বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এই রচনা, “বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন,” সাহিত্যিকদের জন্য একটি অসাধারণ দিকনির্দেশিকা। এতে তিনি নতুন লেখকদের উদ্দেশ্যে কিছু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। এই পোস্টে বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম সাল কত?
উত্তর: ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দ।
২। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: কাঁঠালপাড়া, চব্বিশ পরগনা।
৩। বাংলা ভাষায় প্রথম শিল্পসম্মত উপন্যাস রচনার কৃতিত্ব কার?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
৪। বঙ্কিমচন্দ্রের পিতার নাম কী?
উত্তর: যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
৫। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন?
উত্তর: ম্যাজিস্ট্রেট।
৬। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কোন পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন?
উত্তর: বঙ্গদর্শন।
৭। বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্যচর্চার সূচনা কোন পত্রিকায় হয়?
উত্তর: সম্বাদ প্রভাকর।
৮। বঙ্কিমচন্দ্রের রচিত প্রথম উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর: দুর্গেশনন্দিনী।
৯। বঙ্কিমচন্দ্রের ইংরেজি উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর: Rajmohon’s Wife।
১০। বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থসংখ্যা কত?
উত্তর: ৩৪।
১১। বঙ্কিমচন্দ্র কোন বছর বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন?
উত্তর: ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ।
১২। বঙ্কিমচন্দ্রের “বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন” রচনা প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর: প্রচার পত্রিকায়।
১৩। বঙ্কিমচন্দ্র কোন উপাধিতে ভূষিত হন?
উত্তর: সাহিত্যসম্রাট।
১৪। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর সাল কত?
উত্তর: ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দ।
১৫। লেখার মূল উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত?
উত্তর: মঙ্গল সাধন।
১৬। কোন ধরণের প্রবন্ধ পরিহার করা উচিত?
উত্তর: অসত্য প্রবন্ধ।
১৭। রচনা ছাপানোর আগে কী করতে হবে?
উত্তর: সংশোধন।
১৮। লেখার শ্রেষ্ঠ অলংকার কী?
উত্তর: সরলতা।
১৯। লেখার আগে কিসের প্রমাণ থাকা উচিত?
উত্তর: সত্যতার।
২০। লেখার উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: পাঠককে বোঝানো।
২১। কোন ধরণের লেখনী মহাপাপ?
উত্তর: অসত্য লেখনী।
২২। সাময়িক সাহিত্যের কাজ লেখকের জন্য কেমন?
উত্তর: অবনতিকর।
২৩। যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে লেখা কেমন?
উত্তর: অনুচিত।
২৪। লেখকের ভাণ্ডারে কী থাকা উচিত?
উত্তর: অলংকার।
২৫। কোন লেখার অংশ বন্ধুদের পড়ানো উচিত?
উত্তর: সন্দেহজনক অংশ।
২৬। লেখায় কোটেশন ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত?
উত্তর: সংযত।
২৭। কোন লেখক শ্রেষ্ঠ?
উত্তর: সরল লেখক।
২৮। লেখার কোন অংশ কেটে ফেলা উচিত?
উত্তর: অপ্রয়োজনীয় অংশ।
২৯। বাংলা সাহিত্য কিসের উপর নির্ভরশীল?
উত্তর: বাংলা লেখকদের।
৩০। লেখার পর কিছুদিন ফেলে রাখার উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: সংশোধন।
৩১। লেখার সময় কোন বিষয়টি এড়িয়ে চলা উচিত?
উত্তর: বাহুল্য।
৩২। লেখার সময় অলংকার প্রয়োগ কীভাবে হওয়া উচিত?
উত্তর: স্বতঃস্ফূর্ত।
৩৩। লেখার উদ্দেশ্যে কোন গুণটি অপরিহার্য?
উত্তর: সত্য।
৩৪। লেখকের কোন গুণ পাঠকের বিরক্তির কারণ হতে পারে?
উত্তর: বিদ্যা প্রদর্শন।
৩৫। কোন ধরণের রচনা পাঠকের কাছে কদর্য মনে হয়?
