লেখক বিপ্রদাশ বড়ুয়া-এর লেখা একটি অসাধারণ ভ্রমণকাহিনী—”মংডুর পথে”। এই ভ্রমণকাহিনীতে লেখক ২০০১ সালের ২৪ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডু ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। এই পোস্টে মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] ১. নারকেল শ্রীলংকানদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। নারকেল তেল ছাড়া তারা কোনো খাবার রান্না করে না। কারিতে নারকেল তেল ছাড়াও গুঁড়া শুঁটকি মাছ ব্যবহার করা হয়। এই গুঁড়া শুঁটকিকে তারা মসলার অংশ হিসেবে দেখে। এরা রান্নায় প্রচুর মসলা এবং লাল মরিচ ব্যবহার করে। ২. শ্রীলংকার রাস্তায় যেসব তরুণী চলাচল করে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ অতি সাধারণ। দামি পোশাক ও সাজগোজের দিকে তাদের যথেষ্ট আগ্রহ আছে বলে মনে হয় না। স্পষ্টতই মনে হয়, এরা জীবন-যাপনে সহজ-সুন্দর এবং এতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। ক. সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো বস্তুটির নাম কী? খ. ‘ব্যান্ডেল রোড তাদের স্মৃতি বহন করছে’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপক-১-এ ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তার বর্ণনা দাও। ঘ. মিয়ানমারবাসীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির পুরো দিকটিই উদ্দীপক-২-এ প্রকাশ পেয়েছে- ‘মংডুর পথে’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর। |
উত্তরঃ
ক. সেলাইবিহীন লুঙ্গির মতো বস্তুটির নাম চীবর।
খ. ব্যান্ডেল রোড বলতে চট্টগ্রামে সেই রাস্তার কথা বোঝানো হয়েছে যা পর্তুগিজদের প্রাচীন বসতির নাম ‘ব্যান্ডেল’ থেকে নামকরণ করা হয়েছে। পর্তুগিজরা অনেক আগেই চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেছিল এবং তাদের সেই বসতির নাম ছিল ব্যান্ডেল। তাই এই রোডটি তাদের ঐতিহাসিক স্মৃতি বহন করে। অর্থাৎ, ব্যান্ডেল রোডের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সঙ্গে বিদেশী সংস্কৃতির প্রাচীন যোগাযোগ বোঝানো হয়েছে। এটি চট্টগ্রামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
গ. উদ্দীপক-১-এ ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। মংডুর বাড়িগুলোর সামনে অনেক নারকেল গাছ দেখা যায়। সেই নারকেল গাছের গোড়ার দিকে মাথা সমান উচ্চতায় অর্কিড গাছ জন্মেছে, যাতে সাদা ও রঙিন ফুল ফোটে। এটি মংডুর প্রকৃতির একটি সুন্দর রূপ তুলে ধরে।
শ্রীলংকায়ও নারকেল খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা নারকেলতেল ছাড়া কোনো খাবার রান্না করে না। তাদের রান্নায় অনেক মসলা ও লাল মরিচ ব্যবহার হয়। এই বিষয়টি লেখকের ভ্রমণকাহিনিতে উল্লেখ করা মারমা ও চাকমা সম্প্রদায়ের রান্নার সঙ্গে মিল রয়েছে। যেমন: তারা ধানিলঙ্কা পুড়িয়ে, তাতে নুন ও পেয়াজ দিয়ে ভর্তা করে খায়। এতে বোঝা যায়, খাবারের ক্ষেত্রে দুই দেশের সংস্কৃতিতে কিছুটা সাদৃশ্য আছে।
সুতরাং, বলা যায় ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনিতে মংডুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং খাবারের বিষয় দুটি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপক-২-এ মিয়ানমারবাসীদের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির পুরো দিকটি প্রকাশ পেয়েছে—মন্তব্যটি ঠিক নয়।
প্রতিটি দেশের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিতে কিছু ভিন্নতা থাকে। কখনও কিছুটা মিল দেখা গেলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পার্থক্য বেশি হয়। তাই এক দেশের সংস্কৃতিকে পুরোপুরি আরেক দেশের সঙ্গে মেলানো ঠিক নয়।
উদ্দীপক-২-এ শুধু শ্রীলংকার মেয়েদের পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শ্রীলংকার মেয়েরা খুব সাধারণ পোশাক পরে এবং সাজগোজে আগ্রহী নয়। তারা সহজ-সরল জীবনযাপন করে এবং এতে তারা শান্তি পায়।
এই বিষয়টি মিয়ানমারবাসীর জীবনযাত্রার কিছু অংশের সঙ্গে মিলে গেলেও, পুরো সংস্কৃতি বা জীবনধারা বোঝানো হয়নি। কারণ ‘মংডুর পথে’ রচনায় শুধু নারীদের পোশাক নয়, বরং তাদের ব্যবসা, ধর্ম, প্রকৃতি ও সমাজের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। এই বিষয়গুলো উদ্দীপক-২-এ নেই।
তাই বলা যায়, উদ্দীপক-২ থেকে মিয়ানমারবাসীর পুরো জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির চিত্র বোঝা যায় না। ফলে মন্তব্যটি সম্পূর্ণভাবে সঠিক নয়।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [জে. এস. সি. পরীক্ষা যশোর বোর্ড ২০১৯] উদ্দীপক-১: নাবিল মা-বাবার সাথে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে সমুদ্রসৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করে। সে ভুলা হাজারীর সাফারি পার্ক, রাবার বাগান, বৌদ্ধ মন্দির ইত্যাদি দেখে আনন্দ পেল। উদ্দীপক-২: খাসিয়া জনগোষ্ঠী কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা প্রচুর পান ও মধু চাষ করে। খাসিয়া মেয়েরা স্থানীয় বাজারে পান বিক্রি করে। তারা ‘কাজিম পিন’ নামক ব্লাউজ ও লুঙ্গি আর ছেলেরা পকেট ছাড়া শার্ট পরিধান করে, যার নাম ‘ফুংগ মারুং’। ক. বার্মায় কাদের খুব সম্মানের চোখে দেখা হয়? খ. ‘গ্লাভস পরে হাত ধোয়ার অবস্থা’ বলতে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপক-১ এ ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক-২ এর খাসিয়া ও ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির মিয়ানমারবাসীর মধ্যে নানাবিধ ঐক্য বিদ্যমান- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [জে. এস. সি. পরীক্ষা ময়মনসিংহ বোর্ড ২০১৯] দৃশ্যকল্প-১: বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে সাঁওতালদের বসবাস। সাঁওতাল নারীরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। কৃষিকাজ থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালির সকল কাজে তারা পারদর্শী। দৃশ্যকল্প-২: ‘পালামৌ’ এর কোল যুবতিদের গায়ের রং আবলুসের মতো কালো, সকলের কটিদেশে একখানি করিয়া ক্ষুদ্র কাপড় জড়ানো। কর্ণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বনফুল, মাথায় বড় বড় বনফুল। যুবতিরা পরস্পর ধরাধরি করিয়া দাঁড়াইয়া আছে। ক. আরাকান রাজ্যের ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীন রাজধানীর নাম কী? খ. ‘পথে পথে মিয়ানমারের যুবতি-তরুণীরা।’- ব্যাখ্যা কর। গ. দৃশ্যকল্প-২-এর সাথে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “দৃশ্যকল্প-১ যেন মংডুর স্বাধীন নারীদেরই প্রতিরূপ।”- যুক্তিসহ প্রমাণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [জে. এস. সি. পরীক্ষা ঢাকা বোর্ড ২০১৬] নদ-নদী ও বাংলাদেশ একই সুতোয় গাঁথা দুটি নাম। এদেশের মাটি ও মানুষের ক্ষেত্রে নদ-নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এদেশের সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি সবকিছুই নদীর সাথে। জড়িত। নওগাঁর পাহাড়পুর, বগুড়ার মহাস্থানগড়, কুমিল্লার লালমাই ও ময়নামতি এবং নরসিংদীর উয়ারী-বটেশ্বরসহ দেশের প্রাচীন সভ্যতার কেন্দ্রভূমিগুলো নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। ক. ‘পাইক্যা’-এর একচেটিয়া চালক কারা? খ. মিয়ানমারের সীমান্ত শহর মংডুর পথে নেমে লেখকের হৃদয় অচেনা আবেগে উপচে পড়ল কেন? বুঝিয়ে লেখ। গ. “বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতাগুলো যেমন নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল; মিয়ানমারেরও তেমনি।”- ‘মংডুর পথে’ রচনার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ঘ. “ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ একটি দেশের নানা বিষয় সম্পর্কে। জানতে পারে।” উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। দিনাজপুর বোর্ড ২০১৯ মাহিনের বাবা-মা সুযোগ পেলেই বিদেশে বেড়াতে যান। এবার বাবা-মায়ের সাথে ভুটান গিয়ে মাহিনের খুব ভালো লাগে। ভুটানিদের পোশাক, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করে। সে তাদের খাদ্যাভ্যাস দেখে অবাক হয়। কত বিচিত্র ধরনের খাবার ও কত বিচিত্র ধরনের পরিবেশন পদ্ধতি। আটা, সবুজ সবজি এবং আলু দিয়ে তৈরি ‘আলুটমা’ তাদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী জনপ্রিয় খাবার। ক. আলাওলের শ্রেষ্ঠ রচনা কোনটি? খ. “লুঙ্গি, ফুঙ্গি, প্যাগোডা- এই তিন মিলেই মিয়ানমার।”-উক্তিটি কেন করা হয়েছে? গ. উদ্দীপকের ভুটানিদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে মংডুর অধিবাসীদের খাদ্যাভ্যাসের বৈসাদৃশ্য বর্ণনা কর। ঘ. “মিল থাকলেও উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির মূলভাব ধারণ করে না।”- মন্তব্যটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। পালামৌ এর কোল যুবতিদের গায়ের রং আবলুসের মতো কালো, সকলের কটিদেশে একখানি ক্ষুদ্র কাপড় জড়ানো। কর্ণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বনফুল, মাথায় বড় বড় বনফুল। যুবতিরা পরস্পর কাঁধ ধরাধরি করিয়া দাঁড়াইয়া আছে। ক. শুক্লপক্ষ কী? খ. বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় পোশাক সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ। গ. উদ্দীপকের নারীদের সঙ্গে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির নারীদের সাদৃশ্য বর্ণনা কর। ৩ ঘ. “উদ্দীপকে ‘মংডুর পথে’ রচনার একটি দিক প্রকাশ পেলেও সমগ্র ভাব প্রকাশ পায়নি।”- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। সুমন কিছুদিন পূর্বে ভারতের বারাসাতে বেড়াতে গেল। সে তার মামার সাথে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখল। সেখানকার দু’চাকা বিশিষ্ট হাতে টানা রিকশা দেখে অবাক হলো। এটি দেখে আমাদের দেশে কুষ্টিয়া শহরের ছয় আসন বিশিষ্ট খোলা ভ্যানগাড়ির কথা মনে পড়ল। ঐ অঞ্চলের পোশাক-পরিচ্ছদ ও খাবার প্রায়ই মিল থাকলেও নামের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। ক. ‘ফুঙ্গি’ শব্দের অর্থ কী? খ. “ওদের বয়স শতাব্দী বা তারও বেশি” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপকে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির কোন দিকটি। আলোকপাত করছে বলে তুমি মনে কর? ঘ. “প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও ‘মংডুর পথে’ রচনার মূল সুর এক।”- মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। এত দুনিয়ার সব দেশের খানার এরা সমঝদার, সেই জন্য যেকোনো রেস্তোরাঁয় সব নেশনের খাদ্যের একটা না একটা নমুনা পাওয়া যাবেই। সবচেয়ে আশ্চর্য এই যে, পারীতে অল্প খরচে অনেকখানি তৃপ্তির সাথে খেতে পাওয়া যায়। রান্নাটা উঁচুদরের তো বটেই, রান্নাটা টাকা। ক. প্যাগোডা কী? খ. মংডুর মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদ কেমন? বর্ণনা কর। গ. উদ্দীপকের সাথে ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির সাদৃশ্য দেখাও। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণকাহিনির মর্মবাণী আমাদের সামনে মূর্ত করে তোলে।”- যথার্থতা নিরূপণ কর। |
নিচে উত্তরসহ মংডুর পথে সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।