পিতৃপুরুষের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৭ম শ্রেণির বাংলা

কথাসাহিত্যিক হারুন হাবীবের লেখা অসাধারণ ‘পিতৃপুরুষের গল্প’, যেখানে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিশু-কিশোরদের বুঝার উপযোগী করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই পোস্টে পিতৃপুরুষের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৭ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

পিতৃপুরুষের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়তি বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঢাকায় বেড়াতে এসেছে। একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাবা-মা ওকে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। বাবা-মায়ের সাথে সেও ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। বাবার কাছে ভাষাশহিদদের আত্মত্যাগের কথা শুনে গর্বে মনটা ভরে ওঠে প্রিয়তির।

ক. ১৯৭১ সালে কাজল মামা কোথায় পড়ত?

খ. ‘যুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে অনেক তফাৎ’- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. অন্তু ও প্রিয়তির মনোভাব কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ?-ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে না।”- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।

উত্তরঃ

ক. ১৯৭১ সালে কাজল মামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত।

খ. সাধারণ যুদ্ধ হয় দুই দেশের শাসকদের স্বার্থে, যেখানে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায়। এতে কারও লোভ, ক্ষমতার লড়াই থাকে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ হয় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে এবং জাতির স্বাধীনতার জন্য। মুক্তিযুদ্ধে মানুষ নিজের দেশ, ভাষা ও অধিকার রক্ষার জন্য প্রাণ দেয়। কাজল মামা বলেছেন, একাত্তরের যুদ্ধ ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ—যেটা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম। তাই মুক্তিযুদ্ধ শুধু যুদ্ধ নয়, সেটা ছিল আত্মত্যাগ আর সাহসের প্রতীক।

গ. অন্তু ও প্রিয়তি—দুজনেই ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা অনুভব করে।

তারা শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। শহিদদের আত্মত্যাগের কথা শুনে তাদের মন গর্বে ভরে ওঠে। তারা অনুভব করে, এই আত্মত্যাগ না হলে আজ আমরা মাতৃভাষায় কথা বলতে পারতাম না।
অন্তু তার মামার মুখে ভাষা আন্দোলনের ও মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনে অনেক কিছু জানতে চায়। সে দেশের ইতিহাস জানার আগ্রহে ভরে ওঠে। অন্যদিকে, প্রিয়তিও প্রথমবার শহিদ মিনার দেখে আবেগে আপ্লুত হয় এবং বাবার কথা শুনে দেশের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করে।
দুজনেই দেশের ইতিহাস, ভাষা ও শহিদদের স্মৃতিকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারে। তারা গর্বিত বাঙালি হিসেবে গড়ে উঠছে। এই দিক থেকেই তাদের মনোভাব সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকে প্রিয়তির শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া ও ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ঘটনার উল্লেখ আছে। এতে তার মনের গর্ব ও দেশপ্রেমের অনুভূতি ফুটে উঠেছে। তবে এই অংশটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’-এর কিছু ভাব প্রকাশ করলেও পুরো গল্পের মূল বার্তা তুলে ধরে না।

মূল গল্পে অন্তু শুধু শহিদ মিনারে যায়নি, সে মামার কাছ থেকে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃত ইতিহাস জেনেছে। কাজল মামার সংলাপে উঠে এসেছে যুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের তফাৎ, শহিদ মিনারের পেছনের রক্তাক্ত ইতিহাস, বাঙালির আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার সংগ্রাম।
গল্পটি নতুন প্রজন্মকে অতীত জানানো ও গর্ববোধ জাগিয়ে তোলার একটি অনন্য প্রয়াস। উদ্দীপকে শুধু একটি মুহূর্তের অনুভূতি আছে, কিন্তু গল্পে আছে ধারাবাহিক শিক্ষা ও ইতিহাস চর্চা।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে যে অংশ তুলে ধরা হয়েছে, তা গল্পটির একটি অংশ মাত্র। এটি পুরো ‘পিতৃপুরুষের গল্প’-এর মূল শিক্ষা ও বার্তা সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত করে না। অতএব, উক্তিটি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি। [তথ্যসূত্র: একুশের গান- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী

ক. যুদ্ধে কাদের কষ্ট হয়?

খ. অন্তু বাঙালির অতীত সংগ্রামের কাহিনি শুনতে চেয়েছিল কেন?

গ. উদ্দীপকটি কোন দিক থেকে ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পে প্রতিফলিত একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনার দিকটি উদ্দীপকের ভাবার্থে প্রকাশ পেয়েছে।”- যৌক্তিকতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
২১শে ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ঢাকা এবং অন্যান্য স্থানে সাফল্যের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা ধর্মঘট পালন করে এবং সকাল দশটার পর গাজিউল হকের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় আমতলায় এক বিরাট ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শামসুল হক কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সিদ্ধান্ত জানান। কিন্তু সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। আবদুস সামাদের প্রস্তাবমতো ছাত্রছাত্রীরা দশজনের অসংখ্য দলে বিভক্ত হয়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ক. আমাদের জাতির প্রথম শহিদ কারা?

খ. ‘অথচ কত কাহিনি আছে বাঙালি জাতির’- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের কোন দিকটির মিল রয়েছে?

ঘ. “উদ্দীপক ও ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পটি আমাদের দেশ ও জাতির ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দেয়”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
সালাম, রফিক, বরকত ভাই আমরা তোমাদের ভুলি নাই। রক্ত দিয়ে যা করেছিলে আশা, বেঁচেছে তাই বাংলা ভাষা শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে না কখনো তোমরা থাকবে জেগে একুশে ফেব্রুয়ারির মাঝে তোমাদের স্মৃতি ভুলবে না বাঙালি।

ক. কারা আমাদের দেশটাকে গোলাম করে রাখতে চেয়েছিল?

খ. বাংলা ভাষা কীভাবে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের ভাষাশহিদদের ভুলে না থাকার বিষয়টি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’-এর কোন দিকটিকে ইঙ্গিত করে- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকের বাংলা ভাষার প্রাণ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ অবলম্বনে মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন
ঘর বাড়ি দেশ,
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই
কালোরাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হয়ে একাত্তর যশোর রোড যে
কত কথা বলে
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা
কলকাতা চলে।

ক. কাজল মামা কত সালে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে আসেন?

খ. “একাত্তর সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম- সাধারণ যুদ্ধ নয়।”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের কোন দিকটিকে তুলে ধরে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের ঘটনার সামগ্রিক বর্ণনা ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পটিতে ফুটে ওঠেনি।”- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
যাদের স্বপ্ন ছিল রবীন্দ্রনাথের
‘বাঁশিওয়ালার’ চেয়েও সুন্দর
একটি কবিতা রচনা করার
সেই সব শহীদ ভাইয়েরা আমার
যেখানে তোমরা প্রাণ দিয়েছ
সেখানে হাজার বছর পরেও
সেই মাটি থেকে তোমাদের রক্তাক্ত চিহ্ন
মুছে দিতে পারবে না সভ্যতার
কোনো পদক্ষেপ।

ক. ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে ছাত্ররা কীসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল?

খ. শহিদ মিনার বাঙালির স্মৃতিসৌধ কেন?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের মিল তুলে ধর।

ঘ. উদ্দীপকের শহিদ ভাইদের কারণেই বাংলা ভাষা আজ রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আত্মমর্যাদায় অধিষ্ঠিত।- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
অনেক ঐতিহাসিকের মতে, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকাকে সুবাহ্ বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ শহরে ঢাক বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনি লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই এ শহরের নাম ঢাকা হয়ে যায়।’

ক. কার নাম অনুসারে ঢাকার নাম হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর?

খ. “পুরনো দিনের ওপরই তো বর্তমানের দিন-রাত গড়ে ওঠে।”-ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের কোন দিকটি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “বাংলার অতীত ইতিহাসের খণ্ডচিত্রই উদ্দীপকে প্রকাশমান।”-মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯।
চর্যাপদের কালো অক্ষরগুলো ইদানীং আমার খুব আপন মনে হয়। মনে হয় ওই এক একটি অক্ষর থেকে উঠে এসেছে আমার পিতা, পিতামহ আর প্রপিতামহরা। উঠে এসেছে বাংলা, বাঙালির অস্তিত্ব।

ক. বাঙালিরা কী মেনে নেয়নি?

খ. ‘বাঘা বাঙালি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকে প্রকাশিত ভাবটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনার সাথে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উঠে এসেছে আমার পিতা, পিতামহ আর প্রপিতামহরা”-উক্তিটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

নিচে উত্তরসহ পিতৃপুরুষের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

পিতৃপুরুষের গল্প সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

আরও পড়ুনঃ ছবির রং সৃজনশীল প্রশ্ন – ৭ম শ্রেণির বাংলা

Related Posts

Leave a Comment