উত্তর: অলংকারের অপপ্রয়োগ।
৩৬। লেখার সময় কোন নিয়মটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়া উচিত?
উত্তর: সরলতা।
৩৭। কি অনুকরণ করা উচিত নয়?
উত্তর: অন্য লেখকের।
৩৮। লেখার সময় কোন বিষয়টি সর্বদা মনে রাখা উচিত?
উত্তর: পাঠকের বোঝার ক্ষমতা।
৩৯। অসময়ে অলংকার প্রয়োগের ফল কী?
উত্তর: বিকৃতি।
৪০। কোন লেখার জন্য বন্ধুবর্গের মতামত নেওয়া উচিত?
উত্তর: সন্দেহজনক অংশ।
৪১। সাময়িক সাহিত্য লেখকের জন্য কীভাবে ক্ষতিকর?
উত্তর: অবনতির কারণ।
৪২। কোটেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি জরুরি?
উত্তর: সংযম।
৪৩। লেখার সময় কোন ধরণের নীতি অনুসরণ করা উচিত?
উত্তর: সত্য ও ধর্ম।
৪৪। লেখায় কোন ধরণের প্রচেষ্টা ক্ষতিকর?
উত্তর: রসিকতার চেষ্টিত প্রয়োগ।
৪৫। কোন বিষয়ের প্রমাণ লেখকের কাছে থাকা উচিত?
উত্তর: সত্যতার।
৪৬। লেখকের কোন গুণ সাহিত্যকে উন্নত করে?
উত্তর: সরলতা।
৪৭। বাংলা সাহিত্য কার উপর নির্ভরশীল?
উত্তর: বাংলা লেখকদের।
৪৮। কোন ধরণের লেখককে নীচ ব্যবসায়ীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর: স্বার্থসাধনকারী।
৪৯। লেখার ক্ষেত্রে পাঠকের প্রতি লেখকের প্রধান দায়িত্ব কী?
উত্তর: সহজবোধ্যতা।
বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর
১। লেখক যশের জন্য লেখার বিরুদ্ধে কেন ?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, যশের জন্য লেখা হলে লেখার গুণগত মান নষ্ট হয়। তিনি বলেন, ভালো লেখা নিজগুণেই যশ আনতে সক্ষম। যশের পেছনে ছুটলে লেখক নিজের চিন্তা ও সৃজনশীলতাকে বিসর্জন দেন। তাই তিনি লেখকদের সতর্ক করেছেন যেন তাঁরা যশের লোভে না পড়ে বরং তাদের কাজের প্রতি মনোযোগী হন।
২। অর্থ উপার্জনের জন্য লেখাকে কেন নিরুৎসাহিত করেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, অর্থের জন্য লেখা সাধারণত লোকরঞ্জনের দিকে ধাবিত হয়। এতে লেখকের সৃজনশীলতা এবং চিন্তার গভীরতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপে অর্থের জন্য লেখা হলেও বাংলার সাহিত্যিক সমাজে এটি তখনো সম্ভব নয়। তাই তিনি সতর্ক করেছেন যে অর্থলাভের উদ্দেশ্যে লেখা সাহিত্যকে বিকৃত এবং অনিষ্টকর করে তুলতে পারে।
৩। বঙ্কিমচন্দ্রের মতে সাহিত্যের মূল উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, সাহিত্যের মূল উদ্দেশ্য সত্য ও ধর্মের প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের মঙ্গলসাধন। তিনি লেখকদের পরামর্শ দেন যে তাঁদের রচনা সৌন্দর্য সৃষ্টি করতে পারে এবং মনুষ্যজাতির কল্যাণে কাজে লাগতে পারে। অন্য কোনো স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে লেখা মহাপাপের সামিল।
.৪। লেখকদের নিজের লেখা সংশোধন করার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র লেখকদের পরামর্শ দেন, লেখা শেষ হওয়ার পর তা হঠাৎ ছাপানোর আগে কিছুদিন রেখে সংশোধন করা উচিত। এতে লেখার ভুল-ত্রুটি স্পষ্ট হয় এবং লেখাটি উন্নতমানের হয়। তিনি বলেন, নাটক বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে দুই-এক বছর পর সংশোধন করলে তা বিশেষ উৎকর্ষ লাভ করে।
৫। বিদ্যা প্রকাশের জন্য লেখক কেন সতর্ক করেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, বিদ্যা প্রকাশের অতিরিক্ত চেষ্টা পাঠকের বিরক্তির কারণ হয়। তিনি লেখকদের পরামর্শ দেন, বিদ্যা নিজগুণে প্রকাশ পায়; তাকে দেখানোর চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। অপ্রয়োজনীয় উদ্ধৃতি বা কোটেশন লেখার সৌন্দর্য ও পরিপাট্য নষ্ট করে।
৬। লেখার সরলতা সম্পর্কে বঙ্কিম কী বলেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র সরলতাকে লেখার সর্বশ্রেষ্ঠ অলংকার বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, লেখার উদ্দেশ্য পাঠককে সহজে বোঝানো। যে লেখক সহজ ও সরল ভাষায় পাঠকের কাছে তাঁর মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন, তিনিই প্রকৃত শ্রেষ্ঠ লেখক।
৭। অনুকরণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বঙ্কিম কী বলেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র লেখকদের অনুকরণ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, অনুকরণে কেবল দোষগুলোই অনুসৃত হয়, গুণগুলো নয়। অন্য লেখকের মতো লেখার চেষ্টা করলে নিজস্ব সৃজনশীলতা হারিয়ে যায়। তাই তিনি স্বকীয়তা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
৮। যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে লেখার ক্ষতি কী?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, যে বিষয়ে জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা নেই, সে বিষয়ে লেখা উচিত নয়। এমন লেখায় ভুল তথ্য থাকতে পারে, যা পাঠকদের বিভ্রান্ত করে। বিশেষ করে সাময়িক সাহিত্যিকদের জন্য এটি বড় সমস্যা। তাই নিজের দক্ষতার বাইরের বিষয় এড়িয়ে চলা উচিত।
৯। অলংকার বা রসিকতা প্রসঙ্গে বঙ্কিমের মতামত কী?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, অলংকার বা রসিকতার ব্যবহার স্বাভাবিকভাবে আসতে হবে। জোর করে অলংকার বা রসিকতা যোগ করার চেষ্টা লেখাকে কদর্য করে তোলে। তাঁর মতে, যদি লেখকের ভাণ্ডারে এটি না থাকে, তবে চেষ্টা করেও তা সফল হবে না।
১০। বাংলা সাহিত্যের উন্নতির জন্য লেখক কী নির্দেশনা দিয়েছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, বাংলা সাহিত্য বাঙালির ভরসা। এর উন্নতির জন্য লেখকদের সত্য ও ধর্মের পথে থাকতে হবে। যশ বা অর্থলাভের উদ্দেশ্য পরিহার করে লেখার মান বাড়াতে হবে। তিনি নতুন লেখকদের এই নিয়মগুলো অনুসরণ করার জন্য উৎসাহিত করেন, যাতে বাংলা সাহিত্য আরও সমৃদ্ধ হয়।
১১। লোকরঞ্জনের প্রবৃত্তি সাহিত্যিকদের জন্য কেন ক্ষতিকর?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, লোকরঞ্জনের প্রবৃত্তি লেখকদের গভীর চিন্তা ও সৃজনশীলতাকে নষ্ট করে। সাধারণ পাঠকের রুচি ও শিক্ষার সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখে রচনা করলে লেখার গুণগত মান নষ্ট হয়। এতে সাহিত্য অসত্য ও বিকৃত হয়ে ওঠে, যা সমাজে অনিষ্টের কারণ হতে পারে।
১২। লেখক চটজলদি লেখার প্রকাশনার বিপক্ষে কেন?
উত্তর: লেখক মনে করেন, তাড়াহুড়ো করে লেখা প্রকাশ করলে লেখায় অনেক ত্রুটি থেকে যায়। সময় নিয়ে লেখা রাখলে লেখক তা আবার পড়ে সংশোধন করতে পারেন। এভাবে লেখার মান বৃদ্ধি পায়। বিশেষত কাব্য, নাটক বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে দেরি করে সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা বেশি।
১৩। বঙ্কিমচন্দ্র সাময়িক সাহিত্যের বিপক্ষে কী বলেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, সাময়িক সাহিত্য দ্রুত লিখে প্রকাশ করতে হয় বলে এতে লেখকের চিন্তা ও কল্পনার গভীরতা নষ্ট হয়। এটি লেখকের অবনতি ঘটায়। যদিও সাময়িক সাহিত্যের প্রয়োজন আছে, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে লেখকের মানসিক ও সৃজনশীল বিকাশের পথে বাধা হতে পারে।
১৪। বঙ্কিমচন্দ্র লেখকদের কীভাবে প্রবন্ধ বা কবিতা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, লেখা সম্পন্ন হলে তা বন্ধুবর্গকে পড়ে শুনিয়ে মতামত নেওয়া উচিত। ভালো না লাগলে লেখকের নিজের কাছেও তা কয়েকবার পড়ার পর অপছন্দ হতে পারে। এমন লেখা কাটছাঁট করলে রচনার মান উন্নত হয়।
১৫। সত্য ও ধর্মবিরুদ্ধ রচনাকে বঙ্কিম কেন পরিত্যাগ করেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, অসত্য বা ধর্মবিরুদ্ধ লেখা মানুষের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি সাহিত্যের মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। এর ফলে সমাজে বিভ্রান্তি ও অনৈতিকতা ছড়ায়। তাই তিনি লেখকদের নির্দেশ দিয়েছেন, এমন রচনা থেকে বিরত থাকার জন্য।
১৬। লেখার জন্য মনের প্রস্তুতি কেন জরুরি?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেন, যদি মনে হয় যে লেখা দিয়ে সমাজ বা মানুষের মঙ্গল করা সম্ভব, তবেই লেখা উচিত। অন্যথায়, লেখকের কাজ অকারণে কেবল সময় নষ্ট করার সমতুল্য। লেখার জন্য মানসিক প্রস্তুতি ও দায়িত্ববোধ অপরিহার্য।
১৭। লেখকদের ভাষা ব্যবহারে কী ধরনের সতর্ক থাকা উচিত?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র লেখকদের পরামর্শ দিয়েছেন, যে ভাষা তারা জানেন না, সেই ভাষা থেকে উদ্ধৃতি বা রেফারেন্স না দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, অন্যের বই থেকে সরাসরি উদ্ধৃতি দিলে তা বিদ্যার অভাব এবং লেখার স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে।
১৮। রসিকতা বা ব্যঙ্গ লেখার ক্ষেত্রে বঙ্কিম বলেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন, রসিকতা বা ব্যঙ্গ লেখার ভাণ্ডারে না থাকলে তা জোর করে আনার চেষ্টা করা উচিত নয়। এটি লেখার স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে। তবে, যদি প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকে, তবে তা প্রাকৃতিকভাবেই লেখায় প্রকাশ পায়।
১৯। বঙ্কিম সরলতাকে লেখার প্রধান গুণ মনে করেন কেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, সরলতা লেখাকে সহজবোধ্য এবং প্রাঞ্জল করে তোলে। জটিল শব্দ বা অলংকার পাঠককে বিভ্রান্ত করে। যে লেখক সরল ভাষায় পাঠকের মনের কাছে পৌঁছাতে পারেন, তিনিই সফল।
২০। বাঙালি লেখকদের দায়িত্ব সম্পর্কে বঙ্কিম কী বলেছেন?
উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্র মনে করেন, বাংলা সাহিত্যের উন্নতি বাঙালি লেখকদের হাতেই সম্ভব। সত্য, ধর্ম, সৌন্দর্য, এবং মঙ্গলসাধনকে লক্ষ্য রেখে লেখা উচিত। বাংলা সাহিত্য বাঙালির চেতনার ভিত্তি; তাই লেখকদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর