আবুল ফজলের ‘মানব কল্যাণ’ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো এবং সমস্যাগুলো মোকাবেলা করা। নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে, যাতে মুক্তবুদ্ধির সাহায্যে মানব-কল্যাণ প্রকৃত অর্থে সম্ভব হয়। এই পোস্টে মানব কল্যাণ মূলভাব বা মূল বিষয়বস্তু – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম। বড় মূলভাবটি পড়লে ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
Table of Contents
মানব কল্যাণ মূলভাব
মানব-কল্যাণের ধারণা সাধারণত আমরা মানব-কল্যাণের ধারণাটি সস্তা এবং মামুলি অর্থে গ্রহণ করি, যেমন ভিক্ষা দেওয়াকে মানব-কল্যাণ মনে করা। কিন্তু এটি মানুষের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, “উপরের হাত নিচের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ,” অর্থাৎ দানকারী ও দানগ্রহীতার মধ্যে পার্থক্য আছে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব শুধু প্রশাসন নয়, নাগরিকদের আত্মমর্যাদা ও মানবিক গুণাবলীর উন্নয়ন ঘটানো। মানব-কল্যাণের উদ্দেশ্য হলো মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করা, যা দয়া বা ভিক্ষার মাধ্যমে নয়। উদাহরণ হিসেবে, নবী একজন ভিক্ষুককে কুড়াল কিনে দিয়ে বলেন, “এটি দিয়ে জীবিকা উপার্জন করো,” যা স্বাবলম্বী হওয়ার উপায় নির্দেশ করে। সঠিক মানব-কল্যাণের জন্য পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা প্রয়োজন। রাষ্ট্রের এবং সমাজের সকল স্তরের দায়িত্বও এই উন্নয়নে আছে। আমাদের চিন্তা-ভাবনা পাল্টাতে হবে এবং নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজতে হবে, যাতে মুক্তবুদ্ধির সাহায্যে মানব-কল্যাণ সম্ভব হয়।
মানব কল্যাণ মূলভাব বড় করে
প্রবন্ধের মূল বিষয় হল মানব-কল্যাণ এবং তার প্রকৃত অর্থ। সাধারণত আমরা মানব-কল্যাণের ধারণাটি সস্তা এবং মামুলি অর্থে গ্রহণ করি, যেমন ভিক্ষা দেওয়াকে মানব-কল্যাণ মনে করা। তবে, এতে মানুষের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এবং এর প্রকৃত উদ্দেশ্য বোঝা যায় না।
ইসলামের নবী বলেছেন, ‘উপরের হাত সব সময় নিচের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ।’ অর্থাৎ দানকারী এবং দানগ্রহীতা একে অপরের থেকে ভিন্ন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব কেবল প্রশাসন চালানো নয়, বরং নাগরিকদের আত্মমর্যাদা ও মানবিক গুণাবলীর উন্নয়ন ঘটানো। মানব-কল্যাণের অর্থ দয়ার ভিত্তিতে দান-খয়রাত নয়, বরং মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি ও মানবিক চেতনার বিকাশ। একজন ব্যক্তির উদাহরণ দিয়ে দেখা যায়, নবী ভিক্ষা চাইতে আসা এক ব্যক্তিকে একখানা কুড়াল কিনে দিয়ে বলেন, “এটি দিয়ে তুমি বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা রোজগার করো।” এর মাধ্যমে তিনি শুধু স্বাবলম্বন নয়, মর্যাদার সাথে জীবনযাপনের উপায়ও দেখান।
মানব-কল্যাণের জন্য সবার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের প্রয়োজন, যেখানে সমাজের সবার কল্যাণ একসাথে যুক্ত। রাষ্ট্রের এবং সমাজের সকল স্তরের উপর এই দায়িত্ব বর্তায়, পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষা ও কর্মস্থল পর্যন্ত। মানব-কল্যাণের উদ্দেশ্য হল মানুষের মনুষ্যত্বকে বৃদ্ধি করা, যা দয়া বা ভিক্ষার মাধ্যমে হতে পারে না। বর্তমানে আমাদের সমাজে মানব-কল্যাণের মূল অন্তরায় হল রাষ্ট্র ও জাতিগত চেতনা, যা মানুষকে বিভক্ত করে। সঠিক মানব-কল্যাণের জন্য প্রয়োজন সমতা ও সহযোগিতা। বাঙালির মহৎ চিন্তকদের, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের আদর্শ আমাদের সামনে রয়েছে। মানব-কল্যাণ অর্থাৎ মানুষের মর্যাদা এবং স্বাভাবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক।
Related Posts
- আঠারো বছর বয়স কবিতার ব্যাখ্যা – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- বিদ্রোহী কবিতার মূলভাব সহজ ভাষায় -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- বিলাসী গল্পের সারাংশ বা মূল বিষয়বস্তু – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- আমি কিংবদন্তির কথা বলছি কবিতার ব্যাখ্যা ও মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ কবিতার মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- আমি কিংবদন্তির কথা বলছি জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- সোনার তরী কবিতার লাইন বাই লাইন ব্যাখ্যা ও মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা
- বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতার মূলভাব – একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা