বাঁচতে দাও কবিতায় কবি শামসুর রাহমান প্রকৃতি এবং পরিবেশের অখণ্ডতা ও সৌন্দর্য রক্ষা করার গুরুত্ব খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। মানুষের অদমনীয় প্রভাবের কারণে প্রকৃতি আজ বিপন্ন। এই পোস্টে বাঁচতে দাও কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিন।
বাঁচতে দাও কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন
১। কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বান দ্বারা কবি কী বুঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: কবি ‘কাজল বিলে পানকৌড়িকে নাইতে দেওয়ার আহ্বান’ দ্বারা প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং প্রাণীর স্বাধীনতাকে বুঝাতে চেয়েছেন।পানকৌড়ি একটি মাছ-শিকারি পাখি, যে তার প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাধীনভাবে বিচরণ করে। কবি প্রকৃতির সাথে প্রাণীর স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বলেছেন।
২। ফুটতে দাও, ছুটতে দাও-এ কথাগুলো দ্বারা কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘ফুটতে দাও, ছুটতে দাও’—এই কথাগুলো দ্বারা কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের স্বাধীনতাকে বোঝাতে চেয়েছেন। কবি চান প্রকৃতির সব উপাদান, যেমন ফুল, পাখি, শিশু এবং অন্যান্য প্রাণী, তাদের স্বাভাবিক ও স্বাধীনভাবে বিকশিত হতে পারে।
৩। ‘ফুলবাগানে গোলাপ ফোটে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: কবিতায় ‘ফুলবাগানে গোলাপ ফোটে’ বলতে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং প্রাণের উন্মেষকে বোঝানো হয়েছে। গোলাপ ফোটার মাধ্যমে কবি প্রকৃতির সজীবতা ও সৌন্দর্যের কথা বলেছেন। এটি জীবনের আনন্দ এবং স্বাধীনতার প্রতীক।
৪। কবিতায় ‘বাঁচতে দাও’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘বাঁচতে দাও’ বলতে কবি প্রকৃতি, প্রাণী এবং মানুষের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বলেছেন। কবি চান সবাই তাদের জীবন স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সজীবতা বজায় থাকুক।
৫। কবিতায় শিশুদের আনন্দ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর: কবিতায় শিশুদের আনন্দ ঘুড়ি উড়ানো, বালিতে আঁকাআঁকি করার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। এটি শিশুদের সৃজনশীলতা এবং মুক্তির ইচ্ছাকে প্রকাশ করে। কবি চান শিশুরা তাদের আনন্দময় মুহূর্তগুলো স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।
৬। ‘সবাইকে আজ বাঁচতে দাও’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘সবাইকে আজ বাঁচতে দাও’ বলতে কবি প্রকৃতি, প্রাণী এবং মানুষের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারের কথা বুঝিয়েছেন। কবি চান সবাই তাদের জীবন স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সজীবতা বজায় থাকুক। এটি প্রকৃতির সুরক্ষা এবং জীবনের আনন্দকে ধরে রাখার আহ্বান।
৭। ‘রঙিন কাটা ঘুড়ির পিছে বালক ছোটে’— বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: এই চরণটি শিশুদের আনন্দ এবং স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ঘুড়ি উড়ানো শিশুদের একটি সাধারণ খেলা, যা তাদের উচ্ছ্বাস এবং মুক্তির ইচ্ছাকে প্রকাশ করে। কবি চান শিশুরা তাদের আনন্দময় মুহূর্তগুলো স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।
৮। কবিতায় ‘বাঁচতে দাও’ এই শব্দটি কেন বারবার এসেছে?
উত্তর: ‘বাঁচতে দাও’ শব্দটি কবিতায় বারবার এসেছে কারণ এটি কবির প্রধান আহ্বান। প্রকৃতি, প্রাণী, এবং জীবনযাত্রার জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ প্রয়োজন, যেখানে সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে। ‘বাঁচতে দাও’ শব্দটি প্রকৃতির রক্ষার্থে একটি আবেদন হিসেবে কাজ করে, যাতে জীবজগত এবং প্রকৃতি সুন্দরভাবে বিকশিত হতে পারে।
৯। কবিতায় কীভাবে জীবজগতের সুরক্ষা উঠে এসেছে?
উত্তর: কবিতায় প্রকৃতি ও জীবজগতের সুরক্ষার কথা বিভিন্ন লাইন দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কবি ‘ফুলবাগানে গোলাপ ফোটে, ফুটতে দাও’ এবং ‘রঙিন কাটা ঘুড়ির পিছে বালক ছোটে, ছুটতে দাও’-এর মাধ্যমে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও শিশুর আনন্দের জন্য একটি বাধাহীন পরিবেশ নিশ্চিত করার গুরুত্ব দিয়েছেন।
১০। ‘নাচতে দাও’ এবং ‘খেলতে দাও’ এ কথাগুলো দ্বারা কবি কি বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: ‘নাচতে দাও’ এবং ‘খেলতে দাও’ শব্দ দুটি একই অনুভূতি প্রকাশ করে, কারণ এগুলো জীবনের মুক্তি, আনন্দ এবং স্বাধীনতার প্রতীক। শিশুর খেলা এবং পাখির নাচ প্রকৃতির একাধিপত্য, স্বাভাবিকতা এবং আনন্দের প্রকাশ। এই শব্দ দুটির উদ্দেশ্যে হলো জীবনের আনন্দের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করা।
১১। ‘বাঁচতে দাও’ কবিতার মূল বিষয় কী?
উত্তর: কবিতাটির মূল বিষয় হলো প্রকৃতি, পরিবেশ, এবং জীবজগতের সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করা। তিনি মানুষের স্বাধীনতা ও জীবনের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য পরিবেশ রক্ষা করতে অনুরোধ করেছেন। যদি আমাদের চারপাশের পরিবেশ সজীব না থাকে, তাহলে বেঁচে থাকার আনন্দই বৃথা হয়ে যাবে।
১২। শিশুদের আনন্দকে কেন এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: কবিতায় শিশুদের আনন্দকে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কারণ শিশুরা প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের আনন্দের প্রতীক। শিশুদের আনন্দময় মুহূর্তগুলো কবির কাছে প্রকৃতির সুরক্ষা। কবি চান শিশুরা তাদের আনন্দ স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।
১৩। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে কীভাবে জীবন্ত করে তোলা হয়েছে?
উত্তর: কবিতায় প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান যেমন ফুল, পাখি, নদী, আকাশ ইত্যাদিকে জীবন্ত করে তোলা হয়েছে তাদের সজীবতা এবং প্রাণের উন্মুক্ত প্রকাশের মাধ্যমে। কবি চান এই উপাদানগুলো স্বাধীনভাবে বিকশিত হোক এবং প্রকৃতির সজীবতা বজায় থাকুক।
১৪। ‘নরম রোদে শ্যামা পাখি নাচ জুড়েছে’— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কবি এই চিত্রটি ব্যবহার করে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীবনের আনন্দকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। শ্যামা পাখি নরম রোদে নাচে, যা প্রকৃতির সজীবতা এবং প্রাণের উন্মুক্ত প্রকাশকে বোঝায়। কবি চান এই আনন্দ অব্যাহত থাকুক।
১৫। ‘গহিন গাঙে সুজন মাঝি বাইছে নাও’— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: এই চিত্রটি কবির কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে কারণ এটি মানুষের শ্রম এবং প্রকৃতির সাথে তার সম্পর্ককে প্রকাশ করে। সুজন মাঝি গভীর নদীতে নৌকা বাইছে, যা মানুষের কর্ম এবং প্রকৃতির সাথে তার মিলনের প্রতীক।