পিসি নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সজাগ ও প্রস্তুত থাকে। গল্পে দেখা যায়, গোকুল ও তার গুন্ডাদের থেকে আহ্লাদির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাসি-পিসি রাতভর প্রস্তুতি নেন। মাসি-পিসি জানেন, তারা যদি কোনোভাবে আক্রমণের শিকার হন, তাহলে তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র পথ হবে নিজেদের রক্ষা করা। এজন্য তারা বঁটি, কাটারি হাতে নিয়ে প্রস্তুত থাকে, যেন তারা আক্রমণকারীদের প্রতিরোধ করতে পারে। এই প্রস্তুতি যুদ্ধের মতো মনে হয়, কারণ তাৎক্ষণিক বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে।

২. “নিজেকে তার ছ্যাঁচড়া, নোংরা, নর্দমার মতো লাগে” – কার, কেন?
এই উক্তিটি আহ্লাদির সম্পর্কে। স্বামীর বাড়ি থেকে অত্যাচারিত হয়ে মাসি-পিসির কাছে আশ্রয় নেওয়ার পর, আহ্লাদি গ্রামের মানুষের কুৎসিত দৃষ্টির শিকার হয়। গ্রামের লোকজনের নোংরা চোখে দেখার ফলে সে নিজেকে অপরাধী, নোংরা, এবং এক ধরনের অবজ্ঞা অনুভব করে। বাইরের দৃষ্টির কারণে তার আত্মসম্মান ও গৌরব ক্ষুণ্ন হয়, এবং সে নিজেকে নর্দমার মতো অনুভব করে।

৩. “মরণ ঠেকাতেই ফুরিয়ে আসছে তাদের জীবনীশক্তি” – ব্যাখ্যা কর।
এটি একটি দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি বর্ণনা করছে, যেখানে মাসি-পিসির জীবনের সংগ্রাম ক্রমশ আরো কঠিন হয়ে উঠছে। চারপাশে ক্ষুধার কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে। মাসি-পিসি তাদের জীবনধারণের জন্য অন্ন সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন, এবং তাদের জমানো অর্থও শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাই, তাদের জীবনীশক্তি ফুরিয়ে আসছিল, কারণ তারা জানত, যদি খাদ্য না পাওয়া যায়, তবে তাদেরও মৃত্যু নিশ্চিত। জীবনধারণের জন্য সংগ্রাম করতে করতে তাদের শরীর ও মন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।

৪. মাসি-পিসি আহ্লাদিকে স্বামীর বাড়ি পাঠাতে চায় না কেন?
মাসি-পিসি জানেন যে, আহ্লাদি তার স্বামীর বাড়িতে অত্যাচারের শিকার। আহ্লাদি নিজেই একবার তাদের কাছে এসে বলেছিল যে, স্বামী তাকে মারধর করে, যথাযথ যত্ন নেয় না, এবং তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থাও একেবারেই খারাপ। তাই তারা অত্যন্ত চিন্তিত যে, আহ্লাদি আবারও যদি স্বামীর বাড়িতে চলে যায়, তবে তার জন্য আরও অনেক নির্যাতন অপেক্ষা করছে। এর ফলে মাসি-পিসি আহ্লাদিকে স্বামীর বাড়ি পাঠাতে চাইছেন না, কারণ তারা চান না আহ্লাদি আবার সেই নির্মম অত্যাচারের শিকার হোক।

৫. “আহ্লাদিকে মাঝখানে নিয়ে শুয়েও মাসি-পিসির চোখে ঘুম আসে না কেন?”
মাসি-পিসির ঘুমহীনতা আসলে তাদের গভীর উদ্বেগ ও চিন্তার প্রতিফলন। তারা জানে, আহ্লাদি স্বামীর অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে তাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামে কয়েকজন নোংরা দৃষ্টিতে তাকে দেখছে, এবং তারা তাকে আক্রমণ করতে পারে এমন ভয়ও রয়েছে। মাসি-পিসি তার নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত এবং তাই, আহ্লাদিকে তাদের মাঝে শুইয়ে রেখেও তারা একদম শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না।

৬. “শোনো কানাই, এ কিন্তু একে নয় মোটে” – মাসি কেন একথা বলেছে?
এই উক্তিটি মাসি কানাইকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। কানাই, গোকুল ও তাদের দলবল নিয়ে মাসি-পিসির কাছে আসে এবং জানায় যে, তারা দারোগাবাবুর কাছে যেতে হবে। তবে মাসি-পিসি জানত, কানাইয়ের আসল উদ্দেশ্য ছিল আহ্লাদিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া। মাসি-পিসি বুঝতে পেরেছিলেন যে, কানাই তাদের সাথে মজা করতে বা তাদের সহজভাবে নিতে চাইছে না, তাই তিনি তার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে জানান যে, এটা কোনো হাস্যকর বিষয় নয়।

৭. মাসি-পিসি শাসসবজির ব্যবসা শুরু করে কেন?
মাসি-পিসি কঠিন অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে ছিলেন। তারা জানতেন, তাদের জীবিকার জন্য নতুন কোনো উপায় বের করতে হবে, তাই তারা শাকসবজি বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসা তাদের কাছে নতুন ছিল, তবে এর মাধ্যমে তারা কিছু আয় করতে পারতেন। তারা গ্রামের শাকসবজি শহরে বিক্রি করতে গিয়ে সামান্য অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করতেন, যাতে তাদের সংসারের খরচ চালানো যায় এবং আহ্লাদি ও নিজেদের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করা যায়।

৮. মাসি-পিসির জীবন সম্পর্কে লেখ।
মাসি-পিসি দুটি বিধবা নারী, যারা কঠিন দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের জীবন সংগ্রামপূর্ণ, যেখানে তারা ধান ভানা, কাঁথা সেলাই, ডালের বড়ি বানানো, হোগলা গাঁথা ইত্যাদি কাজ করে সংসার চালান। তারা শহরের বাজারে তরিতরকারি ও ফলমূল বিক্রি করেও সামান্য আয় করেন। খাবারের অভাব প্রায়ই তাদের পিছু ছাড়ে, এবং বছরজুড়ে দুইজনের জন্য দু’টি পোষাকই সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। এত কষ্টে জীবন যাপন করলেও, তারা আহ্লাদি নামক অসহায় এক তরুণীকে তাদের আশ্রয় দিয়ে তার দেখাশোনা করেন।

৯. মাসি-পিসির ডাকে আশেপাশের অনেক মানুষ কেন ছুটে এসেছিল?
মাসি-পিসি যখন তাদের বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আশেপাশের লোকদের ডেকে সাহায্য চায়, তখন অনেক মানুষ ছুটে আসে। কারণ, তারা জানে, মাসি-পিসি এবং আহ্লাদি নির্দোষ ও অসহায়। তাদের সাহায্য প্রয়োজন, বিশেষত গোকুলের গুন্ডারা যখন তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। সেই সময়, আশেপাশের লোকজন মাসি-পিসির আহ্বানে সাড়া দেয়, কারণ তারা বুঝতে পারে, এই অসময়ের মধ্যে কেউ যদি তাদের পাশে না দাঁড়ায়, তবে কোনোদিন সাহায্য পাওয়া যাবে না।

১০. আহ্লাদিকে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যেতে হয় কেন?
আহ্লাদি তার স্বামীর অত্যাচারে এতই অতিষ্ঠ ছিল যে, তাকে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল। তার স্বামী জগু নেশাখোর এবং অত্যন্ত নির্দয় ছিল। সে নেশার জন্য টাকা না পেলে আহ্লাদিকে মারধর করত, কখনো তাকে ঘরের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন করত। এমন অত্যাচারের শিকার হয়ে, আহ্লাদি নিজেকে আর সহ্য করতে পারেনি এবং তাকে তার শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল।

১১. মাসি-পিসির জমানো টাকা কেন খরচ হয়ে গিয়েছিল?
দুর্ভিক্ষের সময়, মাসি-পিসি তাদের জমানো টাকা খরচ করে খাবার কিনেছিলেন। দেশে যখন মন্বন্তর বা খাদ্য সংকট ছিল, তখন কোথাও কাজ পাওয়া যাচ্ছিল না, আর তাদের হাতে যে সঞ্চিত টাকা ছিল, তা দিয়ে কোনোরকমে কিছু খাবার কিনে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছিলেন। এই কারণে তাদের সঞ্চিত সমস্ত অর্থ, রুপোর টাকা, আধুলি, সিকি, সবই খরচ হয়ে গিয়েছিল।

মাসি পিসি গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

১২. দুর্ভিক্ষের সময় মাসি-পিসিকে কেন সাংঘাতিকভাবে লড়তে হয়েছিল?
দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্যের অভাব ছিল চরম, আর মানুষের মধ্যে ক্ষুধার হাহাকার ছিল। মাসি-পিসি তাদের বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু খাদ্য পাওয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন। তাদের উপার্জনও খুব সীমিত ছিল, তাই তারা অত্যন্ত কঠিন পরিশ্রম করে চলছিল, নিজের জীবিকা এবং আহ্লাদির দেখাশোনা চালানোর জন্য। এই পরিস্থিতিতে দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করা তাদের জন্য ছিল এক কঠিন যুদ্ধ, যেখানে তাদের প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছিল খাদ্য এবং বেঁচে থাকার জন্য।

১৩. আহ্লাদিকে জগু কেন মারধর করে?
আহ্লাদির স্বামী জগু একজন নেশাখোর ও অত্যন্ত নিষ্ঠুর ব্যক্তি। নেশার টাকা জোগাড় করতে না পেরে, সে আহ্লাদিকে নির্যাতন করত। কখনো তাকে মারধর করত, কখনো খুঁটির সাথে বেঁধে অত্যাচার করত, আবার কখনো তাকে চরমভাবে অপমান করত। জগুর নেশার শখ এবং শারীরিক নির্যাতনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, আহ্লাদি তার অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে চলে আসে।

১৪. মাসি-পিসি রোজগারের জন্য কী উপায় খোঁজে?
মাসি-পিসি তাদের দুরাবস্থার মধ্যে নতুন উপায় খোঁজে নিজেদের আয় বৃদ্ধির জন্য। শাকসবজি বিক্রি শুরু করে তারা শহরে গিয়ে বাজারে বিক্রি করতে থাকে। এই ব্যবসা তাদের জন্য ছিল নতুন, তবে এটিই ছিল তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায়। তারা গ্রাম থেকে তরিতরকারি সংগ্রহ করে শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে শুরু করেছিল, যাতে তাদের কিছু আয় হয় এবং তাদের জীবিকা চলে।

১৫. জগু কেন মামলা করতে চাইল?
জগু, যে নিজের স্ত্রী আহ্লাদিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরিয়ে নিতে চায়, তার আসল উদ্দেশ্য ছিল শ্বশুরের সম্পত্তির লোভে আহ্লাদিকে ফেরত আনা। যদিও আহ্লাদি স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মাসি-পিসির কাছে আশ্রয় নিয়েছিল, তবুও জগু তার মালিকানা দাবি করতে চেয়েছিল। মাসি-পিসি তাকে ফিরিয়ে দিতে চায়নি, এবং আহ্লাদিও যেতে রাজি নয়। তাই জগু মামলা করে সেই অধিকারের জন্য লড়তে চেয়েছিল।

১৬. ঈষৎ তন্দ্রার ঘোরে আহ্লাদি শিউরে ওঠে কেন?
আহ্লাদি যখন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে ছিল, তখন তার মনে নানা দুশ্চিন্তা আক্রমণ করে। সে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যেতে চাইলেও, সেখানে ফেরার ভয়ে এবং নিজের অবস্থা চিন্তা করতে করতে শিউরে উঠেছিল। আহ্লাদি জানে, তার স্বামী জগু তাকে মারধর করবে, আর মাসি-পিসিকে ছাড়া তার কোনো সুরক্ষা নেই। এ কারণে, তার শিউরে ওঠা ছিল এক ধরনের ভয়ের প্রকাশ, যা তার মধ্যে অজ্ঞানভাবে কাজ করছিল।

১৭. আহ্লাদি কেন স্বামীর ঘরে যেতে চায় না?
আহ্লাদি তার স্বামীর ঘরে যেতে চায় না, কারণ সে জানে, তার স্বামী জগু একজন নেশাখোর এবং অত্যন্ত নিষ্ঠুর মানুষ। জগু তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত, তাকে মানসিকভাবে নিঃশেষিত করত। আহ্লাদি জানত, সে যদি আবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়, তবে সে আবার সেই একই নির্যাতন ও অবমাননার শিকার হবে। তাই, স্বামীর ঘরে ফিরে যাওয়ার ভয়ে এবং অত্যাচারের স্মৃতির তীব্রতা তাকে যেতে রাজি করছিল না।

১৮. রাতের বেলা কানাই পেয়াদা নিয়ে আসে কেন?
কানাই চৌকিদার, যে গোকুলের দলের সদস্য, রাতের বেলা মাসি-পিসির বাড়িতে আসে তাদের কাছারি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তার আসল উদ্দেশ্য ছিল, মাসি-পিসিকে জোর করে কাছারি বাড়ি নিয়ে গিয়ে গোকুলের কাছে তুলে দেওয়া। তবে, মাসি-পিসি তার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের অন্তর্নিহিত পরিকল্পনা ছিল, মাসি-পিসি যদি কাছারি বাড়ি চলে যান, তবে তারা আহ্লাদিকে গোকুলের হাতে তুলে দিতে পারবে।

১৯. মাসি-পিসি দুজনে কাঁথা-কম্বল ভিজিয়ে রাখে কেন?
মাসি-পিসি কাঁথা ও কম্বল ভিজিয়ে রাখে একান্তভাবে তাদের নিরাপত্তার জন্য। তারা অনুমান করতে পারে যে, শত্রুপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আক্রমণ চালাতে পারে। কানাই এবং গোকুলের দল তাদের কোনোভাবেই হালকাভাবে নিতে চায়নি, তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা আগেভাগে প্রস্তুতি নেয়। ঘরে আগুন লাগানোর চেষ্টা হলে তাড়াতাড়ি তা নেভানোর জন্য তারা কাঁথা ও কম্বল ভিজিয়ে রাখে।

২০. মাসি-পিসির রাতের বেলা কাছারিতে যেতে না চাওয়ার কারণ কী?
কানাই এবং গোকুলের দলের পরিকল্পনা বুঝে মাসি-পিসি রাতের বেলা কাছারিতে যেতে রাজি হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, মাসি-পিসিদের কাছারি নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে চক্রান্ত করা। মাসি-পিসি আঁচ করতে পারে, তাদের যদি কাছারি পাঠানো হয়, তবে তারা আহ্লাদিকে বিপদে ফেলে দিতে পারে। তারা জানত, কানাইয়ের সঙ্গে আসা লোকেরা ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে আসেনি, তাই তাদের নিরাপত্তার জন্য তারা কাছারিতে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।

২১. “বজ্জাত হোক, খুনে হোক, জামাই তো” – ব্যাখ্যা কর।
এটি মাসি-পিসির সহজাত মমতা প্রকাশ করে। যদিও তারা জানে জগুর চরিত্র ভালো নয়, তবুও জামাই হিসেবে তিনি আহ্লাদির স্বামী। সমাজে জামাইকে সম্মান করা হয়, তাই তারা জামাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো খারাপ কথা বলতে চায় না। মাসি-পিসি মনে করেন, জগু যদি ভালো না হয়, তবুও আহ্লাদি তার স্ত্রী, এবং একসময় তারা সুখে সংসার করবে এমন আশা তাদের মনে থাকে।

২২. মাসি-পিসি হাতে কাটারি-বঁটি তুলে নিয়েছিল কেন?
কানাই এবং তার দলের হাতে তাদের জীবন সঙ্কটাপন্ন হওয়ার কারণে মাসি-পিসি নিজেদের রক্ষা করার জন্য কাটারি-বঁটি হাতে তুলে নিয়েছিল। তারা জানত, শত্রুপক্ষ তাদের ওপর হামলা করতে পারে এবং আহ্লাদিকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য তারা আত্মরক্ষার জন্য বঁটি ও কাটারি হাতে প্রস্তুত ছিল, যাতে কোনো বিপদে পড়লে তারা নিজেদের ও আহ্লাদিকে রক্ষা করতে পারে।

২৩. রহমান কেন আহ্লাদির দিকে তাকিয়ে থাকে?
রহ্মান, যে তার কন্যাকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে তার মৃত্যুর শিকার হয়েছিল, সেই স্মৃতিতে ভাসছেন। তার মেয়ের মতোই আহ্লাদি স্বামীর অত্যাচারের শিকার। রহমান জানে যে, আহ্লাদি এখনো সেই একই ধরনের নির্যাতন সহ্য করছে, এবং তাই তার চোখে অশ্রু এসে যায়। আহ্লাদির দিকে তাকিয়ে তিনি তার হারানো কন্যার শোক অনুভব করেন, যা তাকে অত্যন্ত দুঃখিত করে তোলে।

Related Posts

Leave a Comment